somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাস্তায় পাওয়া চিঠি

২৬ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার একাকিত্বের সঙ্গি আমার লেখাগুলো। তোমার থেকে এক শতাব্দি দূরত্ব আমার। তোমার উচ্চতা অনেক। আমি নাগাল পাবো না সে ভালো করেই জানি। তুমি নিশ্চিন্ত থাকো। পারলে শান্তির ঘুম দাও। আমিও নিজেকে একটু সময় দিতে চাই।

মানুষের কথা বলতে বলতে, মানুষকে জানতে জানতে নিজেকে জানার সময়ই পাইনি। কাপড়গুলো এখনও পড়ে আছে ধূসর। গায়ের কাপড়টাও নোংড়া হয়ে আছে। এগুলো পরিস্কার করতে হবে। মোবাইলটা কয়েকদিন ধরে নষ্ট পড়ে আছে সার্ভিসিংয়ের দোকানে। টাকা দিয়ে ওটা ছাড়িয়ে আনতে পারছি না।

এখন থেকে তোমার সঙ্গে আমার হয়ত কথা হবে কিন্তু ভাবনার আদান প্রদান হবে না। ভালবাসা থাকবে কিন্তু সেটা বলা হবে না। তোমাকে জোর করা হবে না, কারণ জানতে চাওয়া হবে না। তুমি স্বাধীন জীবন যাপন করবে। সময় হলে নিজের মতো একজন ভাল ভদ্র লাইফ পার্টানার খুঁজে নিবে।

আমার ডায়েরিটা আমার সুখ দুখের সাক্ষী। ডায়েরির কিছু পাতায় লেগে আছে দুখের অশ্রু। দু-একটা জায়গায় আছে শান্ত হাসি, তাও পরিমিত। তুমি ভাল থেকো। তোমার মতো করে থেকো। আমি জানি আরও অনেকের সঙ্গে তোমার কথা হয়। বড়লোক মানুষ। সম্পর্ক থাকতেই পারে, এটা তেমন কিছু না। কিন্তু আমি সেটা মেনে নিতে পারি না। এটা হয়ত আমার ত্রুটি। ভালবাসার ভাগ হয় না। পৃথিবীতে কঠিনতম একটা বিষয় এটা।

কয়েকদিন আগে একটা আর্টিক্যাল পড়লাম, অতিরুক্ত ভালবাসার কারণেও মানুষের ছাড়াছাড়ি হয়, বিচ্ছেদ ঘটে। আমি তোমাকে অতিরুক্ত ভালবাসি তবে আমাদের সম্পর্কে একাধিক সমস্যা রয়েছে। যেগুলো আমি তুমি দু’জনেই বিশ্বাস করি। কষ্ট যেটা পাওয়ার সেটা আগে পেলেই ভাল।

আর লিখতে পারছি না, ঘুম আসছে প্রচন্ড। সারা দিনের ক্লান্ত ভর করছে শরীরে। কলমের কালিও বোধ হয় ফুরিয়ে আসছে। কৌতুলের ছলে কেউ এক বলেছিল, দিন যখন খারাপ যায়, তখন সাদা কাপড় থেকেও রঙ ওঠে। আমার মনে হয়, কোনও একটা জায়গায় এটার বাস্তবতা আছে।



আমি উচ্চ শিক্ষিত হলে একটা চাকরি নিয়ে তোমাকে বিয়ে করে ফেলতাম, বাবার সামর্থ ছিল না তাই বেশি পড়াতে পারেননি। বাবা আগে থেকেই আঘাতপ্রাপ্ত ছিলেন। আম্মু মারা যান আমার যখন ছ’বছর বয়স। অথবা তারকিছু আগে। আব্বুর জন্য কিছু করতে চাই আমি। বাবা আমার জন্য যা করেছেন অনেক করেছেন।

তুমি একদিন বলেছিলে আমার জন্মদিন পালন করবে। সেদিন আমি আমার জন্মদিন বলতে পারিনি, কেন জানো? আমাদের মতো গরীবদের জন্মদিন হয় না। একটা আবদার করবো, শুনবে? আর হয়ত দেখা হবে না আমাদের। কাল গ্রামে চলে যাবো। গ্রামে মানে পালিয়ে ভারত চলে যাবো। আমার এক মামা ওখানে থাকেন। ফলের দোকানে চাকরি করেন কলকাতায়। আমাদের বংশের অনেকেই এ কাজটি করেছেন।

সর্ব প্রথম কলকাতা গিয়ে ফলের ব্যবসা শুরু করেছিলেন আমার দাদু মুনতাজ মিয়া। তিনি বিএসএফের গুলি ইন্তেকাল করেছেন। তার লাশও পাওয়া যায়নি। অবশ্য পরিবারের কেউ জানেনও না শেষ পর্যন্ত তার সঙ্গে কি হয়েছিল। তিনি ফিরতে গিয়ে আর ফিরে আসননি তাই সবাই ধারণা করে নিয়েছে বিএসএফের গুলিতে তার মৃত্যু হয়েছে । গঙ্গা বা পদ্মায় জেলেরা তার লাশ ভাসতে দেখেছিল কিনা কে জানে! আমার সঙ্গেও কি এমন কিছু…।

পাহাড়ি আর জঙ্গলি এলাকার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। আমি আগেও একবার গিয়েছি বাবার সঙ্গে। এবার যাচ্ছি একা। তুমি তো অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করো। আমার এগুলো পছন্দ নয়। গরীবদের জীবনে অনেক অনেক অ্যাডভেঞ্চার থাকে। তাই তাদের এটার প্রতি আর বাড়তি আগ্রহ থাকে না। তাদের থাকে জীবনের ভয়। আমারও এই জার্নিতে সেটাই থাকবে। আমরা বাঁচতে চাই। যদি না যেতে পারি তাহলে খুব মুশকিলে পড়ে যাবো। তুমি হয়ত সেই মুশকিলটাই চাইবে, অথবা চাইবে না। আমি ঠিক বলতে পারি না। দোয়া করো আমার জন্য। তোমার নিজের জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:১৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×