ইশতেহারের ৩৫ দফার মধ্যে ৩২ দফায় ‘মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা’ অংশে বলা হয়, ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে-
1. যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলমান থাকবে,
2. মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকার চেতনা নিয়ে মানুষকে সচেতন করে তোলা হবে,
3. সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হবে.
4. মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করে ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’ দের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে.
5. মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে.
আমি কোন রাজনৈতিক নেতা কিংবা কোন রাজনৈতিক দলের দালালও নই, তবে একজন নাগরিক হিসাবে কিছু বাক স্বাধীনতা ও সমালোচনার করার অধিকার আছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার নিয়ে কিছু না বলে আর পারলাম না ………
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলমান থাকবে
এই কথায় মধ্যে তেমন কোন নতুনত্ব কিংবা গুরুত্ব নেই, ইশতেহার কথার অর্থ যদি হয় গুরুত্ব, তাৎপর্য তাহলে আমি বলব ঐক্যফ্রন্ট সেই গুরুত্ব ও তাৎপর্যের সামান্যতম বোঝার চেষ্টা করনি। সকল রাজনৈতিক দলের মত বাংলাদেশিদের বোকা বানানোর অভিপ্রায় মাত্র। ভোট হাতানোর জন্য সফটকর্নারে আঘাত করে ভোট হাতিয়ে নেওয়া, আসলে অ্যানালগ পলিটিক্স, অ্যানালগ থিংকিং। এভাবে যদি ইশতেহার তৈরি করে জনগণের কাছে ভোট চাওয়া হয় আর সেই চাওয়ায় সাড়া দেওয়া মানে ইশতেহার না দেখে আগামী ৫ বছরের কথা না ভেবে নিজের স্বার্থের কথা ভেবে সমর্থন করা মাত্র।
কিভাবে সম্ভব?
আমি ধরে নিচ্ছি সচকিত নয়নে এবং দুর্দৈবক্রমে ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় আসলেন, এখন আমারা যেহেতু দেখছি কে প্রধানমন্ত্রি এবং কে রাষ্ট্রপতি হবে সেইটা এখন নিশ্চিত হয়নি পরবর্তীতে সংসদে ঠিক হবে, তাহলে কি আমি ভাবতে পারি না? প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি ঐ ২২ জন জামাত নেতার থেকে হতে পারে না? যদি হয় তাহলে কিভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলমান থাকবে আমার বোধগম্য বা বিশ্বাস যোগ্যতা আসে না। আপনি হয়ত আমাকে আওয়ামী লীগের দালাল হিসাবে গালি দিতে পারেন। এটা আপনার বাক-স্বাধীনতা আমি আসলে যেটা বলার চেষ্টা করছি সেটা হল ইশতেহার হল একটা দলের আগামী ৫ বছরের কর্মকাণ্ডের আয়না। তাহলে সেই আয়ানায় কি প্রতারককে সাথে রেখে প্রতারনার্ ছলচাতুরী মাত্র? BNP এর মত একটা বড় দল ঐক্যফ্রন্টে সাথে থেকে এই ধরণের ইশতেহার দিয়ে আওয়ামী লীগের ২০৪১ সালের সনদের কাছে কি এমন ব্যতিক্রম জিনিস নিয়ে আসল আমার বোধগম্য নয়, মানুষকে আসলে আমারা যতটা বোকা মনে করছি মানুষ কি আসলে অতটা বোকা আছে?
আমি বলব উপর্যুক্ত ইশতেহার বাস্তবায়ন করার জন্য আমার মনে হয়না রাজনৈতিক দলের পরিবর্তনের দরকার আছে, আমি পরিবর্তনের কথা মাথায় আনতাম ঐ সময় যখন ঐক্যফ্রন্ট দেশকে একটা সম্ভাময়ের হাতছানি প্রতিশ্রুতি দিত তাহলে।
এই ইশতিহারে মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া আর কিছুই নেই, যদি মুক্তিযোদ্ধা মানে দেশের সকল সাধারণ মানুষকে বোঝায় সেখানেও আপত্তি থাকে কারণ ১৯৭১ সালে মানুষ ছিল ৭ কোটি (প্রায়), আর এখন ১৭ কোটি (প্রায়), তারমানে বাড়তি ১০ কোটি মানুষকে বাদ দিয়ে ইশতেহার প্রকাশ করা হয়েছে, যেটা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য নয়।
সুতরাং আমি আগামী ৫ বছর দেশের উন্নয়ন না হয়ে নিম্নোক্ত কাজ হোক এইটা চাই না
মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকার চেতনা নিয়ে মানুষকে নতুনভাবে আবার সচেতন করে তোলা যা আছে তাতেই হবে।
সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের একটি তালিকা প্রস্তুত করে নতুনভাবে নিজেদের মনের মত করে নিজেদের নাম ঢুকান।
মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করে ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’ দের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া কোন দরকার নেই
মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা যা আছে তাতে বৃদ্ধি আমার মনে হয় না কোন মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি আছে।
সরকারি চাকরির কোন বয়স নেই এত ভাল অফার না দিয়ে যদি বলত চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ হত তাহলেও কিছুটা আশাবাদী হতাম যে তারা ভাল কোন কাজের চিন্তা করছে কিন্তু বাস্তবতা হল মুখের সামনে তেঁতুল রেখে লোভ দেখানো, এতে জিভে জল আনলেও মনে হয় না কোন কাজে আসবে।
ভাই আমি চাই দেশের উন্নয়ন, ব্যক্তিক নয়। চাই শান্তি পালাবদলের মাধ্যমে অনিশ্চয়তায় যেতে চাই না।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:০৩