somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আন্ডারস্ট্যান্ডিং মোহাম্মদ -৫ (মূল : আলি সিনা , অনুবাদ : দুরের পাখি)

৩০ শে জুন, ২০১১ রাত ৮:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পর্ব -৪ এইখানে (Click This Link)

পর্ব-৫
এ রহস্য বুঝতে হলে আমাদের আগে বুঝতে হবে যে মুসলিমরা মোহাম্মদের মত হতে এবং তার মত চিন্তা করতে চায় । যার ফলে তাদের অভিব্যক্তি, বিশ্বাস , চিন্তা এবং কার্যকলাপে মূলত মোহাম্মদের ব্যাক্তিত্ব এবং মানসিকতার প্রতিফলন ঘটে । ইসলামে যেহেতু মোহাম্মদই হচ্ছে ন্যায়নীতির মাপকাঠি, এটাই স্বাভাবিক যে তার অনুসারীরা ন্যায়নীতিবান হবার জন্য তাকে সরাসরি অনুকরণ করবে । ফলাফল, মুসলিম জাতি মোহাম্মদের খোলসে নিজেকে সাজাতে গিয়ে নিজেদের ভুলে যায় । মানবজাতির অন্যদের থেকে দূরে সরে যায় এবং নিজেদের স্বকীয়তার বিশাল অংশই হারিয়ে ফেলে । মোহাম্মদের আত্নপ্রেমী ফানুসের জগতে বাস করতে করতে , তার অনুকরণ করতে করতে একেকজন হয়ে উঠে মোহাম্মদেরই একেকটি বর্ধিতাংশ । ইসলাম নামের গাছের কুঁড়ি হলো মুসলিমরা যার মূল হলো মোহাম্মদ । তাদের চরিত্র, অভিব্যক্তি, চিন্তাধারা সবই মোহাম্মদের মত । বলতে গেলে সব মূসলিম আসলে মোহাম্মদের একটি ক্ষুদ্র রুপের মত । তাদের কাছে সে হচ্ছে সৃষ্টির সেরা, নিখুঁত মানব আর সর্বোচ্চ অনুকরণীয় আদর্শ । তাদের বিশ্বাস মোহাম্মদ যদি কিছু করে থাকে, সেটা যতই শোচনীয় হোক না কেন, তা-ই সঠিক । কোন প্রশ্ন নাই এবং কোনপ্রকার বাছবিচার চলবে না এইক্ষেত্রে ।

আলোচনার বিষয় হিসাবে মোহাম্মদকে এড়িয়ে চলতে চায় বেশিরভাগ মানুষ । নবীর সামান্য অসম্মানে মুসলিমরা ক্ষুব্দ হয়ে উঠে । যেকোন মন্তব্য সেটা যতই তুচ্ছ হোক না কেন ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ বিক্ষোভ । যদিও মোহাম্মদের অনুসারীদের সমালোচনায় মুসলিমরা তেমন কিছু মনে করে না, কিন্তু মোহাম্মদের নিজের কোন সমালোচনা তারা সহ্য করে না । এমনকি আল্লাহর সমালোচনা করেও পার পেয়ে যাওয়া সম্ভব কিন্তু মোহাম্মদের সমালোচনা করে সম্ভব নয় ।

মৃত্যুর শত শত বছর পরে কারো মানসিক অবস্থার পুরোপুরি বিস্তারিত বর্ণনা তৈরী করা অসম্ভব । তবে আমার উদ্দেশ্য এখানে প্রেসক্রিপশন দেয়া নয়, বরং দ্বীনের নবিকে গভীরভাবে বুঝা । মোহাম্মদের জীবন ও বাণী নিয়ে বিস্তারিতভাবে সংকলিত প্রচুর পরিমাণ তথ্য আছে । এইসব বর্ণনার বেশিরভাগই ফুলানো ফাঁপানো এবং অতিরঞ্জিত । বিশ্বাসীরা তাদের নবীকে নিয়ে অতিরঞ্জিত গালগল্প ছড়াবে, মোজেজার কাহিনী বানাবে, তাকে সাধু সন্তের পর্যায়ে নিয়ে যাবে এই-ই স্বাভাবিক । তবে, মোহাম্মদের জীবনে আমরা এমন কিছু বর্ণনা পাই যেগুলো থেকে তার পবিত্র ছবির বদলে বরং হিংস্র, বেপরোয়া, ধূর্ত এমনকি যৌনবিকৃত একজনের ছবিই ভেসে আসে । নিজেদের নবীর নামে মিথ্যা অপবাদ দেয়ার কোন কারণ নেই বিশ্বাসীদের । যারা তার সাথী ছিলো যারা তাকে পছন্দ করতো তাদের কাছ থেকেই যেহেতু এই ধরণের তথ্য আছে বিপুল পরিমাণে, অতএব এই ধরণের বর্ণনাগুলো সত্য হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি ।

যেসব হাদিস বিভিন্ন জনের জবানীতে বার বার এসেছে সেগুলোকে বলা হয় “মুতাওয়াত্তির” । এই হাদিসগুলো নানান জবানীতে অনেকগুলো সূত্র থেকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এসেছে । বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন অঞ্চল এবং মানসিকতার এতগুলো লোক একত্র হয়ে কিছু মিথ্যা বানিয়ে নবীর নামে ছড়াবে একথা অনেকটাই অসম্ভব ।

এই গল্পগুলো যেগুলোকে হাদিস বলা হয় এবং মুসলিমদের বিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহর পরম বাণী কোরানের সাহায্যে আমরা চেষ্টা করবো মোহাম্মদের মনের ভিতরে ঊঁকি দেয়ার জন্য আর বুঝার চেষ্টা করবে সে যা করেছিলো তা কেনো করেছিলো । বেশ কিছু মনোবিজ্ঞানী এবং মনোচিকিৎসকের মতামত ও তত্ব উপস্থাপন করে আমি সেগুলোর সাথে মোহাম্মদ যা যা করেছিলো তার যোগসূত্র মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করবো । যেসব বিশেষজ্ঞের কথা আমি ব্যাবহার করতে যাচ্ছি এরা সবাই দক্ষ এবং পেশাদার মনোসমীক্ষক । তাদের বর্ণনার বেশিরভাগ অংশই এখন সাধারণ জ্ঞান বলে বিবেচিত এবং এই পেশার বেশীরভাগ বিশেষজ্ঞই এসব তত্ব ও মতামতের সাথে সম্মত ।

এই বই যতটা না ১৪০০ বছর আগের একজন মানূষের মনোসমীক্ষণের চেষ্টা , তার চাইতে বেশি হলো তার রহস্য উম্মোচনের চেষ্টা । যারা মোহাম্মদের গালগল্পে বিশ্বাস করে সেগুলোকে যৌক্তিকভাবে যাচাই করতে চায় না তাদের কাছে মোহাম্মদ এক বিশাল হেঁয়ালির নাম । তার কাজকারবার খুবেকটা সুবিধার ছিলো না কিন্তু যতটুকু বুঝা যায় তা থেকে মনে হয় সে নিজে তার যৌক্তিকতায় সৎভাবেই বিশ্বাস করতো । এত বিদ্বেষপূর্ণ, বেপরোয়া আর এবং বিবেকবর্জিত একজন মানুষ কিভাবে শুধু তার সঙীসাথীরা নয় বরং শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে কোটি কোটি মানুষকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতে পারে ।

মিখায়েল হার্ট তার “পৃথিবীর ইতিহাসে সবচে প্রভাবশালী ১০০ জন” মোহাম্মদকে রেখেছেন সবার প্রথমে । তার পরে ছিলেন আইজাক নিউটন, জেসাস, গৌতম বুদ্ধ, কনফুসিয়াস, সেইন্ট পল প্রমুখ । হার্টের বইয়ে অবশ্য এই প্রভাবশালীদের প্রভাব কি সুপ্রভাব না কুপ্রভাব এই বিষয়ে কোন বাছবিছার নেই । কারণ তার তালিকায় অনেক অত্যাচারীর নাম ও আছে, যেমন, এডলফ হিটলার, জোসেফ স্তালিন, মাও সে তুং । এই তালিকায় এমনকি নিকোলো ম্যাকিয়াভ্যালির নামও আছে । কিভাবে মোহাম্মদের মত এমন মানবতা-বিবর্জিত একজন পৃথিবীর ইতিহাসের সবচে প্রভাবশালী ব্যক্তি হয় ? এই বইয়ে আমরা দেখবো কিভাবে এই প্রশ্নের উত্তর মূলত মোহাম্মদ কি ছিলো তার চাইতে মানব মনের কার্যপ্রণালী কেমন তার উপর বেশি নির্ভর করে ।

ইসলামের মত আর কোন মতবাদ নিয়ে এত বেশি রক্তপাত হয় নি । কিছু কিছু ঐতিহাসিকের মতে ইসলামের তরবারী দিয়ে কেবল ভারতবর্ষেই গণহত্যার স্বীকার হন ৮ কোটি মানুষ । এছাড়াও পারস্য , মিশর এবং আরো যেসব দেশে লুটতরাজ মুসলিমরা হামলা চালিয়েছিলো সেখানেও হত্যার স্বীকার হন কোটি কোটি মানুষ । ইসলাম যখন ঐসব দেশে প্রথম প্রবেশ করে তখনও এবং তার শত শত বছর পরেও । এই রক্তপাত এখনো থামেনি ।

মুসলিমরা মাঝে মাঝে গাল বড় করে বলে , “তোমরা জীবনকে যতটা ভালোবাসো, আমরা মৃত্যুকে ভালোবাসি তার চাইতেও বেশি ।” সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হাজার হাজার সন্ত্রাসী হামলা করে তারা এই কথা প্রমাণ করে চলেছে । একজন লোক কিভাবে এতগুলোর লোকের উপর এমন প্রভাব ফেলতে পারে যে তারা তার জন্য হাসতে হাসতে মৃত্যুবরণ করে এমনকি নিজেদের সন্তান সন্ততিকেও তার জন্য উৎসর্গ করতে দ্বীধা করে না । কেন বর্তমান দুনিয়ার নব্বই সংঘাতের সাথে কোন না কোনভাবে মুসলিমরা জড়িত , অথচ গোটা দুনিয়া জনসংখ্যার মাত্র শতকরা ২০ ভাগ মুসলিম । পরিসংখ্যানের হিসাব নিকাশ অনুযায়ী এর অর্থ দাঁড়ায় জাতি হিসেবে অন্য যেকোন ধর্মের লোকদের চাইতে দ্বন্দ নিরসনে সহিংসতায় জড়ানোর সম্ভাবনা ৩৬ গুন বেশি মুসলিমদের । এ এক বিশাল পার্থক্য যেখানে মুসলিমদের ধারে কাছেও কেউ নেই । কিভাবে সম্ভব এটা ?

এই রহস্য সমাধানে এই বইয়ে দুইটি তত্ত্ব পাওয়া যাবে । প্রথমটি হচ্ছে মোহাম্মদ অসুস্থ আত্নপ্রেম রোগে ভুগতো , আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে টেমপোরাল লোবের ঝামেলার কারণে সৃষ্ট মৃগীরোগে ভুগতো সে । আরো অনেক ধরণের মানসিক অসুস্থতার কথা অনুমান করা যায় বিভিন্ন হাদিসের বর্ণনা থেকে । তবে এই দুটি রোগের মাধ্যমেই মোহাম্মদের পুরো জীবনির ব্যাখ্যা দেওয়া যায় । প্রচুর পরিমাণের তথ্যপ্রমাণ দিয়ে এই বইয়ে প্রমাণ করা হবে যে মোহাম্মদ ছিলো মানসিক রোগী । যদিও সে তার নিজের সত্যতায় বিশ্বাস করতো এবং নিজের দাবীর প্রতি নিজে সৎ ছিলো, কিন্তু সে মূলত সত্য ও কল্পণার মধ্যে পার্থক্য করতে পারতো না । তার সমসাময়িক অনেকে যারা তাকে ভালোভাবে চিনতো তারা তাকে বলতো ‘মজনুন’ , অর্থাৎ পাগল, অপ্রকৃতিস্থ বা জ্বীনে ধরা । দুর্ভাগ্যক্রমে মোহাম্মদের বিপুল দাপটের মুখে তারা হার মানতে বাধ্য হন এবং তাদের স্থিতধী কথাবার্তাকে থামিয়ে দেয়া হয় । মানব মস্তিষ্ক নিয়ে নতুন নতুন আবিষ্কার সেইসব লোকেদের কথাকে নবজীবন দিয়েছে । তবে আমাদের মনে রাখতে হবে অসুস্থ আত্নপ্রেমী রোগী খুব ভালোভাবেই জানে সে মিথ্যা বলছে, কিন্তু তবু সে নিজেই প্রথম তার নিজের মিথ্যা কথা বিশ্বাস করে ।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে দেখা - ১৩ মে

লিখেছেন জোবাইর, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:০৩

১৩ মে ২০০৬


দমননীতির অদ্ভুত কৌশল
সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমন নীতির আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্রুত বিচার আইন ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে দমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×