somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আন্ডারস্ট্যান্ডিং মোহাম্মদ -৬ (মূল : আলি সিনা , অনুবাদ : দুরের পাখি)

০২ রা জুলাই, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পর্ব -৫ এইখানে (Click This Link)

পর্ব-৬
বাজারে মোহাম্মদের সমালোচনা করা অনেক বই আছে যেগুলোতে তার হিংস্রতা এবং বিকৃত চরিত্রের বর্ণনা পাওয়া যাবে, কিন্তু খুব কম বই-ই আছে যেগুলোতে তার মনের ভিতর কি হচ্ছিলো সে কথা জানা যাবে । এই বই ঠিক সে জিনিসই বর্ণনা করতে চায় ।

যদিও এই বইতে মুসলিমদের কোন আহ্বান করা হয়নি, তবুও আমি মূলত তাদের উদ্দেশ্যে বইটি লিখেছি । পারসিয়ান সেই প্রবাদের মত, দুয়ারকে বলে গেলাম যাতে দেয়াল শুনতে পায় । মোহাম্মদের লুটতরাজ, গণহত্যা, ডাকাতি, শিশুকাম, গুপ্তহত্যা, নারীখাদক লালসা এইসব নিয়ে যথেষ্ঠ বলা হয়ে গেছে । মুসলিমরা এর সবই শুনে কিন্তু কোনপ্রকার দ্বিধা ছাড়া মোহাম্মদের উপর বিশ্বাস অটল রাখে । উদ্ভটভাবে কেউ কেউ আবার দাবী করে ইন্টারনেটে আমার প্রবন্ধ পড়ে তাদের ইসলামে বিশ্বাস নাকি আরো মজবুত হয়েছে । তারা মোহাম্মদকে অতিমানব হিসাবে মেনে নিয়েছে এবং বিশ্বাস করে মোহাম্মদ হচ্চে রাহমাতুল্লিল আলামিন, দুনিয়ার উপর আল্লাহর রহমত । মানুষের নৈতিকতার মানদন্ড ও বিবেক দিয়ে তারা মোহাম্মদকে বিচার করে না, বরং বিশ্বাস করে সে নিজেই নৈতিকতা মানদন্ড । সত্য-মিথ্যা, ভালো-খারাপের বিচারে তারা গোল্ডেন রুল ব্যবহার করে না । আসলে গোল্ডেন রুলের ধারণাই তাদের চেতনার সাথে যায় না । তারা বরং হালাল-হারামের সংজ্ঞা দিয়ে ভালো-খারাপের পার্থক্য করতে চায়, যা মূলত কিছু উদ্ভট খামখেয়ালিপূর্ণ নিয়ম; নীতি নৈতিকতা, যুক্তির জগতের সাথে যার কোন সম্পর্ক নাই । মুসলিমরা সত্যিকারভাবেই ইসলাম নিয়ে প্রশ্ন করতে অক্ষম । যেকোন সন্দেহ তার কোনপ্রকার চিন্তা ছাড়াই উড়িয়ে দেয় আর যেসব জিনিস তাদের মানতে কষ্ট হয় সেগুলোকে ধরে আল্লাহর পক্ষ থেকে ঈমানের পরীক্ষা হিসাবে । এই পরীক্ষায় পাশ করতে হলে যত আজগুবি আর অর্থহীন জিনিস আছে সবকিছুকে প্রশ্নহীনভাবে মেনে নিতে হবে ।

অধ্যায় -এক

কে ছিলো এই মুহাম্মদ

“তোমার প্রতিপালক তোমাকে পরিত্যাগ করেন নি , এবং তিনি তোমাকে ঘৃণাও করেন না । ভবিষ্যত তোমার জন্য অতীতের তুলনায় মঙ্গলময় হবে । আর শ্রীঘ্রি তোমার প্রতিপালক তোমাকে তার প্রতিদান দিবেন যাতে তুমি তুষ্ট হও । তিনি কি তোমাকে এতিম অবস্থায় পেয়ে তারপর তোমার আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন নি ? তিনি কি তোমাকে অভাবী অবস্থায় পেয়ে তারপর ধনী বানান নি ? (কোরান, সুরা ৯৩, আয়াত ৩-৮)” (টীকা ৬)

মোহাম্মদের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক । তার জীবনকে পরীক্ষা করে দেখি । কে ছিলো সে, কি চিন্তা করতো ? কোটি কোটি মানুষ যার পূজা করে তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হবে এই অধ্যায়ে । সত্যি বলতে গেলে ইসলাম আসলে মোহাম্মদিজম ছাড়া কিছু নয় । মুসলিমরা দাবী করে তারা এক আল্লাহ ব্যতীত আর কারো উপাসনা করে না । যেহেতু আল্লাহ ছিলো মোহাম্মদেরই অপর স্বত্তা, তার অপর নাম, এবং তার হাতের অদৃশ্য পুতুল, সুতরাং ব্যবহারিক অর্থে, মোহাম্মদেরই উপাসনা করে তারা ।
ইসলাম হলো মোহাম্মদের ব্যক্তিত্ব নিয়ে পীর-মুরিদান ব্যবসা । আল্লাহর নাম দিয়ে চালিয়ে দেয়া কোরানে মোহাম্মদের নিজের কথাগুলো আমরা বিবেচনা করে দেখবো । এবং চেষ্টা করবো তার সাহাবী এবং স্ত্রীদের অবস্থান থেকে তাকে দেখার । দেখার চেষ্টা করবো, কিভাবে সে একটা দুপয়সার ক্যানভাসার(ধর্মের) থেকে গোটা আরব উপদ্বীপের কার্যত শাসক বনে যায়, কিভাবে সে লোকদের মাঝে বিভেদ তৈরী করে তাদের নিয়ন্ত্রণ করেছিলো, কিভাবে সে মানুষের মাঝে ক্ষোভ আর ঘৃণা ছড়িয়ে এক পক্ষকে আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছিলো এবং কিভাবে সে লুট, ধর্ষণ, নির্যাতন ব্যবহার করে তার শত্রুদের মনে ত্রাসের সৃষ্টি করে তাদের পরাজিত করেছিলো । তার করা গণহত্যাগুলো সম্পর্কে জানবো এবং প্রতারণার সাহায্য নেয়া নিয়ে তার আলাদা আসক্তি বুঝার চেষ্টা করবো যে প্রতারণ আজকের যুগের সন্ত্রাসীরাও হামেশাই ব্যবহার করে । মোহাম্মদকে বুঝলে বুঝা যাবে আজকের ইসলামি সন্ত্রাসীরা আসলে মোহাম্মদ যা করেছিলো হুবহু তা-ই করছে ।

মোহাম্মদের জন্ম ও শৈশব

৫৭০ খ্রীস্টাব্দে আরবের মক্কা নগরীতে আমিনা নামের এক তরুণী বিধবার ঘরে জন্ম মোহাম্মদের । (টীকা ৭) । যদিও আমিনার একমাত্র সন্তান ছিলো মোহাম্মদ তবু মাত্র ছয়মাস বয়সেই সে তাকে এক বেদুইন নারীর হাতে তুলে দেয় লালন পালনের জন্য ।

ধনী আরব মহিলাদের মধ্যে শিশু পালনের জন্য সেবিকা ভাড়া করার চল ছিলো । এর মাধ্যমে শিশু পালনের ঝামেলা থেকে মুক্তি পেয়ে তারা সাথে সাথে পরবর্তী গর্ভধারণ করতে পারতো । বেশি সন্তান থাকা মানে সামাজিক মর্যাদা বেশি । কিন্তু আমিনার অবস্থা তা ছিলো না । সে ছিলো গরীব, বিধবা আর মোহাম্মদ ছিলো তার একমাত্র সন্তান । মোহাম্মদের পিতা আবদুল্লাহ তার জন্মের ছয় মাস আগেই মারা যায় । তাছাড়া এই সংস্কৃতি অতটা প্রচলিতও ছিলো না । মোহাম্মদের প্রথম স্ত্রী খাদিজার আগের ঘরে ছিলো তিন সন্তান, মোহাম্মদের সাথে ছয় সন্তান, এই নয়জনকেই সে নিজ হাতে লালন করে গেছে , যদিও সে ছিলো তৎকালীন মক্কার সবচে ধনী মহিলা । (টীকা ৮)

আমিনা কেন তার শিশুসন্তানকে লালনের জন্য অন্যের ঘরে পাঠিয়েছিলো ? মোহাম্মদের মা এবং তার এই স্বিদ্ধান্ত বুঝার মত যথেষ্ঠ পরিমাণ তথ্য ইতিহাসে লিপিবদ্ধ নেই ।

তবে আমিনার মানসিকতা শিশুপুত্র মোহাম্মদের সাথে তার সম্পর্ক নিয়ে কিছুটা ধারণা করা যায় এমন একটি তথ্য আছে । সেটি হলো আমিনা মোহাম্মদকে তার বুকের দুধ পান করায় নি । জন্মের পরই বুকের দুধ পান করানোর জন্য তাকে দেয়া হয় ছুয়াইবা নামের এক মহিলার কাছে । ছুয়াইবা ছিলো মোহাম্মদের চাচা আবু লাহাবের চাকরানী । (সে আবু লাহাব যাকে স্ত্রীসহ কোরানে অভিসম্পাত করে মোহাম্মদ) । কেন আমিনা তার নিজ সন্তানকে লালন করে নিয়ে সে সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায় না । এক্ষেত্রে অনুমানের বেশি কিছু করা সম্ভব নয় । অল্প বয়সে বিধবা হয়ে যাওয়াতে সে কি বিষণ্ণ হয়ে পড়েছিলো ? নাকি শিশুপুত্র থাকলে অন্য কোথাও বিয়ে হবে না ভেবে তাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলো ?
****************************************************************************************************
টীকা ৬ : কোরান সুরা ৯৩, আয়াত ৩-৮ : এই বইয়ে ব্যবহার করা অনুবাদ গুলো ইউসুফ আলি এবং শাকিরের । ইসলামের দলিলগুলো নিয়ে আমার কাজ নয়, বরং দলিলগুলার উপর ভিত্তি করে । আমি যেসব অনুচ্ছেদ কোট করবো সেগুলো কোরান এবং হাদিস থেকে নেয়া । কোরানের দাবী এটি কোন মানুষের বাণী নয়, বরং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরোই আল্লাহর বাণী । হাদিসগুলো হচ্ছে মোহাম্মদের জীবনের ছোট ছোট ঘটনা এবং বাণীর সংকলন । ইসলামকে পুরো বুঝার জন্য মুসলিমরা হাদিসগুলোও ব্যবহার করে । কোরান হাদীস নিয়ে শুরু থেকেই হাজার প্রশ্ন আছে, অনুবাদ নিয়ে আছে এবং ছোটখাট বর্ণনা নিয়েও অনেক রকমের মতভেদ আছে , সেইসব নিয়ে এই বইয়ে আলোচনার কোন প্রয়োজন দেখি না । এই বইয়ের বিষয় নিয়ে যেসব অনুচ্ছেদ উদৃত করবো সেগুলোর বেশিরভাই ব্যাখা ছাড়াই বুঝা সম্ভব । সাধারণভাবে স্বীকৃত উৎস থেকে এগুলো সংগৃহীত ।

টীকা ৭ : এক হাদিস অনুসারে (এই হাদিসের নির্ভরযোগ্যতা অবশ্য প্রমাণ করতে পারি নি আমি) মোহাম্মদের আসল নাম ছিলো কাশেম । তাকে হালাবি নামেও ডাকা হতো । ৫৩ বছর বয়সে মদীনায় হিজরত করার সময় সে তার নাম পাল্টে মোহাম্মদ রাখে

টীকা ৮ : মোহাম্মদের সর্বমোট চার কন্যা এবং দুই পুত্রসন্তান ছিলো । তার পুত্ররা কাশেম এবং আব্দুল মেনাফ (মেনাফ দেবীর নাম অনুযায়ী রাখা নাম) শিশুকালেই মারা যায় । তার মেয়েরা বড় হয় এবং বিয়েও করে কিন্তু সবাই বেশ অল্পবয়সেই মারা যায় । সর্বকনিষ্ঠা ফাতেমার দুই সন্তান ছিলো , সেও মোহাম্মদের মৃত্যুর ছয় মাসের মাথায় মারা যায় ।
**************
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১৩
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×