'আমি তোমার জীবন শেষ করে দিয়েছি !!!! কি বলছ এসব গল্প? আমি তো তোমাকে ক্যাম্পাসে সেই আগের মতই ঘুরতে ফিরতে দেখেছি। বরং যে গল্প আগে চুপচাপ শান্তভাবে বসে থাকত এক জায়গায় অনেকক্ষণ ধরে, সেই গল্পকে শেষ দুই বছর বলতে গেলে একটা ড্যাম কেয়ার ভাব নিয়ে চলতে দেখেছি। তুমি এমন কি খারাপ ছিলে?? রেজাল্টও তো ঠিকই ছিল। আর এমন ভাবে আমাকে দোষারোপ করছ যেন তুমি আমার কাছে ছ্যাঁকা খেয়ে ড্রাগ- অ্যাডিক্ট হয়ে গেছ!'
একনাগাড়ে কথাগুলো বলে মোনা হাঁপাতে লাগল।গল্প নির্বিকারভাবে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। মনে মনে ফুঁসছে। ইচ্ছে করছে এই পাষাণ নির্বোধ মেয়েটাকে ধরে দুই গালে চারটা থাপ্পর মারতে।
'তোমাকে ভুলতে আমি অন্য একজনের সাথে প্রেম শুরু করি, তার জীবনটা তছনছ হয়ে গেছে আর তুমি বলছ তোমাকে দোষ দিবনা ?'
'আমি তো বলিনি প্রেম করতে আর ওকে আমি চিনিওনা। আমি তখন এত কিছু বুঝতামওনা, আমি ভেবেছিলাম তুমি সত্যি সত্যি আমাকে ভালোবাসলে আমার জন্য অপেক্ষা করবে। পরে শুনলা...'
' কি পাগলের মত কথা বল। আমি কি করে বুঝব যে তুমি আমাকে পরে ভালোবাসবে। আমি কি করে বুঝব যে তুমি এত গবেট যে ভুল ছেলের প্রেমে পড়ার ভয়ে তুমি যেই তোমার সামনে আসে তাকে ছুঁড়ে ফেলে দাও। শুন মিস স্টকার তোমার ভয় সত্যি হয়েছে, এখন তুমি যে আমার প্রেমে পড়েছ- আমি একটা ভুল ছেলে। ঘড়ি দেখ বাড়ি যাওয়ার সময় হয়েছে। কেউ দেখলে কি ভাববে?? এমনিতেই লোকে তোমাকে নিয়ে হাসাহাসি শুরু করেছে।'
'যাবনা বাড়ি' - মোনা ফুঁসে উঠলো, ওর চোখে পানি চলে এসেছে।
'তবে থাক বসে একা অফিসে, আমি চল্লুম'
গল্প বাড়ি ফিরে সেরাতে আর ঘুমাতে পারলনা। একদিকে ওর মোনার উপর অসহ্য রাগ আরেকদিকে মেয়েটার জন্য একরকম মায়া জন্মেছে, হয়ত আবার ওর ছোট্টবেলার প্রেম চাগিয়ে উঠেছে। কেন যে সে মোনার সাথে গল্প করতে এগিয়ে গিয়েছিল পাশ করার পরপরই ক্যাম্পাস থেকে কিছু কাগজ তুলতে গিয়ে। ভেবেছিল হয়ত আর কথা হবেনা, দেখা হবেনা। নিয়তি ! আজ ওরা একই জায়গায়।
বেশ মিশুকে হয়ে গেছে মোনা, ভালোই বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল। কথায় কথায় গল্প ওকে ওর ছেলেবেলার 'ক্রাশকাহিনিও' বলে ফেলে, কত ইচ্ছা ছিল মোনাকে এগুলো বলার। পাগলীটা যে এসব শুনে ওর প্রেমে পড়ে যাবে গল্প চিন্তাও করেনি। এখন সে কি করে ?
(চলবে)