সুমিত
গত দু'দিন ধরে লালনের আখড়ায় আছি। হঠাৎ বিক্ষিপ্ত মনকে শান্ত করার জন্য এর চেয়ে ভাল কোন উপায় পেলাম না। নির্জনতা আমার না-পছন্দ, ওদিকে বন্ধুদের সাথেও থাকতে ইচেছ হচেছ না। এই ভালো, সারাদিন বিভিন্ন লোকজন দেখা, অতিশয় করুন মুখ নিয়ে এসে দোয়া চায় 'বাবা কিছুই ভালো লাগে না'; বাবা দোয়া দিয়ে হাদিয়া নেন, তারপর চাল, ডাল কিনতে বের হন। রাতে তিনিই আবার কোন মহিলার; না মহিলা নয়, তার স্বামীর মনোস্কামনা পূর্ণ করে। শুনেছি সন্তান লাভের পর তারা নাকি আবার বাবার কাছে এসে ... ... ধ্যাৎ কি সব যে ভাবছি! উফ রেনি! কেন যে সেদিন ... ... (বলার অযোগ্য) করেছিলাম (হঠাৎ মোবাইলে ফোন, সিমন করেছে)।
কোথায় তুই?
মাজারে, লালনের।
কবে ফিরবি?
যেদিন নিজেকে.........
বুঝলাম, জীবন মানেই অনিশ্চিত ভ্রমন, best of luck yaar!
রেনির খবর কী রে?
ছ'মাস হলো এখনও ভুলিসনি!
বাই দোস্ত।
ছয়মাস। সত্যিই কী বিশাল সময়? একটা গাঁজা ধরিয়ে টানতে থাকলাম। নিজের সাথে বোঝাপড়াই করতে পারছি না। সেদিনের পর থেকে প্রতিটি দিন খালি মনে হচেছ একটা ভয় ........ ভয়টা আরো জাকিয়ে উঠলো, যখন আমাকে রেনি তার প্রেগন্যান্সি রিপোর্ট দেখালো। অথচ আমি জানি আমি এই ঘটনা...... মানে এই প্রেগন্যান্সির জন্য দায়ী নই। কী যে করব? সন্ধ্যা হয়ে আসছে, মাগরিবের আযান, আকাশের লালিমা সবই যেন মনে হচেছ ফালতু। বিশেষ করে আকাশের লাল রঙটা আজ যেন কোন বিশেষ স্থান হতে নিঃসৃত রক্তের কথা মনে করাচেছ। হঠাৎ দেখি এক হিপোক্রেট এসে বসল; বসুক আমার কী? কিন্তু শ্যালক দেখি কী যেন বলছে:
খালি ধোয়া নিয়ে কী সব কিছুর সমাধান হয় বাবা? গত দু‘দিন ধরে দেখছি আপনাকে। কারো সাথে কোন কথা নেই। কিছুই করছেন না। খালি চত্বরের চার পাশ ঘুরে বেড়াচেছন?
তাতে কী কারো কিছু ছিড়ছে?
ছি. ছি. তা কেন? তবে কী বাবা জানেন? আপনাদের মতো অল্প বয়সীদের এরকম ভাবে শুধু গাঁজা টানছেন, মানায় না। বলছিলাম যে অন্য কী কিছুই করার উপায় নেই? নিজের প্রতি আস্থা রাখুন। আপ মহান তো সারে জাহান ভি মহান।
তাই নাকি? হাইট টা ছোট বলে কথা একটা বলেই দিলেন দাদা?
গান গাইতে পারেন বাবা (হেসে)?
তা পারি। তবে ঠিক সাহস পাচিছনা আজকাল।
(হাসতে হাসতে)এখানে তো আপনাদের সেই মাঠ ভর্তি উম্মাদ লোক নেই আর গুড়ূম গুড়ূম আওয়াজ করা বাজিয়েও নেই। আসুন বাবা, একটা কিছু গেয়ে যান। মনটা হাল্কা হবে।