somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শেখ আশিক রোশানরাজ সরকার জুনিয়র
শ্রাবনের বৃষ্টিস্নাত স্বপ্নমত্ত এলোমেলো তরুনের হাতে নীল রঙের আল্পনা যেখানে দু ফোটা অস্রুর মাখামাখি আর তার সানগ্লাসের আড়ালে কিছুটা অনুভূতি যা কিনা সানসেটে বসে থাকা এক টুকরো রোদ অতঃপর তার হাতে থাকা উপন্যাসের শেষ পৃষ্ঠায় এসে দেখা দিল একটি শুকনো গোলাপ পাপড়ি

ভয়, বাজে স্বপ্ন এবং কারন সমূহ

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভূমিকা :
মানুষ ভয় কে আগলে রাখে অথবা খুব সহজে মন থেকে সরাতে পারে না। কারণ ভয়ের পেছনে যে মিথ্যেগুলো ঘুরঘুর করে সেগুলোকে সে বিশ্বাস করে। সেই বিশ্বাস টা দিন দিন যত গাঢ় হয় সাথে সাথে গাঢ় হয় ভয়। ভয় কে জয় করার অন্যতম উপায় হলো এর পেছনের সত্যতা যাচাই করা। আমি আসলেই যা দেখছি বলে মনে করছি, বিলিভ করছি সেটা কি আসলেই সত্য? এর পেছনের কারন কি? অথবা কতটা যৌক্তিক?
এক :
"স্লিপ প্যারালাইজড" যেটাকে বাংলায় বলে "বোবায় ধরা"।
আমরা এই শব্দটার সাথে মোটামুটি ভালোভাবে পরিচিত। ছোটবেলা থেকে প্রায়ই এই অনুভূতির সাথে আমার দেখা হতো। আমি তখন মনে করতাম এটা অতিপ্রাকৃত কোন বিষয়। এবং আমার আশেপাশের মানুষ ও আমাকে সঠিক কোন ব্যাখা দিতে পারতো না। ঘুমের মধ্যে মনে হতো কেউ আমার উপর এ বসে আছে অথবা আমার মুখ, পা বেধে রেখেছে। প্রথম প্রথম ভয় পেতাম। পরে বড় হয়ে এ ব্যাপারে পড়াশোনা করলাম এবং বুঝতে পারলাম এটা আমাদের ব্রেইন এর ঘুম থেকে সজাগ হওয়ার মধ্যবর্তী অবস্থা। যেখানে আমাদের ব্রেইন সজাগ হয়ে আছে কিন্তু আমাদের শরীরের বাকি অংশের সাথে এর যোগাযোগ স্থাপিত হতে সময় লাগছে। এখন এ বিষয় সম্পর্কে আমরা সবাই জানি এবং বুঝি। গ্রামের কেউ এসে "স্লিপ প্যারালাইজড" এর বর্ননা শুনে যদি বলে আমাদের জ্বীন এ ধরেছে তাহলে আমরা নিশ্চয়ই হেসে উড়িয়ে দিবো। বলবো তার অজ্ঞতার অভাব। ঠিক এরকম ভাবেই প্রতিটা জিনিসের ই ব্যাখা রয়েছে হয়তো আমরা সে সম্পর্কে অজ্ঞ নই। আপনি যে সমস্যা কে অতিপ্রাকৃত মনে করছেন একটু রিসার্চ করলেই দেখবেন এই কমন সমস্যা গুলো পুরো পৃথিবী জুড়েই আছে এবং এর পেছনে মেডিক্যাল সাইন্স খুব সুন্দর করে ব্যাখা দেয়া আছে।


দুই :
ছোটবেলায় আমাদের দুই বিল্ডিং পরেই যে বাসা টা তার নিচের তলায় এক মেয়েকে শেকল দিয়ে বেধে রাখা হতো। সবাই বলতো তার কাছে কয়েকটা জ্বীন আছে। তার বড় দুই ভাই আবার হাফেজ। তারা বলতো এক বোতলে করে তারা কয়েকটা জ্বীন আটকে রেখেছে। আমরাও তাই বিশ্বাস করতাম। হটাত সে রাস্তায় বের হয়ে পড়লে আমরা খেলা বাদ দিয়ে যে যার বাসায় ঢুকে পড়তাম। আমার ছোটবোন মারাত্মক ভয় পেতো। পরে যখন বড় হলাম বুঝতে পারলাম মেয়েটা আসলে ডাউন সিনড্রোম এর অধিকারী। she is just a person who has extra chromosome.
তিন :
আমার বারান্দার চারিপাশ টাই এখন বিল্ডিং দিয়ে ব্লক। আগে এর একপাশে একটা বিশাল আমগাছ ছিলো। আমার বারন্দায় এর ছোট ছোট ডাল এসে পড়তো। কথিত আছে বছরের এক সময় এখানে ডিম দুধ চাল দেয়া হতো গাছে থাকা জ্বীন দের খেতে দেয়ার জন্য। পরদিন সকালে নাকি রক্তমাখা অবশিষ্ট পাওয়া যেতো। তো আমি ছোটবেলায় রাতের পর রাত বারান্দার গ্রিল ধরে দাড়িয়ে থেকেছি জ্বীন রা কিভাবে খায় দেখার জন্য। আমার দুর্ভাগ্য আমি দেখতে পারিনি।
চার :
এটা আমাদের পাশের বিল্ডিং এর ঘটনা। সেখানে এক আপু ছিলো। সবাই বলতো তার কাছে জ্বীন আসে। সবাই তার কাছে সন্ধ্যেবেলায় যেতো পাগলামি দেখার জন্য। সে হাসতো হি হি করে। মাঝে মাঝে কেপে উঠতো। উল্টাপাল্টা বলতো। আমরাও ভয়ে থাকতাম। সন্ধ্যেবেলায় ওই গলি দিয়ে যাওয়ার সাহস ই পেতাম না। বড় হয়ে বুঝতে পারি উনি হিস্টেরিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
শেষধাপ :
এরকম আরো ঘটনা আছে আপনার চারিপাশে। সেগুলো দেখে ভয় না পেয়ে কারন টা উদঘাটন করুন। আমার মনে আছে আমি হটাত করে একবার ঘুম থেকে উঠে যাই কোন শব্দ পেয়ে। আমার বারান্দার দরজা লাগানো। কে যেন দরজার ওপাশ থেকে ঠকঠক করছে। আমি ভয় পেলেও সেটা কি দেখতে চাইলাম। দরজা খুলে দেখলাম ব্যাট ঝুলিয়ে রাখার চিকন কাঠের টুকরা খুলে দড়ির সাথে ঝুলে আমার দরজায় নক করছে বাতাসের সাথে সাথে।
রাতের বেলা যখন বিড়াল অথবা কুকুর ডেকে ওঠে তখন ভাববেন না তুর্কিস সিনেমাতে যা দেখেছেন এখানে তাই ঘটছে। বরং এটা ভাবুন কোন চোর কে দেখে অথবা অন্য এলাকার কুকুর দেখে আপনার গলির কুকুর টা ঘেও ঘেও করছে। এটাই যৌক্তিক এবং বাস্তব। রাত হলে শুধু সূর্য টা পৃথিবীর অপর পাশে আলো দেয় এবং এইপাশে অন্ধকার হয় এছাড়া আর কিছুই না।
আমরা কেন ভয় পাই এবং বাজে স্বপ্ন দেখি?
আমরা যখন স্বপ্নে কোন অপরিচিত অথবা আগে কখনো দেখিনি এমন কোন মানুষ দেখি তখন বাস্তবে কখনোই আমরা তার ফেইস মনে করতে পারবোনা। অথবা স্বপ্নে তার ফেইস আড়ালে থাকে। এর কারন আমাদের ব্রেইন ঘুমন্ত অবস্থায় যা কখনো বাস্তবে অবগত নয় বা ভাবেনি সেটা সে কখনো ভিজ্যুয়ালাইজ করতে পারে না। এমিগডালা আমাদের ব্রেইন এর এমন এক অংশ যা আমাদের স্ট্রেস, ভয় কে নিয়ন্ত্রন করে। আমাদের ভয় এর স্মৃতি গুলো সেখানে সংরক্ষিত থাকে। সেই ভয়টা কোন ভৌতিক কাহিনী, সিনেমা অথবা বাস্তব জীবনের কোন দুর্ঘটনা থেকে তৈরি হতে পারে। যখন আমরা প্রচুর স্ট্রেস এ থাকি..অথবা সময়মতো না ঘুমাই তখন আমাদের এমিগডালা ঘুমের সময় একটিভ হয়ে আমাদের ভয় এর স্মৃতিগুলোকে জাগ্রত করে এবং আমরা তখন বাজে স্বপ্ন গুলো দেখি। যার কারনে পরবর্তীতে আমাদের ট্রমাটাইজড এর মত অবস্থাতেও পড়তে হয়। এ থেকে বাচার একমাত্র উপায় মাথায় জমে থাকা ভয় গুলোকে দূর করা। আর ভয় দূর করার উপায় ভয় কে জয় করা। আর ভয় কে জয় করার একমাত্র উপায় সত্য কে জানা।
আসুন আমরা সত্য জানি..বিজ্ঞানে বিশ্বাস রাখি। নিজেকে মানসিক ভাবে হেলদি রাখি। এবং কাছের মানুষগুলোকে দুশ্চিন্তামুক্ত-সুস্থ রাখি।
সত্যেই মুক্তি..
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:৩৭
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×