somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনু গল্পঃ একজন ছাত্রনেতা ও আনুু পাগলা

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ একটা অদ্ভুত কান্ড ঘটেছে। বসের নির্দেশে সন্ধ্যার সময় এক ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করে এনে বসের রুমে হাত কড়া পরিয়ে রেখেছিলাম। বস আসলেন রাত ১১টার দিকে। বস রুমে ঢুকেই একটা বাঁশে লাঠি দিয়ে ছাত্র নেতার দু’হাতে সজোরে পেটাতে লাগলেন। এমন সময় বিদ্যুত চলে গেল। জেনারেটর চালু হতে প্রায় মিনিট দশেক দেরি হল। লাইট জ্বলে উঠতেই বসের চিৎকার শোনা গেল-ভুত, ভুত। কামরান, সোহেল তোমরা কোথায়? এদিকে আস।
আমি জেনারেটর রুমে গিয়েছিলাম। চিৎকার শুনে দৌঁড়ে আসলাম বসের রুমে। দেখলাম বস মেঝেতে পড়ে আছেন। ছাত্র নেতার পাশে এক উলঙ্গ ব্যাক্তিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আমি চমকে উঠি। ভুত-টুতে আমার বিশ্বাস নেই। তারপরেও কেমন যেন ভীতি কাজ করছিল। ভাল করে দেখছিলাম লোকটিকে। লোকটির গায়ে পোড়া মবিল মাখানো বলে মনে হচ্ছিল। ধারনাটি বদ্ধমূল হল ছাত্রনেতার মুখে আঙুলের ছাপ দেখে। দু’হাত দিয়ে ছাত্রনেতাকে আদর করেছে বলে মনে হল। আমি সজোরে বাঁশি দিলাম। চিৎকার করে অন্যদের ডাক দিলাম। কয়েকন ছুটে আসল। এমন মুহুর্তে লোকটি চিৎকার করে উঠল এই কেউ এগোবি না, সবাইকে মেরে ফেলব। আমরা দাড়িয়ে পড়লাম। ওকে কিভাবে ধরা যায় সে পরিকল্পনা করছিলাম। লোকটি ছাত্রনেতার কাছে গিয়ে তার মাথার উপর হাত রেখে গলা ফাঁটিয়ে বলছিল তোমরা এই ভাল মানুষটাকে ধরে এনেছ কেন? আমার ভাই কি চোর না ডাকাত? লোকটি ছাত্রনেতার সামনে এসে হাঁটু গেড়ে বসে দু’হাত দিয়ে তার মুখখানা ধরে চুমু খাচ্ছিল। এ সুযোগে আমি ইশারা করতেই কনস্টেবল আরমান লোকটিকে জাপটে ধরল। কিন্তু গায়ে তৈলাক্ত মবিল মাখায় পিছলে গেল। লোকটি দৌঁড়ে বাইরে চলে গেল। কনস্টেবল রাকিব ও সোহেল পিছু নিল । কয়েক পা এগুতেই পিছলে পড়ে বাবাগো-মাগো করছিল। আমাদের রানার মাহমুদ পিছলে না পড়লেও তার সাথে দৌড়ে পারল না। পারবেই বা কি করে? বিগত দুই বছর ধরে নিয়মিত পিটি প্যারেড একেবারেই বন্ধ হয়ে আছে। লোকটি সবাইকে বোকা বানিয়ে পালিয়ে গেল।
আমরা সবাই বসের রুমে ফিরে আসলাম। এস আই ফরিদ বসের পাল্স চেক করে চোখে মুখে পানির ছিটা দিয়ে জ্ঞান ফেরাল। বস উঠে গিয়ে নিজের চেয়ারে বসলেন। আমি ছাত্রনেতাকে দেখিয়ে বসকে বললাম স্যার একে আমি নিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি রহস্য উদঘাটন করতে পারবো। বস মাথা নেড়ে সাই দিলেন। ছাত্র নেতাকে পাশের একটা রুমে এনে লোকটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেই মুচকি হেসে বললেন ও হচ্ছে আনুু পাগলা।
আনুু পাগলা এখানে আসলো কেন?
ও আমাকে খুব ভালোবাসে। আব্বুর কাছে আমার গ্রেফতারের খবর শুনে আমার সাথে দেখা করতে এসেছে।
ও পাগল হলে আমাদের অফিস চিনল কি করে?
আসলে ওকে সবাই পাগল বলে কিন্তু আমার কাছে তেমনটি মনে হয় না। তবে ওর বাবার মুখে শুনেছি পাঁচ বছর আগে ছিনতাইকারী ভেবে পুলিশ নাকি ওকে থানায় এনে বেদম প্রহার করে। তারপর থেকেই ও পাগলামী করে বেড়ায়। যেহেতু পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে এসেছে তাই ও সরাসরি এখানে চলে এসেছে।
ছাত্র নেতার কথা আমার বিশ্বাস হলো। তারপরও ওই এলাকার পরিচিত কয়েকজনের সাথে মোবাইলে আনুু পাগলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। পরে স্যারের রুমে ঢুকে সব খুলে বললাম। সব শোনার পরেও স্যারের মধ্যে কেমন যেন ভীতি কাজ করছিল। স্যার আমাকে ছাত্র নেতাকে লক-আপে ঢোকাতে বললেন । ছাত্র নেতাকে লক-আপে আনার সময় একটা কথা বেশ ভাবিয়ে তুলছিল। যে ছেলেটি একজন পাগলের কাছে এতো প্রিয়, সে না জানি অন্যদের কাছে আরো কত বেশি প্রিয়।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নেতানিয়াহুও গনহত্যার দায়ে ঘৃণিত নায়ক হিসাবেই ইতিহাসে স্থান করে নিবে

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৩৮

গত উইকেন্ডে খোদ ইজরাইলে হাজার হাজার ইজরাইলি জনতা নেতানিয়াহুর সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
দেখুন, https://www.youtube.com/shorts/HlFc6IxFeRA
ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে নেতানিয়াহুর এই হত্যাযজ্ঞ ইজরায়েলকে কতটা নিরাপদ করবে জনসাধারণ আজ সন্দিহান। বরং এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×