somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সার্চ ইন্জিন নিয়ে কান্না, আর না আর না!

২৫ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেশ কিছু পোস্ট পড়লাম আমাদের একটা শিশুর হঠাৎ আবিস্কার (!) আর তার বাবা মা-র সেটাকে নিয়ে মিডিয়াতে যাওয়া। মিডিয়ার অন্ধের মত সেটা নিয়ে বাড়াতে বাড়াতে আকাশ ছুঁইয়ে দেয়া নিয়ে সমালোচনা।
ফলাফল স্বরূপ, সামুতে ডেভেলপলার/প্রোগ্রামারদের রাগ মোচন, এবং তা দেখে আরেকজনের রাগের উদ্রেক- সবাই কেনো একটা বাচ্চাকে নিয়ে লাফা লাফি করছে।
পুরো বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করে যা মনে হলো, ২ পক্ষেরই খেপার যৌক্তিকতা আছে মিডিয়ার কান্ড কর্মে। জাতীয় মিডিয়াতে আচমকা এরকম ভুয়া নিউজ বাংলাদেশে যদিও নতুন না, কিন্তু এরকম ফলাও করে প্রচার করে মিডিয়া প্রমাণ করেছে,
১। কম্পিউটার সাইন্সের কোনো বেইল নাই। একটা বাচ্চা ছেলেও বড় কিছু করে ফেলতে পারে। (এটাতেই প্রোগ্রামারদের মূল রাগ।)
২। আমাদের শিশুদের অনেক প্রতিভা।
৩। বাপ মা/ মামা চাচা যদি জায়গামত থাকে তাহলে ১ আর ২ কোনো ব্যাপার না!

ফলাফলস্বরূপ কিছু ব্লগার ইতিমধ্যে তাদের নিজস্ব সার্চ ইন্জিন বানিয়ে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। কেউ কেউ কোনো কোড না লিখেই কাজটি সম্পন্ন করেছেন।

একটা সময় ছিল (১০ বছর আগে), একটা ওয়েব পেইজ বানানোর জন্য এইচ টি এম এল শিখতে হতো- এখন ড্রাগ এন্ড ড্রপ করে ছবি আঁকার মত করে আমরা ওয়েব সাইট বানিয়ে ফেলি। ভবিষ্যত-এর প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজগুলোও তাই হবে। দেখলে মনে হবে কেউ কোড লেখার বদলে আঁকা আঁকি করছে কম্পিউটার স্ক্রীনে (এখনও আছে ইউ এম এল, অথবা WSDL)। আমার মাথায় কোনো আইডিয়া আসলেই সেটা নিয়ে আঁকাবুঁকি শুরু করি, কোড অনেক পরের কাজ।

প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে অনেক কঠিন জিনিস সহজ হবে- আসবে আরো কঠিনতর সমস্যা। এটাই তো নিয়ম। এক সময়ে একটা অপারেটিং সিস্টেম চালানোর জন্য একজন ইন্জিনিয়ার লাগত- তারও আগে এই বিষয়ে পি এইচ ডি না থাকলে কম্পিউটার অপারেটরের চাকুরী হতোনা- আজকে আমাদের ৩-৪ বছরের ছোট শিশুরা কম্পিউটার অন করে কারো সাহায্য ছাড়াই গেইম খেলছে, ছবি আঁকছে- করছে অনেক কাজ। তাই বলে তো পিএইচ ডি ধারীদের চাকুরী চলে যায়নি।

আমার মনে হয় প্রযুক্তিবিদদের এইটুকু সহনশীল হওয়া উচিত। প্রযুক্তি দুনিয়াটাই এমন, কয়েক বছর ঘাপটি মেরে পড়ে থাকা মানেই অনেক পিছিয়ে পড়া। এ কারণে নিয়মিত নিজেকে আপডেট রাখতে হয়। অনেকে মুহম্মদ জাফর ইকবাল-কে নিয়ে বলেছেন উনি কিভাবে এইটা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে বলেন। সেটা আমিও শুরুতে ভাবছিলাম। পরে খেয়াল করে দেখলাম উনি হয়তো আজকের প্রযুক্তি নিয়ে কোনো খোঁজখবর রাখেন না। ইন ফেক্ট, এটা তার সাবজেক্টও না। উনি এতটুকু জানেন একটা সার্চ ইন্জিন বানানো অনেক কঠিন কাজ (যেটা সত্যি)। হয়তো এখনকার দিনের ম্যাশআপ ট্যাকনোলোজী দিয়ে যে কত কঠিন কাজ সহজে (কোনো প্রোগ্রামিং নলেজ ছাড়া) করা যায় সেটা জানেননা। (উদাহরণ: ইয়াহু টিউবস)। এটা শুধুই আমার অনুমান। তবে যৌক্তিক অনুমান।

তাই আমার মতে, আমাদের মিডিয়ার চৌদ্দগুস্টি উদ্ধার করা ছাড়াও যা যা করার আছে,
১। আমাদের ভালো কাজ গুলো চালিয়ে যাওয়া।
২। কিছু সত্যিকারের ব্রেকথ্রু টাইপের কাজ করা। (এখনও হাতে গুনা কয়েকটি ছাড়া কিছু দেখিনি।)
৩। বাস্তবতাকে স্বীকার করা। যত ভাবে সম্ভব নিজের স্কিল ডেভেলপ করা।
৪। বাচ্চাদেরকে আরো উৎসাহিত করা। সার্চ ইন্জিন বানানো ছেলেটা যেহেতু মিডিয়াতে প্রচার পেয়েই গেছে, আমাদের শিশুদের সেটা থেকে কিছু নেয়া। যে তারাও কিছু করতে পারবে।
৫। যত বেশি ডেভেলপার হবে দেশে, সেটা আমাদের জন্য মঙ্গলজনক। বেশি ডেভেলপার, বেশি কাজ, বেশি বড় মার্কেট। বিদেশী বিনিয়োগ আনতে হলে এর কোনো বিকল্প নেই। তাই কোনো কাজে কাউকে নিরুৎসাহিত না করে, বরং উৎসাহিত করুন। (বেশ কিছু ব্লগে দেখলাম, কম্পিউটার সাইন্স না পড়া ছেলেমেয়েদের গালাগালি দেয়া হলো। )
৬। মানুষকে সম্মান করা বাড়াতে হবে। আমাদের মধ্যে একটা হাম্ভরা ভাব চলে আসে কিছু করলেই। আমার অনেক পরিচিতদের মধ্যেই তা দেখেছি। অনেক ভালো ভালো ডিগ্রী আছে, কিন্তু ডেভেলপমেন্টের অনেক সাধারণ কনসেপ্ট ঠিক মত বুঝেনা, বুঝতে চায়ওনা। বুঝাতে গেলে বলে এটা আর এমন কঠিন কি! একটা বাচ্চার কাছ থেকেও আমার অনেক কিছু শিখার থাকতে পারে। (এক্ষেত্রে উদাহরণের বাচ্চাটার কাছ থেকে শিখতে পারি কিভাবে নিজের প্রচার করতে হয়- আমাদের অনেক মেধাবীই প্রচারবিমুখ- যেটা ঠিক না)।

একটু সাধারণ আলোচনা মূলক পোস্ট হয়ে গেলো। আশা করি ভুল ভাল ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। :)
৩৩টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×