আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারী। আমরা স্ব-পরিবারে প্রত্যুষে রওয়ানা দিয়েছিলাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। নিউ মার্কেট এলাকা দিয়ে প্রবেশ করার সময় আমার ৬ বছরের ছেলে এবং ৪ বছরের মেয়েকে ফুল কিনে দিয়েছিলাম শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। সকাল আট টার দিকে পলাশীর মোর দিয়ে স্বাধীনতা চত্ত্বর পর্যন্ত পৌছলাম। আমার হাতে ধরে হাটছিলো আমার ছেলে আর আমার স্ত্রীর হাত ধরে হাটছিলো আমার মেয়ে। হঠাৎ শহীদ মিনারের দিক থেকে লোক পিছন দিকে ছুটতে শুরু করলো। কানে ভেসে আসলো মারামারি হচ্ছে। তৎক্ষনাত আমারা একসাথে উদয়ন স্কুলের দিকে দৌড়াতে শুরু করলাম। কিন্তু দৌড়াতে পারি নাই। প্রথমে আমার ছেলে নিচে পড়ে যায়। তাকে উঠাতে গিয়ে আমিও নিচে পড়ে যাই। সাথে সাথে আমার স্ত্রীও মেয়েকে নিয়ে রাস্তার উপরে পড়ে যায়। আর আমাদের উপর দিয়ে মানুষ দৌড়াতে থাকে। ১৫ - ২০ সেকেন্ড এর ভিতরে কয়েকজন শুভাকাঙ্খীর মাধ্যমে আমরা উদ্ধার পাই। অনেক বার চেষ্টা করেছি ছেলেটাকে নিরাপদ রাখতে। তারপরও সে আঘাত হাতে-পায়ে ব্যাথা পেয়েছে। মেয়েটাকে নিরাপদ রাখতে গিয়ে আমার স্ত্রীর বুকে, মাথায় প্রচন্ড আঘাত পেয়েছে। নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিলো। সেই কি যে দৃশ্য তা বলে বুঝাতে পারবোনা।ছেলে-মেয়ের কান্না থামাতে প্রায় এক ঘন্টা সময় লেগেছে। ওদের মায়ের নাকে রক্ত দেখে আরো বেশি কান্না করছে। আমার হাতে-পায়ের চামড়া উঠে গেছে। তা দেখে ওরা আরো বেশি কান্না করছে। একটু পর পর বাসায় আসার জন্য কান্না করছে। কিন্ত তাদেরকে একটু স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। যেই মাতৃভাষা দিবসকে নিয়ে তাদের এত উৎসাহ, এত প্রশ্ন - সেই শহীদ মিনার চত্তর থেকে ভয় পেয়ে বাসায় পিরতে চাইছে। আমার মেয়েটি একটু পর পর চিৎকার দিয়ে উঠছে ওরা আমার ফুল নষ্ট করে ফেলেছে। মেয়েটিকে আবার ফুল কিনে দেই কিন্ত ছেলেটি আর ফুল কিনার জন্য উৎসাহ দেখায় নাই। পরে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বই মেলা ঘুরে বাসায় আসি। এই লেখাটি যখন লিখছি সবার সারা শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভুত হচ্ছে। আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন। যারা আমাদেরকে সাহায্য করছেন আল্লাহ তাদের সহায় হউন। আমরা ছাড়াও অনেকেই আহত হয়েছেন। কিছুক্ষন পরে মেয়ের হারানো জুতা খুজতে গিয়ে দেখি একজন মহিলা প্রচন্ড আঘাত পেয়েছেন। তাকে একটি মাইক্রো বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই বিশৃঙ্খলা কেন হলো? আমার বাচ্চারা কি ভবিষ্যতে নির্ভয়ে শহীদ মিনারে যেতে চাইবে অথবা আমরা কি ওদেরকে নিয়ে যাওয়ার জন্য মন কি সায় দিবে ?????
আলোচিত ব্লগ
=হিংসা যে পুষো মনে=

হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।
কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন
গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন
রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি
রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি
সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।
রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।