somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জাদিদ
তুমি আমার রাতবন্দিনী। ধূসর স্বপ্নের অমসৃণ সুউচ্চ দেয়াল তুলে তোমাকে আমি বন্দী করেছি আমার প্রিয় কালোর রাজত্বে। ঘুটঘুটে কালোর এই রাজত্বে কোন আলো নেই। তোমার চোখ থেকে বের হওয়া তীব্র আলো, আমার হৃদয়ে প্রতিফলিত হয়ে সৃষ্টি করে এক অপার্থিব জ্যোৎস্না।

যাপিত জীবনঃ কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে কভু আশীবিষে দংশেনি যারে।

১১ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১।
মেয়েকে রুমে একা রেখে বাথরুমে গিয়েছিলাম। দুই মিনিট পরে বের হতে গিয়ে দেখি দরজা বাইরে থেকে লক। পিলে চমকে উঠে খেয়াল করলাম পকেটে তো মোবাইলও নাই। আমি গেট নক করছি আর আমার মেয়ে দরজার ঐ পাশ থেকে মিটিমিটি হাসছে। আমি কাতর কন্ঠে বললাম, মাগো, দরজাটা খোলো মা!
মেয়ে হাসতে হাসতে বলল, না বাবা! খুলব না।
আবার রিকোয়েস্ট করলাম, অনুরোধ করলাম, হুমকি দিলাম, ধমক দিলাম - কোন লাভ হলো না। সেই মুহুর্তে মনে পড়ল স্কুলে একটা ভাবসম্প্রসারন শিখেছিলাম, "কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে কভু আশীবিষে দংশেনি যারে" সেই ভাবের এহেন সম্প্রসারন আমি কল্পনাও করি নাই।
শেষমেষ বললাম, মা, আমি কান্না করব কিন্তু।
মেয়ে চুপচাপ।
আমি আবার বললাম, আমি কিন্তু কান্না করব।
মেয়ে বলল, কিভাবে ওয়া, ওয়া করে।
মাননীয় স্পীকার হয়ে ভাবলাম কি সর্বনাশ ব্যাপার। মেয়ে আমার কান্না দেখতে চায়। মনে মনে প্রমোদ গুনলাম। বললাম, হ্যাঁ, ওয়া ওয়া করে কাঁদব।
আমি দেখব বাবা! মেয়ের কন্ঠে কিছুটা উত্তেজনা টের পেলাম।
আশার আলো দেখতে পেয়ে বললাম, তাহলে গেট খুলে দাও মা!
কিছুক্ষন নিরবতা। তারপর গেট খোলার শব্দ পেয়ে জানে পানি আসল। দরজা খুলে বের হতে না হতেই ও বেশ কৌতুহলী চোখে আমাকে জিজ্ঞেস করল, কই বাবা! ওয়া ওয়া করে কাঁদছ না কেন। দু চোখে প্রচন্ড আগ্রহ দেখে আমি হেসে ফেললাম। মনে মনে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবলাম, কন্যা উহার মাতার হৃদয় পাইয়াছে। হাজার অনুনয় না করিলে চিড়ে ভিজে না।
তবে আশার কথা, 'মেয়েরা' নিষ্ঠুর হবে এটা স্বাভাবিক কিন্তু কন্যারা নিষ্ঠুর হয় না। কারন ইহা প্রকৃতি বিরুদ্ধ।

২।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফী চ্যানেলের একটা ডকুমেন্টারি অনুষ্ঠানের নাম Taboo (ট্যাবু)। পৃথিবীর নানারকম অস্বাভাবিক সামাজিক রীতি বা সংস্কার, মানসিক অবস্থা বা বিশেষ অভ্যাসের নাম ট্যাবু। জনৈক ব্যক্তির সাথে আড্ডার সময় খানিকটা জ্ঞান ঝাড়ার উদ্দেশ্য বেশ গম্ভীর কন্ঠে তাকে জিজ্ঞেস করলাম,
-ভাই ট্যাবু সম্পর্কে জানেন?
তিনি সাথে সাথে উচ্চস্বিত কন্ঠে আমাকে জবাব দিলেন, আরে!! জানুম না ক্যান? হিন্দি সিনেমার খুব জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন। একটা গান আছে, রাহ মে উনসে মোলাকাত হো গ্যায়ি- এই ছবিতে অভিনয় করছিল। সেই রকম মারাত্মক গান রে ভাই।
আমি কিছুক্ষন হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থেকে বললাম, বসেন ভাই, একটু পানি খেয়ে আসি।

ইহার শিক্ষা হলো - মানুষ বুঝে আপনাকে পান্ডিত্য দেখাতে হবে।

৩।
কিছুদিন আগে এক দম্পতিকে দেখলাম সাইকেলে চড়ে কর্মক্ষেত্রে যাচ্ছেন। কর্মক্ষেত্রের বিষয়টি নিশ্চিত হলাম ঝুলানো দুইটি টিফিন ক্যারিয়ার দেখে। স্বামী সাইকেল চালাচ্ছেন এবং তাকে পিছন থেকে আঁকড়ে বসে আছেন তার স্ত্রী। দেখে মনে হলো তারা কোন গার্মেন্টসে কাজ করেন।
এই খন্ড দৃশ্যের সবচেয়ে দূর্দান্ত অংশটকু হচ্ছে, ঠোঁট গোল করে শিশ দেয়ার সময় "স্বামী" লোকটির লাজুক সুখী চোখের সাথে আমার অবাক চোখের চোখাচোখি এবং আমার অবাক দৃষ্টি দেখে স্বামীর পিঠের আড়ালে স্ত্রীর হাসি গোপন করার প্রানান্ত চেষ্টা।

আমি হাসি দিয়ে হাত নাড়লাম। তারা হাসতে হাসতে চলে গেলেন। ভাবতে ভালোই লাগে এই মিথ্যে কথার ব্যস্ত যান্ত্রিক শহরে এখনও সুখদের বসবাস আছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০২৩ রাত ১:০৭
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×