somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিচ্ছিন্ন আবেগ (পর্ব-৮)

০৬ ই মে, ২০০৭ বিকাল ৫:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্পটে রজনীকে পেলাম।

 কীরে ফুয়াদ কই?
 দুপুর থেইক্যা আছি, ওরে তো দেখিই নাই।
 তা দেখবি কেমনে, নিজেরে দেখতাচোস তো?
 হে: হে:, শুনো জলদি ভাগো, রেইড হইবো আজ।
 কিন্তু ফুয়াদ?
 জাত ডাইল খোররে পুলিশ ধরে না, তুমি ভাগো।

এদিকে প্রিন্স টা যে কোথায় গেল! পেয়েছি, বের হলাম। গেটের কাছেই দেখি ছোট্ট মন্দির। গ্রিল দিয়ে ঘেরা। ভালই, মাজারে চলে গাঞ্জা আর মন্দিরের পাশে ডাইল। কে কয় হিন্দু-মুসলমানের গ্যাঞ্জাম আছে আমাদের দেশে?

সকাল হইলো, শরীরটা ম্যাজমেজ করছে। চারপাশে এক গাদা লোক বসে আছে। প্রিন্স পাশেই। সেলের বাইরে দেখি একটা ভুড়িওয়ালা লোক বইসা আছে। পুলিশ, গতকাল ধরা, পট্টির বাইরে বাইর হইলাম, অমনি পুলিশ- শালার ব্যাড লাক! তবে হাজতে রাতে ভালই মজা হইছে। প্রিন্স গান শুনাইছে একের পর এক, আর আমি রজনীরে খোচাই একটু পর পর, শালা জাত ডাইল খোররে পুলিশ ধরেনা না! রাতে রেচারা রজনী ভূঁড়িওয়ালার কাছে একটু খেয়েচে। তরে যে ডাইলগ দিছে...'দূই বিঁচির জন্যে দূই বাড়ি ওকে'। একটা ঠোলা দেখি আমারে আর প্রিন্সরে ডাকছে। এইবার কী আমরা না কি? ভূঁড়িওয়ালার কাছে গেলাম।
 বসেন,
 থ্যাংকস, (সাপ খেলতে হবে মামা। দেখি কেমুন খেলা তোমার। আমিও খেলি। খেলারাম খেলে যা।)
 আপনাদের দেখে তো ভদ্র ঘরের সন্তান মনে হয়।
 আমরা বেসিক্যালি ভদ্র ঘরেরই ছেলে।
 তো পট্টিতে যে?
 একজন বন্ধুকে খুঁজতে এসেছিলাম, একটু স্ক্রু ঢিলা তো; তাই.....।
 কী করেন আপনি?
 তেমন কিছুই না, (দিলাম চাল)
 তবে চলে কিভাবে?
 এই, আমার একটা কাপড়ের দোকান আছে, আর আমার ¯স্ত্রী ...... চাকুরে, আমাদের কিছু ছোট ভাই আছে। তারাও খাওয়ায়।
 তা বেশ, তো ঠিক আছে। যান আপনারা, আর আপনি ভালই গাইতে পারেন, এইসব খেয়েইকি ওরকম গলা?
 আসি স্যার আমরা, সালাম।

নাহ্, খেলাটা জমলো না। আরেকটু ইয়ে হলে ভালো হতো। যাই, সিমনের বাড়ীত যাই।

রেকর্ডিং ষ্টুডিও। এবার আমার হাফ শিফট, চার ঘন্টা। বেজটা টিউন করছি, হয়েছে। ষ্টুডিওর টেক রুম, শুরু করলাম বাজানো। আহ্ পারফেক্ট। Everything is so smooth! আমি বাজাচ্ছি, বাজাচ্ছি। চার ঘন্টা ...... বহুত সময়।


তায়েফ

সুমিত,
কেমন আছিস? আমি মানে আমরা ভালই। বেশ মজা করছি। সিমন বেশ শুকিয়েছে, ফুয়াদও নর্মাল হচ্ছে। সব মিলিয়ে ভালই, কি বলিস? এখানে এসে উঠেছি কাকুর বাসায়। জায়গাটা বনের একটু ভেতরে। বিদ্যুৎ নাই। তবে এই শীতে বিদ্যুতের কী ইউজ! বারান্দার পাশে, রাতে প্রায়ই হুংকার শুনি, কীসের বুঝতে পারছি না। বাংলোটার পাশেই একটা বিশাল মাচা, ওটার উপরে উঠে সিমন প্রায়ই বিকেলে দাড়িয়ে থাকে, আর সিগারেট খায়। বলে ধোয়াটা নাগালের বাইরে পাঠাচেছ। এখানে এসে ফুয়াদ ভালই ম্যাচ করে নিয়েছে। প্রতিদিন সকালে হেটে বেরিয়ে যায়। দুপুরে ফিরে জম্পেশ খায়। সিমন আর আমি যাই বাঘের পায়ের ছাপ খুজতে, সাথে নেপো নামের এক আর্দালি থাকে। এখনও খুঁজে পাইনি, বাঘ আছে কীনা তাও জানি না। আজ বেলা প্রায় দশটার দিকে আমরা চারজন মিলে একটা মৌচাক ভাংলাম, ওটার মধু বন মোরগের সাথে মিক্স করে পুড়ায়ে খেলাম। একটু নেশার মত লাগলো মনে হয়, ফুয়াদ আর আমি মাচায় উঠে সহজে নামতে পারি না। পরে কাকু নামালো। ও সময় ভার্সিটির ফায়ার সোহেলের কথা মনে হলো, ওদের ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির ল্যাডার দিয়ে সহজেই বেয়ে নামতে পারতাম।

গত সাতদিনে কটকার বহু কিছুই দেখলাম। ভেবেছিলাম এখানে লাইফটা ইজি গোয়িং। কিন্তু না দলাদলি এখানেও আছে। কাঠ চোর, মাছ চোর - ওদের বিচার-সব মিলিয়ে ঢাকার চেয়ে এখানকার অবস্থার খুব বেশী ইতর-ভেদ নাই। দু'তিনটা স্থানীয় ফ্যামিলির সাথে দেখা হয়েছে, ওদের বাড়িতে রাত ও কাটিয়েছি। আতিথেয়তার কোন ত্রুটি নেই। ওরাই আবার এখানকার একটা নদী আছে, পশুর নদী, ওটাতে নৌকায় ঘুরালো। বলা যায় মৌজে আছি। দু'তিনদিন বাদে ওদের কী একটা পুজা আছে জানি, সিমন তো ওটার জন্য লাফাচ্ছে, ফুয়াদ সিমনের ক্যামেরা নিয়ে একের পর এক ছবি তুলে যাচেছ। ওর সিনেমার ভুত এখনো নামেনি। কী এক ডকুমেন্টারী বানাবে বলছে।

অফিসের ছুটি আছে, তাই নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াচ্ছি। নো টেনশন, এক মাসের এই ট্যুরে বলতে পারিস লাইফের নতুন একটা ভিউ পাচ্ছি। খুব শিগগিরি একবার হিরণ পয়েন্টে যাবো। তবে আজকাল যে হারে লোক আসছে, তাতে কতদিন আর থাকবো বলাটা মুশকিল। সাইলেন্সির খোঁজে এসেছিলাম, কিন্তু এখানেও ক্রাউড। তবে একটা ফ্যামিলির সাথে পরিচয় হলো ক'দিন আগে। ওরাও ঢাকা থেকে। মেয়েটা দেখতে বেশ। দু'জন আছে। সিমন আর ফুয়াদ কামড়া কামড়ি লাগিয়ে দিয়েছে। তবে সিমন বোধ হয় খাতির ভালই জমিয়েছে। ওদের ছবি তুলেছি। রিলটায় আছে। দেখ, চিনতে পারিস কিনা। কাল ওদের বাড়িতে দাওয়াত, ওদের একজনের নাম শশী, আরেক জনের নাম শাম্মী।

৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×