মহাবিশ্বটি কি সাউন্ড ইনফরমেশন? শব্দের তথ্য দ্বারা মহাবিশ্বটি কি সজ্জিত? অনেকদিন ধরে এই বিষয় নিয়ে লিখবো বলে ভাবছিলাম ।ষ্ট্রিং থিওরির কিছু বক্তব্য ইদানিং আমাকে এই বিষয় নিয়ে লিখতে উৎসাহ দিতেছিলো। কারন স্ট্রি থিওরির বক্তব্য শব্দ দ্বারা মহাবিশ্বের সকল তথ্য পরিব্যপ্ত। আমরা এই মহাবিশ্ব জুড়ে যা দেখি সবই শব্দের মায়াজাল? শব্দের বুননে এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি।মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু প্রতিটা পরমানু স্ট্রিং এর কম্পনের ফল। এই কম্পন বা কম্পনের ভিন্নতা ভিন্ন ভিন্ন কনা বা ভিন্ন ভিন্ন বস্তু সৃষ্টি করে। এই বস্তুুর সৃষ্টির সকল তথ্যও ষ্ট্রিং দ্বারা নির্ধারনকৃত।যদি তাই হয় তাহলে সৃষ্টির শুরুতে কোন একটি শব্দ উচ্চারিত হয়ে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হওয়া শুরু হয়েছিলো। আর সেই শব্দটিই সমগ্র মহাবিশ্বজুড়ে বিদ্যমান? হয়তো আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন যে আমি সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে শব্দ বা সাউন্ড ইনফরমেশন বলতে আসলে কি বোঝাচ্ছি? শব্দ বা কম্পন কি করে বস্তুর রুপায়ন ঘটাতে পারে। কিন্তু আসলে এমনটিই ঘটছে ষ্ট্রিং তত্বের গনিত ঠিক এমনটিই বলছে
বিজ্ঞান বস্তুর চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌছে গেছে সেখানে পাওয়া যাচ্ছে পরমানু । পরমানুর মাঝে আছে ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন।প্রোটন ও নিউটন কোয়ার্ক নামের কনিকা দিয়ে গঠিত আর ইলেকট্রন নিজেই একটি কনিকা। যেমন আমরা যদি কোন বস্তু একটি আপেলকে ভেঙ্গে টুকরো করতে থাকি তাহলে একসময় এসে পরমানুতে পৌছাবে । এবার এই পরমাণুকেও যদি আবার ভাঙ্গা হয় তাহলে ইলেকট্রন ও কোয়ার্কের মত মৌলিক কণিকা পাওয়া যাবে; যাদের আর ভাঙ্গা সম্ভব নয় ।পদার্থবিদ্যার প্রচলিত ধারনা অনুসারে এসব মৌলিক কণিকাদের আমরা মাত্রা-বিহীন বিন্দুর মত ভাবলেও এরা আসলে বিন্দু নয়, আমাদের দৃষ্টির সীমাবদ্ধতার কারণে এদেরকে আমরা বিন্দু হিসেবে দেখি ।যদি এদেরকে কোন সুপার মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে বহুগুণে বিবর্ধিত করা সম্ভব হয় (প্রায় বিলিয়ন বিলিয়ন গুন বেশি) তাহলে আমরা এদেরকে একমাত্রিক লম্বা তার আকারে দেখব ।এগুলো একধরনের অতি ক্ষুদ্র তন্তু (স্ট্রিং) ছাড়া আর কিছু না।এই তন্তুর বিভিন্ন ধরনের কম্পনের ফলে ভিন্ন ভিন্ন কণার উৎপত্তি হয়।এই ক্ষুদ্র ১০^-৩৩ সে.মি. তারগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল এদের কম্পনের ধরন ।প্রতিটি মৌলিক কণা একটি স্ট্রিং দিয়ে গঠিত অর্থাৎ প্রতিটি মৌলিক কণা বিভিন্ন রকম আচরণ করে। তাদের স্ট্রিংগুলোর কম্পনের ধরন ভিন্ন ভিন্ন (Different resonant vibrational pattern) ।প্রকৃতিতে ৬০ টির মতো মৌলিক কণার একমাত্র মৌলিক সত্তা হলো স্ট্রিং যা থেকেই মহাবিশ্বের সকল বস্তু ও শক্তির সৃষ্টি হয়েছে বলেই আধুনিক বিজ্ঞানের স্ট্রিং থিওরি ঘোষনা দেয়।এসব তারে ব্যাসার্ধ ও কম্পাংকের ভিন্নতার কারণেই বিভিন্ন রকম আকার-প্রকার বৈশিষ্ট্যের মৌলিক কনিকা তৈরী হচ্ছে এবং তারের কম্পনের পার্থক্যই এদের আধান, ভর নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে।বিজ্ঞানীরা যখন প্রথমবারের মতো স্ট্রিংগুলোর আচরণ নিয়ে গবেষণা করছিলেন তখন দেখতে পেলেন, স্থান-কালের মধ্যে স্ট্রিংগুলো ইচ্ছা মতো চলাফেরা করতে পারে না। বরং সুনির্দিষ্ট কিছু গাণিতিক নিয়ম মেনে এরা স্থান-কালের মধ্যে কিছুর জটিল গতির সৃষ্টি করে। স্ট্রিংগুলোর এসব গতি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তো বিজ্ঞানীদের চোখ একেবারে কপালে।প্রতিটি কনা কোন না কোন শব্দ বা আওয়াজ করছে। সেই হিসেব যদি আমরা করি তাহনে মহাজাগতিক সকল বস্তুর সকল কনার সম্মিলিত একটি বক্তব্য বা আওয়াজ আছে। যার অর্থ দাড়ায় মহাবিশ্বের সকল বস্তু সম্মিলিত ভাবে একটি শব্দ উচ্চারন করেচে। তবে কি সেটি ধর্ম তত্ত্বের সেই প্রচলিত স্রষ্টার কন্ঠস্বর “কুন ফাইয়াকুন” ।
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, শব্দের ইংরেজি যদি word হয়, তাহলে সেটার অর্থ হচ্ছে একাধিক বর্ণ দিয়ে গঠিত অর্থবহ কোনো কিছু। অন্যদিকে শব্দের ইংরেজি যদি sound হয়, তাহলে সেটার অর্থ হচ্ছে পদার্থের কম্পনের ফলে সৃষ্ট তরঙ্গ। পদার্থের কম্পনের ফলে সৃষ্ট তরঙ্গকে আওয়াজ বলাটা অধিক যুক্তিযুক্ত বলে আমি মনে আবার মানুষ যখন কোনো বাক্য, শব্দ, অক্ষর বা বর্ণ মুখ দিয়ে উচ্চারণ করে, তখনও কিন্তু কম্পনের ফলে তরঙ্গের সৃষ্টি হয়! তাই শব্দ (word) ও আওয়াজ (sound) কিছুটা হলেও একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত! অনেকটা একই রকম।সৃষ্টির শুরুতে একটি সাউন্ডের প্রয়োজনীয়তা ছিলো বলে আমাদের ধর্মতত্ব বলে। আসরা জানি আল্লাহ “হও” বললেন আর সমস্তাটাই সৃষ্টি হয়ে গেলেন। তাহলে এখন আমি যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চাইছি। সৃষ্টির সময় আল্লার হও বলার আর সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে স্ট্রিং এর কম্পন এর ফলে সৃস্টি হওয়া একটি আওয়াজ এর কি কোন যুক্তিযুক্ত কারন থাকতে পারে? অবশ্যই কারন থাকতে পারে। কারন আল্লার হও বলাটাই সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে একটি মহাজাগতিক মায়া সৃষ্টি করে রেখেছে।যে মায়াটকেই আমরা মহাবিশ্ব রুপে দেখছি।সেই মায়াটাই হলো আমাদের মহাবিশ্ব। মহাবিশ্বকে যদি আমরা মায়া ধরি তাহলে প্রকৃত সত্য কি? প্রকৃত সত্য হলো আল্লা হতে বস্তুর উপাদানের আগমন আল্লাহ হতে শব্দের আগমন। যে শব্দ পরবর্তীতে মহাবিশ্ব রুপে দেখা গেছে।মায়ারুপী মহাবিশ্বের প্রকাশ।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০২২ রাত ৮:৪৭