শখের খাওয়া- খাওয়ার শখ (অভিজ্ঞতা শেয়ারিং পোস্ট)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
কেউ বাঁচার জন্য খায় আর কেউ খাওয়ার জন্য বাঁচে। খাওয়ার ব্যাপারে ছোটখাট সৌখিনতা কার না আছে? চলুন আজ একটু খেয়াল করে দেখি খাওয়া দাওয়া নিয়ে আমরা কি কি সৌখিনতা করি। প্রথমে নিজের কথা দিয়েই শুরু করি।
ছোটবেলার কথা
শৈশবের শখের খাবার দাবারের সংখ্যা তো অনেক। কোনটা রেখে কোনটার কথা বলি? কটকটির কথা মনে পড়ে? এই জিনিস নরমালি কিনতে পাওয়া যেতনা। পুরনো জিনিস কিনতে মাথায় ঝুড়ি নিয়ে কিছু ফেরিওয়ালা আসতো, তাদের ঝুড়ির মধ্যে কাপড় দিয়ে ঢাকা থাকতো সেই মহার্ঘ্য বস্তু। কটকটি খাওয়ার লোভে কত ভাল ভাল জিনিসপত্রও যে বেঁচে দিয়েছি! আরেকটা জিনিস ছিলো 'চানা বিরানী', এটা আর কিছুনা আমাদের চির পরিচিত ছোলাবুট। এক রসিক বুড়ো লোক সুর করে ডাকতো চানা বিরানীঈঈঈঈঈঈঈ, আর আমরা চতুর্দিক থেকে ছুটে আসতাম। খাওয়ার পয়সা না থাকলে চেয়ে চেয়ে অন্যদের খাওয়া দেখতাম।
চুইঙ্গামের মত এক ধরণের মিষ্টি পদার্থ বিক্রি হতো, তেল তেলে একটা বাঁশের মধ্য থেকে টেনে টেনে বের করে এই জিনিস বিক্রি করা হতো। আর ছিলো আচার, কত রকমের আর কত স্বাদের যে আচার ছিলো। কলোনীর গার্লস স্কুলের সামনে আচারের পশরা সাজিয়ে বসতো আচারওয়ালা। আচার কেনার সাথে সাথে আমরা এক ঢিলে বহু পাখী শিকার করার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে আসতাম।
কলেজ জীবন
কলেজের দিনগুলো তো প্রায় দেখতে দেখতে চলে গিয়েছে। এই সময় শখ করে খেতাম ফাস্টফুড। বার্গার, স্যান্ডুইচ, রোল..........এখন যেগুলোর ছায়াও মারাই না তখন সেই খাবারই গপাগপ খেতাম। চট্টগ্রাম কলেজের সংলগ্ন গণি বেকারীতে চলে যেতাম মাঝে মাঝে। হঠাৎ একদিন কার কাছ থেকে যেন শুনলাম মিসকিন শাহর হোটেলের গরুর মাংসের সুনাম। ব্যাস, পকেটে টাকা থাকলেই ঝুপড়ির মত সেই ছোট হোটেলটায় ছুটে যেতাম গোমাংসের লোভে।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন ভাল খাবারের দোকান ছিলোনা এখনো নেই। তবে জিলানী হোটেলের গরুভুনার কোন তুলনা হয়না। আর পাহাড়ের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা চায়ের দোকানগুলোতে চা খেতে খেতে দ্বীন-দুনিয়া উদ্ধার করতে যে কী সুখ তা অভিজ্ঞতা না থাকলে বোঝা যাবেনা।
কর্মজীবন
আগে হাতে টাকা ছিলোনা কিন্তু ভাল ভাল খাবারের লোভ ছিলো, চাকরীতে জয়েন করার পর থেকে হাতে টাকা এলো কিন্তু ভাল ভাল খাবারের প্রতি আকর্ষণ কিভাবে যেন কমে গেল। তারপরও ছোটখাট সৌখিনতা যে ছিলোনা তা নয়। যেমন রাতে খাবার পরে ইগলুর ক্যারামেল কম্বো নামে একটা আইসক্রিম আছে (কোন আইসক্রিমের মত, উপরে শুকনো ফলের টুকরা থাকে) ঐটা খেতাম। একেবার রোগীর পথ্যের মত নিয়ম করে প্রায় ২ বছর খেয়েছি। পরে ৫ তলায় বাসা ভাড়া নেয়ার পরে এই আইসক্রিম খাওয়া বন্ধ হয়। কে যাবে ভরাপেটে ৫ তলা বেয়ে রাত ১০ টা-১১ টায় আইসক্রিম কিনতে? আরো একটা জিনিস অবশ্য নিয়মিত খেয়েছি প্রায় ১ বছর, সেটা হচ্ছে ডাবের পানি।
এখন
বর্তমানে শখ করে মাত্র একটা খাবারই খাই। অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে রিক্সায় ওঠার আগে ১৪ টাকা দিয়ে এক প্যাকেট 'লেইস' কিনি। তারপর কুড়মুড় করে চাবাতে চাবাতে (এবং গিলতে গিলতে) বাড়ি যাই।
নিজের কথা তো অনেক বললাম, এবার আপনাদের থেকেও কিছু শুনতে চাই।
১৭টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ধর্ম ও বিজ্ঞান
করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন
তালগোল
তুমি যাও চলে
আমি যাই গলে
চলে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফুরালেই দিনের আলোয় ফর্সা
ঘুরেঘুরে ফিরেতো আসে, আসেতো ফিরে
তুমি চলে যাও, তুমি চলে যাও, আমাকে ঘিরে
জড়ায়ে মোহ বাতাসে মদির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন
মা
মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।
অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।
একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে
ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন