somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঐ ব্যাটা নাস্তিকের প্রশ্নের উত্তর। ৬ দিনে মহাবিশ্ব সৃষ্টির বর্ননা।

১৬ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আল কোরানের সিজদা সুরার আয়াত ৮ থেকে ১৩ নং আয়াত নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করা হলো অন্য এক লেখায়। সুরা সিজদার আয়াত গুলো অনুসারে মহাবিশ্ব সৃষ্টির বর্ননা আমি এ লেখাটাতে প্রকাশ করলাম।



“বলুন, তোমরা কি তাঁর সাথেই কুফারী করবে। যিনি যমীন সৃষ্টি করেছেন দু’দিনে এবং তোমরা কি তাঁর সমকক্ষ তৈরী করছ? তিনি সৃষ্টিকুলের রব্ব্!” আয়াত ৯
এ আয়াতটি আপনাদের বলা হচ্ছে কারন যারা স্রষ্টার বিপক্ষে বিজ্ঞানকে দাড় করাচ্ছে। মানুষেরই সৃষ্টি বিজ্ঞানকে মানুষেরই দেবতা বানায়ে দিচ্ছেন। আয়াতটিতে দুটি দিনের বর্ননা করা হচ্ছে।
১ম ইওম বা দিন : ১৩.৫ বিলিয়ন বছর আগে বিগ ব্যাংয়ের সংঘটন। এর মাধ্যমে বস্তু ও শক্তি অস্তিত্ব লাভ করে। বিজ্ঞানের মতে সৃষ্টির শুরুতে এই মহাবিশ্ব ক্ষুদ্র একক বিন্দুর মত ছিল এবং কোন অন্তর্বস্তু ছিল না, অর্থাৎ সৃষ্টির শুরু হয়েছিল শুন্যতা বা অনস্তিত্ব থেকে। (২:১১৬), (২:১১৭) ও (২০:৩০) ইত্যাদি আয়াতগুলো পর্যালোচনা করলে এই ইংগিত পাওয়া যায় যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এর মাঝে যা কিছু আছে সবই সর্বশক্তিমান আল্লহতায়ালার অসীম শক্তির মাঝে বিলীন ছিল এবং তাঁরই একান্ত অনুগত ছিল। (৫১:৪৭) নং আয়াতে দেয়া তথ্য অনুসারে যেহেতু সকল শক্তির আধার আল্লাহ মহান স্রষ্টা, সুতরাং শক্তি থেকেই যে সৃষ্টির শুরু হয়েছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর বিজ্ঞানও অর্থাৎ অপেক্ষবাদ এবং কণাবাদী বলবিদ্যা শক্তি থেকে বস্তু সৃষ্টি অনুমোদন করে। মহান আল্লহতায়ালা যখন সৃষ্টিকে অস্তিত্বে আনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তখন থেকেই অর্থাৎ সেই অসীম শুন্যতা বা অনস্তিত্ব (২:১১৭) বা বস্তুহীন পরিবেশে কোন এক অজ্ঞাত ক্ষণে সৃষ্টিকালীন সময়ের ( ১ম ইওম বা দিনের ) সূচনা ঘটে। (৫১:৪৭) নং আয়াতে সামা- আ বলতে সম্ভবত এমন এক আকাশকে বোঝান হয়েছে যে আকাশ শুধুমাত্র বলবাহী মৌল-কণিকা দ্বারা ভরপুর ছিল এবং ডাইমেনশন বা মাত্রাগত পার্থক্য না থাকায় সেই আদি একক আকাশে কোন স্তর-ভেদ ছিল না। ফলে সপ্ত-আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির আদি পর্যায়ে একক আকাশ রূপে একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল। পরবর্তীতে মহান আল্লাহতায়ালা তাঁর অসীম ক্ষমতাবলে সেই একক আকাশকে মহাসমপ্রসারীত করেন এবং ডাইমেনশন বা মাত্রাগত ছকে সাজিয়ে পৃথিবী ও সপ্ত-আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেন। আমরা হয়ত সৃষ্টিকে অস্তিত্বে আনার ক্ষণটি অর্থাৎ ভরবাহী মৌল কণিকা গঠনের ক্ষণটিকে সঠিকভাবে খুঁজে পাবার সামর্থ রাখি। কিন্তু মহাবিশ্ব সৃষ্টির ক্ষেত্রে বস্তুহীনতা বা অনস্তিত্ব বা চরম শুন্যতার একটা পর্যায় ছিল এবং সেই অসীম শুন্যতায় শুধু অসীম শক্তি বিরাজমান ছিল। এভাবে যে কতটা সময় অতিবাহিত হয়েছে তা সঠিকভাবে নিরুপণ করা কখনই সম্ভব নয়। কারন আমাদের জীবন ও পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা স্থান ও কালের যে মাত্রা বা ডাইমেনশনের বেড়াজালে আবদ্ধ, সৃষ্টিকালীন আদি বা প্রাথমিক পর্যায়টি ছিল সেই মাত্রা বা ডাইমেনশন বহির্ভূত ঘটনা। কারণ তখন স্থানের কোন অস্তিত্ব ছিল না। সুতরাং মহাবিশ্ব সৃষ্টির আদি পর্যায়ের ঘটনাচক্র ও আদি কাল বা সৃষ্টি শুরুর সময় সম্পর্কে আমরা অনুভবের আলোকে কিছুটা ব্যাখ্যা করতে পারলেও পূংখ্যাণুপূংখভাবে বিশ্লেষণ করা সত্যিই অসম্ভব।

উপরের আলোচনা থেকে বুঝে নেয়া যায় যে, সৃষ্টিকে অস্তিত্বে আনার ইচ্ছা থেকে কোন এক অজ্ঞাত সময়ে সৃষ্টিকালীন ১ম-ইওম বা দিনের সূচনা ঘটে এবং তখন আল্লাহতায়ালার ইচ্ছায় একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মহাশক্তি অর্থাৎ (২৪:৩৫) জ্যোতির উপর জ্যোতি সম্ভবত প্রচন্ডতম তাপশক্তি একটি নির্দিষ্ট সময়কাল ব্যাপী প্রয়োগের ফলে বিভিন্ন পরিবর্তন ও প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ বলবাহি মৌল কণিকাগুলো ( গ্লুয়ন, ফোটন ইত্যাদি ) (২:১১৬) সম্মিলিতভাবে ঘনিভূত ও তরলিত শক্তিরূপে বিরাজ করছিল। বিজ্ঞানের বর্ণনায় আমরা দেখেছি যে, বলবাহী মৌল কণিকাগুলো অপবর্জন নীতি ( Exclusion principle ) মানে না। আর যে কণিকাগুলো অপবর্জন নীতি মানে না তারা সবাই চুপসে মোটামুটি একরকম ঘন একটি স্যুপ ( Soup = hot, dense plasma) তৈরী করে। সুতরাং সৃষ্টিকালীন প্রাথমিক পর্যায়ে কল্পিত বলবাহী মৌল কণিকাগুলো অপবর্জন নীতি বিবর্জিত অবস্থায় উত্তপ্ত, ঘনিভূত ও তরলিত (hot, dense plasma) শক্তিরূপে একটি নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে আবদ্ধ ছিল এবং তখন (১১:৭) সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহতায়ালার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা (আরশ) সেই স্যুপ অর্থাৎ উত্তপ্ত, ঘনিভূত ও তরলিত গন্ডিবদ্ধ শক্তির (পানির) উপর নিবদ্ধ ছিল। সৃষ্টির আদি পর্যায় থেকেই যে এই মহাবিশ্বে পানির উপস্থিতি ছিল (১১:০৭) নং আয়াতটি সেই সাক্ষীই বহন করছে। এভাবে একটি নির্দিষ্ট সময় ( অতি ক্ষুদ্র বা বৃহৎ কাল ) অতিবাহিত হবার ফলে *[ দূর্বল কেন্দ্রকীয় বলের ( Weak neuclear force ) উদ্ভব হবার পূর্বে ]* বলবাহী মৌল কণিকাসমূহের মধ্যে পারস্পরিক অভিক্রিয়া শুরু হয় এবং ১ম-ইওম বা দিনের সমাপ্তি ঘটে।

২য়-ইওম বা দিন সৃষ্টিকালীন ১ম-দিনের সমাপ্তির সাথে সাথে ৯ বিলিয়ন বছর আগে বলবাহী মৌল কণিকাগুলোর মধ্যকার পারস্পরিক অভিক্রিয়া শুরুর ক্ষণ থেকে ২য়-ইওম বা দিনের সূচনা ঘটে এবং একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মহাশক্তি ( নিয়ন্ত্রিত তাপশক্তি+বলবাহী মৌল কণিকাসমূহের মধ্যকার পারস্পরিক অভিক্রিয়া ) একটি নির্দিষ্ট সময়কাল ( ২য় দিন ) ব্যাপী প্রয়োগের ফলে দূর্বল কেন্দ্রকীয় বলের ( Weak nuclear force ) উদ্ভব ঘটে। এই বলের প্রভাবে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ ভরবাহী মৌল কণিকা ( কার্ক, নিউট্রিনো ইত্যাদি ) সৃষ্টি করা হয়। যেহেতু বিজ্ঞানের বর্ণনায় আমরা দেখেছি যে, অর্ধেক চক্রণ বিশিষ্ট কণিকা অর্থাৎ ভরবাহী মৌল কণিকাগুলো দিয়ে পৃথিবীর সমস্ত পদার্থ গঠিত হয়েছে। সুতরাং (৪১:৯) নং আয়াত অনুসারে সৃষ্টিকালীন দুই দিনে অর্থাৎ ১ম ও ২য় দিনের ( দুটি নির্দিষ্ট সময়েয় ) পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তন ও প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অর্ধেক চক্রণ বিশিষ্ট ভরবাহী মৌল কণিকা যেমন কার্ক, নিউট্রিনো ইত্যাদি সৃষ্টির ক্ষণ থেকেই পৃথিবী সৃষ্টির ভিত্তি বা সূচনা ঘটে।

এবার আমি সুরা সিজদার ১০ নং আয়াতের ব্যাক্ষা দিচ্ছি। শোনেন.......।
“আর তিনি স্থাপন করেছেন অটল পর্বতমালা ভূপৃষ্ঠে এবং তাতে দিয়েছেন বরকত এবং চার দিনের মধ্যে এতে খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন সমভাবে যাচ্ঞাকারীদের জন্য।”
এই আয়াতের ব্যাক্ষা আপনাকে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আপনি যথেষ্ট বোঝেন। তারপরও আপনাকে বলতে হবে কারন আপনি নাস্তিক। নীহারিকা মতবাদে পৃথিবী বা জমিন সৃষ্টি হলেও মেঘ বায়ুমন্ডল সমস্তটাই এক ঐক্যবদ্ধ ছিলো। ঐক্যবদ্ধতার মধ্যদিয়েই পবর্ত সৃষ্টি হতে থাকে ভুকম্পন অনুভূত হয়। পর্বত সৃষ্টির কারণ হলো ভূ-ত্বকের শিলারাশিতে প্রবল পার্শ্ব চাপ। তবে এই পার্শ্ব চাপের উদ্ভব ঠিক কিভাবে ঘটেছে সেই সম্পর্কে অবশ্য ভূ-ত্ত্ববিদগণের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। এই সম্পর্কিত প্রধান প্রধান ধারণাগুলো হলোঃ উত্তপ্ত পৃথিবীর শীতলতা লাভের সময় এর শিলাসমূহের গাঠনিক ও ভৌতগুণাবলীর ভিন্নতার কারণে কোনো কোনো শিলা বা স্থান অধিক দ্রুত শীতল হলেও এর পার্শ্ববর্তী শিলা বা স্থানগুলো তখনও উত্তপ্ত অবস্থায় থাকার ফলে তাদের মধ্যে একপ্রকার টানের সৃষ্টি হয়; যার ফলে এধরনের স্থানগুলোতে অসমান ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়। আলফ্রেড ওয়েগনার তার ভাসমান ভূ-ভাগ বিষয়ক ধারনায় এই মতবাদ ব্যক্ত করেন যে, পৃথিবীর প্রধান প্রধান প্লেটগুলো সর্বদা সচল থাকার ফলে যখন সেগুলো পরস্পর সন্নিকটবর্তী হয় ভূ-ভাগ প্রবল চাপে উথ্খিত ও অবনত হয়ে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি করে। তাছাড়া পৃথিবীর অন্তর্জাত শক্তির ফলে সৃষ্ট টান বা প্রসারন এবং সংকোচন বা পার্শ্বচাপের ফলে ভূত্বকে যে ফাটল বা চ্যুতির সৃষ্টি হয় সেই ফাটল বা চ্যুতি বরাবর ভূত্বকের কোন একটি অংশ উপরে উঠে গিয়ে বা পার্শ্ববর্তী অংশ নিচে বসে গিয়েও পর্বতের সৃষ্টি হয়। এই পর্বত সৃষ্চির কালে জমিনের অভ্যন্তস্থ মেঘমা পৃথিবীর অভ্যন্তরে ক্রীয়া বিক্রীয়া ঘটাতে থাকে। তারা ভূমীর অভ্যন্তরস্থ জমাট বাধলেও ভূমীর অভ্যন্তর থেকে বেরেোতে পারে নাাই। পর্বত সৃষ্টির সাথে বরকত শব্দটির অর্থ কি বুঝলেন বিভিন্ন খনিজ সম্পদ যা ভুমীর অভ্যন্তরে এবং পবর্তময় সৃষ্টি হয়েছিলো। ভূমীর অভ্যন্তরে এমন কিছু উপাদান ছিলো যা পৃথিবীতে প্রাণ উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছিলো। জমিনের অভ্যন্তরে এমন কোন ব্যপক চাপ সৃষ্টি করতে পারে নাই যাতে পৃথিবীময় অগ্নুৎপাত ঘটবে। আর এই ব্যপক তাপ ও চাপের কারনে ভূমীর অভন্তরে সৃষ্টি হতে থাকে উদ্ভিদ জাতীয় প্রান ও প্রাণ সৃষ্টির বিভিন্ন উপকরণ যা পরবতীর্তে প্রাণ সৃষ্টিতে ভূমীকা রেখেছে এই প্রাণ সৃষ্টির উপাদানকে খাবার বলে অভিহিত করা হয়েছে।

“অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন, যা ছিল ধূম্রপুঞ্জবিশেষ। অতঃপর তিনি ওকে (আকাশকে) ও পৃথিবীকে বললেন, ‘তোমরা উভয়ে ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এস।’ ওরা বলল, ‘আমরা তো অনুগত হয়ে আসলাম” আয়াত নং ১১
“তারপর তিনি দু’দিনে আসমানসমূহকে সাত আসমানে পরিণত করলেন। আর প্রত্যেক আসমানে তার কার্যাবলী ওহীর মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন। আর আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপমালার দ্বারা সুসজ্জিত করেছি আর সুরক্ষিত করেছি। এ হল মহা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞের নির্ধারণ।” আয়াত নং ১২

১১ নং আয়াতে আপনি আসমান বলতে সুর্য গ্যালাক্সি এসব বুঝলেন কেনো আমি বুঝলাম না? আল কোরানে আসমান বলতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে বোঝানো হয়েছে। কোথাও আসমান জমিন বলতে শক্তি ও বস্তু মিনিং করা হয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে আসমান বলতে বায়ুমন্ডল বোঝানো হয়েছে। ঠিক এরকমই একটি আয়াত আছে আলকোরানে এই আয়াতটির সাপেক্ষে। এরপর সুরা আম্বিয়ার ৩২ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে , ⦁ وَجَعَلْنَا السَّمَاءَ سَقْفًا مَحْفُوظًا ۖ وَهُمْ عَنْ آيَاتِهَا مُعْرِضُونَ ⦁“ আর আমি আকাশকে করেছি সুরক্ষিত ছাদ, কিন্তু এ সবের নিদর্শন থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়। ” এখন এই আয়াতে উল্লিখিত একটি শব্দ পাওয়া যাচ্ছে যেটা হচ্ছে ( سَقْفًا ) সাক্কফান । এই শব্দের দুটি অর্থ আছে সেই দুটি অর্থ নিম্নরূপঃ ⦁ ছাদ , চাল , ছাউনি ⦁ আচ্ছাদান , আবরণ । প্রথমেই বলে নেয়া ভালো যে , এখানে সুরক্ষিত বলা হয়েছে একটি কারণে । এখন অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন যে , আকাশ কিভাবে সুরক্ষা প্রদান করে ? তাহলে এর উত্তর টা বেশ সহজ । প্রথমেই বলে নেয়া ভালো যে , এখানে সুরক্ষিত বলা হয়েছে একটি কারণে । অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন যে , আকাশ কিভাবে সুরক্ষা প্রদান করে ? এর উত্তর টা বেশ সহজ । আমরা জানি আকাশকে বিজ্ঞানীরা বেশ কিছু স্তরে ভাগ করেছেন এইসকল স্তরগুলো হচ্ছে , ⦁ ট্রপোস্ফিয়ার Troposphere) ⦁ স্ট্রেটোস্ফিয়ার (Stratosphere) ⦁ ওজোন স্তর ( Ozone Layer ) ⦁ মেসোস্ফিয়ার (Mesosphere)
⦁ থার্মোস্ফিয়ার(Thermosphere) ⦁ আয়নোস্ফিয়ার(Ionosphere) ⦁ এক্সোস্ফিয়ার( Exosphere) ( সূত্রঃ উইকিপিডিয়া ) ।
এখন প্রশ্ন হল এইসকল স্তর কিভাবে পৃথিবীকে সুরক্ষতি রাখবে ? আসলে স্তরসমূহ পৃথিবীর জন্য ঢালের ( Shield ) এর মত কাজ করে । এই স্তরের মধ্যে ওজোন স্তর (Ozone layer) হচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের একটি স্তর যেখানে তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় ওজোন গ্যাস থাকে। এই স্তর থাকে প্রধানতঃ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিচের অংশে, যা ভূপৃষ্ঠ থেকে কমবেশি ২০-৩০ কি:মি: উপরে অবস্থিত । বায়ুমণ্ডলে ওজোনের প্রায় ৯০ শতাংশ স্ট্রাটোস্ফিয়ারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওজোনস্তরে ওজোনের ঘনত্ব খুবই কম হলেও জীবনের জন্যে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি এটি শোষণ করে নেয়। ওজোন স্তর সূর্যের ক্ষতিকর মধ্যম মাত্রার(তরঙ্গদৈর্ঘ্যের) শতকরা ৯৭-৯৯ অংশই শোষণ করে নেয়, যা কিনা ভূ-পৃষ্ঠে অবস্থানরত উদ্ভাসিত জীবনসমূহের সমূহ ক্ষতিসাধন করতে সক্ষম। ঠিক এভাবে বিভিন্ন স্তর আকাশের অর্থাৎ এককথায় আকাশ পৃথিবীকে সুরক্ষিত করে রেখেছে। আচ্ছাদিত করে । এই আয়াত দ্বারা আমরা বুঝলাম আকাশ বলতে বায়ুমন্ডল যা মানুষকে ছাদ হিসেবে রক্ষা করছে মহাকাশের বিভিন্ন রে থেকে। বায়ুমন্ডলই হচ্ছে েএকমাত্র ব্যাক্ষা।



“অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন, যা ছিল ধূম্রপুঞ্জবিশেষ। অতঃপর তিনি ওকে (আকাশকে) ও পৃথিবীকে বললেন, ‘তোমরা উভয়ে ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এস।’ ওরা বলল, ‘আমরা তো অনুগত হয়ে আসলাম” পুথিবীর বায়ুমন্ডল এবং পানি যা অক্সিজেন হাইড্রোজেন গ্যাস রুপে পৃথিবীর সাথে সাথেই গতিময় ছিলো। পৃথিবী নামক উত্তপ্ত গ্রহ সাথে ধুম্রপুঞ্জ রুপে গ্যাসিয় বায়ুমন্ডল দুটিকে আল্লাহ এক ও ঐক্যবদ্ধ করার বাসনা করলেন। সৃষ্টি করলেন বায়ুমন্ডলের ৭ টি স্তর। এবং মেঘমালা। যা পৃথিবীর সাথে এক ঐক্যবদ্ধ একটি সিষ্টেমে পরিনত করলেন। এবার লক্ষ্য করুন 12 নং আয়াতের পরবর্তী অংশ“

আর আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপমালার দ্বারা সুসজ্জিত করেছি আর সুরক্ষিত করেছি। এ হল মহা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞের নির্ধারণ।” আয়াতের এই অংশটুকু নিয়েও দেখলাম হাসাহাসি করেছেন। আসলে অংশটুকু বোঝার চেষ্টা করেন নাই। এই সুসজ্জিতি প্রদীপমালা তিনি কিভাবে সৃষ্টি করলেন? আসলে বিষয়টি বোঝেন। পৃথিবীর পাশ্ববর্তী একটি বৃহৎ সাইজের গ্রহ ছিলো যা অকস্মাৎ ভেঙ্গে টুকরা টুকরা হয়ে এস্টেরিয়েড বেল্টে পরিনত হলো। যা পৃথিবীর মতো ঘুরতে থাকলো। আমি আল কোরানের আরেকটি আয়াত দ্বারা প্রমান করার চেষ্টা করি।



“আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করিয়াছি প্রদীপমালা দ্বারা এবং উহাদেরকে করিয়াছি শয়তানের প্রতি নিক্ষেপের উপকরণ এবং উহাদের জন্য প্রস্তুত রাখিয়াছি জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তি” । সিুরা মূলক আয়াত নং ৫।আরবী এবং ইংরেজীতেও তুলে ধরলাম।
وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِّلشَّيَاطِينِ ۖ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ
And we have, (from of old), adorned the lowest heaven with Lamps, and We have made such (Lamps) (as) missiles to drive away the Evil Ones, and have prepared for them the Penalty of the Blazing Fire.
খুবই প্রাঞ্জল ভাষায় একটি কথা বলা আছে। যার মধ্যে লুকিয়ে আছে ব্যপক বৈজ্ঞানিক তথ্য। আল কোরআন বুঝলে তো কোন সমস্যা থাকে না।যার অর্থ দাড়ায় “আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করিয়াছি প্রদীপমালা দ্বারা এবং উহাদেরকে করিয়াছি শয়তানের প্রতি নিক্ষেপের উপকরণ এবং উহাদের জন্য প্রস্তুত রাখিয়াছি জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তি” । আল্লা আকাশে এমন কিছু উপকরন প্রদীপমালা রেখেছে যা শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপ করা যায়। এমনকি কোন উপকরণ নাই যা দিয়ে শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপ করা যায়? মনুষ্যরুপী শয়তানদের কথা বা ভূলে যাচ্ছেন কোনো? এ গুলো কি পৃথিবীতে আঘাত হানে নাই? এমন বহু সভ্যতা ধ্বংশ হয়েছে উল্কাপিন্ড বা গ্রহানুর আঘাতে। গ্রহানুর আঘাতে ফলে ভুমিকম্প সুনামি বহু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারনে বিলীন হয়ে গেছে মনুষ্য সভ্যতা!
১২ নং আয়াতে “ আর আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপমালার দ্বারা সুসজ্জিত করেছি আর সুরক্ষিত করেছি। এ হল মহা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞের নির্ধারণ।” তিনি আসমানকে প্রদীপমালা দিয়ে সজ্জিত করেছেরন বলেছেন আবার ১৩ নং আয়াতে বলা হচ্ছে। “এর পরেও যদি ওরা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে (ওদেরকে) বল, আমি তো তোমাদেরকে এক ধ্বংসকর শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করেছি; যেরূপ শাস্তির সম্মুখীন হয়েছিল আ’দ ও সামূদ;”। তাহলে আদ ও সামুদ জাতিকে ধ্বংশ করা হয়েছিলো গ্রহানুর আঘাতে যে গ্রহানু সৃষ্টি করার কথা তিনি বলেছিলেন প্রদিপমালা রুপে। আল কোরআনকে বুঝতে হবে। আল কোরআনের রুপক অর্থ বোঝার ক্ষমতা থাকতে হবে। আমি কি আপনাকে বোঝাতে পেরেছি? আপনি কি বুঝতে পারছেন সেই প্রদীপমালা কি যা শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপ করার জন্য সৃষ্টি করা! বুঝলেন না! হামীম সিজদার পরবর্তী আয়াত শয়তানের প্রতি নিক্ষেপের উপকরণ টা দিয়ে আদ ও সামুদ জাতিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিলো? বুঝলেন কি? আকাশে এমন কিছু প্রদীপমালা সৃষ্টি করেছেন যা দিয়ে পৃথিবীতে শয়তান দ্বারা প্রলুদ্ধ জাতি স্বত্ত্বা ধ্বংশ করে দেওয়া হয়।

আল কোরআনের এমন অসংখ্য জাতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যারা আল্লার ক্রোধে দ্বারা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারনে ধ্বংশস্তুপে পরিনত হয়েছে, বিলীন হয়েছে। আল কোরআনে বলা আছে “৭৩. সূর্যোদয়ের সময় মহানাদ তাদের আঘাত করে। “৭৪. অতঃপর আমি জনপদটিকে উল্টে দিলাম ও তাদের ওপর কঙ্কর বর্ষণ করলাম। ৭৫. নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শনাবলি রয়েছে। ৭৬. পথের পাশে ওই জনপদের ধ্বংসাবশেষ এখনো বিদ্যমান। (সুরা : হিজর)

শেষ হলো হামিম সিজদা সুরা আপনার নির্ধারিত আয়াত গুলো ব্যাক্ষা । এরপরও যদি আপনি না বোঝেন তাহলে আমি ভাববো আপনি হলেন সেই লোক যাকে আলকোরআনের ভাষায় মানসিক অসুস্থ অভিহিত করছে। আল কোরআন বলে তুমি তাকে যতই বোঝাতে চেষ্টা কর সে বুঝিবে না। কারন আমি তাকে দু চোখে পর্দা দিয়েছি দু কানে পর্দা দিয়েছি”।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:১০
৫২টি মন্তব্য ৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা লাস্ট ডিফেন্ডারস অফ পলিগ্যামি

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০


পুরুষদের ক্ষেত্রে পলিগ্যামি স্বাভাবিক এবং পুরুষরা একাধিক যৌনসঙ্গী ডিজার্ভ করে, এই মতবাদের পক্ষে ইদানিং বেশ শোর উঠেছে। খুবই ভালো একটা প্রস্তাব। পুরুষের না কি ৫০ এও ভরা যৌবন থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য: টিপ

লিখেছেন গিয়াস উদ্দিন লিটন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৫




ক্লাস থ্রীয়ে পড়ার সময় জীবনের প্রথম ক্লাস টু'এর এক রমনিকে টিপ দিয়েছিলাম। সলজ্জ হেসে সেই রমনি আমার টিপ গ্রহণ করলেও পরে তার সখীগণের প্ররোচনায় টিপ দেওয়ার কথা হেড স্যারকে জানিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বৈশাখে ইলিশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৪০



এবার বেশ আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে । বৈশাখ কে সামনে রেখে ইলিশের কথা মনে রাখিনি । একদিক দিয়ে ভাল হয়েছে যে ইলিশকে কিঞ্চিত হলেও ভুলতে পেরেছি । ইলিশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×