গণমাধ্যম ও সরেজমিন থেকে জানা যায়, অনিক ও খায়রুলসহ আট শিক্ষার্থী শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বাদাঘাট এলাকায় নৌকায় করে ঘুরতে যান। এদের মধ্যে তিন জন ছিলেন মেয়ে শিক্ষার্থী। ভ্রমণ শুরুর কিছুক্ষণ পর তারা ডাকাতের কবলে পড়েন। ছয় জন পালিয়ে আসতে পারলেও ওই দুজনকে ডাকাতরা ধরে নিয়ে যায়। ডাকাতের কবল থেকে পালিয়ে আসা শিক্ষার্থী জোসেফ বলেন,“নৌকাটি কিছু দূর যেতে না যেতেই চালক শওকত ইঞ্জিনে সমস্যা আছে বলে ধীরে ধীরে নৌকা চালানো শুরু করেন। তখন আট থেকে ১০ জন ডাকাতের একটি দল অন্য একটি নৌকায় করে এসে আমাদের ওপর চড়াও হয় এবং মোবাইল ফোনসহ টাকা পয়সা কেড়ে নেয়।”
“ডাকাতরা মেয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন শুরু করলে সঙ্গে থাকা ছেলে শিক্ষার্থীরা তাতে বাধা দেয়। একপর্যায়ে ডাকাতরা ছেলেদের বেধড়ক পেটানো শুরু করে।”
ডাকাতদের কবল থেকে ছয় শিক্ষার্থী পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও অনিক ও খায়রুলকে ডাকাতরা নিয়ে যায় বলে জানান জোসেফ।
শনিবার সকালে বাদাঘাটের চ্যাঙ্গের খাল থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
অনিকের ফুপাতো ভাই রাজীব ঘোষ বলেন, “[শনিবার] রাতেই এ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।”
_______অথচ এখানে এই ঘটনা প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল ঘটনা ঘটার পরপরই।কিন্তু তারা ব্যস্ত ছিলেন ১৬ই ডিসেম্বরের প্রোগ্রাম দেখা নিয়ে!
এখানে আমি একজন ছাত্র হিসেবে কিছু প্রশ্ন রাখতে চাই সবার সামনে যা হয়তো পর্দার আড়ালেই রয়ে যাবে নাহলে_____
*পুরো প্রক্টরিয়াল বডি চাইলেই কি যথাযথ ব্যবস্থা দ্রুততম সময়ে নিতে পারতো না??কেন লাশ সকালে শিক্ষার্থীদের তুলতে হল??কেন জনৈক স্যার বললেন যে,৪৮ ঘন্টা পর লাশ আপনাআপনি ভেসে উঠবে?(!)?
পারবেন স্যার,পারবেন নিজের ছেলে এভাবে ডুবে মরলে এই কথাটা বলতে???
**কেন জনৈক স্যার "সিগারেট" খেতে খেতে লাশ দেখতে এলেন??আমরা
পাবলিক ভার্সিটিতে পড়ি দেখে আমরা কি কুকুর-বিড়ালে পর্যায়ে পড়ি??
পারবেন স্যার নিজের ছেলের লাশ এভাবে গিয়ে দেখতে??
***কেন বারবার স্যারদের কে লাশ নদী থেকে তোলার জন্যে জাল ফেলতে বলা হলে সেই একই জনৈক স্যার ছাত্রদের বললেন "প্রতিবার জাল ফেলতে ২০০০ টাকা দিতে হয়??"
হায়রে!!!একটা পাবলিক ভার্সিটির ফান্ডের এমনই দুরবস্থা যে ছাত্রের লাশ তুলতেও টাকার হিসেব দিতে হয়!(?)!
****কেন সিইপি ডিপার্টমেন্ট হেড ড.মো.আখতারুল ইসলাম লাশের কোনো সুরাহা না করে উল্টো ছাত্রদের রূহের মাগফেরাত কামনা(!) করতে বলেন!?!
বেলা প্রায় ১২.৩০ টা পর্যন্ত এইসব নাটক মঞ্চায়িত হল।আর আমরা চোখের সামনে লাশ পচতে দেখলাম!পেলাম না আমাদের অতিপ্রিয় "জাফর স্যার" কে!!কোনো স্যারের টিকিটির সন্ধাণও পেলাম না!!
স্যার,আপনারা তো বলেন যে আমরা আপনাদের সন্তান,একেকজন কতদূর থেকে পড়তে এসেছি আমরা মা-বাবা কে রেখে।এখানে আপনারাই আমাদের মা-বাবার ভূমিকায় অবর্তীর্ণ হওয়ার কথা সেখানে আমরা লাশ হলে কি এমন দৃশ্য দেখব ভেবেছিলাম?
দুপুর ১২ টা পর্যন্ত অনিকের লাশ ওসমানি মেডিকেলে ছিল।তার লাশ পোস্টমোর্টেম ছাড়া আনতে দিচ্ছিলনা অথচ প্রশাসন ছিল নিশ্চুপ।আমাদের এত স্বনামধণ্য(!) স্যারেরা ছিলেন কোথায় তারাই বলতে পারবেন ভাল!!!
অনিক ও খায়রুল দুজনই বাবা-মার একমাত্র সন্তান।খাইরুলের বাবা নেই,আছে এক বোন আর মা।এই ছেলেটাই ছিল ঐ সংসারের একমাত্র ভরসা।
আজ কি নিয়ে বাঁচবে ঐ দুখিনি মা??
ছেলে হত্যার বিচারের দাবি জানিয়ে অনিকের বাবা দীপেন ঘোষ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সে আমার একমাত্র ছেলে।১৩ জানুয়ারি ফাইনাল পরীক্ষা শেষে অনিকের বাড়ি যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু আজ আমি তার লাশ নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।
“তাকে সিলেটে ভর্তি করিয়ে আমি তার হত্যাকারী হয়ে গেলাম।”
আর কত লাশ আমরা দেখবো???আর কত অনিক,খাইরুলরা লাশ হতে হবে সব ছাত্র ও ছাত্র-সংগঠণ কে এক হতে হলে??
প্রশাসন আমাদের একতা চায়না কেননা এতে তাদেরই লস।সব ছাত্র-সংগঠণ এক হলে তো তারা গুটিবাজি করতে পারবেন না।
কিন্তু সাস্টিয়ান হিসেবে,সাধারণ স্টুডেন্ট হিসেবে আমাদের এক থাকা উচিত।আর অন্যান্য পাবলিক ভার্সিটি তথা জনমত নির্বিশেষে সব ছাত্রদের আমাদের পাশে থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ১১:৩২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




