সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বাসায় ফিরলাম। সারাদিন দারুন মজা হয়েছে। পরীক্ষার পর এটাই প্রথম পার্টি, তাই প্রানভরে শয়তানী, দুস্টুমী করে দিন কেটেছে!
যেহেতু আমি আর রাফি আগে যাইনি, তাই আমরা ঘর থেকে আগেই বের হয়েছিলাম, যাতে কোনকিছু মিস না করি। কিন্তু গিফট পছন্দ করতে করতে এতো সময় লাগলো যে ১১টার জায়গায় পৌছুলাম ১২টায়। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, যার আসার কথা সবার পরে (ক্লাস রেকর্ড তাই বলে), সেই নুসরাত কিনা আমাদের আগে এসে পরেছে! খাবার লোভে কিনা কে জানে! (আমার অবশ্য মনে হয়, নাবিলা ওকে গতকার রাতে আসতে বলেছিলো, কিন্তু বেচারা নুসরাত লেট করে আজ সকালে এসেছে!)
আন্টির হাতের চটপটি (শুনেই লোভ পাচ্ছে, তাই না?) আর নাবিলার হাতের ব্রাউনিয়া কেক দিয়ে সারলাম আমাদের পোস্ট-ব্রেকফাস্ট পর্ব। শামুক, মানে সৌমিক, মাশাআল্লাহ খাওয়া মানে যে ইবাদত, সেটা তার ভোজনেই বুঝিয়ে দিচ্ছিলো।
এরপর শুরু হলো আমাদের ফিল্ম ডিরেক্টর রাফির চলচিত্র প্রদর্শনী! লাস্ট ঈদে রাফি ওর কাজিনদের সাথে নিয়ে একটা মৌলিক স্বল্পদৈর্ঘ চলচিত্র বানিয়েছিল, সেটার বিশেষ প্রদর্শনী। কাহিনীটা মৌলিক, শুধু "কুচ কুচ হোতা হায়" ও ধুম-২ থেকে একটু ইন্সপায়ারেশন পেয়েছিলো আর কি!
দুপুরের খাওয়ার টেবিলে বসতে না বসতে মুহতারামা তাহসিনা (ধার্মিক মানুষতো, তাই...) এসে হাজির। এতোক্ষন কই ছিলো কে জানে, কিন্তু খাওয়ার আগে ঠিকই... কথায় আছে, জাতে মাতাল তালে ঠিক!
খাবারের মেনু বলে লাভ নেই...পড়তে পড়তে কখন লোল ফেলে বাচ্চাদের মতো জামা ভিজিয়ে ফেলবেন ঠিক নেই! তবে আন্টির "আনলিমিটেড রিফিল" অপশন পেয়ে আগামী দুতিনদিনের খাবার যে সবাই পেটে পুরেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ওসমান তো পোলাও শেষ করে আবার ভাত পর্যন্ত খেয়েছে! সৌমিক আর দিশার কথা বলে তো লাভ নেই, এদের পেটে কি ব্লাকহোল নাকি কে জানে! (আমি কিন্তু ডায়েট করছি, তাই "খুব" বেশি খাইনি!)
বিকেলে বের হলাম ক্যাম্পাসে ঘুরতে। জাবির নৈসর্গিক পরিবেশে আড্ডা মারাটা যে কতো মজা, তা, যে মারেনি জীবনেও বুঝবে না। হুমায়ুন আজাদ, তসলিমা নাসরীন থেকে শুরু করে হাদিস-কোরআন শরীফ, কোনোটাই বাদ পরেনি। তানিয়া যখন ঘোষনা দিলো, যে ওর ছোট ভাই ওর জন্য বর ঠিক করবে, আমরা সবাই, মানে ছেলেরা, ওর ভাইকে "চকোলেট ফাক্টরী" কিনে দেয়ার লোভ দেখিয়ে রাজী করানোর চেষ্টা করা শুরু করলাম। কিন্তু পিচ্চি মহা চালাক, সে আমদের ফিগার দেখে বোনের বিয়ে দেবে! আমরা তো আর হৃতিক কিংবা সিক্স প্যাক-শাহরুখ নই...তাই সবার রণে ভঙ্গ!
আসার সময় শামুক প্রমাণ করলো যে, সে সত্যি সত্যি দেশের স্পিকার হওয়ার যোগ্যতা রাখে; নইলে সারা রাস্তা একা একা বকবক করতে কয়জন পারবে?
কাল ভাইভা, তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হবে, তাই শুভ রাত্রি!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


