somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জামাতের ভয়ংকর নেতারা : গোলাম পরওয়ার , সাংসদ: খুলনা-৫

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সমকাল (১০ ফেব্রুয়ারি, ২০০৭)

জামায়াতের গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে
সমকাল প্রতিবেদক



খুলনার আমির :


নজিরবিহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়ে যাওয়া খুলনা-৫ আসনের সাবেক সাংসদ ও নগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার বহাল তবিয়তে রয়েছেন। নিজে গাড়ি বাণিজ্য, চরমপন্থি কানেকশন, ভাইদের দিয়ে জুট মিল ও ঘের দখল, বিভিন্ন সরকারি দফতরের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, সরকারি প্রকল্পের কমিশন গ্রহণসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে জানা যায়। 'আঙুল ফুলে কলাগাছ' বনে যাওয়া গোলাম পরওয়ার যৌথ বাহিনীর চলমান অভিযানেও ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন।

গোলাম পরওয়ার আশির দশকের শেষ দিকে নগরীর বয়রা ইসলামিয়া কলেজের প্রভাষক ছিলেন। নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে জামায়াতের অঙ্গ সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খুলনা বিভাগীয় সভাপতি হন। তখন সংগঠন থেকে 'ফুল টাইমার' (সংগঠনের কাজ ছাড়া অন্য কিছু করা যাবে না) হিসেবে তাকে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হতো। ১৯৯৬ সালে মহানগর জামায়াতের আমির নির্বাচিত হন। সাংসদ হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি সংগঠন থেকে পেতেন মাসে সাত হাজার টাকা। এই টাকায় চলত তার সংসার।

২০০১ সালের নির্বাচনে খুলনা-৫ আসন থেকে জোট প্রার্থী হিসেবে চরমপন্থি দল নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টিরর প্রধান মৃণাল ও তার বাহিনীর সহযোগিতায় এমপি নির্বাচিত হন। কিছুদিন পর ৩৯ লাখ ১ হাজার ৮৭৯ টাকায় শুল্ক্কমুক্ত এমএল-৫০০ অফরোড ভেহিকেল (মাসর্িডিজ বেঞ্জ) গাড়ি আমদানি করেন। গাড়িটি ১ কোটি ১৮ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। এ গাড়ি বাণিজ্যে লাভ হয় প্রায় ৮০ লাখ টাকা। র্বতমানে তিনি জাপানি টয়োটা রাভা গাড়িতে চড়েন। ২০০২ সালে বাড়ির দুই রুম সম্প্রসারণ করেছেন। সে বছরের আগস্টে ভাই মিয়া গোলাম কদু্দুস নগরীর আটরা শিল্পাঞ্চলের আফিল জুট মিল দখল করে মিলের গদুামে রক্ষিত প্রায় ৩০ লাখ টাকার পাটসহ অন্যান্য মালামাল বিক্রি করে দেন। মিল মালিক আবদুল কাদের পিন্টু খানজাহান আলী থানায় জিডি করলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে অবশ্য গোলাম কদু্দুস মিল ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।

সাবেক সাংসদের দু'ভাই মিয়া গোলাম কদু্দুস ও গোলাম খায়ের ডুমুরিয়ার শরাফপুর ইউনিয়নের চাঁদগড় এলাকায় ৪০০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ঘের করছেন। কিন্তু জমি মালিকদের লিজের টাকা পরিশোধ করেননি বলে অভিযোগ। এছাড়া ডুমুরিয়ায় ছোট-বড় অসংখ্য ঘের রয়েছে। অধিকাংশ ঘের থেকে উপঢৌকন হিসেবে গোলাম কদু্দুস প্রতি মাসে মোটা অগ্ধেকর টাকা পেয়ে যাচ্ছেন। পরোয়ারের পরিবারের লোকজন শিরোমণি বিসিক শিল্প নগরীর জায়গা দখল করে ২ কোটি টাকা ব্যয়ে পোলট্রি ফার্ম করেছেন।

ফুলতলা ও ডুমুরিয়ায় যত টিআর ও কাবিখা প্রকল্পের কাজ হয়েছে তার অধিকাংশই জামায়াতের থানা আমির ও রোকনদের মাধ্যমে করিয়েছেন গোলাম পরওয়ার। জোট সরকারের আমলে যেসব গভীর নলকূপ এসেছে তার বেশিরভাগ দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। জোট সরকারের ৫ বছরে ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলায় যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। অভিযোগ আছে, অধিকাংশ কাজ থেকেই গোলাম পরওয়ার ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন নিয়েছেন গোলাম কদু্দুসের মাধ্যমে। দু'ভাই মিয়া গোলাম কদু্দুস ও গোলাম খায়ের ফুলতলা এবং ডুমুরিয়ার এলজিইডিসহ বিভিন্ন সরকারি অফিসের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে মাসে লাখ টাকা আয় করেন।

মৃণাল বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে এখনো সাবেক সাংসদ পরওয়ারের সখ্য রয়েছে। ডুমুরিয়ায় এখনো পুলিশের কথিত সোর্স বাহিনী সক্রিয়। এসব সোসরাউর অনেকেই বিএনপি ও জামায়াতের সমর্থক। তাদের আশ্রয়দাতা জনাব পরওয়ার।

ভাই মিয়া গোলাম কদু্দুস আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আকরাম হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে বোমা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি বোমা হামলার মামলায় গ্রেফতার হওয়া চরমপন্থি নুরুল ইসলাম গত বছরের ৯ জুলাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছিল, মিয়া গোলাম কদু্দুসের নিদরাউশে তারা এ বোমা হামলা চালায়। অবশ্য পরে ৩১ জুলাই সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহার করে নেয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:১০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৯

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???



আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে আছি,
আমাদেরও যার যার অবস্হান থেকে করণীয় ছিল অনেক ।
বলা হয়ে থাকে গাছ না কেটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×