বাইক চলছে। মাইলেজ মিটারে তাকানো হয়নি। হয়তো ৭০/কিঃঘঃ স্পিডে ছুটে চলছিলাম। রাস্তার পাশে একটা ভিড় চোখে পরতেই ব্রেক করলাম যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হয়। গিয়ে দেখি ছোট্ট একটা ফুটফুটে শিশু বসে বসে কাঁদছে। গায়ে নোংড়া কাপড় থাকায় কেউ কাছে যাচ্ছে না। সবাইকে দেখে বাচ্চাটি তার কান্নার গতি বাড়িয়ে দিচ্ছে জ্যামিতিক হারে।
বাচ্চাটি অস্পষ্টভাষায় কিছু বলছিলো কিন্তু কেউ শুনতে চায়নি। মনে হচ্ছিলো জগৎ সংসারের এক সার্কাসের মহরায় সবাই লিপ্ত, মনরঞ্জনের চেষ্টায় নিয়োজিত। একদল আসছে তো আর একদল যাচ্ছে। কেউ কারোদিকে তাকাচ্ছে না শুধু হা-ক-রে তাকিয়ে রইছে। কাছে গিয়ে হাত বাড়াতেই কাছে চলে এলো শিশুটি। তার কান্না থামতে কয়েক সেকেন্ড সময়ও নেয়নি। তার অপরিষ্কার কাপড় যেন পবিত্র করে দিলো আমার ভেতরের মানবতাকে, ধুইয়ে দিলো আমার অনেকদিনের জমে থাকা পাপবোধ কে।
কোলে এসে সবার দিকে তাকিয়ে কি যেন বলছিলো। ব্যাগপ্যাক থেকে পানির বোতল বের করতেই হাত বাড়িয়ে নিয়ে নিলো আর হ-ক-রে খেয়ে নিলো। কয়েক মিনিট এভাবে চলার পর, চোখে পরলো পাশের বস্তি থেকে এক মহিলা দৌড়ে আসছে। হয়তো মা(ছোট বাচ্চাটির) ভাবছে কোন দুর্ঘটনা ঘটেছে।
নিজের বাচ্চাকে পেয়ে সে আনন্দে শুধু একটি কথাই উচ্চারন করলো। মানবতা টিকে আছে বলেই আমরা টিকে আছি, আর আমরা বেঁচে থাকি বলেই বড়বাবুদের সমাজ টিকে থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৪৯