somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অশিক্ষিতদের হাতে একদিন শিক্ষিতরা মার খাবে !!!

১৪ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার গৃহশিক্ষক একদিন আমাকে বলেছিলেন, যাদব, আমাদের দেশে একটা সময় আসবে যেদিন অশিক্ষিতদের হাতে শিক্ষিতরা মার খাবে। এটা যেইসেই মার নয়, সরাসরি লাঠির আঘাত। প্রায় ১৫ বছর আগের কথা আজ আচমকা মনে পরেগেল। সেদিন কথাটার গুরুত্ব বুঝিনি তাই স্যারকে জিজ্ঞেসও করিনি কথাটা তিনি কি অর্থে বলেছিলেন। আজ যখন মনে পরেযায়, তখন বেশ কয়েকটি অর্থ আমার নাকের ডগায় ঝুলেগেল।
** প্রথমেই বলে নেই বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, বা একাডেমিক সনদ থাকলেই সে সুশিক্ষিত হয়, তা নয়। যদি সেই ব্যাক্তির চিন্তা চেতনা বা কর্মে তার প্রতিফলন নাহয়। উদাহরণঃ আমারদেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। আবার কোনও ব্যাক্তি যদি উপরিউক্ত সনদধারী নাও হন, কিন্তু উন্নত চিন্তা চেতনা বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন হন তবে তিনিই শিক্ষিত। উদাহরণঃ আমার গ্রামের কাঠুরে সুন্দন দে, সে অনেক মানুষকেই কৃষি বিষয়ে শিক্ষা দিতে থাকে। আমিও তার একজন কৃষি ছাত্র। আমি অন্তত এরকম ব্যাক্তি কয়েকজন পেয়েছি।

(১) প্রজন্ম চত্বর নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থের কথা চিন্তা না-করে একটি বিশেষ মহল নাস্তিক আস্তিক রব তুলে একটি বিরাট আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে দিয়েছে। সনদ ও সুশীল নামধারী অনেক ব্যাক্তি তাদের মদদ দিয়েছে এবং দিচ্ছে। যার কারনে দেশ আজ অস্থিতিশীল। একটা রাষ্ট্রীয় ন্যায়ের পক্ষের আন্দোলনের ভেতরে যারা ধর্ম ও নাস্তিক আস্তিক বিষয়টা এনে জুড়ে দিয়েছে তারা নিশ্চিত শিক্ষিত নয়। আর শিক্ষিতরা মার খাচ্ছে কোথায়? খুব সহজ, শহীদমিনার ভাঙ্গা হচ্ছে, মসজিদ-মন্দিরে নিকৃষ্ট আঘাত করে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। কারন তারা শহীদমিনার বা ধর্মীয় স্থানগুলোর গুরুত্ব আন্তরিক ভাবে বুঝছেনা বা বুঝলেও তা স্বার্থের কারনে মানছেনা, তারাই অশিক্ষিত। সেখানেই সত্য ধারন করা শিক্ষিতরা মার খাচ্ছে।

(২) নাস্তিকতা, এটা না বললেই নয়, কোনও ব্যাক্তি নাস্তিক হবে কি আস্তিক হবে বা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করবে কি-না তা তার একান্তই ব্যাক্তিগত বিষয়। কিন্তু যখনই বাংলাদেশের মতো একটি ধর্মপ্রাণ দেশে এটা ফলাও করে প্রচার করে অন্যকে আন্তরিকভাবে আঘাত করবে সে-ই মূর্খ। জানি আস্তিকরা মানবতাকে মূল্যায়ন করে বেশি, ঠিকাছে, মানবতাকে অবশ্যই মূল্যায়ন করা উচিৎ এটা ধরমেও আছে। কিন্তু অন্যের মননশীলে আঘাত বা তার বিশ্বাসে আঘাত করে দ্বিধান্বিত করাও কিন্তু অমানবতা। এটা মানবতার কোনও উদাহরণ হতে পারেনা। আর এর কারনে মার খাচ্ছে কোথায়? এটাও সহজ শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরের একটি ন্যায়নিষ্ঠ আন্দোলন এখন দেশের মানুষকে দুটি ভাগে ভাগ করে আন্দোলনটাকে একটা বিরাট মার দেয়া হয়েছে। এটার কারন ওই নাস্তিকতা। নাস্তিকরা যদি নিজেদের নাস্তিকতা প্রচার না করতেন, তাহলে নাস্তিক সম্পর্কে মানুষের ধারনা থাকতোনা এদের উচিৎ ছিল নিজের চিন্তা নিজের ভেতরেই রাখা। তাহলে আজ বিএনপি জামাত এই আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সাহস বা সুযোগ পেতোনা। সরকারও এই বিশাল আন্দোলনকে পাশ কাটিয়ে দিয়ে ভোটের রাজনীতি করার সাহস বা সুযোগ পেতোনা। অবশ্যই এটার জন্য দায়ী ওই নাস্তিককূল।

(৩) এখন দেখি সংখ্যার বিচারে কিভাবে শিক্ষিতরা মারখেতে পারে। মোটামোটি শিক্ষিত মানুষেরাও বর্তমানে দুটির বেশি সন্তান নিচ্ছেনা। সে সুশিক্ষার কারনে হোক, অর্থনৈতিক কারনে হোক, সামাজিক কারনে হোক বা তথ্যপ্রযুক্তির কল্যানে তার ফল জেনেই হোক। কিন্তু আমি দেখেছি, শিক্ষার আলো না পাওয়া দিনমজুর অন্তত ৬/৭টি সন্তান নিচ্ছে। কম হলেও ৩/৪/৫টি। যার একটিকেও শিক্ষিত করবে দূরের কথা ঠিকমতো ভরণপোষণ দিতে পারেনা। এবং আরেকটি বিষয়, অধিক বিবাহ। এদের কারো কারো বিবাহের সংখ্যাও বেশি। বিবাহের সংখ্যা বেশি হলে সন্তানও হবে বেশি। তবে অর্থনৈতিক অবস্থা, চিন্তা চেতনা ভালো বা শিক্ষিত, এমন মানুষেরও স্ত্রী-সন্তান বেশি আছে কোথাও। সেই পরিবারে শিক্ষার আলোও আনুপাতিক হারে বেশি। একটা উদাহরণঃ ১১ই মার্চ, কৃমিনাশক ট্যাবলেট আর ভিটামিন ক্যাপসুল খাওয়া নিয়ে গুজব। আমি বেশ কয়েকটি ঔষধের দোকান ডাক্তার চেম্বার ও পরিচিত-অপরিচিতজনদের সাথে আলাপ করে বুঝলাম, যারা এই গুজবে কান দিয়ে দৌড়াদৌড়ি চেঁচামেচি করেছেন তারা বেশীরভাগই শিক্ষার আলো পায়নি। এবং তার মধ্যে আছে সনদধারী মূর্খও। কিন্তু একটা বিষয় আমাকে অবাক করেছে যে, আমার গ্রামেই এক কাঠুরে দিনমজুর সুন্দন দে এই গুজবে কান দেয়নি। বরং সে গুজবে বিশ্বাসীদের গালিগালাজ করেছে আমার সামনেই। আমি থাকে অন্তত এই একদিনের জন্য শিক্ষিতই বলবো। আর শিক্ষিতরা মার খাচ্ছে কোথায়? মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের কাঁচ ভাঙ্গা হয়েছে। শুনেছি আমার এক আত্মীয়ের গ্রামে টিকাদানকর্মীকে কেন্দ্র বন্ধকরে চলেযেতে বাধ্য করা হয়েছে। এবং অনেক জায়গায় টিকাদানকর্মীকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আর একদিন আগে এই গুজব ছড়ালে গ্রামাঞ্চলের মানুষ টিকাকেন্দ্রে যেতোনা। একটি মিথ্যে কারনে সরকারের অনেক ক্ষতি হতো পাশাপাশি শিক্ষিত সমাজেরও। এটাই হলো অশিক্ষিতের হাতে শিক্ষিতের মার খাওয়া।

আরও অনেক কারণই হয়তো আছে যা আপনার মনে আসতে পারে, বা না আসতে পারে। সম্ভব হলে কমেন্টে শেয়ার করতে পারেন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×