somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নবজাতকের আগমন :: পৃথিবী আমায় বরণ করো আনন্দে

০২ রা জুন, ২০১০ রাত ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



একজন মহিলার গর্ভধারণ থেকে শিশুজন্মের মাঝে মোট সময় মোটামুটি ৪০ সপ্তাহ। সর্বশেষ স্বাভাবিক মাসিক (মেনসচুরাল পিরিয়ড) থেকে সাধারণত সময়টি গননা করা হয়। দিনের হিসেবে বলা যেতে পারে ২৫০ থেকে ২৮৫ দিন । মোট সময়কালকে তিনটি ট্রাইমেস্টারে ভাগ করা হয়; ১ম, ২য় ও ৩য় ট্রাইমেস্টার।

এখানে কিছু ছবি দেয়া হলো ভ্রুন, বাচ্চা ও গর্ভাবস্থায় মায়েরঃ

একনজরে তিনটি ট্রাইমেস্টার

গর্ভধারনের ১ম থেকে ১২ সপ্তাহকে ধরা হয় ফার্স্ট ট্রাইমেস্টার। ২য় ট্রাইমেস্টার ১৩ থেকে ২৭ সপ্তাহ এবং ৩য় বা শেষ ট্রাইমেস্টার ২৮ সপ্তাহ থেকে বাচ্চা জন্মের আগ পর্যন্ত সময়কাল।



ফার্স্ট ট্রাইমেস্টার (১-১২ সপ্তাহ)

প্রথম ট্রাইমস্টারে একজন গর্ভবতী মায়ের শারিরীক বিভিন্ন পরিবর্তন আসে, মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া যার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।



এসময়ে মা বিভিন্ন শারিরীক ও মানসিক সমস্যার সম্মুখিন হতে পারেন; যেমন-খুব সহজেই ক্লান্ত হয়ে পরা, বিভিন্ন খাবারের স্বাদ পরিবর্তন বা বিস্বাদ লাগা, স্তনে একধরণের চাপ অনুভব, কন্সটিপেশন, বারবার মুত্র ত্যাগ, মাথাব্যাথা, বুক জ্বালা পোড়া ইত্যাদি। এ সময়ে অনেক মহিলাকে ওজন হারাতে আবার অনেকের ক্ষেত্রে ওজন বাড়তেও দেখা যায়।



এই সময়ে অনেকের ক্ষেত্রেই শরীর পরিবর্তনের সাথে সাথে নিত্যদিনের কাজের রুটিন পরিবর্তন আনতে হতে পারে; যেমন- ঘুমুতে যাবার এবং ঘুম থেকে ওঠার সময়, বারবার কম কম করে খাবার খাওয়া ইত্যাদি। অবশ্য যাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ১ম মা হওয়া বা গর্ভধারণ নয় তারা খুব একটা সমস্যায় পরেন না আর প্রেগনেন্সির সময় যত বাড়তে থাকে সমস্যাগুলো তত কমে যেতে থাকে; বিশেষত ডিসকমফোর্ট ফিলিংস।



আসুন দেখি মায়ের পেটে ৪ সপ্তাহের একটি বাচ্চার ছবি-



এ সময়ে একটি বাচ্চার ব্রেইন, হার্ট ও স্পাইনাল কর্ডের গঠন শুরু হয়, হাত ও পা দেখা দেয়। বাচ্চাটির গড় দৈর্ঘ হয় মোটামুটি ১ ইন্চির পচিশ ভাগের একভাগ।

আসুন দেখি ৮ সপ্তাহের একটি ছবি-



এসময়ে বাচ্চার প্রধান অংগগুলোর গঠন শুরু হয়, হার্ট বিট করতে শুরু করে, বাচ্চার সেক্স অর্গান এই সময়েই গঠিত হয়। এখন বাচ্চাটি ১ ইন্চি লম্বা এবং ওজন হচ্ছে এক আউন্সের ৮ ভাগের ১ ভাগ।

এবার ১২ সপ্তাহ বয়েসের একটি ছবি-



মজার বিষয় হচ্ছে এসময়ে বাচ্চাটি ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা বোঝা যায়।

সেকেন্ড ট্রাইমেস্টার (১৩-২৮ সপ্তাহ)

এই সময়টা ১ম ট্রাইমেস্টারের চেয়ে একটু সহজ বলে মনে হতে পারে। বমিবমি ভাব এবং ক্লান্তি খুব একটা থাকেনা, তবে এসময়ে বাচ্চা যেহেতু বড় হচ্ছে তাই মায়ের পেট বড় হয়ে যায় যা বাইরে থেকে বোঝা যায়। এই সময়ের শেষের দিকে বাচ্চার নড়াচড়া মা বুঝতে পারেন।



বয়স যখন ১৬ সপ্তাহ-



এ পর্যায়ে বাচ্চার দৈর্ঘ দাঁড়ায় ৫ ইন্চি এবং ওজন ৩ আউন্স।

বয়স এখন ২০ সপ্তাহ-



মজার বিষয় হচ্ছে এসময়ে বাচ্চা কিন্তু শব্দ শুনতে পায়। এখন বাচ্চাটির দৈর্ঘ ও ওজন যথাক্রমে ৬ ইন্চি ও ৯ আউন্স।

বয়স হল ২৪ সপ্তাহ-



এখন বাচ্চাটি ১২ ইন্চি লম্বা আর ওজন দেড় পাউন্ড। সে নিয়মিত মায়ের পেটে ঘুমায় এবং জেগে ওঠে। তার নিজস্ব রক্ত উৎপাদন ব্যাবস্থা কাজ করতে শুরু করে।

থার্ড ট্রাইমেস্টার (২৯-৪০ সপ্তাহ) -

এই সময়ে মা ঘন ঘন বাথরুমে যেতে পারেন, অনেকের ক্ষেত্রে শ্বাসগ্রহনে সমস্যা দেখা যায়। ঘুমের সমস্যাও হতে পারে।



বাচ্চা জন্মদেয়ার সময় ঘনিয়ে এলে নিয়মিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিৎ।

বয়স হলো ৩২ সপ্তাহ-



বাচ্চা বেশ জোরে নড়াচড়া করে এসময়ে। হাড়ের গঠন সম্পূর্ণ হয়, বাচ্চা আলোর তফাৎ বুঝতে পারে, লম্বায় ১৫-১৭ ইন্চি আর ওজনে মোটামুটি ৪-৪.৫ পাউন্ড হয়ে থাকে।

বয়স ৩৬ সপ্তাহ-



লম্বায় বাচ্চা ১৬-১৯ ইন্চি এবং ওজনে ৬-৬.৫ পাউন্ড।


গল্প মোটামুটি শেষ; এখন নবজাতকের অপেক্ষায় মা। পৃথিবী নামে চারণভুমিতে নতুন আরেকটি প্রাণের খেলা শুরু হবে। কান্নার মাধ্যমে সে জানাবে তার অস্তিত্ব। তাকে স্বাগতম। তার জন্য কেমন আগামী অপেক্ষা করছে তার দায়ভার নিতে হবে আমাদের।

আরো জানতে পড়ুনঃ

উইকিপেডিয়া

pregnancy.org

pregnancy.com

ওয়েবমেড

অ্যামেরিকান প্রেগনেন্সি এসোসিয়েশন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
৩২টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×