গত কালকে আমি খবরটি ফেসবুকে এবং কিছু অনলাইন নিউজপেপারে দেখতে পাই...!!! খবরটি শনার পর থেকে অনেকবার ভেবেছি এই নিয়ে কিছু লিখবো, কিন্তু প্রতিবারই লিখতে যেয়ে ভাষা হারিয়ে ফেলেছি...!!! কি লিখবো??? কিভাবে লিখবো????
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে যে কলুষিত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে তা কল্পনা করার মত সাহস আমার নাই, মানুষ হিসেবে আমি খুব দুর্বল মনের মানুষ, অনেকবার চোখ বন্ধ করে সেই পশুদের কর্মকাণ্ড নিয়ে লেখার জন্নে ভাবতে গেছি, ঠিক ততবারই শিউরে উঠেছি,...!!!! এরা কি আদউ মানুষ, নাকি অন্য কোন প্রাণী...!!! মানুষ কখনও এতটা নিচে নেমে যেতে পারে তা আমার বিশ্বাস হয়না, আর যদি সত্যি কিছু মানুষ এই কাজ করে তাহলে বুঝতে হবে এ সমাজ, এ দেশের পতন অনিবার্য, ধ্বংসের দারগোরায় আমার পউছে গেছি...!!!
যে সমাজ, যে দেশ নারীদের সম্মান করতে জানে না সে দেশের উন্নতি কখনও সম্ভব না...!!! তর্কের খাতিরে অনেকেই বলবেন সেই মেয়েগুলোকে অখানে কে যেতে বলেছিল, তাদের পোশাক নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলবেন...!!! আমি বলি কি মশায়, কুকুর পাগল হয়ে গেলে সে ভালো মন্দ দেখে কামড়ায় না...!!!!
একটা দেশের তৃতীয় বৃহৎ জাতিয় উৎসবে মেয়েরা ঘরে বসে থাকবে এমনটা তো সেই পঞ্চাশের দশকেও কেউ ভাবেনি, আর এখন তো একবিংশ শতাব্দী...!!!! তার উপর জায়গাটাও তো দেখা জরুরী, দেশের শুধু না, প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কোন মেয়ে নিরাপদ না থাকতে পারে তাহলে তো সে কোথাও নিরাপদ নয়,...!!!!
অপরাধী শুধু তারা নয়, যারা আশেপাশে থেকেও প্রতিবাদ করেনি, যারা এখনও মনে মনে সেই মেয়েগুলোকে দোষারোপ দিয়ে যাচ্ছেন তারা সবাই সমান অপরাধী...!!! যেটা অন্যায়, সেটা সবসময়ই অন্যায় ছিল, থাকবে, আছে...।!!! অন্যায়কে অন্যায় না বলাটাও অপরাধ...!!!!
এই ধরনের অন্যায় কে প্রতিহত করতে হলে তিন ধরনের পদক্ষেপ নেয়া জরুরিঃ
এক, ডিরেক্ট গণধোলাই, যেখানে এই ধরনের কিছু দেখতে পাওয়া যাবে এক জঙ্কে সাহস করে এগিয়ে আসতে হবে, আর সবাই মিলে উপর্যুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে,...!!! কারন যেখানে সত্যি চলে না সেখানে মিথ্যা বলতে হয়, যেখানে হক পাওয়া যায়না সেখান লুঠ করতে হয়, আইন যেখানে অসহায় সেখানে নিজের হাতে আইন তৈরি করে নিতে হয়...!!!
দুই, মূল্যবোধ ও পারিবারিক শিক্ষা, সমাজের এইসব ঘটনা আমাদের চখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, জাতি হিসেবে আমাদের মুল্যবধের চরম অবক্ষয় ঘটেছে, এমতাবস্থায় আমাদের মূল্যবোধের চর্চা বাড়াতে হবে, পারিবারিক শিক্ষা বাড়াতে হবে, যে পরিবারের ছেলেটা এমন পারভারটেড হয়ে গেল সেই পরিবারের বাবা, মা কেমন, ভাই বন গুলা কেমন আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে, আমার মনে হয় তাদের পারিবারিক বন্ধন বলতে কিছু নাই, তারা হয়তো জেনেটিকালি এক পরিবারের কিন্তু মানসিকভাবে তাদের মদ্ধ্যে কোন বন্ধন নাই...।!!
তিন, সৃজনশীলতা ও মুক্তবুদ্ধির চর্চা, আজকে অধিকাংশ ছেলেমেয়েরা টেকনলজিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, টেকনোলোজি অবশ্যই আশীর্বাদ সরূপ যদি তা সঠিক ভাবে সঠিক জায়গায় ব্যাবহার করা যায়, কিন্তু টেকনোলোজি যদি আমাদেরকে অলস করে দেয় তাহলে সেই টেকনোলোজি খারাপ...!!!! আধুনিক টেকনোলোজি এখনকার ছেলে মেয়েগুলোকে প্রতিবন্ধি করে দিচ্ছে, কেউ আইডিয়া নিয়ে কাজ করছে না, সবাই ইন্টারনেটে শর্টকাট খোঁজে, যে সময়টাতে সে কোন কিছু নিয়ে ভাবতো সেই সময়তা তারা ফেসবুকে, টুইটারে, ইউটিউবে ব্যয় করছে, তাও যদি ভালো কাজে ব্যয় করতো কোন সমস্যা হত না...।!!! পরিবার থেকে প্রতিটা ছেলেমেয়েকে সৃজনশীলতার দিকে মুক্তবুদ্ধির পিছনে ব্যয় করতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে...।!!!! অলস মস্তিষ্ক অবশ্যই দুস্টু বুদ্ধির কারখানা...।!!!
পরিশেষে বলতে চাই, যে জাতি তার মা বোনদের সম্মান দিতে জানে না, সে জাতির ধ্বংস সুনিশ্চিত, যে জাতির রয়েছে বাহান্ন, একাত্তরের মত গর্বিত অর্জন সে জাতি হিসেবে আমারা কেমন করে পারি এই ধরনের অন্যায় কে প্রস্রয় দিতে,??? কেন আমরা আমাদের মা বোনদের নিরাপত্তা দিতে পারবো না??? আমরা কি এতটাই দুর্বল, এতটাই কাপুরুষ???? যে জাতির রয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয় গাথার অমর সাহসিকতার ইতিহাস সে জাতি কেন আজ ভয়ে, কাপুরুষতায় আস্তাকুড়ে চলে যাবে, কেন সে জাতি এভাবে কলঙ্ক হয়ে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে???