somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাবা প্রবাসী তাই তার লাশ প্রবাসেই থাকুক।

১৪ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৩:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাবা মায়ের এক নৈতিক ভালোবাসার ফসল আমি নিজেই।জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যে নাম বা ব্যক্তিটি আমাদের মাথার উপর চায়ার মত কাজ করেন তিনিই সকলের পরম শ্রদ্ধাভাজন বাবা। জীবনের শক্তির উৎস বাবা। আমার লিখাটা মূলত বাবাকে নিয়ে নয়, বাবার প্রবাসী জীবন নিয়ে, যে সময় টুকু বাবা মূলত সন্তানদের সুখের জন্য অনেক দুঃখ করে কাটান।

উত্থান-পতন, সাফল্য-ব্যর্থতা,কষ্ট, শূন্যতা মানই প্রবাস। যদিও অনেকের ধারনা প্রবাস মানে বস্তাভরা টাকা আর আয়েশী জীবন। বাস্তবে তা পুরোপুরি ভিন্ন, যদিও অল্প সময়ের ব্যবধানে যোগ্যতা ও কঠোর পরিশ্রম করে অনেকে সফলতা পেলে ও তার সংখ্যা হাতে গুনা কয়েক জন হবে।
উদ্ভেগ, উৎকন্ঠা আর চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটে প্রবাসীদের। কর্মছাড়া যেখানে জীবন চলেনা। নির্মম নিষ্ঠুর কঠিন বাস্তবতা প্রকৃত প্রবাসী ছাড়া আর কেউ বিশ্বাস করবেনা। টাকার পেছনে দোড়াতে গিয়ে সবাই ভূলে যায় আপন পর। “সম্পর্ক” থাকলে ও তা নামে মাত্র।

কঠিন এক নিয়মে বাঁধা প্রবাস জীবন। কবুতরের খাঁচার মত দম বন্ধ হওয়া রূম, যেখানে ১০/১২ জন লোককে একাত্রে থাকতে হয় অনেকটা জেল খানার মত। ভোর চারটা্য বাথরূমের সামনে লম্বা লাইন, অসহনীয় ঘরমের মাঝে ও দু’বেলা খাবারের জন্য হাঁড় ভাঙ্গা খাটুনি, অবশেষে ক্লান্তির ঘুম। বুকের ভেতর জমে থাকা কষ্টগুলো বুকের ভেতরেই রেখে জীবন চালিয়ে যান একজন প্রবাসী বাবা শুধু মাত্র প্রিয় সন্তানদের সুখের জন্য। যে সন্তানদের জন্য বাবা নিজের জীবন, যৌবন সবকিছু শেষ করে গেলন। সেই বাবা মারা যাওয়ার পর তার লাশ ও নাকি সন্তানেরা দেখতে চাইবেনা!! কি বিচিত্র এই সমাজ, দেশে একজন মানুষ গুম হলে বা মারা গেলে তার লাশের জন্য কত আকুতি, অথচ একজন প্রবাসী বাবা মারা যাওয়ার খবর শুনে View this link ও সন্তানেরা তার প্রিয় বাবার লাশ দেশে নিতে ইচ্ছুক না! এর কারন কি? শুধুই প্রবাস নাকি সন্তানদের উচ্ছ শিক্ষা! প্রবাসী বাবার টাকায় সন্তানদের যে উচ্ছ শিক্ষা, সে শিক্ষা যদি বাবার পরিচয় ভুলিয়ে দেয়, কি লাভ সে শিক্ষায়?

অনেক প্রবাসী আছেন মৃত্যুর পর হয়তো স্বজনরা মূল্যহীন লাশের দেশে নিয়ে আসতে চাননা বা আনেন না। তেমনি একজন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, ২২ বছরের প্রবাস জীবনে স্ত্রী ও তিন মেয়েকে উচ্চ শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তোলার প্রাণপণ লড়াই করেছেন।

তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে বর্তমানে সিলেট মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, মেঝো মেয়ে পড়ছে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং সবার ছোট মেয়ে সিলেটের রাগিব রাবেয়া ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সন্তানদের মানুষ করতে ২২ বছর ভুলে থেকেছেন প্রিয়তমা স্ত্রী, অতি আদরের সন্তান ও প্রিয় মাতৃভুমি বাংলাদেশকে। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! নিজের জীবনের মূল্যবান ২২টি বছর যাদের জন্য কুরবানি করেছেন মৃত্যুর পর সেই স্ত্রী সন্তানরা তার লাশটিও দেখতে চাইবে না, এটা কি করে সম্ভব। প্রবাসী বাবা কি এতই অযগ্যো ছিলেন আপন সন্তানদের নিকট, যার কারনে মারা যাওয়ার পর ও সঠিক মূল্যয়ন পাননি। নাকি উচ্ছ শিক্ষা! যে শিক্ষা আপন জন্মদাতার পরিচিয় ভুলিয়ে দেয়, কি লাভ সে শিক্ষায়। বাবা সন্তানদের উচ্ছ শিক্ষিত করতে বেস্তছিলেন ঠিকই কিন্তু নৈতিক বা আদর্শিক শিক্ষায় শিক্ষিত করেন নি!!
বুঝলাম বাবা শিক্ষিত ছিলেন না যার কারনে সন্তানদেরকে শিক্ষিত করতে চেয়েছেন। কিন্তু যে শিক্ষার ধারা বাবা মা নৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়, কি লাভ সে শিক্ষায়, যে শিক্ষা ব্যবস্হা আপন জন্মদাতার পরিচয় ভূলিয়ে দেয়!!

শিক্ষা কি? সে কি শুধুই বিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জন। সম্পদ কি? সে কি শুধুই অর্থ বৃত্ত অর্জন। যে পিতা মাতার জন্য আমরা এই পৃথিবীর আলো দেখেছি, যারা আমাদেরকে হাত ধরে চলতে বলতে শিখিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রে নিজে না খেয়ে আহার তুলে দিয়েছেন আমাদের মুখে, সেই পিতা মাতা কি সম্পদ নন আমাদের জীবনে? তাদের সেবা করতে শিখা কি, সেটা কি শিক্ষা নয়? প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি এই নৈতিক শিক্ষায় আমাদের নৈতিক বোধ ও মানসিকতা মানবিক হয়ে উঠুক।
যার কারনে আমরা গর্বিত, হোক না একজন প্রবাসী নির্মান শ্রমিক তার পরে ও উনিই বাবা। তাই ভালোবাসি বাবাকে দিবসের অপেক্ষায় না থেকে সবাই সময়ে রবের শেখানো দোয়া রাব্বির হাম হুমা কামা রাববা ইয়ানি সাগিরা পড়ুন

(বিশেষ ধন্যবাদ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর)

ইছমাইল,
প্রবাসী, (দুবাই,সংযুক্ত আরব আমিরাত)।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৩:১৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×