somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেধা,শ্রম এমনকি জীবন দিয়েও যারা পৃথিবীকে করেছেন আলোকিত (পর্ব-৫)

২৩ শে মার্চ, ২০১২ বিকাল ৪:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেধা,শ্রম এমনকি জীবন দিয়েও যারা পৃথিবীকে করেছেন আলোকিত (পর্ব-১)
মেধা,শ্রম এমনকি জীবন দিয়েও যারা পৃথিবীকে করেছেন আলোকিত (পর্ব-২)
মেধা,শ্রম এমনকি জীবন দিয়েও যারা পৃথিবীকে করেছেন আলোকিত (পর্ব-৩)
মেধা,শ্রম এমনকি জীবন দিয়েও যারা পৃথিবীকে করেছেন আলোকিত (পর্ব-৪)

চার্লস রবার্ট ডারউইন:
ডারউইনের জন্ম হয় ১৮০৯ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি ইংল্যাণ্ডে।
তিনি প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদের(Theory of Natural Selection)প্রবর্তক।১৮৫৯ সালে বিখ্যাত গবেষণা পুস্তক ‘Origin of Species by means of Natural Selection’ এ তিনি তাঁর মতবাদ প্রকাশ করেন।
ডারউইন যা কিছু প্রত্যক্ষ করতেন তার নমুনার সাথে সুনির্দিষ্ট বিবরণ,স্থান,সংগ্রহের তারিখ লিখে রাখতেন।কোন তত্ত্বের দিকে তাঁর নজর ছিল না।বাস্তব তথ্যের প্রতি ছিল তাঁর আকর্ষণ।ডারউইনের মতবাদ পরিবর্তনশীলতা,বংশগতি এবং প্রাকৃতিক নির্বাচনের উপর প্রতিষ্ঠিত।প্রাকৃতিক নির্বাচনের সাহায্যে প্রাণী পরিবেশের সাথে নিজের সামঞ্জস্য বিধান করে।জীবনের সুবিধার জন্য এই পরিবর্তন তাদের উত্তরোত্তর উন্নতি ঘটায়,সৃষ্টি করে নতুন প্রজাতির।
Origin of Species প্রকাশিত হবার পর ডারউইন তাঁর বিবর্তনবাদ তত্ত্বকে আরো উন্নতভাবে প্রকাশ করবার জন্য ১৮৬৮ সালে প্রকাশ করলেন ‘Variation of Animals and plant under Domestication’।১৮৭১ সালে প্রকাশিত হল ডারউইনের আর একখানি বিখ্যাত রচনা ‘The Descent of Man’।
৩মাস অসুস্থ থাকার পর ১৮৮২সালের ১৯শে এপ্রিল পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিলেন চার্লস রবার্ট ডারউইন।
জেমস প্রেসকট জুল:
জেমস জুল ১৮১৮ সালে ইংল্যাণ্ডের ম্যানচেস্টারে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি ছিলেন একজন পদার্থবিজ্ঞানী।তাপশক্তি সম্পর্কে তাঁর গবেষণা ও উদ্ভাবন তাঁকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে।
জেমস জুল প্রথম অনুধাবন করেন যে,কাজের ফলে তাপ উৎপন্ন হয় এবং তাপ শক্তিরই একটি রূপ।শক্তির রূপান্তর বিষয়ে তিনি নানামুখী পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান।তিনি কাজ ও শক্তির একক আবিষ্কার করেন যা তাঁর নামানুসারে ‘জুল’ হিসেবে পরিচিত।
১৯০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টে মৃত্যুবরণ করেন।
লুই পাস্তুর:
১৮২২ সালে ফ্রান্সের এক ক্ষুদ্রগ্রাম জেলেতে পাস্তুর জন্মগ্রহণ করেন।
বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে পাস্তুরের প্রিয় বিষয় ছিল রসায়ন।তিনি এনথ্রক্স জীবাণু আবিষ্কার করেন।সেইসাথে পাস্তুর এনথ্রক্স রোগের সঠিক কারণই শুধু নির্ণয় করলেন না,তার প্রতিষেধক ঔষধও আবিষ্কার করলেন।কয়েকবছর যাবৎ হাইড্রোফোবিয়া(জলাতঙ্ক) নিয়ে কাজ করছিলেন পাস্তুর।অবশেষে তিনি জলাতঙ্কের প্রতিষেধকও আবিষ্কার করেন।
১৮৯৫ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

গ্রেগর জোহান মেনডেল:
তিনি ১৮২২ সালের ২০ জুলাই অস্ট্রিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন।
অস্ট্রিয়ার ধর্মযাজক মেনডেল তার গির্জার বাগানে মটরশুঁটি উদ্ভিদ নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করেন।এ গবেষণা থেকে তিনি বংশগতি বা জেনেটিক্স এর দুটি সূত্র-পৃথকীকরণ সূত্র এবং স্বাধীণভাবে সঞ্চারণ সূত্র প্রকাশ করেন,যা কিনা পরবর্তীতে মেনডেলের বংশগতির সূত্র নামে পরিচিত হয়।তাঁকে বংশগতিবিদ্যার জনক বলে আখ্যায়িত করা হয়।
মটরশুঁটি নিয়ে গবেষণা সমাপ্ত করার পর মেন্ডেল প্রাণীদের নিয়ে কাজ শুরু করেন এবং এ ক্ষেত্রে তিনি মৌমাছি বেছে নেন। তিনি এর একটি হাইব্রিড জাত উদ্ভাবন করেন (অত্যন্ত হিংস্র হবার কারণে যা পরবর্তীতে ধ্বংস করে ফেলা হয়), কিন্তু তিনি এদের বংশগতির কোন বিন্যাস খুঁজে পেতে ব্যর্থ হন, কারণ রাণী মৌমাছির প্রজনন নিয়ন্ত্রণ করা ছিল দুঃসাধ্য একটি কাজ। তিনি কিছু নতুন উদ্ভিদ প্রজাতির বর্ণনা প্রদান করেন, রীতি অনুযায়ী যাদের প্রজাতিক নামের শেষে তাঁর নাম যুক্ত আছে।
তিনি ১৮৮৪ সালের ১৮ জানুয়ারি ক্রনিক নেফ্রাইটিসে ভুগে মৃত্যুবরণ করেন।
আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস:
তিনি ১৮২৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি ছিলেন একজন প্রকৃতিবিজ্ঞানী।
ওয়ালেস ৪বছর আমাজন নদীর অববাহিকায় ঘুরে ঘুরে পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা করেছেন।তাঁর বিখ্যাত বই ‘Travels on the Amazon and Rio Negro’ এর অভিজ্ঞতা থেকেই লেখা।মালয় উপদ্বীপে তিনি ৮বছর গবেষণা করে ‘The Malay Archipelago’ লিখেছেন।তাঁর পোকামাকড়ের বিরাট সংগ্রহ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হোপ সংগ্রহশালায় রক্ষিত আছে।তিনি চার্লস ডারউইনের সাথে প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদ তত্ত্ব ঘোষণার জন্য খ্যাতি লাভ করেন।
১৯১৩ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
লর্ড কেলভিন:
১৮২৪ সালের ২৬ জুন জন্মগ্রহণ করেন।তিনি ছিলেন উনিশ শতকের অন্যতম প্রধান গণিতশাস্ত্রবিদ,পদার্থবিদ,প্রকৌশলী ও ভৌত বিজ্ঞানের পুরোধা ব্যক্তিত্ব।
তাপ ও গতির ওপর গভীর ও বিশদ তত্ত্ব উদ্ভাবন করেন।তিনিই তাপগতিবিদ্যা নামক নতুন বিজ্ঞানের মাধ্যমে তাপ,কাজ ও শক্তির মধ্যে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেন।তাঁর উদ্ভাবিত পরম তাপমাত্রার স্কেল তাঁরই নামানুসারে ‘কেলভিন’ হিসেবে অভিহিত।তিনি তড়িৎ ও চুম্বকত্ব বিষয়েও অনেক তত্ত্ব প্রদান করেন।
তিনি ১৯০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর স্কটল্যান্ডের লার্জে মৃত্যুবরণ করেন।
থমাস হেনলী হাক্সলী:
হাক্সলী ১৮২৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

থমাস হেনলী হাক্সলী পাখিদের উপর অনেক কাজ করেন।তিনি পাখিকে ‘মহিমান্বিত সরীসৃপ’ বলে উল্লেখ করেন এবং প্রমাণ করেন যে,সরীসৃপ পূর্বপুরুষ থেকে বিবর্তনের ধারায় পাখিদের উদ্ভব হয়েছে।এ ছাড়া তিনি প্রাণিবিদ্যার ওপর অনেক গবেষণা করেন।তিনি চার্লস ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচনবাদের বিশিষ্ট সমর্থক ছিলেন।হাক্সলী প্রোটোপ্লাজমকে জীবনের ভৌত ভিত্তি হিসেবে বর্ণনা করেন।
১৮৯৫ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
জেম্স ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল:

জেম্স ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল ১৮৩১ সালের ১৩ই নভেম্বর এডিনবরায় জন্মগ্রহণ করেন।
তড়িৎবিজ্ঞানে তিনি যে সূত্রটি আবিষ্কার করেছিলেন সেই সূত্রটি ‘ম্যাক্সওয়েলের কর্ক স্ক্র সূত্র’ নামে প্রসিদ্ধ।এই সূত্রের সাহায্যে তড়িৎপ্রবাহের ফলে চুম্বক শলাকার দিক নির্ণয় করা হয়ে থাকে।ম্যাক্সওয়েলের যে আবিষ্কারটিকে যুগান্তকারী আখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে সেটি তড়িৎচুম্বক তরঙ্গতত্ত্ব।প্রকৃতপক্ষে উক্ত তরঙ্গতত্ত্ব সম্বন্ধে প্রথম সঠিক ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
ম্যাক্সওয়েল কেবলমাত্র পদার্থবিজ্ঞানী ছিলেন না,অঙ্কশাস্ত্রে এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানেও ছিল তাঁর সমান দক্ষতা।
১৮৭৯ সালের ৫ই নভেম্বর দীর্ঘ রোগভোগের পর মৃত্যুবরণ করেন।
আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল:
১৮৪৭ সালের ৩রা মার্চ গ্রাহামবেল জন্মগ্রহণ করেন এডিনবরায়।
টেলিফোনের আবিষ্কারক আলেকজান্ডার গ্রাহামবেলের নাম বিজ্ঞানজগতে এক উজ্জ্বল জ্যোতি।মুক ও বধিরদের শিক্ষা দেবার জন্য তিনি একটা বিশেষ ধরণের যন্ত্র তৈরি করেন।
১৯২২ সালের ২রা আগস্ট তিনি মারা যান।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১২:১৬
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×