somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কওমি হুজুরের এক হাত ঘুরা আত্নকাহিনী-১১

২১ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার নবি করিম সল্লেল্লাহু আলাইহিস সালাম, রাহমাতুল্লিল আলামিন যখন মিরাজে গিয়ে জাহান্নাম দেখলেন, তিনি কি দেখলেন ? দেখলেন, জাহান্নামে খালি মহিলা আর মহিলা । দয়ার নবী জিব্রাঈলকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে জিব্রাঈল জাহান্নামে এত মহিলা কেন ? জিব্রাঈল বল্লেন ইয়া রাহমাতুল্লিল আলামিন , নারীদের অধিকাংশই জাহান্নামের আগুনে পুড়বে কারণ তাদের তুষ্টি নাই । অনেক পেলেও তারা সন্তুষ্ট থাকে না । তারা স্বামীর কিংবা আল্লাহ পাকের শুকরিয়া আদায় করে না ।

তো দেখেন ভাইসকল, আইজ আমাদের চাইরপাশে কি দেখতে পাই আমরা ? একটা সামান্য দুর্ঘটনাতেও আমাদের মেয়েরা আল্লাহপাকের বিরুদ্ধে অসন্তুষ্টি প্রকাশ কৈরা ফেলে । আল্লাহর কি বিচার ? আল্লাহ আমারে ক্যান এই ঝামেলায় ফালাইল ? এই জ্বাতীয় কথা তারা হামেশাই বৈলা ফেলে । অথচ তারা দেখেনা আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন তাদের কত নেয়ামতের উপরে রাখছেন । নেয়ামতের শোকর-গুজারি করে না । পুরুষ কত কষ্ট কৈরা মাথার ঘাম পায়ে ফেইলা শহরে বন্দরে খেতে খামারে কল-কারখানায় রক্ত ফানি কৈরা ট্যাকা কামাই করে । দিনশেষে ঘরে ফিরলে কি পায় ? পচা মাছ নিয়া আইছ ক্যান ? এইডা একটা শাড়ি হৈল ? এক ধোয়াতেই রঙ উইঠা যাইব । কত শত অভিযোগ । আরো কত অভিযোগ আছে ভাইসকল ভালোই জানেন , সেইগুলা এইখানে বলা যায় না ।

উম্মুল মুমেনিন , আমার নবির পরিবারবর্গ , খাতুনে জান্নাত ফাতেমা তুজ জোহরা , এরা ছিলেন আদর্শ নারী । দয়ার নবির ঘরে যখন খাবারও ছিল না তখনও তার কুনোদিন বিন্দুমাত্র অভিযোগ করেন নাই । সবাই মিলা উপবাস করছেন, তাও আল্লাহপাকের উপরে কিংবা দয়ার নবির উপরে অসন্তোষ প্রকাশ করেন নাই । আল্লাহপাকের হুকুমে দয়ার নবি বিবাহ করেছেন, কুনোদিন উনার কুনো বিবি দুইকথা বলেন নাই । অথচ আইজ দেখেন আমাদের সমাজে দুই সতীন ঠিকমত ঘর করতে পারে না । চুলাচুলি লাইগাই আছে । আর দেখেন এই বেশরিয়তি বেদ্বীন সরকার আইন করে দ্বিতীয় বিয়া করতে হৈলে নাকি প্রথম বউয়ের অনুমতি লাগবে । দেখেন কুরানের স্পষ্ট আইনের বিরুদ্ধে কি ধৃষ্টতা । এই বেদাতি আইনের বিরুদ্ধে ভাইসকল আমাদের জানমাল কুরবানি কৈরা লড়তে হৈব ।

খাতুনে জান্নাত ফাতেমা তুজ জাহরা যখন ইন্তেকাল করেন তখন তিনি প্রানপ্রিয় স্বামী হযরত আলী (রাঃ ) কে ডেকে বলেন : হে স্বামী জীবনে আমারে কোনো দ্বিতীয় পুরুষ দেখে নাই তুমি ছাড়া । আমার মরার পরেও যেন কেউ দেখতে না পারে । তাই আমারে কবর দিও রাত্রে । আমার কবরও যেন কেউ দেখতে চিনতে না পারে । কেউ যেন বুঝতে না পারে আমার কবর দেইখা আমি দৈর্ঘ্যে কতটুকু ছিলাম ।

ভাইসকল, আদর্শ নারী হৈল সেই নারী যে জীবনে দুইবার মাত্র ঘর থাইকা বাইর হয় । যেদিন সে বিবাহ কৈরা স্বামীর ঘরে যায় আর যেদিন তার লাশ তার স্বামীর ঘর থাইকা বাইরে নেয়া হয় । অথচ দেখেন আমাদের সমাজে , কিশোরি যুবতী মেয়েরা চুল ছাইরা ইশকুলে যাইতাছে । আমাদের ঈমানি রক্ত ঠান্ডা বরফ হৈয়া গেছে । তাই আমরা আজও এইসব সহ্য কৈরা যাইতাছি । ছয় বচ্ছর বয়সে নারীর উপর পর্দা ফরজ হৈয়া যায় । ইসলামি খেলাফত ইরানে কোন মেয়ের চুল ছারা দেখলে সেই চুলে আগুন ধরাইয়া দেয়া হয় । আইজকার বাংলাদেশে যদি একটা মাইয়ারে এই শাস্তি দেয়া হৈত , তাইলে এইসব বেশরিয়াতি কারবার কি থাকত ? কন ভাইসকল থাকত ? আওয়াজ দেন । আমাগো ঈমানি বল কি এত নীচে নাইমা গেছে ? অর্ধেক পৃথিবীর শাসন কইরা আসা মুছলমানগো রক্ত কি এতই ঠান্ডা হৈয়া গ্যাছে ?

ভাইসকল, নারীরা জন্ম থাইকাই বেঁকা । তাকো কথা বেঁকা, হাসি বেঁকা, চলনবলন বেঁকা, বুদ্ধি বেঁকা । আল্লাহপাক তাগোরে বানাইছেনই বেঁকা কৈরা । বাবা আদমের বুকের হাড় থাইকা মা হাওয়ারে তৈরী করেন আল্লাহ পাক । বুকের হাড় দেখেননা কিরকম বেঁকা । এই বেঁকা নারীদের সোজা করার দায়িত্ব দেয়া হৈছে পুরুষরে । আল্লাহপাক কোরানে প্রয়োজনে নারীদের মাইরধইর করারও অনুমতি দিছেন । মখলুকাত সম্পর্কে কি আল্লাহর চাইতে বেশী কেউ জানে ? আওয়াজ দেন ভাইসকল কেউ জানে ? অথচ দেখেন ইহুদি নাছারাগো দালাল এনজিওগুলা আইজ নারী নির্যাতনের ধূয়া তুইলা কোরানের বিরুদ্ধে চালাইতাছে সরকাররে । এই এনজিওগুলা একেকটা দুযখের কুন্ডলি । ঈমানের জোর দিয়া এইগুলারে ঠেকাইতে হৈব । ওরা কি আল্লাহপাকের থাইকা বেশি জানে ? ওরা কোরানের বিরুদ্ধে কথা কয় কুন সাহসে ?

আল্লাহপাক নারীর উপর খবরদারির দায়িত্ব ভাগ কৈরা দিছেন তিন ভাগে । বাল্যকালে বাপের , যৌবনে স্বামীর , আর বার্ধ্যকে পুত্রের । ভাইসকল নিজ নিজ দায়িত্ব ঠিকমত পালন না করলে কাইল হাশরের ময়দানে নারীরা আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করবে, আমারেতো বানাইছই বেঁকা কৈরা , যাদের উপর দায়িত্ব ছিলো আমারে সোজা করার তারাতো সেই দায়িত্ব পালন করে নাই । তাই আইজ আমারে যদি দোযখে দাও তাইলে আমার বাবা স্বামী পুলারেও আমার সাথে দুযখে দাও । ভাইসব কথায় যুক্তি আছে কিনা কন ?

আদর্শ নারী ছিলেন , হযরত আইয়ুব নবীর বিবি রহিমা (রাঃ ) । আপনার জানেন আইয়ুব নবীর জীবনের আঠারটি বছর আল্লাহপাক তার উপর কঠিন পরীক্ষা নাযিল করেন । নবির সারা অঙে পচন ধরে যায় কুষ্ঠ রোগে । আত্নীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশি এমনকি নিজ রক্তের ছেলেরাও তারে পরিত্যাগ কৈরা চইলা যায় । কিন্তু বিবি রহিমা যান নাই । নিজের সমস্ত শক্তি দিয়া নবির সেবা করে গেছেন । বেহেশতের সুস্বাদু ফল কি বিবি রহিমার জইন্য নাকি আমাদের অকৃতজ্ঞ জোলেখা, সখিনা, খালেদার জইন্য । তাই ভাইসব, নিজ নিজ অধীনস্ত নারীদের গইড়া তুলতে হৈব নিজ দায়িত্বে । কাঁচায় না বাঁকাইলে বাঁশ পাকায় করে ঠাসঠাস । সবচে বড় দায়িত্ব তাই পিতার উপর । ছুডকাল থাইকা দ্বীনি এলেম শিক্ষা দিতে হৈব নিজ কইন্যারে । পর্দার ছবক দিতে হৈব ২/৩ বছর বয়স থাইকাই । তাইলে পর্দা ফরজ হওনের আগেই অভ্যাস হৈয়া যাইব । এই বেদ্বীনি বেশরিয়তি ইশকুলে যাওন বন্ধ করতে হৈব । ইশকুলে দেখেন পুলা মাইয়া একলগে কেলাস করে । খোদা মাফ করুক , কত হাজারবার জিনা হৈতাছে সেখানে ভাইবা দেখেন । জিনা খালি শইল্যের লজ্ঝাস্থানের জিনাই না । চোখের জিনা, কানের জিনা, হাতের জিনা কতরকমের জিনা আছে । এই গোমরাহির শাস্তি আমাগো উপরেও পড়বো । আমরা যদি এই গোমরাহি প্রতিরোধ না করি ।

শেষের দিকে হঠাৎ আমার কুলসুমার কথা মনে আসে । তাই বলি : তয় ভাইসকল, নারী হৈল মায়ের জাতি । তাই নারীর অসম্মান যেন আমরা না করি । হাদিসে পাকে আসছে, এক সাহাবি নবি করিম সাঃ এর কাছে জানতে চাইলেন, হে নবী পাক আমার বাবা মা দুইজনেই জীবিত আছেন আমি কার হক আগে আদায় করব ? নবী বললেন তোমার মায়ের । সাহাবি বল্লেন এরপর কার ? নবী পাক আবার জবাব দিলেন তোমার মায়ের । এইভাবে তিনবারের পরে চতুর্থবারে গিয়া নবি পাক বল্লেন তোমার বাবার । তাই ভাইসকল , নারীদের শিক্ষা দিতে গিয়া আমরা যেন তাদের সম্মানের কথা ভুইলা না যাই ।

নামায শেষে বাইর হৈয়া মনে মনে ঠিক করি দুএকদিনের মইধ্যেই ফেনী যাইতে হৈব । ডাকতরের কাছে ।

--------------------------------------------------
কওমি হুজুরের এক হাত ঘুরা আত্নকাহিনী-১০
Click This Link

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:৩৪
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের জাতির কপালে শনি আছে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:১১



একাত্তরে যারা স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে তারা বলেছে স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখা সম্ভব না, সুতরাং ভারতের অধীন হওয়ার চেয়ে পাকিস্তানের অধীন থাকা ভালো। তারা মনে করেছে অধীকাংশ নাগরিক তাদের দলে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি কি লড়াকু সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৬

হাদি কি লড়াকু সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতা ?

জুলাই আন্দোলনে তিনি প্রথম সারির নেতা ছিলেন না , তাকে কেউ চিনতো না কয়েক মাস আগে ও ।

জুলাই জংগীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

লিখেছেন গ্রু, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৮



ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।

মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ৩০ দেশের দুষ্ট আমেরিকান রাষ্ট্রদুত বদলায়ে দিচ্ছে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২৩



আইয়ুব পাকিস্তানকে ধ্বংস করার পর, বাংগালীদের লাথি খেয়ে সরেছে; জিয়া, কর্নেল তাহের ও জাসদের গণ বাহিনী আমাদের দেশকে নরক (১৯৭৫ সাল ) বানিয়ে নিজেরা নরকে গেছে। আমাদেরকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×