somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহাবিশ্বে পৃথিবীর অবস্থান রহস্যময় হেবিটেবল জোনে! এটা কি পরিকল্পনাকারীর পরিকল্পিত সৃষ্টি নয়?

২৯ শে জুন, ২০২২ রাত ৯:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হেবিটেবল জোন! শব্দটির সাথে যারা পরিচিত আছেন তারা হয়তো জানেন যে হেবিটেবল জোন শব্দটি একটি দুরত্ব ও অবস্থানকে বোঝায়্। অথাৎ বিজ্ঞানীরা যে কোন নক্ষত্রের জন্য একটি নির্দীস্ট দুরত্ব নির্ধারন করেন যে স্থানটিতে পানি তরল অবস্থায় থাকতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা ধারনা করেন। যে স্থানটির তাপমাত্রা স্বচ্ছ এবং একটি সুক্ষ সমন্মিত নিরাপদ বাসযোগ্য স্থান হিসেবে অনুমান করে থাকেন । বিজ্ঞানীরা সেই স্থানটির নামকরণ করেন “গোল্ডিলকস্ জোন” বা “হেবিটেবল জোন” । কোন নক্ষত্র থেকে ঠিক যতটুকু দুরত্ব প্রাণ বিকাশের জন্য প্রয়োজনে আমাদের সৌরজগত এবং সত্যি করে বলতে কি আমাদের পৃথিবী ঠিক সেই স্থানেই পড়েছে! এই রহস্যময় বিষয়টিকে কি আপনি আপনা আপনি বা দূর্ঘটনা বলেই চালিয়ে দিবেন?



স্যার মার্টিন রীস এর লিখিত জাস্ট সিক্স নাম্বার (Just Six Numbers) নামের এ্কটি বইতে উল্লেখ করেছিলেন “এই মহাবিশ্বের কতিপয় ধ্রুবক এর মান এমন কেনো? এতটাই রহস্যময় যে এই ধ্রুবকের মান এমন হওয়ার দরকার ছিলো! যদি এমন না হয়ে অন্যরকম হতো তবে এই মহাবিশ্বটাকে আমরা যেভাবে দেখছি সেভাবে হয়তো দেখা হতো না। ধ্রুবক গুলোর মান এমন না হলে প্রানের নান্দনিক স্পন্দন হতো না এই পৃথিবীতে!” স্যার মার্টিন রীস 114 টি ধ্রুবকের মধ্যে ৬ টি ধ্রুবককে খুব গুরুত্ব দিয়ে উল্লখ করেছেন।এই সকল বিষয়গুলো কেনো এমন হলো ! প্রশ্ন করলে উত্তর দেওয়া যায় না। একটি ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া যায় কিন্তু শত শত ধ্রুবক এর মান যখন রহস্যময় হয়ে ওঠে তখন তাকে কি আদৌ আকস্মিক বা দূর্ঘটনা বলা যায়?

এমনই একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় যেটি নিযে এখন আমরা আলোচনা করবো। সেটি হলো পৃথিবীর রহস্যময় অবস্থান। যেখানে আমাদের বসবাস হেবিটেবিল জোন বা গোল্ডিলক জোনে। আমাদের এই পৃথিবী সূর্য থেকে ১৪৭,৫৯৭,৮৭০,৭০০ মিটার অথবা ১৫ কোটি কিলোমিটার দুরে অবস্থিত থেকে সুর্যকে কেন্দ্র করে উপবৃত্তাকার পথে ঘুরছে।এই অবস্থানে পৃথিবীর থাকার কারনে যদি সৃষ্টির শুরুতে সূর্য থেকে পৃথিবীর দুরত্ব কিছুটা কম হতো বা কোন কারনে সূর্য থেকে পৃথিবী ১% কাছে অবস্থান করতো তাহলে এই পৃথিবী সূর্যের অত্যাধিক তাপ ও চাপের কারনে জ্বলে পুড়ে শুক্র গ্রহের রুপ ধারণ করতো। ফলে কখনই বায়ুমন্ডল সৃষ্টি হতো না। আর বায়ুমন্ডল সৃষ্টি না হলে কোনভাবেই এই পৃথিবীতে প্রাণ উতপাদন সম্ভব হতো না । শুধু বায়ুমন্ডল সৃষ্টি হওয়াই বড় কথা নয় অত্যাধিক তাপ ও চাপের কারনে পৃথিবীর অভ্যন্তরস্ত জল বাষ্প আকারে ধুমায়িত হয়ে মহাশুন্যে হারিয়ে যেতো । আর যদি পৃথিবী সূর্য হতে ১% দুরে অবস্থান করতো তাহলে সূযের তাপ ও চাপ এর অভাবে পৃথিবী হিম শীতল হয়ে মঙ্গল গ্রহের মতো তুষারাচ্ছন্ন হয়ে পড়তো । পৃথিবীর অভ্যন্তরস্ত জল ঠান্ডায় বরফে পরিনত হয়ে পড়তো ।ফলে তরল জল না থাকার কারনে এককোষি প্রাণিই উৎপাদিত হতো না বহুকোষি প্রাণিতো পরের কথা।এককথায় প্রাণ উতপাদনের প্রতিটি শর্ত্ই ভঙ্গ হতো।পৃথিবীর এই যথাযথ অবস্থানের কারনেই পৃথিবীতে তরল জল বিদ্যমান। আর তরল জল মানেই প্রাণ। The Astronomical Journal এর 1998 এর ১৯৯৮ সালের নভেম্বর মাসের সঙ্কলনে বলা হয় ‘Our basic finding is nevertheless an indication of the need for some sort of rudimentary "design" in the solar system to ensure long-term stability”

এবার আসুন আমরা আমাদের সৌরজগতের অবস্থান নিয়ে আলোচনা করি। আমাদের গ্যালাক্সিতে সৌরজগতের অবস্থান রহস্যময় স্থানে। নীচের চিত্রের দিকে লক্ষ্য করুন।



আমাদের অবস্থান নিয়ে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী কাল্ স্যাগান বলেছেন “আমরা কারা? আমরা বুঝতে পেরেছি, আমরা বাস করি একটি গ্যালাক্সির সীমান্তে দুটি সর্পিলাকার বাহুর মাঝে হারিয়ে যাওয়া এক গতানুগতিক নক্ষত্রের এক সামান্য গ্রহে। যার থেকে বহুদুর পর্যন্ত রয়েছে মানব সংখ্যার চেয়েও অধিক সংখ্যক গ্যালাক্সি।” – কসমস । কাল স্যাগান আমাদের সুর্যের অবস্থানকে হারিয়ে যাওয়া নক্ষত্র বলে অভিহিতে করেছেন। গ্যালাক্সির মধ্যবর্তী কেন্দ্র থেকে যথেষ্ট দুরবর্তী স্থানের স্বল্প তাপমাত্রায় এলাকায় অবস্থিত বলেই কাল স্যাগান তাকে হারিয়ে যাওয়া অবস্থান বলেই অভিহিত করেছেন। গ্যালাক্সি জুড়েই চালিদিকে নক্ষত্র আর নক্ষত্র। একটির গায়ে আরেকটি নক্ষত্র সজ্জিত। উজ্জলতা ও তাপমাত্রা এতটাই ব্যাপক যে সেই সকল স্থানের প্রচন্ড তাপমাত্রা কোনভাবেই কোন গ্রহের হেবিটেবল জোন সৃষ্টি করে প্রান উৎপাদন করা সম্ভব করে উঠতে পারতো না! অথচ পৃথিবীর অবস্থান স্বল্প তাপমাত্রার এমন একটি স্থানে যে স্থানটি প্রাণ উৎপাদনের উপযুক্ত স্থান। সুর্য থেকে অন্যান্য নক্ষত্রসমূহ যথেষ্ট দুরে অবস্থিত।সুর্য থেকে যে নক্ষত্রটি সবচেয়ে কাছে সেই নক্ষত্রটির নাম প্রক্সিমা সেন্টরাই।স্কটিশ জোতিবিদ রবার্ট আইনেস কম ভরের এই লাল বামন তারা আবিস্কার করেন যার সুর্য থেকে দুরত্ব প্রায় 4.23 আলোকবর্ষ । আধুনিক বিজ্ঞানের ধারনা আমাদের সৌরজগতের পার্শ্ববতী কোথাও যদি কোন নক্ষত্র অবস্থান করতো তাহলে পৃথিবী প্রতি মূহুত্ব সুর্য থেকে যে পরিমান আলোক কনা বা ফোটন কনা গ্রহন করে আরেকটি নক্ষত্র অবস্থান করার কারনে ফোটন কনার পরিমান দ্বিগুন হতো ফলে পৃথিবী অত্যাধিক তাপ ও চাপের কারনে রাতের শীতলতা দিনের উঞ্চতাকে সমতার ভিত্তিতে শোষন করতে পারতো না, তাই দিন দিন পৃথিবীর উঞ্চতা বৃদ্ধি পেতো ফলে কখনই পৃথিবীতে প্রাণ উৎপাদনের পরিবেশ সৃষ্টি হতো না। যথেষ্ট দুরবর্তী স্থানে অন্য নক্ষত্র অবস্থান করায় পৃথিবী পর্যাপ্ত আলোক কনা শোষিত করতে পারে নাই।ফলে শিতলতা উঞ্চতার এক সুক্ষ সন্মময় পৃথিবীকে প্রাণ উৎপাদনের চারনভূমীতে পরিনত করতে পেরেছে। আধুনিক বিজ্ঞানের মতে আমাদের সৌরজগতের অবস্থান এতটাই পারফেক্ট যে ঠিক এই অবস্থানে আছে বলেই পর্যাপ্ত তাপমাত্রা ও পর্যাপ্ত উজ্জলতা হেবিটেবল জোন সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমীকা পালন করেছে। বিজ্ঞানীরা আমাদের সৌরজগত এবং গ্রহ উপগ্রহের একটি মডেল তৈরী করে দেখেছেন আমাদের সৌরজগতের প্রতিটি গ্রহ উপগ্রহের ভর এবং অবস্থান সুক্ষ পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্যর্পূন। আর এই ভর এবং অবস্থানের নিত্যতা ১৪০০ কোটি বৎসরের সৌরব্যবস্থার সাম্যতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমীকা পালন করে। নক্ষত্রবিদ্যা থেকে জানা যায় সৌরজগতের গ্রহ উপগ্রহের অবস্থান ও ভর এতটাই পারফেক্ট যে এই পারফেক্টনেসই পৃথিবীর বুকে প্রাণ উৎপাদনের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এই প্রসঙ্গ নিয়ে বিশিষ্ট বিশিষ্ট মহাকাশ বিজ্ঞানী জর্জ গ্রিনস্টেইন বলেন “ যদি তারকাগুলোর মধ্যবর্তী দূরত্ব কিছুটা কম হতো তবে astrophysics খুব একটা পরিবর্তন হতো না। পদার্থ বিদ্যার নিয়ম, যেসব নক্ষত্র, নেবুলা ইত্যাদির মধ্যে ক্রিয়াশীল সেসব ও খুব একটা পরিবর্তন হতো না। শুধুমাত্র ছোট খাট কিছু পরিবর্তন হতো। যেমন, রাতে ঘাসের মেঝেতে শুয়ে রাতের যে আকাশটা দেখি তা কিছুটা উজ্বল দেখাত। আর আরেকটি ছোট্ট পরিবর্তন হতো। তা হচ্ছে, রাতের এই আকাশ আরো উজ্জল দেখাত আর আরেকটি ছোট পরিবর্তন হতো তা হচ্ছে, রাতের এই উজ্জল আকাশ দেখার জন্য আমি বা আপনি কেউই থাকতাম না।”

আমাদের এই সৌরজগৎ ও সৌরব্যবস্থার উপর আমাদের পৃথিবীর নিরাপত্তার বিষয়টি নির্ভর করে। েএবং অন্যান্য গ্রহগুলোও পৃথিবীকে নিরাপত্তা দিচ্ছে। এবং তাদের অবস্থানের উপর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নির্ভরশীল। যেমন ধরি বৃহস্পতি গ্রহটি। বৃহস্পতি গ্রহটি যেনো সৌর পরিবারে মা এর মতো দায়িত্ব পালন করে চলছে। এই গ্রহটি এমন একটি অবস্থানে অবস্থান করছে যে এই গ্রহটির বর্তমান অবস্থান অন্যান্য গ্রহগুলোকে তাদের অবস্থানে থাকতে সাহায্য করছে। পৃথিবীর উপর বৃহস্পতি গ্রহের প্রভার এতটাই বেশি যে তার অবস্থানের উপর পৃথিবীর প্রাণ সৃষ্টির কৃতিত্ব নির্ভর করে। এই গ্রহটি যদি না থাকতো তবে পৃথিবীতে প্রাণ সৃষ্টির শুরুতেই তা ধ্বংশলীলাতে নিপতিত হতো। বৃহস্পতি গ্রহের সৃষ্ট চুম্বকীয় ক্ষেত্র উল্কা এবং ধূমকেতুগুলোর গতিপথ বদল করে আমাদের সৌরব্যবস্থার প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করে এবং আমাদের পৃথিবীকে এসব উল্কা এবং ধূমকেতুর হাত থেকে রক্ষা করছে। বৃহস্পতিগ্রহের আরেকটি গুরুত্¦পূর্ন কাজের কথা উল্লেখ করেন নক্ষত্রবিদ জর্জ ওয়েদারহিল তার How Special Jupiter Is” আর্টিকেলে তিনি বলেন “Without a large planet positioned precisely where Jupiter is, the earth would have been struck a thousand times more frequently in the past by comets and meteors and other interplanetary debris. If it were not for Jupiter, we wouldn't be around to study the origin of the solar system.”

এবার আসুন আমরা আমাদের মিল্কীওয়ে গ্যালাক্সির অবস্থান নিয়ে আলোচনা করি। আমাদের গ্যালাক্সি অবস্থান এমন একটি আশ্চযজনক অবস্থায় আছে যে বিষয়টি ভাবলেই থমকে যেতে হয় । নীচের চিত্রের দিকে লক্ষ্য করুন।



চারিদিকে গ্যালাক্সি ফিলামেন্টের ব্যাপক উজ্জল্যময়তার মাঝে ব্যপক স্থান জুড়ে রয়েছে একটি বিশাল শুণ্যস্থান । কালো মতো সেই ফাকা স্থানকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় কসমিক ভয়েড । ২০১৩ সালে নেওয়া পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে একটি গবেষণায় নিশ্চিত করা হয় যে পৃথিবীর ছায়াপথ, মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি একটি তথাকথিত মহাজাগতিক শূন্যতার (কসমিক ভয়েড) অংশ৷ এই শূন্যতাগুলি মহাবিশ্বের বৃহৎ আকারের কাঠামোর অংশ, যা দেখতে অনেকটা সুইস পনিরের একটি ব্লকের মতো, অপেক্ষাকৃত ফাঁকা অঞ্চলগুলির চারপাশে গ্যালাক্সিগুলির বিশাল সংগ্রহ ধারণকারী ঘন ফিলামেন্ট দ্বারা গঠিত। আমাদের পৃথিবী, সৌরজগৎ এবং গ্যালাক্সি কেবিসি নামক একটি কসমিক ভয়েড এর অভ্যন্তরে অবস্থিত।কসমিক ভয়েড এর মাঝে যে সকল গ্যালাক্সি থাকে তাদের পরিমান বা ঘনত্ব অত্যন্ত কম হয়ে থাকে। মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় ভয়েড বুটিস ভয়েড যা পৃথিবী থেকে হতে ৭০ কোটি আলোকবর্স দুরে অবস্থিত এতে মোট ৬০ টি গ্যালাক্সি খুজে পাওয়া যায়। এখানে গড়ে ১ কোটি আলোকবর্ষের ভিতরে মাত্র একটি গ্যালাক্সি পাওয়া যায যা স্বাভাবিক হতে অনেক কম।যেমন আমাদের পাশ্ববর্তী এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি প্রায় ২৫ লক্ষ আলোকবর্স দুরে অবস্থিত।তাহলে কেনো আমাদের গ্যালাক্সিটা ভয়েড বা শুন্যস্থানের মধ্যে সৃষ্টি হলো? এই প্রশ্নের উত্তরে আধুনিক বিজ্ঞানের উত্তর একেকটি গ্যালাক্সির এত বিশাল দুরত্ব বলেই আমাদের সৌরজগৎ এমন ফুলে ফলে সুন্দর বাসযোগ্য পৃথিবীকে উপহার দিতে পেরেছিলো।নইলে অত্যাধিক তাপ বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ার ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে উঠতো।

প্রিয় পাঠক, আমি পৃথিবীর অবস্থান তুলে ধরে বোঝানোর চেষ্ট করেছি কেনো আমাদের পৃথিবীর অবস্থান সৌরমন্ডলের এমন এক সুবিধাজনক স্থানে অবস্থিত হলো? যেখানে সুর্যের তাপ খুব বেশি নয় আবার খুব বেশি ঠান্ডার প্রকোপও নেই। যা জীবন ধারনের জন্য উপযুক্ত।এটা কি কোন মিরাকল নয়? কেনো সৃষ্টি এমন হলো? নাও তো হতে পারত? সৌরজগতের অবস্থান কি করে গানিতিক রুল মেনে স্বল্প তাপীয় অবস্থানে অবস্থিত হয়? আর আমাদের গ্যালাক্সিটাই বা কেনো তাপহীন একটি বিশাল ভয়েডের মাঝে অবস্থিত হলো? এগুলো কি মিরাকল নয়? আসলে আমরা স্রষ্টাকে যতই এড়িয়ে যেতে চাইছি স্রষ্টা ততই আমাদের সামনে তার অস্তিত্বকে প্রকাশ করে দিচ্ছেন।একটু গভীরে ভাবেন কিভাবে এই ব্রক্ষান্ডে সবকিছু এক নির্দিষ্ট প্যাটার্ন মেনে সুন্দর নিয়মে সাজানো গোছানো রয়েছে? যাকে বলে একবারে পারফেক্ট। বিগব্যাং এর পর থেকে মহাবিশ্ব সৃষ্টির প্রতিটি পর্যায়ে সুষ্ঠ পরিকল্পনার দ্বারা এই মহাবিশ্ব নিয়ন্ত্রিত। প্রতিটি পদক্ষেপই একটি নিয়ম দ্বারা নির্ধারিত। সুগভীর পরিকল্পনার ছাপ স্পষ্ট! কে যেনো গানিতিক নিয়ম সহ একটি রুল দিয়ে একটি মহাজাগতিক পান্ডুলিপিতে পূনাঙ্গ ভাবে পরিস্ফুটিত করে রেখেছে। একজন পরিকল্পনাকারীর অস্তিত্বকে আমরা এড়িয়ে গেলেই কি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব? এই সুজলা সুফলা পৃথিবীকে গড়ার জন্য এতটা হিসেব করে সৃষ্টির নান্দনিকতা শুরু করতে হয়েছে একটি উদ্দেশ্য নিয়ে। যদি সৃষ্টির ক্ষেত্রে স্রষ্টার যদি কোন উদ্দেশ্য না থাকতো তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই এতটা সুক্ষ সমন্ময় থাকতো ? তাহলে সেই উদ্দেশ্যটা কি? আধুনিক বিজ্ঞানের চুড়ান্ত কিছু গবেষনা প্রমান করে দিচ্ছে সেই উদ্দেশ্যটি হলো এই পৃথিবীর অবস্থিত প্রানীকূল নিদীষ্ট করে বললে “মানুষ” । বিগব্যাংগ এর সৃষ্টি হয়েছে একটি বাসযোগ্য পৃথিবীর জন্য, যা মানুষের বসবাসের উপযোগী। এই মানুষ সৃষ্টি করার জন্য সমগ্র মহাবিশ্বটাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সুপরিকল্পিত, নিয়মতান্ত্রিক ও নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এই জন্য বিশিষ্ট বিজ্ঞানী পল ডেভিস বলছেন: “এমন ধারণা মনে স্থান দেয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখা খুবই কঠিন যে, বিশ্বজগতের বিদ্যমান কাঠামো যা কিনা ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম পরিবর্তনের ব্যাপারের স্পর্শকাতর যত্নের সঙ্গে চিন্তা-ভাবনা করেই অস্তিত্বে আনা হয়েছে।”-(Paul Davies, God and the New Physics, New York: Simon & Schuster, 1983, p.189)

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০২২ রাত ১২:৪৭
১৩টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×