somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জগা
আমরা সবাই পাগল.....

আমি ওকে দেখেছিলাম সেই ছোট্টবেলায়-১৮

১০ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এর পরের ঘটনা খুব স্বাভাবিকভাবেই পার হয়ে গেল। পাঠকমণ্ডলী যদি আশা করে থাকেন এর পরে মারাত্মক একটা মার মার কাট কাট কিছু হয়ে থাকবে তো জেনে রাখুন সেরকম কিছু ঘটেনি। আমি খুবই দুঃখিত। কিন্তু গল্প বলেছে আমি কাহিনিতে বেশি রস মাখালে সে আমার মাথা ফাটাবে।
আনোয়ার যখন মিলা আর গল্পকে নিয়ে মিলার বাড়িতে পৌঁছাল, ততক্ষণে মোনা ও কামরুল নুরুলের বাহিনির হাতে ধরা পড়ে গেছে। কামরুল বেধড়ক পিটুনির শিকার হত যদিনা ওর বাবা আগেভাগেই ওকে খুঁজতে ওখানে এসে না পড়তেন।
গল্পরা পৌঁছে দেখল, নুরুল ও কামরুলের বাবা মহা তর্ক শুরু করেছেন বৈঠকখানায় দাঁড়িয়ে। মোনাকে মিলার ঘরে রাখা হয়েছে। কামরুল চুপচাপ একটা সোফায় বসে আছে ও মাঝে মাঝে নিজের ঘাড়খানা ডলছে।
মিলা ও গল্পকে দেখে প্রথম যে মানুষটা এগিয়ে এসেছিল সে হল মোড়ক। সে একাধারে খুশি এবং হতাশ ওদের আসতে দেখে। সাথে আনোয়ারকে দেখে একটু চিন্তিতও হল।
নুরুল এতক্ষণ তর্ক করে হাঁপিয়ে গেছিল, ওদেরকে আসতে দেখে ওর মুখটা উজ্জ্বল হয়ে গেল। ছুটে গিয়ে মিলাকে জড়িয়ে ধরল, ছেড়ে দিল পরক্ষণেই। মিলাকে উপরে পাঠিয়ে গল্পর দিকে ঘুরল। কিন্তু কিছু বলার আগেই আনোয়ার বলে উঠল, ‘this time its too much’ ।
নুরুল মাথা নিচু করে ফেলল। বিড়বিড় করে কি জানি বলল।
‘নুরুল আমি তোমার সাথে কথা বলছি। নেহাত তুমি আমার বন্ধু তাই একটা সুযোগ দিব। এদের দুজনকে ছেড়ে দাও। ওদের শহরে পাঠাবার ব্যবস্থা কর। আর হ্যাঁ সাথে আমার একজন লোক যাবে। আর আমি আগেও বলেছি তোমাকে কামরুল ভাল ছেলে, কেন জিদ করছ?’
নুরুল উত্তর দিলনা।রোষকষায়িত নয়নে একবার গল্পকে আরেকবার কামরুলকে দেখল। আরেকবার তাকাল কামরুলের বাবার দিকে, উনি উল্টো ঘুরে নিজের ভাইয়ের সাথে কি জানি ফিসফিস করছেন।
এমন সময় সেই লম্বা লোকটা ছুটে এল।‘নুরুল ভাই এক গাড়ি ভর্তি পুলিশ এসেছে, মেয়েটাকে খুঁজতে। বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে মোড়ক ভাইকে জেরা করছে।‘
মোনার বাবা পুলিশের সাথে বেরিয়ে পড়েছিলেন মেয়েকে খুঁজতে। মোনা যখন দৌড়ে এসে উনার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ল, উনার বুকের ভারটা যেমন নেমে গেল তেমনি ভেতরটা হু হু করে উঠল। গল্পর দিকে চোখ পড়তেই রাগে উনার কান থেকে পা পর্যন্ত জ্বলে উঠল। এই ছেলেটার জন্যই মোনাকে এত বড় বিপদে পড়তে হল।


ঘটনা সেদিন রাত নয়টার। মোনার বাড়িতে মোনার বাবা-মা, পুলিশ, সুজন আর মোনার সিনিয়র কলিগ বসে সারাদিনের ঘটনা আলোচনা করছেন। মোনা আর গল্প বারান্দায় দাঁড়িয়ে স্মৃতি রোমন্থন করছে।
‘জানো গল্প ! তুমি যখন এলে, আমার ভয়-ডর সব উড়ে গেছিল। তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবেনা বল।‘
‘আমার জন্য এত বড় বিপদে পড়লে তাও একথা বলছ। আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে চাইনা মোনা, কিন্তু ভয় লাগে ফের কোন ঝামেলায় না তোমাকে জড়িয়ে ফেলি।‘
‘ঝামেলা এলে দুজনে মিলে তার মোকাবেলা করব। তুমি শুধু কথা দাও আমাকে ছেড়ে যাবেনা। আমি তোমাকে ভালবাসি গল্প।‘
‘ওয়াও! জানো মোনা আই লাভ ইউ বলা সহজ কিন্তু ভালবাসি বলতে হলে মনের ভিতর থেকে বলতে হয়! আমি অনেক ভাগ্যবান মোনা।‘
একটা কাশির শব্দ শোনা গেল, মোনার বাবা পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। দুজনেই লজ্জায় লাল হয়ে গেল। মোনা ওর বাবার দিকে যুদ্ধজয়ের ভঙ্গিতে তাকাল, যেন বলতে চায় যে দেখছ বাবা আমি বলেছিলামনা গল্প একদিন ঠিকই আমার হবে।
‘আঙ্কেল কিছু বলবেন?’ গল্প একটু অসস্তির সাথে জিজ্ঞেস করল।
‘হ্যাঁ বাবা, তবে কিভাবে বলব সেটা বুঝতে পারছিনা।‘
‘বলেন আঙ্কেল, আমি শুনছি।‘
মোনার বাবা গল্পর চোখের দিকে তাকালেন। গল্প একটা শূন্যতা নিয়ে তাকিয়ে যেন জানে উনি কি বলবেন।
‘কিছু মনে করনা বাবা, কিন্তু আমি চাইনা তুমি আমার মেয়ের ত্রিসীমানায় থাক। বিয়ে তো অনেক পরের বিষয়।‘
‘বাবাআআ!!’ মোনা একটা আর্তনাদ করে উঠল। বাবার পিছন পিছন সে ছুটে বারান্দা থেকে বেরিয়ে গেল। বারান্দায় একা দাঁড়িয়ে গল্প। ওর কলিজাটা কেউ মনে হচ্ছে যেন কেটে কুচি কুচি করে ফেলছে। আবার? আবার সে মোনাকে হারাল?
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×