বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক বললেন - ঈদ এবং ইদ দুই-ই চলবে। দুটিই ঠিক আছে (সূত্র- প্রথম আলো,২৩.০৬.২০১৭)। তাহলে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করার কিই বা দরকার আছে? কিই বা দরকার আছে বাংলা একাডেমীর সর্বশেষ বাংলা অভিধান সংস্করনে ঈদ শব্দটি "ই" ব্যবহার করে লেখা?
আপনারা মুখে বলবেন একটা আর কাজে কর্মে করবেন আর একটা, এটা একটা প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদে থাকা ব্যক্তিত্বের সাথে মানানসই নয়। মুখে বললেন - দুটি বানানই ঠিক আছে আর বাংলা একাডেমীর সর্বশেষ সংস্করনে 'ঈদ'কে বললেন - অসংগত বানান আর ঈদকে ব্যবহার করলেন ইদ লিখে। আমি জানিনা এই ধরনের কথা আপনাদের মুখে সংগত কিনা, নাকি অসংগত।
যে কোন ভাষা, মানুষ, সংস্কৃতি হাজার বছরের পথ পরিক্রমায় কোন না কোন ভিন্ন দেশের ভাষা বা সংস্কৃতি দ্বারা সমৃদ্ধ হয় বা হতে পারে, এতে বিচলিত বা উগ্র জাতীয়তাবোধের ধারনা পোষনের কোন কারন আছে বলে আমার মনে হয়না। এটা বরং আমাদের সংস্কৃতির স্বকীয়তাকে ধারন করে নিজেদেরকে আরো সমৃদ্ধ করার প্রক্রিয়া।
আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহৃত কথোপকথনে, লিখনে, সংগীতে, উচ্ছ্বাসে আমরা অনেক শব্দ ব্যবহার করি যেগুলোর উৎস বা আদি ভিন্ন দেশ বা ভাষা। এর অর্থ এই নয় যে, আমাদের ভাষা হুমকির মুখে বা সংকটে পতিত। বরং আমার কাছে মনে হয় বৈচিত্রই সৌন্দর্য্য এবং সংস্কৃতির সমৃদ্ধির পরিচায়ক।
যদিও শব্দটি "ঈদ" না "ইদ" - যাই হোক না কেন, তাতে এদেশের জনগনের উচ্ছ্বাস প্রকাশের কোন কমতি নাই বা সম্ভাবনাও নাই। কিন্তু আমার মনে হয় এটা এক ধরনের অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টির অপপ্রয়াস। ঈদ শব্দটি আগে যেভাবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত হতো, এখনও ঠিক সেরকমভাবে ব্যবহৃত হবে।
শব্দ কিভাবে ব্যবহৃত হবে তা কোন অভিধান বলে দিতে পারেনা তা সে যত আকারে বড় অভিধানই হোক না কেন? বরং আগে শব্দ ব্যবহৃত হওয়ার পরই সে শব্দ অভিধানে সংযোজন হয়ে থাকে। অভিধানের জন্য শব্দ নয় বরং শব্দের জন্য অভিধান।
২৩.০৬.২০১৭, ঢাকা।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:২৭