somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লু হোয়েল গেম ও অন্যান্য

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৩:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লু হোয়েল আছে নাকি নাই, এই তর্ক করে লাভ আছে কি??? একদল প্রমান করার চেস্টায় আছে যে ইহা সত্যি, আর আরেকদল আদা জল খেয়ে নেমেছে যে ইহা সম্পুর্ন কাল্পনিক।

আমি ভাই সব কিছু খুব সহজ ভাবে বুঝতে চেস্টা করি, কোনকিছুতেই জটিলতা আমার পছন্দ নয়...!!!
আমি যেটা বুঝি তা হল,
১। এই গেমটার শিকার বাংলাদেশে আছে কি নাই তা আমার জানা নাই, কিন্তু এই গেমটার শিকার পৃথিবীতে অনেকেই আছে সেটা সত্যি। রাশিয়ান বুদেকিন আবিস্কার করেছিল তার প্রমান যে কেউ গুগল কিংবা উইকিতে সার্চ করলেই পেয়ে যাবে।

২। এই গেমটা খেলে যে এখন পর্জন্ত পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশে ১৩০ জনের মত কিশোর কিশোরি মারা গেছে তার প্রমাণও যে কেউ চাইলে ২ মিনিটে জেনে যাবে গুগল কিংবা উইকির মাধ্যমে।

এখন আমার প্রশ্ন হল, আদৌ বাংলাদেশে এই গেমের শিকার কেউ হয়েছে নাকি হয়নি????
প্রথমে স্বিকার করে নেই সেই শ্রেণীর কথা, যারা বিশ্বাস করে এই গেমের শিকার বাংলাদেশে হয়েছে কিংবা হচ্ছে।
যদি তাই হয়, তাহলে দেখি এটা স্বিকার করলে আমাদের সমাজের কি লাভ, আর কি ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে?

লাভঃ
যদি স্বিকার করে নেই, তাহলে সমাজে এই গেমের বিষয়ে জন্সচেতনতা বৃদ্ধি করা যাবে। যদি এখনও এদেশে এই গেমের শিকার কেউ নাও হয়, ভবিশ্যতে এই গেমের শিকার হবার হাত থেকে আমরা কিশোর কিশরিদের রক্ষা করতে পারবো।

ক্ষতিঃ
আমি জানি না, এটা স্বিকার করলে সমাজের কি ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। তবে অনেকে বলছে এটা স্বিকার করলে নাকি অনেকেই উতসাহিত হয়ে এই গেম খেলার চেস্টা করতে পারে।
(আমার মতামত পরে দিচ্ছি)

এবার আসি সেই দলের মানুষদের কাছে, যারা অস্বিকার করার চেষ্টা করছে যে এখন পর্জন্ত পাওয়া ২জন আত্মহত্যাকারি কিশোর কিশোরী কেউই এই গেমে আসক্ত ছিলনা, কিংবা বাংলাদেশের কারও পক্ষেই এই গেম খেলা সম্ভব না নিজের কিডনি বিক্রি না করে তাদের যুক্তি অনুযায়ী। ধরে নিচ্ছি তাদের এই মতবাদ সঠিক। তাহলে দেখি এই মতবাদ সঠিক হলে কি লাভ বা ক্ষতি সমাজের হয়ে যাচ্ছে?

লাভঃ
আমি ঠিক জানি না, এই গেম টাকে গুজব নামকরন করলে কি লাভ? অনেকে বলছে এটাকে গুজব নামকরন করলে অভিবাবকরা অযথা দুসচিন্তার হাত থেকে মুক্তি পাবে। তারা আর তাদের ছেলেমেয়ে দের স্মার্টফোন ব্যাবহারে নজরদারি করবে না।

ক্ষতিঃ
যদি সত্যি গুজব হয় তাহলে তো ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু যদি গুজব না হয়, তাহলে যারা এটাকে গুজব ভেবে সত্যি সত্যি এটার ব্যাপারে জানার জন্যে আকৃষ্ট হয় তবে তাদের দায়ভার কে নেবে? অভিবাবকদের দুসচিন্তা মুক্ত করতে যেয়ে যদি সত্যি সত্যি কেউ এই গেম খেলতে গিয়ে ভুল করে বসে নিজের প্রানের হুমকিদাতা নিজেই বনে যায় তবে তার দায়ভার কি এখন যারা এটাকে নিছক গুজব বলে চালানোর চেস্টা করছে তারা নেবে???


আমার মতামতঃ
আমি সহজ ভাবে যেটা বুঝতে পারি, এই গেম এখন পর্জন্ত অনেকের জীবন সংশয় কারি ( ইন্তারনেট ঘাটলে যে কেউ প্রমান পেয়ে যাবে)। সুতারং, বাংলাদেশে আদৌ এর স্বিকার কেউ হোক কিংবা না হোক, আদুর ভবিশ্যতেও যেন কোন কচিকাচার প্রাণ হুমকির মুখে না পরে তার জন্যে অভিবাবকদের সচেতনা ব্রিদ্ধির মধ্যে আমি কোন দোষ দেখি না। তাছারা কিশোর কিশরিদের এমনিতেও স্মার্টফোনের অপব্যাবহার কমানো ভালো। তার মধ্যে দোষের কি আছে? হোক না এতা গুজব। সেই গুজবে বিশ্বাস করে হলেও যদি বাবা মা রা আজ থেকে তার কিশোর কিশোরী ছেলে মেয়েদের দিকে একটু বাড়তি নজর দেয় তাতে তো ভালো বই আমি কোন মন্দ দেখি না। উল্টো পজিটিভ ব্যাপার যেটা হবে তারা অন্য খারাপ কোন কিছুতে আসক্ত হলে সেটাও অভিবাবকদের নজরে আসবে। সন্তানের মঙ্গল বই খারাপ কিছু তো দেখছই না। বাড়তি লাভ হিসেবে থাকছে, যদি এটা গুজব না হয়ে থাকে, তাহলে ছেলেমেয়ে দের এর থেকে রক্ষা করার একটা সুযোগ থেকে যাবে।
মিছে মিছি একদল আরেক দলকে মিথ্যে প্রমান করতে যেয়ে বাচ্চাদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি করার কোন কারন দেখি না। যে গুজব বলতে চায় বলুক, যে সত্য প্রমান করতে চায় করুক। আমরা আর সেখানে যেয়ে বাড়তি তর্কের জন্ম না দেই। তাতে কিছু মানুষের মাঝে উৎসাহ বারবে বই কমবে না।


অভিবাবকদের করনিয়ঃ

অভিবাবকদের উচিত সন্তান কে সময় দেয়া, তাদের সাথে গল্প করা, আপনার সন্তান বিষণ্ণতায় ভুগছে কি না তা জানা, সন্তানের মনের মধ্যে গোপনে কোন রাগ, কোন বিদ্বেষ, কোন একাকিত্ব জন্মাচ্ছে কিনা খোঁজ রাখা। সন্তানের স্মার্টফোন ব্যবহারে নজর দেয়া। সে তার স্মার্টফোনে কি করে সময় ব্যয় করছে খেয়াল রাখা। সন্তাঙ্কে স্মার্টফোন নামক রোবট বানানোর যন্ত্রের হাত থেকে বাচানোর জন্যে সন্তানের হাতে তুলে দিন বই। বাংলা সাহিত্য যে কি প্রমান সমৃদ্ধ তা তাকে জানার সুযোগ দিন। সাহিত্য একজন মানুষ কে মানুষ হিসেবে তৈরি করতে সহায়ক। মানুষের তৃতীয় চক্ষুর উন্মেষ ঘটাতে এর কোন বিকল্প নেই। সাহিত্যএর পাশাপাশি সংস্কৃতি কিংবা সৃজনশীলতার চর্চায় ছেলে মেয়ে কে উৎসাহ দিন। গান, নাটক, আবৃত্তি, ছবি আকা, বাদ্যযন্ত্র চর্চা করা, সাইক্লিং করা, ট্রাভেলিং করা যে যা করতে চায় তাকে তা করতে দিন। এই পৃথিবীর অপার সউন্দর্জ যে স্মার্টফোনের ৪-৬ ইঞ্ছি ডিসপ্লের বাইরে অবস্থিত তা তাকে বুঝতে সাহাজ্য করুন। তাহলে শুধু আত্মহত্যার হাত থেকে সন্তাঙ্কে বাচাতে পারবেন তাই নয়, বরংচ সন্তাঙ্কে অনাকাঙ্খিত নেশাগ্রস্ত হয়ে যাবার হাত থেকে কিংবা জঙ্গি হয়ে যাবার হাত থেকেও বাঁচানো যেতে পারে। গড়ে দেয়া যেতে সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন।

ইমরান হোসাইন
১৪/১০/২০১৭
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৩:০৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×