মুখবন্ধ- সামগ্রিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এ কথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। যারা গেলো গেলো রব তুলেন কিন্তু বাস্তবতা তা বলে না, আমি দীর্ঘদিন থেকেই সবকিছু শেষ হয়ে গেলো, সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেলো, এই গেলো গেলো রব শুনে আসছি, কিন্তু এসবের কিছু ঘটছে না, যেমন- দেশ ধ্বংস হয়ে গেলো, ইন্ডিয়া দেশ দখল করে নিলো, দেশ দেউলিয়া হয়ে গেলো, রিজার্ভ শেষ হয়ে গেলো, দেশ অন্ধকারে ডুবে গেলো ইত্যাদি কিন্তু এসবের কিছু ঘটেনি শুধু গত এক মাসের বিদ্যুতের কিছু ঘাটতি ছিলো তবে তা এখন দূর করা হয়েছে।
ইসসরে দ্যাশটা শেষ হই গেলো!! এই শ্যাষ হয়ে গেলো পার্টি আসলে কোন সমাধান চায় না, তারা চায় চায়ের দোকানে ঝড় তুলতে, নেগেটিভিটির প্রতি মানুষের আকর্ষণ খুব বেশি হয়ে থাকে যে কারণে তারা শুধু নেগেটিভিটি'ই নিয়ে থাকে। তাদের আপনি আশার কথা শুনান, উন্নতির কথা শুনান, অগ্রগতির কথা শুনান তারা এসবের কিছুই শুনবে না, তারা নেগেটিভিটির আবর্জনা দিয়ে আলোচনার টেবিল ভরিয়ে তুলবে। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা'কে যিনি যাবতীয় নেগেটিভিটি পাশ কাটিয়ে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, আর দেশকে এগিয়ে নেয়ার এই দুরূহ কাজের একমাত্র ক্রেটিড পাওয়ার যোগ্য হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এছাড়া আর কেউ নন। তিনি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক যাবতীয় চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র সব ধূলিসাৎ করে দিয়ে বাংলাদেশ নামক এই ভাঙ্গা নৌকাটি মেরামত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ১৪ বছরে তার বিরুদ্ধে কম ষড়যন্ত্র হয়নি, তাকে টেনে হিচড়ে ক্ষমতা থেকে নামানোর কম চেষ্টা করা হয়নি কিন্তু তবুও তিনি দমে যাননি, তিনি দমে যাওয়ার পাত্র নন, বঙ্গবন্ধু কন্যা কখনো দমে যান না। পিকুলিয়ার বাঙালীর একটা কমন মেন্টালিটি হচ্ছে, এরা ভালো থাকতে চায় না, এরা নিজেরা তো ভালো থাকবেই না, ভালো কিছু করবেই না তথাপি অন্য কেউ ভালো করলে, উন্নতি করলে তাকে টেনে হিচড়ে তার সমপর্যায়ে না নামাতে পারলে যেন এদের শান্তি নেই। শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও বিষয়টি ঠিক তেমনই হয়েছে, তাকে টেনে হিচড়ে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে দেশে অরাজক, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি না করা পর্যন্ত যেন বাঙালীর ঘুম নেই।
গেলো গেলো পার্টি যে কোন মূল্যে তাকে নিচের দিকে টেনে নামানোর চেষ্টা করতে করতে বলে- তাড়াতাড়ি ক্ষমতা থেকে নইম্যা আসো, দ্যাশটারে বিম্পি-জামাতের হাতে তুইলা দাও, আমরা আবার জালাও পোঁড়াও রাজনীতিতে ফিরে যেতে চাই, আমরা আবার হরতাল-ভাংচুরের রাজনীতিতে ফিরে যেতে যাই, আমরা আবার দুর্নীতিতে শীর্ষ হতে চাই, আমরা আবার জঙ্গি যুগে ফিরে যেতে চাই.. ইত্যাদি। এসব চিৎকার চেঁচামেচির দল যে আসলে কি যায় তারা তা নিজেরাই জানেনা। শেখ হাসিনাকে টেনে হিঁচড়ে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে তারা একবার নূরা পাগলা বা বিকাশ নূরা'কে ক্ষমতায় বাসাতে চায়, আবার রেজা কিবরিয়াকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চায়, কেউ কেউ চায় হেফাজতের মামুনুল হক, কেউ চায় চরমোনা'ইর পীর অথবা জামাতে ইসলাম এই দেশের ক্ষমতায় বসুক। কি জঘন্য!! শেখ হাসিনার পরিবর্তে এই সব পাগল ছাগলদের কি আপনি ক্ষমতায় দেখতে চান? আসলে এরা যা এদের চয়েস ও তেমন, তুলনা করার জন্য একটা মিনিমাম লেভেল তো থাকা দরকার নাকি? অথচ এই গেলো গেলো পার্টি চারিদিকে নেগেটিভিটি ছড়িয়ে নিজেদের এক বে-শা-ল রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মনে করে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এরা রাজনীতিতে বিশেষ ভাবে অজ্ঞ।
আর গেলো গেলো পার্টির চিৎকার চেঁচামেচির মূল কারণ হচ্ছে- মানুষের সস্তা সেন্টিমেন্ট নিয়ে খেলা করা এবং দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, অরাজকতা এদের খুউব পছন্দ, গণতন্ত্রের নামে এরা বাংলাদেশকে বিম্পি-জামাতের হাতে তুলে দিয়ে দেশটাকে অরাজকতায় ভরিয়ে তুলতে চায়, অতঃপর ঘোলা পানিতে মৎস্য শিকার করতে চায়। সবকিছুর'ই তাদের কাছে একটা সহজ সমাধান আছে আর তা হচ্ছে- রাস্তায় কলার খোঁসা পড়ে আছে, সব সরকারের দোষ। ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি হইসে, সব সরকারের দোষ। অফিসে বসের কাছে ঝাড়ি খাইসে, সব সরকারের দোষ। রাতে বউর হাতে আচ্ছা মতো ধোলাই খাইসে, সব সরকারের দোষ। ঘুমোতে যাওয়ার আগে সরকারের দোষ, ঘুম থেকে উঠে সরকারের দোষ, সবকিছুতেই এরা শুধু সরকারের দোষ দেখে আর নিজেরা এমন একটা ভাব ধরে যেন ভাজা মাছটি উল্টে খেতে পারে না, মানবতার ঝণ্ডা যেন আজ তাদের হাতে, তদের চেয়ে ভালো মানুষটি আর পৃথিবীতেই নেই। অথচ প্রকৃত সত্য হচ্ছে- যারা আজ খুউব ভালু ভালু কথার ফুলঝুরি ফুটচ্ছে, গণতন্ত্র, গণতন্ত্র বলে মুখ ফেনায় ভরিয়ে তুলছে তাদের প্রত্যেকটারে আমি চিনি, খুব ভালো করেই চিনি, আমি তাদের টপ টু বোটম চিনি, আর তাই এদের ভালো ভালো কথা আমার কাছে মূল্যহীন। বি-কেয়ারফুল বন্ধুগণ যারা খুব ভালো ভালো কথা বলে তাদের থেকে। এই দেশের প্রত্যেকটা চোর, প্রতিটি বাটপার, প্রতিটি বদমাশ, প্রতিটি ভণ্ড নিজ নিজ অপকর্ম এবং ব্যর্থতার যাবতীয় দায় সরকারের উপর চাপিয়ে এক ধরণের মানসিক প্রশান্তি অনুভব করে এবং নিজেদের বিশাল রাজনৈতিক গবেষক মনে করে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এদের রাজনৈতিক জ্ঞান শূন্যের কোঠায়। এরা মূলত শাহবাগে নূরা পাগলার আলু, পেয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে জ্বালাময়ী বক্তব্য শুনে এবং ইউটিউবে আল্লামা পিনাকি এবং মৌলানা ইলিয়াসের ভিডিও দেখে রাজনৈতিক জ্ঞান অর্জন করে। সুতরাং এদের রাজনৈতিক গবেষক তো দূরের কথা বড় জোড় এদের মানসিক রোগী অথবা সুযোগ সন্ধানী বলা যেতে পারে, যারা সুযোগের অভাবে এখনো চুরি, দুর্নীতি করার সুযোগ পায়নি তাই খুউব ভালো মানুষটি সেজে বসে আছে, তারা মূলত সরকার পরিবর্তনের আড়ালে সুযোগ চাচ্ছে দুর্নীতিতে আরেকবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য।
নোট: দোষ গুন ছাড়া পৃথিবীতে কোন সরকার নেই, ক্ষমতাসীন দলের অপকর্মের ফর্দ সবসময় একটু বড় হয়েই থাকে, কিন্তু তাই বলে জেনে বুঝে পাবলিকের সস্তা সেন্টিমেন্টের উপর ভর করে দেশকে আমরা অরাজকতার দিকে ঠেলে দিতে পারি না, আর তাই বাংলাদেশের জন্য শেখ হাসিনা ছাড়া বিকল্পও কিছু দেখি না। আজকে জামাতের বিরুদ্ধে বললাম, কালকে বললাম বি এন পির বিরুদ্ধে, আরেকদিন বললাম আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে, অথবা আজকে এর পক্ষে, কালকে ওর পক্ষে আরেকদিন আরেকজনের পক্ষে এভাবে সব পক্ষের পক্ষে বা বিপক্ষে কথা বলে বা ব্যালেন্সিভ কথাবার্তা বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ হওয়ার আমার দরকার নেই, আমি আওয়ামীলীগের সাপোর্টার আর তাই আমি এ দলের পক্ষেই কথা বলবো।
ধন্যবাদ।
আচ্ছা, বয়ান তো অনেক হলো, এবার গেলো গেলো রব বন্ধ করে এক নজরে ভিন দেশীর চোখে বাংলাদেশ দেখি, নিচের ভিডিও থেকে।
বিষয়টা মোটেও এমন নয় যে, আমরা যারা বাংলাদেশ নিয়ে আশাবাদি বা পজেটিভ চিন্তা ভাবনা করি তাদের ওই চায়ের দোকানের বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে বাংলাদেশের সার্বিক পরস্থিতি সমন্ধে জ্ঞান অর্জন করতে হবে, আমরা মোটেও মঙ্গল গ্রহ থেকে আবির্ভাব হয়নি যে আমাদের আল্লামা পিনাকির ভিডিওর জন্য তীর্থের কাকের মত অপেক্ষা করতে হবে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি বুঝতে। সুতরাং তোমরা যারা চায়ের দোকানের বিশেষজ্ঞ তারা চায়ের দোকানেই পড়ে থাকো আর ফেসবুক ভিত্তিক গার্বেজ জ্ঞান নিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন কোন তথ্য আমাদের দিতে এসে না, তোমাদের ওইসব ফেসবুকীয় গার্বেজ আমাদের কাছে মূল্যহীন।
তো আরেকজন আমেরিকান অর্থনৈতিক স্কলার বাংলাদেশের ইকোনোমিক গ্রোথ নিয়ে কি বলে একটু শুনি-
How Bangladesh is Secretly Becoming the Richest Country In South Asia
আসলে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এটাই হচ্ছে শেষ কথা, কিছু মানুষের গাঁ জ্বালা করলেও বাংলাদেশের এই উন্নয়ন কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না, জয় বাংলা।