somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সায়েন্সফিকশনঃ আরাত্রিক

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার পকেট থেকে টিকেট দুটি বের করলাম । দুশ’ ডলারের দুটি টিকেট । সিগফ্রিড এন্ড রয়ের আজকে রাতের ম্যাজিক শো এর । তবে এটিকে শুধু ম্যাজিকের শো বললে ভুল হবে । জাদু দেখানোর সাথে সাথে পৃথিবীর দশটি বিখ্যাত ম্যাজিকের ট্রিক এরা এই প্রথমবারের মত দর্শকদের সামনে উন্মোচন করে দেবে । রোমাঞ্চকর ব্যাপার ! টিকেটের টাকাটাও তাই মোটা অংকের ।

প্রথম প্রথম যখন আমেরিকায় পড়াশুনা করতে এলাম তখন সব রকমের শো থেকে ‘শত হস্তেন দূরেৎ’ মনোভাব নিয়ে থাকতাম । একমাত্র কারন টাকা । স্কলারশিপ নিয়ে কার্নেগী-মেলন ইউনিভার্সিটিতে আন্ডার গ্রাজুয়েট ছাত্র হিসেবে এসেছিলাম এখানে, তাও হাফ স্কলারশিপ । মাত্র ৬০০০ ডলার । ৬০০০ ডলারের আগে একটি ‘মাত্র’ লাগালে কম বলা হয় । বলা উচিত, ‘মাত্র’ টু দ্য পাওয়ার ফোর । কারন, ১৪০০০ ডলারের টিউশন ফী, বইপত্রের খরচ, হাত খরচ আর অন্যান্য যাবতীয় খরচের টাকা জোগারের জন্য আমাকে অমানুষিক পরিশ্রম করতে হত । আমার পরিবারের এতোগুলো টাকা পাঠানোর ক্ষমতা ছিল না ।

বাংলাদেশের অন্যান্য অতি নিম্ন-মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেদের মত আমারও তাই অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল ট্যাঁক বাঁচিয়ে চলার । পারলে দুবেলাতেই (তাও আবার টাকার অভাবে সবচে’ কুৎসিততম মেনু দিয়ে) খাবারের পর্ব শেষ করে ফেলি । কোন কিছু কিনতে গেলে প্রথমেই ডলারকে আশি দিয়ে গুন দেই । বেশীরভাগ সময় অংকটা বীভৎসই দাঁড়ায় । আর সাথে সাথে মাসের বাকী দিনগুলোর হিসেব গোপনে গোপনে সয়ংক্রিয়ভাবে শুরু হয়ে যায় মাথার ভেতর । আমার শংকিত শ্যামলা মুখ শাদা হয়ে ওঠে দ্রুতই ।

সেই হিসেবের অভ্যাস এখনও মাঝেমধ্যে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে । যেমনঃ এখন । আমি অজান্তেই ২০০ × ৮০ দিয়ে বসে আছি । ১৬০০০ টাকা । দুটি টিকেটের দাম ৩২০০০ টাকা । কি সর্বনাশ ! আমি একটু লজ্জিতও হই । ‘কিপ্টে’ বলতে যা বোঝায়, হয়তো আমি তাই । কারন আগের অর্থকষ্টের কিছুমাত্র এখন আর অবশিষ্ট নেই । সপ্তাহে ৫৪ ঘন্টা বাইরে কাজ করার পরও অবিশ্বাস্য ভাল রেজাল্ট করেছিলাম আমি । পরে একসময় ফুল স্কলারশীপ নিয়েই পি.এইচ.ডি’ও করে ফেলতে পারি । আর তারই বদৌলতে এখন কার্নেগী-মেলন ইউনিভার্সিটির অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসেবে ঢুকে পড়তে পেরেছি । এবছরই অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের পদ পাই । মোটা অংকের স্যালারী । এত তাড়াতাড়ি এই পদ পাওয়ায় অনেকেই আমাকে প্রচন্ড ঈর্ষার চোখে দেখে । কিন্তু আমি মনে করি আমি এর যোগ্য । সপ্তাহে বায়ান্ন-চুয়ান্ন ঘন্টা জব করে আমার সাবজেক্টে এতো ভাল রেজাল্ট করাটা যে রীতিমত বিস্ময়কর এটা যে কেউ মানতে বাধ্য । তাছাড়া ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ আমি যেই মার্কটা গড়ে এসেছি সেটা এখন পর্যন্ত ভার্সিটির কেউ ছুঁতেও পারে নি !

লজ্জিত হওয়ার আরও কারন আছে । শো’টা দেখবার একমাত্র কারন হচ্ছে হেবা । হেবা দু’সপ্তাহ আগে থেকে এই শো-টার জন্য অপেক্ষা করে আছে । পুরো নাম হেবা সামেহ-এল-বাস্যোসি । মিশরী মেয়ে । এখানে এসেছিল বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন নিয়ে পড়াশোনা করতে । ওর ভাই মেহমুদ আর আমি একই সাথে পি.এইচ.ডি করেছিলাম । ওর ব্যাকগ্রাউন্ড যদিও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ছিল । মেহমুদ হেবার আপন ভাই না । মেহমুদের বাবার দ্বিতীয় ঘরের সন্তান হেবা । মেহমুদ পরে ওর পরিবারকে আমেরিকাতে নিয়ে আসে । ওদের বাসায় প্রথম যেদিন যাই সেদিন ড্রয়িং রুমের সোফার ওপর ওকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম । এতো সুন্দরও মানুষ হয় ! দেবীমূর্তির মতন নিঁখুত মুখাবয়াব, চমৎকার ভ্রূ, মসৃণ গাল, আমি চোখ সরাতে পারছিলাম না কিছুতেই । হালকা রঙের বাদামী এলোমেলো চুল শাদা রঙের কামিজের ওপর ছড়িয়ে আছে মায়াময় ভঙ্গিতে । পুরো ব্যাপারটাকে আমার কাছে স্বপ্ন বলে মনে হচ্ছিল ।

আমার এখনও মনে আছে, ঘুম ভাঙা মাত্রই ও আমার দিকে তাকালো । আমি আগে থেকে ঠিক করে রেখেছিলাম যখনই মেয়েটা চোখ খুলবে আমি চট করে চোখ সরিয়ে নেবো । এতোক্ষণ ঘুমন্ত মেয়েটার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকার ব্যাপারটা যাতে ও কিছুতেই বুঝতে না পারে । কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে আমি তা পারিনি । ওর চোখ দেখেই চমকে গেছি । অস্বাভাবিক নীল নীল চোখ, বড় জাদুকরী । আমি পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে গেলাম প্রখর রূপবতী এই তরুনী আসলে আমার চোখের ভুল নয়ত ডানাভাঙা পরী । যেকোন মুহূর্তে দেখবো, নেই !

বলা বাহুল্য, বন্ধুর বোনের প্রেমে পড়ে গেলাম । লাভ ইন ফার্স্ট সাইট যাকে বলে । মেহমুদকে আমি শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা বলতে পেরেছিলাম । সে উদাস ভঙ্গিতে বলল, ‘তুমি সরাসরি ওর সঙ্গে কথা বলছো না কেন ?’
আমি বললাম, ‘ধরে নাও, ফ্যামিলিগতভাবে তোমাকেই প্রোপোজালটা দিচ্ছি আমি ।’

সে আমাকে কোন উত্তর না দিয়ে ‘আরাত্রিক’ এর ফ্রেমে স্ক্রু-ড্রাইভার ঘোরাতে লাগল । আমি কিছুটা বিব্রত হলাম । আবার জিজ্ঞেস করতে গিয়েও থেমে গেলাম । এতোটা ছ্যাবলামো করাটা ঠিক হবে না । সম্ভবতঃ মন থেকে মেহমুদ আমাকে পছন্দ করে না । হতেও তো পারে ।

আমি রিভলভিং চেয়ারে হেলান দিয়ে আরাত্রিকের দিকে ক্রূঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম । ইচ্ছা করছে এক লাথিতে শালার সব নাটবল্টু ছুটিয়ে দিতে । অথচ বেচারার কোন দোষই নেই । আরাত্রিক হচ্ছে আমার আর মেহমুদের বানানো প্রথম হিউমেনয়েড রোবট । ‘আরাত্রিক’ নামটা আমার দেয়া । নিউওন-সিমন হলের রোবোটিক ল্যাবের কেউই আরাত্রিক এর নামের উচ্চারণ ঠিকমত বলতে পারে না । বেশীরভাগ ডাকে ‘আরেটিক’ । যাই হোক, ‘আরেটিক’ কথা বলতে পারলেও ঠিক সেসবই সে বলে যা ওর মধ্যে ইনপুট করা আছে । ওর কন্ঠ হিসেবে আমার কন্ঠকেই ইনপুট করা আছে । আরাত্রিক এর অ্যালগরিদম আশা অনুযায়ী সমৃদ্ধ না হলেও, খুব হেলাফেলা করবার মতও না । সাইবারনেটিক্সের সমৃদ্ধির সবচে উৎকৃষ্ট উদাহরণ বলতে পারেন এটিকে । সাইবারনেটিক্স ব্যাপারটা সম্পর্কে বলে রাখা ভাল । যেসব সিস্টেমের ফাংশন ও প্রসেস দুটোই সচলীকরণ থেকে শুরু করে সেন্সিং এর মাধ্যমে কম্পারিজন এবং সেখান থেকে আবার দ্রুত নতুনভাবে সচলীকৃত হয়ে ক্যাজুয়াল চেইনের বৃত্তাকারপথে স্বতঃস্ফূর্তভাবে চলমান, সেসব সিস্টেম নিয়ে কাজ এবং উন্নয়নের বিষয়টা সাইবারনেটিক্স এর অধীনে । আসলে ব্যাখ্যাটা কঠিন হয়ে গেল । সহজভাবে বলতে গেলে একটা ছবি আঁকতে হবে । এই যেমনঃ



একবার ইনপুটের জন্য আমরা প্রতিবার আউটপুট পেলেও নতুন করে আর ইনপুট দিতে হবে না । বারবার সিস্টেম ইনপুট থেকে ক, ক থেকে আউটপুট, আর আউটপুট থেকে ইনপুট হয়ে বারবার চালিত হবে । আমরা ল্যাংটনের পিঁপড়ার আয়লগরিদমকেও বেশ ডেভলপ করে আরাত্রিক এর মেথড এ প্রয়োগ করেছি । এক কথায় আরাত্রিকের প্রশংসা করতে হলে বলতে হবেঃ True colour of a good algorithm । দক্ষিন জাপানের তানেগাশিমা স্পেস সেন্টার থেকে যে রোবটটিকে মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল- আরাত্রিক’কে সেই ‘কিরবো’র প্রায় সমগোত্রীয়ই বলা চলে । পার্থক্যের মধ্যে পার্থক্য হল কিরবো ৩৪ সেন্টিমিটার লম্বা, এক কিলোর চাইতেও কম ওজনের ছোট্ট সুন্দর রোবোট । আরত্রিকের শরীরটা বেঢপ, সৌন্দর্যের তেমন কিছুই নেই । ওজন সাড়ে সাত কিলো !

আরাত্রিক ল্যাবে বেশ জনপ্রিয় । বিশেষ করে ওকে দিয়ে কফি আনা-নেয়া, বুকশেলফ থেকে বই পেড়ে আনা, আর বেচারার এখনো আনডেভলপড উল্টোপাল্টা বাক্য নিয়ে হাসি তামাশা করা ছিল আমাদের নিত্য-নৈমিত্তিক কাজ । আসলে কি, সবাই ওর অস্তিত্ত্বকে ভীষণভাবে ভালবাসতো । আমিও তার ব্যতিক্রম নই । এখন যদিও আরাত্রিককে নিয়ে হাসি তামাশা কমে গেছে । ব্যাটার মেমরি আগের চেয়ে অনেক বেশী ডেভেলপড্‌ ।

তবে সেদিন আরাত্রিক এর অ্যালগরিদমে যথেষ্ট ভজঘট পাকালো । সে নিজে নিজে ইনপুট নিচ্ছিল । না চাইতেই কাউকে গিয়ে ফাইল দিয়ে আসছে, কফিমেকার এর পার্টস খুলে ফেলছে, নিজের রেডিয়ামের একটা চোখ পর্যন্ত খুলে ফেলল । আমরা সবাই হাসতে হাসতে শেষ । শুধু মেহমুদ হাসল না । তার মাথা গরম হল । সে কাউকে কিছু বলল না যদিও । আরাত্রিকের পাওয়ার জেনারেশন সিস্টেম বন্ধ করে নাটবল্টু খোলাখুলিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল । আমি ঐদিন কি মনে করে যে ওকে হেবার কথাটা বলতে গিয়েছিলাম কে জানে ! বলা তো যায় না, অন্য সময় বললে হয়তো ভিন্ন উত্তর পেতাম !!

আমার কথা হচ্ছে, আরাত্রিক তো আর স্টাবলিশড মডেল না । ওকে নিয়ে আরো কাজ করতে হবে । ওর জন্য নতুন নতুন ফাংশান বানাতে হবে, যেগুলো ভুল ফাংশান ছিল সেগুলি ইরেজ করতে হবে । মেহমুদের খামোখা মাথা গরম দেখে আমার হাসিই পেয়ে গিয়েছিল । ছেলেটা সবসময় অতিরিক্ত রকমের সিরিয়াস । তবে সিনসিয়ারিটি খারাপ অভ্যাস নয় ।

ওকে আমি বোঝানোর চেষ্টা করতেই আরও রেগে গেল যেন । গুগুলে কিছু একটা খুঁজছে ও । সম্ভবতঃ কোন স্পেশাল তৈরী করা কোড দরকার পড়েছে । সে স্ক্রীন থেকে একবার চোখ সরিয়েই বলল, ‘তুমি ভাবতে পারছো কফিমেকার এর পার্টস খুলবার মত হাস্যকর কাজ করবার বদলে ও যদি ওর মত ইন্টেলিজেন্ট আর একটা রোবট বানানোর চেষ্টা করত ?’
‘আর একটা রোবট ?’, আমি হো-হো করে হেসে উঠলাম, ‘কাজ করতে করতে তোমার মাথা গরম হয়ে গেছে মেহমুদ ।’
ইন্টারনেটে কোড পাওয়া গেছে । ডাউনলোড লিংকটা ক্লিক করতেই একটা ক্যাপচা এলঃ



মেহমুদ আঙুল উঁচিয়ে বলল, ‘এই যে দ্যাখো ! এইসব ক্যাপচা কিসের জন্য ? সতর্কতার জন্য তাইতো ? যাতে হিউমেনয়েড রোবটরা বিশেষ তথ্য বা মানুষের ভাব-ভাষা বোঝার মত কোন কিছু ডাউনলোড করে আমাদের মানুষদের বিরূদ্ধে সেগুলোকে কাজে লাগাতে না পারে । তাই নয় কি ?’
‘তুমি অতি কল্পনা করছো মেহমুদ । আরাত্রিক চরম আধুনিক একটি রোবট মানছি কিন্তু এখনো অতটাও স্মার্ট না...’
‘কিন্তু তুমি কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে- আরাত্রিক তার মত আরেকটি বুদ্ধিমান রোবট বানিয়ে ফেলতে পারবে না ?’
‘না, কিন্তু...’
মেহমুদ আমার দিকে তার বা হাত মেলে থামতে বলল । তার ভ্রুও কুঁচকানো । আমাকে সহ্য করতেই হয়তো তার কষ্ট হচ্ছে । বিশেষ করে হেবার কারনে..., না জানি কি ভাবছে ও আমাকে । আমি মন খারাপ করে আমার রুমের দিকে চলে এলাম ।

যাই হোক, আমার চিন্তাধারা ভুল ছিল । মেহমুদ কাজ শেষ করে দুহাতে দুকাপ কড়া কফি নিয়ে আমার রুমে ঢুকল । আমি চেয়ারে গা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়েছিলাম । হেবার ব্যাপারটা নিয়ে অতিরিক্ত রকমের বিষণ্ণ আর হতাশ ছিলাম । মেহমুদ আমার হাতে কফি ধরিয়ে দিয়ে ক্ষীণকন্ঠে বলল, ‘তুমি হয়তো আমার উপর রাগ করেছো বন্ধু । পুরো ব্যাপারটা তোমাকে পরিষ্কার করে বলাটাই ভালো ।’, মুখ বিকৃত করে বলল মেহমুদ, ‘হেবা আমার আপন বোন না । আমার বাবা-মা কেউই আসলে বেঁচে নেই । হেবার মা আর আমার আপন ছোট দুই ভাইকে আমি একরকম জোর করেই মিশর থেকে আমেরিকায় নিয়ে এসেছিলাম, সেকথা তো জানোই । হেবার মা তখন ইজাজ এর সাথে ফোনে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয় । ইজাজ তার দুঃসম্পর্কের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে । হেবার মায়ের অনেক আগে থেকেই ইচ্ছে ইজাজ তার মেয়েজামাই হোক । এই পরিস্থিতিতে আমি কি করে এখানে অন্য কারো হয়ে সুপারিশ করি, তুমিই বলো ।’
আমি বললাম, ‘সমস্যা নেই ।’
‘সমস্যা অবশ্যই আছে । তোমার মুখ দেখেই বুঝতে পারছি, তুমি হেবাকে নিয়ে গভীরভাবেই চিন্তা করা শুরু করেছো । আমিই ব্যাপারটা ধরতে পারিনি । তবে আমি তোমাকে হেল্প করবো । তুমি ছেলে হিসেবে ভাল । অতিরিক্ত ভাল । ওকে ভুজং-ভাজং দিয়ে মাঝেমধ্যেই আমি তোমার সাথে ঘুরতে পাঠিয়ে দেবো । তোমার কাজ হচ্ছে ওকে নিজের প্রেমে ফেলা । ও রাজি হলে, নিজেই মাকে রাজি করাবে । কিন্তু আমি নিজে থেকে ওকে কিছু বলতে পারবো না । বুঝতে পারছো ?’

আমি অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে মেহমুদকে জড়িয়ে ধরলাম । আচমকা সে টাল সামলাতে পারলো না । কফির কাপ উলটে পরে গেল । মেহমুদ মুখ খিঁচিয়ে বলল, ‘মোগাফফালিন’ । ওর সাথে থাকতে থাকতে আমি এখন জানি আরবী ভাষায় এর অর্থ, ‘sucker’ ।

**** **** ****

আজকে হেবাকে নিয়ে ঘুরতে বের হলে সেটি হবে আমাদের একসাথে বেড়ানোর দশম দিন । তার সাথে আমার এখন বেশ বন্ধুত্বসুলভ একটা সম্পর্ক হয়ে উঠেছে । কিন্তু আসল ব্যাপারটাই কিছুতেই বলতে পারছি না তাকে । পকেটে একটা আংটি নিয়েও ঘুরছি । সেটা বের করার সাহসও পাচ্ছি না । যদি না করে দেয় । কবে পারবো কে জানে ! তার মুখভঙ্গি দেখে ধরতেও পারিনা সে আমাকে নিয়ে কি ভাবছে । মেয়ে পটানোর রীতিনীতিও আমার ঠিক জানা নেই । এ এক মহাসমস্যা !

আমি হেবাদের বাসার সোফায় বসে আছি । আমি ঘড়ি দেখলাম । আটটা বাজতে এক ঘন্টা বাকী । শো শুরু হবে আটটায় । বের হওয়া দরকার । হেবা হয়তো সাজগোজ করছে ভেতরের ঘরে । ভেতরে ভেতরে ঘেমে নেয়ে যাচ্ছি । মেহমুদটাও বাসায় নেই । হয়তো ল্যাবে । আমার আজকে অফ ডে ছিল । আমি ভাবলাম হেবাকে প্রোপোজ করার বিষয়টা নিয়ে মেহমুদকে একটা ফোন করে জিজ্ঞেস কি করবো । না । সেটা বড্ড ছেলেমানুষী হয়ে যায় । কিন্তু কারও সাথে কথা না বলতে পারলে টেনশনটা কমবে না । বাধ্য হয়ে আমার সেলুলার ফোনটা পকেট থেকে বের করে আনলাম । মেহমুদের নাম্বারটা বন্ধ । তার মানে ল্যাবে কাজ করছে । আমি ওর রুমের ল্যান্ডফোন নাম্বারে ডায়াল করলাম ।

‘হ্যালো মেহমুদ ।’ হেবা ভেতরে ঘর থেকে বেড়িয়ে এল । সে তৈরী । তাকে অন্য সব দিনের মতই পরীর মত লাগছে । আমার দিকে তাকিয়ে ঘড়ি দেখালো । আমি মাথা ঝাঁকালাম ।

‘ইয়েস ।’, ওদিকে ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলল ওপাশ থেকে মেহমুদ ।
‘ইয়ে মানে তোমাকে ফোন দিয়েছিলাম, মানে... আসলে ... ও, মনে পড়েছে । আসিমোর সেন্সরটা কাজে লাগানোর জন্য যে বাইনারী নাম্বারটা চাইছিলে ওটা কি পেয়ে গেছো ?’
‘কেন ?’
আমি ঢোঁক গিললাম; সামলে নিয়ে বললাম, ‘না মানে ইয়ে, আমার লাগতো । ফাইলটা হঠাৎ খুলেছিলাম, তাই... ।’, থেমে হেবার দিকে তাকিয়েই তড়িঘড়ি করে বললাম, ‘নাম্বারটা বলবে প্লিজ ।’
‘লিখে নাওঃ 101110100101 ।’
‘থ্যাংক ইউ ।’, আমি ফোন কেটে দিয়ে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম । নিশ্চয়ই খুব ব্যস্ত মেহমুদ । ও কাজের ওপর থাকলে এভাবেই কথা বলে । অপ্রয়োজনে বিরক্ত করলে রেগে যায় । আমি ফোন কাটবার সাথে সাথেই কলিংবেল বাজল । হেবা উঠে গিয়ে দরোজা খুলল । মেহমুদ ঢুকলো । তার গায়ে চকচকে কালো রঙের কোট, হাতে ক্যাম্বিসের ব্যাগ । আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম, ‘তু-তু-তু-তুমি ?’

মাহমুদ হেসে বলল, ‘ভুত দেখলে নাকি ?’
‘আমি একটু আগে তোমার সাথে কথা বলেছি, তোমার ল্যাব রুমের ল্যান্ডফোনে ।’
‘ক্ষেপে গেলে নাকি ? আমি ল্যাব থেকে বের হয়েছি চার ঘন্টা আগে । আমার রুম লক্‌ড । আর তোমার সাথে আমার আজ ফোনে কথাই হয় নি ।’
‘তা কি করে হয় ? হেবার সামনেই মাত্র কথা বললাম তোমার সাথে !’

‘তুমি কথা বলছিলে, ওপাশের ভয়েস কিন্তু আমি শুনিনি ।’, হতাশ ভঙ্গিতে মাথা নাড়ল হেবা । আমি মেহমুদের চোখের দিকে দৃঢ়ভাবে তাকাতেই সে হতভম্ব দৃষ্টিতে বাইরের দিকে তাকাল । ব্যাপারটা পানির মত পরিষ্কার হয়ে গেছে ততক্ষণে । আরাত্রিক ! অবশ্যই আরাত্রিক । সে নিজে নিজে ইনপুট নিয়ে নিচ্ছে । নিঁখুত মেহমুদের কন্ঠে আমার সাথে কথা বলে গেছে এবং বিধাতাই জানেন ল্যাবরুমে আর কি কি করে বসে আছে সে ।

মেহমুদ ভীতস্বরে বলল, ‘ও মাই গড ! এক্ষুনি ল্যাবে যেতে হবে আমাদেরকে ।’, তারপর হেবার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘হেবা, নোমানকে নিয়ে যেতে হচ্ছে । ওর আমার সঙ্গে যাওয়াটা জরুরী । বুঝতেই পারছো !’

আমি আড়চোখে হেবার মুখের দিকে তাকালাম । তার মুখ বিষণ্ণ । এমন একটা মুহূর্তেই আরাত্রিক ব্যাটার এমন ভজঘট পাকানোর ছিল ! ঐ রোবোটটাই দেখছি আমার প্রেমের পথের সবচে বড় কাঁটা । মেহমুদের কাছে হেবার বিষয়টা নিয়ে আলোচনার শুরু থেকে ব্যাটা বুরবাক গোলমাল পাকিয়ে চলেছে । আমি কোনকিছুর তোয়াক্কা করলাম না । লজ্জাশরমের মাথা খেয়ে মেহমুদের দিকে তাকিয়ে স্পষ্টকন্ঠে বললাম, ‘আরাত্রিকের জন্য আমি হেবার মন খারাপ হতে দিতে পারি না । আই অ্যাম স্যরি, বাট মেহমুদ, আমাকে শো’টা ধরতে হবে । প্লিজ তুমি সামলে নাও ।’

হেবার চোখজোড়া মুহূর্তে জ্বলে উঠল । আমি তার উজ্জ্বল নীল চোখের দিকে তাকিয়ে সামান্য হাসলাম । মেহমুদ আপত্তি করার জন্য কিছু একটা বলতে শুরু করতেই আমি তার ডান হাতটা ধরে অল্প চাপ দিলাম । সে দায়সারা গোছের একটা হাসি দিয়ে ল্যাবের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে গেল ।

আমরা দুজন বেড়িয়ে পড়লাম । লন ধরে পাশাপাশি হাঁটছি । আমার চোখ ট্যাক্সি খুঁজছে । দূরে পথের ধারে স্লজ হ্যাটপরা একটি বুড়োমত লোক দুহাতে চমৎকারভাবে সেলো বাজিয়ে চলেছে । তার চেহারা ভিখারির মত নয় যদিও । আমি হাঁটতে হাঁটতে মুগ্ধকন্ঠে বললাম, ‘অদ্ভুত সুন্দর না ?’

হেবা মাথা ঝাঁকালো । মেহমুদকে অনেক দূর থেকে দেখা যাচ্ছে । সে একবার পেছনে তাকাল । আমাদের রাস্তা পার হতে হবে । আমি হেবার হাত ধরলাম । হাতটা হিম হয়ে আছে । রাস্তায় নামতে নামতে হেবা একবার চোখ তুলে বলল, ‘তুমি জাস্ট আমার জন্য... মানে... ওখানে মেহমুদের একা কাজ করতে সমস্যা হতে পারে ।’
আমি ক্ষীণকন্ঠে বললাম, ‘তার মানে তুমি কি চাও আমি মেহমুদের সঙ্গে ল্যাবে যাই ?’
‘ইন দ্যাট কেস, আমি বলবো তুমি কি চাও যে আমি চাই তুমি মেহমুদের সাথে ল্যাবে যাও ?’
আমি একটু ভেবে মৃদু হেসে বললাম, ‘তুমি কি চাও যে আমি চাই যে তুমি চাও আমি মেহমুদের সাথে ল্যাবে যাই ?’
‘ওকে । তুমি কি চাও যে আমি চাই যে তুমি চাও যে আমি চাই...’

আমি দু হাত তুলে আত্মসমর্পনের ভঙ্গি করে বললাম , ‘ওকে, ওকে, ওকে- দ্যাটস এনাফ ! আমি চাই না ।’
‘তাহলে আমিও চাই না ।’, হেবা এবার শব্দ করে হাসল । আমি আর থাকতে পারলাম না । ব্যস্ত রাস্তার মধ্যেই বসে পড়ে আনুষ্ঠানিক কায়দায় ‘প্রোপোস’-এর জন্য আংটি বের করতে বুকপকেটে হাত দিলাম । নেই ! আংটিটা নেই । হেবার দিকে একবার তাকালাম । সে হাসিমুখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । আমার খুব ভাল করেই মনে আছে আংটিটা আমি বুকপকেটেই রেখেছিলাম । আমি এবার হতাশ ভঙ্গিতে পকেট হাতরাতে শুরু করলাম । ততক্ষনে হেবাও আমার পাশে এসে বসে পড়েছে । গাড়িগুলো ঘ্যাঁস-ঘ্যাঁস করে আমাদের সামনে এসে ব্রেক কষছে । আমি উঠবার জন্য পায়ে ভর দিতেই দেখি হেবা আমায় জড়িয়ে ধরেছে । মুহূর্তে আমার ঠোঁটে ওর ঠোঁটজোড়া মিশে গেল । আমি সেটা অনুভব করার আগেই আমার হাতে মুঠো করে কিছু একটা দিল ও । আমি অনুমান করে নিলাম এটা সেই ডায়মন্ডের রিংটা, যেটা হেবার জন্যই কেনা হয়েছিল । হেবা এবার তার মুখটা সরিয়ে আমার কানের কাছে এনে বলল, ‘মেহমুদ আমাকে নিয়ে তোমার পাগলামির কথা আগেই বলেছিল । যদিও আজকেই বিশ্বাস হয়েছে আমার ।’

আমি হেবাকে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে ধরলাম । শাদা একটা গাড়ি থেকে মাথা বের করে এক মধ্যবয়স্কা মহিলা আমাদের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘হেল লাভারস !’ আমি না নড়ে হাসিমুখেই তার দিকে তাকিয়ে সামান্য মাথা ঝোঁকালাম । মহিলা হাত ঝেড়ে গাড়ি পাশ কাটিয়ে নেয়ার দিকে মনোযোগ দিলেন ।

**** **** ****

আজ বারোই জুন । বিশেষ একটি দিন । না । আজ কসমিক রেডিয়েশন এক্সপেরিমেন্টের জন্য মহাকাশ রিসার্চের ফ্লাইটের সর্বপ্রথম দিন ছিল না । আজ মহাশূণ্য থেকে পৃথিবীর প্রথম ছবিটিও তোলা হয় নি । আজ টাইটানে প্রথম সফট ল্যান্ডিং বা প্রথম হিউমেনয়েড রোবটের স্ট্রাকচার ডিজাইনিংও করা হয় নি । আজ মাত্র কিছুক্ষণ আগে হেবার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে । সে তার মাকে কিভাবে ম্যানেজ করেছে আমি জানি না । তার মাকে মানানোর জন্য সে ছয় মাস পেয়েছে । ছয় মাস দীর্ঘ সময় । তবে হেবার মাকে দেখে আমার মনে হল তিনি মন থেকেই বেশ হাসিখুশী আছেন । সবচে খুশী সম্ভবতঃ মেহমুদ । সে কিছুক্ষণ পরপরই উল্লসিত কন্ঠে বলছে, ‘হোয়াট আ ওয়ান্ডারফুল ডে ! ও মাই গড ! হোয়াট আ ওয়ান্ডারফুল ডে !’

আমি হেবাদের ড্রইং-রুমের সোফায় বসা । এখন পার্টি চলছে । ঘর সরগরম । সোফায় দর্শন আর বিজ্ঞান বিষয়ক তুমুল আড্ডা চলছে । ঠান্ডা পড়ার আশংকায় পার্টিতে সবাই গরম কোট- হাতমোজা পড়ে এসেছে । তবে এখানকার আবহাওয়া উলটো । বরের হালকা পোশাকেও আমার গরম লাগছে । সবার কপালেই বিন্দু বিন্দু ঘাম- তর্কের জয়-পরাজয়ের আমেজের কারনেও যদিও হতে পারে । অতিরিক্ত চিন্তিত হলে মানুষ বেশী ঘামে । মানুষের শারিরীক এই দূর্বলতা বিজ্ঞান এখনও দূর করতে পারে নি । এই ভাল ! বিজ্ঞানের সবকিছুতে নাক গলানোর দরকার নেই, আমি ভাবলাম । যেমন ভালবাসার অনুভূতি, হাতে করা ড্রয়িং কিংবা কৌতুক !

আলোচনার প্রসঙ্গক্রমে মেহমুদ বিজ্ঞান বিষয়ক দারুন মজার একটা কৌতুক বলল । কৌতুকটি হাইজেনবার্গকে নিয়ে । সবাই ঘর কাঁপিয়ে হাসছে । তার বলা জোকগুলোতে সাধারনতঃ কেউ হাসে না । আজ তার প্রথম জোকটিই বাজিমাত করেছে । মেহমুদকে আজ সত্যিই বড় আনন্দিত লাগছে । মুখ চকচক করছে, গাল থেকে শেভিং ক্রীমের গন্ধ বেরুচ্ছে । ঘামে নি একটুও । জলপাই রঙের কোটটিতে তাকে মানিয়েছেও দারুন ।

আমার সেলফোন বেজে উঠলো । মেহমুদ এবার আরেকটি জোক শুরু করেছে । ফোন ধরে আমি অনিচ্ছাসত্ত্বেও মনোযোগ ফোনের দিকে দিলাম, ‘হ্যালো !’
‘ইয়েস । মিস্টার নো-ম্যান ?’
‘ইটজ নোমান ।’, আমি শুধরে দিলাম ।
‘দিস ইজ অ্যামিও রেডেল ফ্রম এফবিআই । কার্নেগী-মেলন ইউনিভার্সিটির রোবোটিক্স ল্যাব ফ্লোর টুয়েলভ, রেজিওন থার্টি- আপনার আন্ডারে ?’, ওপাশ থেকে ব্রিটিশ টানে ইংরেজীতে গটগট করে বলে গেলেন রেডেল নাম্নী কোন একজন এফবিআই অফিসার ।

আমি কান খাড়া করলাম এবার, ‘হাউ ক্যান আই হেল্প, অফিসার ?’
‘আমাদের অন্য একটি অনুসন্ধানের সময় রেজিওন থার্টির একটা আলমারি থেকে একটা স্যুটকেস ভর্তি ছাই পাওয়া গেছে । সেখানে একটা আধপোঁড়া অস্থিও ছিল ।’
‘স্যরি ?’
‘ডিএনএ ম্যাচিং-এর মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি এগুলি ইঞ্জিনিয়ার হাসান মেহমুদের । তিনি আপনার রেজিওনেরই একজন ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন বলে তথ্য পেয়েছি । মিস্টার মেহমুদের সেলফোন অফ । ফ্যামিলির ল্যান্ডফোন নাম্বার আমাদের কাছে আছে । কিন্তু নাম্বারটা অচল, আই গেজ । তাই আপনাকে ফোন করলাম ।’

আমি শিউরে উঠলাম । হতভম্ব কন্ঠে বললাম, ‘আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে । অস্থি... মানে, মেহমুদের হতে পারে না...’
‘উই আর কোয়াইট শিওর মিস্টার নো-ম্যান । এসব ক্ষেত্রে আমরা নিশ্চিত না হয়ে অনুসন্ধানে নামি না ।’

আমার হাত থেকে সেলফোন পড়ে গেল । মেহমুদ আসর জমিয়ে ফেলেছে । তার দ্বিতীয় জোকটিও হিট করেছে । আমি তার দিকে তাকালাম । হঠাৎ করে এই প্রথমবারের মত লক্ষ্য করলাম তার বসে থাকার ভঙ্গিটি মানুষের নয়, কেমন রোবট-রোবট । এবার তার সাথে আমার চোখাচোখি হয়েছে । এখন সে আমার দিকে তাকিয়ে মধুর ভঙ্গিতে হাসছে । আমি চোখ সরিয়ে নিলাম ।

_______________________
৮টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×