somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘এই রায় ৪০ বছর আগের দেলুর’

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর উপস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় ঘোষণা শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৯ মিনিটে সাঈদীকে কাঠগড়ায় নিয়ে আসার পর এজলাসে আসন গ্রহণ করেন চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর এবং দুই সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।

বিচারপতি ফজলে কবীর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেয়ার পর সোয়া ১১টার দিকে বিচারপতি আনোয়ারুল হক ১২০ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্তসার উপস্থাপন শুরু করেন।

রায়ের জন্য সাঈদীকে সকালেই কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়। রায় ঘোষণার আগে আদালতের এজলাসে তাকে একটি চেয়ারে বিমর্ষ বসে থাকতে দেখা যায়। এসময় তার পরনে ছিল সাদা পাঞ্জাবি, মাথায় খয়েরি রঙের হাতের কাজ করা টুপি ও ডানহাতে কালো চামড়ার বেল্টের ঘড়ি। এ সময় তাকে কিছুটা দুঃচিন্তাগ্রস্ত মনে হচ্ছিল।

রায় পড়া শুরুর আগে বিচারপতি ফজলে কবীর উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, “এই মামলা যার বিরুদ্ধে তিনি বাংলাদেশে অত্যন্ত সুপরিচিতি। তার ওয়াজ শুনতে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করে।”

“দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কেবল মাওলানা হিসোবেই সুপরিচিত নন, তিনি দুইবার সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হয়েছেন।”

“তার আরেকটি পরিচয় হলো, তিনি জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির।”

এভাবে আসামির পরিচয় দেয়ার পর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বলেন, “আজ এখানে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার রায় হচ্ছে না। দুই বারের সংসদ সদস্য বা জামায়াতের নেতা সাঈদীরও রায় দিচ্ছে না ট্রাইব্যুনাল।”

“আজ যার রায় বিরুদ্ধে মামলার দেয়া হচ্ছে, তাকে জানতে হলে আমাদের চল্লিশ বছর পেছনে তাকাতে হবে। তখন পিরোজপুরে সাঈদীকে মানুষ চিনত দেলু নামে।”

বিচারপতি ফজলে কবীর বলেন, সেই সময়ের ৩০ বছরের যুবক সাঈদী ছিলেন রাজাকার বাহিনীর একজন সদস্য। উর্দু ভাল বলতে পারতেন বলে পাকিস্তানি সেনাদের সব অপারেশনেই তিনি তাদের সঙ্গে ছিলেন।

যে ২০টি অভিযোগে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচার হয়েছে তাতে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও নির্যাতনের মতো ঘটনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন ট্রাইব্যুনাল।

এরপর রায়ের সংক্ষিপ্তসার পড়া শুরু করেন বিচারপতি আনোয়ারুল হক।

২০১০ সালে ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে বহু প্রতীক্ষিত এই বিচার প্রক্রিয়া শুরুর পর এটি হচ্ছে যুদ্ধাপরাধের মামলার তৃতীয় রায়।

প্রথম রায়ে গত ২১ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনাল-২ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশ দেয়।

আর একই ট্রাইব্যুনালে ৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় রায়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়, যা প্রত্যাখ্যান করে তার ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন চলছে সারা দেশে।

দুই ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের সাবেক ও বর্তমান আমিরসহ আরো পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর শুনানি চলছে।

রায় উপলক্ষ্যে বুধবার থেকেই ট্রাইব্যুনাল ঘিরে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ বলছে, যে কোনো ধরনের নাশকতার চেষ্টা ঠেকাতে তারা প্রস্তুত।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পিরোজপুরে হত্যা, লুণ্ঠনসহ বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেপ্তার করা হয় সাবেক সংসদ সদস্য সাঈদীকে। পরের বছর ১৪ই জুলাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক জামায়াত নেতাদের মধ্যে দলটির নায়েবে আমির সাঈদীর বিরুদ্ধেই সবার আগে অভিযোগ গঠন হয়। একাত্তরে ৩ হাজারেরও বেশি নিরস্ত্র ব্যক্তিকে হত্যা বা হত্যায় সহযোগিতা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ভাংচুর ও ধর্মান্তরে বাধ্য করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ২০টি ঘটনায় ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তার বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।

একই বছরের ৭ ডিসেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনসহ মোট ২৮ জন রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেন।

এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া ১৫ সাক্ষীর জবানবন্দি ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করে। আসামিপক্ষে ১৭ জনের সাফাই সাক্ষ্য শেষ হয় গত ২৩ অক্টোবর।

চলতি বছর ২৯ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন বিচারক।
- See more at: Click This Link
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অল্প পুঁজিতে অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসার সন্ধান, যে কেউ চাইলে শুরু করতে পারে

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৫



কেউ একজন জানতে চেয়েছেন ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে কিভাবে মাসে ১/২ লাখ টাকা ইনকাম করা যায়? বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করে দেখলাম বাংলাদেশে ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×