somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'ওয়ান স্কয়ার মাইল'- এর উসিলায় রথ দেখা সাথে কলা বেচাঁ :)

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লগে আসা হয়না বেশ সময় যাবত, কিন্তু এখানে পাওয়া মানুষগুলো জড়িয়ে আছে জীবনের অনেক আনন্দ-বেদনার সাথে। কোন পরিকল্পনা ছাড়াই হুটহুাট করে মজার আড্ডা কিবা দেখা-সাক্ষাৎ হয়ে যায়। তেমনি লাল'ভাই http://www.somewhereinblog.net/blog/lalblog ডাক দিতেই দেখতে যাওয়া হলো পুরনো ঢাকায় আয়োজন করা 'ওয়ান স্কয়ার মাইল' ....

ঈদের ছুটিতে শুক্রবার বলেই শাহবাগ থেকে মূহুর্তেই পৌছে যেতে পারলাম আহসান মন্জিলের কাছে বুলবুল ললিতকলা একাডেমীতে।


ফিল্মবোদ্ধাদের সাথে কথা বলা, সবকিছু ঠিকঠাক করার অত ব্যস্ততার মাঝেও আন্তরিকভাবে আমাদের নিয়ে সব দেখালেন। লাল'ভাইয়ের ফিল্মটাই পুরোটা দেখা হলো।

অন্য একজনের বানানো "গঙ্গাপূজা" 'টা দেখতে ভালো লেগেছে। বাকি ছবিগুলো টুকটাক ভাবে দেখা হয়েছে, পাশাপাশি ভেন্যু দেখাতেই ব্যস্ত ছিলাম আমরা, বাফা'র সুক্ষ কারুকাজের কাঠের সিড়ি তাতে খুটির মূর্তি, কড়িকাঠের ছাদ.... দারুন। এক বিদেশীনিকে বাফা'র দালানটার কথা বোঝাচ্ছিলেন একজন তা থেকেই জানলাম পর্তুগিজ আমলের দালান এটা।

বাফা'র উঠানে বাচ্চাদের হাতে আকাঁ ছবি, পুতুল সাজানো দেখেছিলাম, বুঝিনি কি ওগুলো, পরে লাল'ভাই জানালেন সকালে পাপেট শো হয়েছে ওখানে, দেরি করে আসায় মিস করেছি আমরা ... /:)

বাফা থেকে সামান্য পায়ে হাটা পথেই দলবেধেঁ সবাই গেলাম ঘাটে ষ্টিল ফটোগ্রাফী আয়োজন ছিলো ঘাটে। পাশ দিয়ে চলছিলো এক মোটরবাইক, যত না অদ্ভুত সেই মোটরবাইক ততোধিক অদ্ভুতদর্শনধারী তার আরোহী। উদ্ভট হেলমেট, গ্যাস মাস্ক, চা'য়ের ছাকনি সদৃশ্য চোখের চশমা!! অবাক হয়ে যাবার কিছু পরে বুঝলাম, ইনি প্রদর্শনীর একটা অংশ, এই শব্দ-বায়ূ-পানি দূষনের নগরীতে অদূর ভবিষ্যতে পথ চলার উপায়। :|


যদিও বিকট দুগন্ধে ভরা কিন্তু ঘাটটা বেশ সুন্দর। "বিনা স্মৃতি স্নানঘাট" নাম দেখে ভাবছিলাম, আহা, নাম রাখার মতোন কাউকে পায় নাই, নইলে সবার মতের মিল হয় নাই কোন নির্দিষ্ট নাম রাখতে! পরে শুনলাম ওটা হবে "বীনা" বানান ভুলে হয়ে গেছে "কিচ্ছু না ...বিনা" :D
মনে পড়লো কিছুদিন আগে দেখা রাস্তার এক ঘর ভাড়ার বিজ্ঞাপনবোর্ড - "যোগাযোগ করেন নিচে বেছেলার ভারা দেয়া হবে" B-)

ছবি দেখার পাশাপাশি সবাই ঘাটে অপেক্ষা করছিলো বিশেষ এক নৌকার। কিছুপরে হাজির হলো পানির বোতল বেধেঁ বেধেঁ তৈরী করা সেই নৌকা, তিনজন তা বেয়ে আনলো নদীর ওপার থেকে, ঘাটে এসে তাতে আবার নীল রঙের পলিথিনের পাল তোলা হলো। :)
বিদগ্ধজনেরা কেউ ব্যস্ত সেই নৌকার শৈল্পিকতা জানায়, কেউ তাতে চড়ে ছবি তোলায়... আর আমরা শুরু করলাম শিল্পকলা আসলে কি তা অনুধাবনের আলোচনায়। যদিও সেই আলোচনা শেষ হইছিলো সাগরকলা আর নেপালি কলা কে ভালো চিনতে পারে তাতে!! :P

এমনিই নিজেদের মাঝে কথা হচ্ছিলো কাছে ধারেই না বিউটি বোর্ডিং সময় হলে দেখে আসা যায়। যেন মুখের কথা না পড়তেই লাল'ভাই এসে হাজির, তাড়া দিলেন গাড়িতে ওঠতে, সবাই বিউটি বোর্ডিং যাবে অন্য শো দেখতে!!
যাবার পথে রাস্তা না চেনা ড্রাইভার ঘুরে ঘুরে এগলি ওগলি করে আর গাড়ির একেক জনের একেক পথপ্রদর্শনের চেষ্টার মাঝে আমি "পুরান ঢাকায় নতুন" মজা করে আশপাশ দেখি ... :)

বিউটি বোর্ডিং -এর বদলে আমরা গেলাম লালকুঠি। জায়গাটা সবচেয়ে দারুন লেগেছে, অনেক সুন্দর। লাল-সাদা দালানটা কালোরঙের কাঠের কারুকাজ করা সদর দরজাটা, পুরো জায়গাটাতে জ্বলজ্বল করছে যেন। এখানকার অডিটোরিয়ামটা অনেক গুছানো। তবে বিচ্ছিরি লাগলো দেখতে লালকুঠি'টার দু'পাশ চেপে গড়ে ওঠা আধুনিক বিয়েবাড়ি আর পিছনের উঠান জুড়ে তাদের বিশাল রান্নাঘর!! লালকুঠি'র পেছনদিকের অডিটোরিয়ামের শো'টা ছিলো এক বিদেশীর। তাতে আগ্রহ হয়নি, কিন্তু ওটা দেখতে গিয়ে পেলাম এক সাজঘর। দর্শকদের জন্য সাজানো ছিলো সেটা ফুল দিয়ে, কলাকুশলীদের সাজ-পোষাক দিয়ে, যেন এক্ষুনি কেউ আসবে তার সাজ ঠিক করতে! তবে যেটা বেশি ভালো লাগলো তা ছিলো ওই সাজঘরে বাজতে থাকা একটা সুর, মন্দিরা-আজানের ডাক-উলুধ্বনি মেশানো এক সুর... দারুন। লালকুঠির দেয়াল তাতে মাঝে মাঝে খষে পড়া কারুকাজ দেখতে দেখতে অনেক সময় লাগাইলাম খেয়ালই নাই, কিছুপর দেখি সব ফাকাঁ দু'জন ছাড়া দলবলের কেউ নাই, :-* ভয়ে দে দৌড় আমরা বিউটি বোর্ডিং এর দিকে....

বিউটি বোর্ডিং এর শো'টা দেখতে বসেছিলাম কিন্তু ছোট্টরুমের কারনে চোখ জ্বালা শুরু হওয়াতে আবার আমাদের পারিপাশ্বিক পরিভ্রমন শুরু .... বিউটি বোর্ডিং বলে কথা, ছোট ছোট কত কিছু আছে দেখার। এখানেও চলছিলো এক স্টিল ফটোগ্রাফীর শো, কাপড় কাগজ দিয়ে বানানো নদী-দূষনের উপস্হাপনা।

বিউটি বোর্ডিং এ মাছ আর পাখির সহাবস্হানের ব্যবস্হাটা ভাল লাগছে, ওটাকে কি এক্যুরিয়াম বলা যায়?
সব দেখার পর মজার খাবার খেয়েই বিউটি বোর্ডিং থেকে আহসান মন্জিলের শো'তে এসে দেখি যান্ত্রিকতার কারনে জানি কিছু সময়ের জন্য শো বন্ধ। তাতে কি আমরা রথ দেখা বাদ দিয়ে কলা বেচাঁতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম, আহসান মন্জিলে ফটোসেশন করে। B-)

সন্ধ্যা হয়ে এলো বলে বাকি শো গুলো না দেখেই রওনা দিলাম বাড়ির দিকে। ধন্যবাদ লাল'ভাই সুন্দর একটা অভিজ্ঞতা নেবার সুযোগ করে দেবার জন্য। :)

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৩৪
১০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×