ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকের সাথে পাল্লা দিয়ে ঝিকঝিক শব্দে ছুটে চলেছে রাতের ট্রেন। গন্তব্য দূর সাগরের কোন দ্বীপ। এই ঘুমন্ত পৃথিবীতে নির্ঘুমের ঝাণ্ডা তুলে জানালা দিয়ে চেয়ে আছি আমি। মেঘে ঢাকা পরা আধো জোৎস্নার আলোয় মিলিয়ে নিচ্ছি অনেকদিন আগে তোমাকে সাথে করে দেখা আমার কল্পনার যাত্রা। এই দুটিতে মিল বলতে কেবল একটাই, এখানেও কল্পনাতেই তোমাকে বউ সাজিয়েছি, আমার কোলে মাথা রেখে নির্মল ঘুমে আচ্ছন্ন মায়াবী একটি মুখ।
ছেলেমানুষের চোখে অশ্রু ঘৃণা করতে তুমি, তাই আমি আর কাঁদি না এখন। এখন শুধু চোখ দুটি জ্বালা করে ব্যস। আর রাতগুলো কাটে নির্ঘুম, আর নিদ্রিত পৃথিবীর ভয়ঙ্কর নিস্তব্ধতা আমার হৃদয়কে বিদীর্ন করে যায় প্রতি পলে। তুমি সাগর দেখতে চেয়েছিলে, আমি আজকে সাগরের পানে ছুটে চলেছি কিন্তু তুমি কোথায়? পরে তুমি কি কখনো সাগর দেখেছিলে? আমি জানতে পারিনি। আমি জানতে পারিনি কোথায় মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে আকাশের চাঁদটাকে লজ্জা দিয়েছিলে তোমরা। আমি জানতে পারিনি তোমার ছেলের নাম কি রেখেছ, ফাহিম নাকি নতুন কোন নাম, যেটাতে আমার কোন স্পর্শ লেগে নেই। আমি জানি না, আমাকে নিয়ে কোন স্মৃতি লুকিয়ে রেখেছ কিনা বুকের ভিতরে, নাকি আমি তোমার ভাবনার রাজ্যে অবাঞ্ছিত অস্পৃশ্য হয়ে গেছি।
ভাল থেক নন্দিনী, আমি আজ বিশাল সাগরের বুকে আমার ব্যর্থ, তুচ্ছ অস্তিত্বকে বিসর্জন দিতে চলেছি, একদম একা এক রাতের ট্রেনে, বহুদিন আগের কল্পনার মত, শুধু তুমি পাশে নেই।
কোন কোন জোৎস্নার রাত এত বেদনাদায়ক সুন্দর হয় যে ইচ্ছা করে মরে যাই, ইচ্ছা করে একদম বাতাসে মিলিয়ে যাই, হারিয়ে যাই এই জগৎ থেকে..
একটি অর্থহীন প্রলাপের প্রতিউত্তর