somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বঙ্গবাজারের অগ্নিকান্ড নিয়ে পর্যালোচনা

০৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি উন্নয়নশীল দেশের বানিজ্যিক বা গণবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা খুব স্বাভাবিক বিষয়। এটি একের পর এক ঘটতেই থাকবে যদি সেখানকার ব্যবসায়ীরা/বাসিন্দারা সতর্ক না হয়।

বঙ্গবাজারের অগ্নিকান্ডের ঘটনাগুলোর সংবাদ পড়তে গিয়ে জেনেছি বঙ্গবাজারের ভবনগুলো বেশ ঝুকিপূর্ণ ছিল। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ ১০ বার নোটিশ প্রদান করলেও গায়ে মাখেননি ব্যবসায়ীরা, সূত্র-দৈনিক যুগান্তর।

এখন চিন্তা করেন, ১০ বার নোটিশ দেয়ার ঘটনা যদি সত্যিই হয়, তাহলে গতকালের কোটিপতি ব্যবসায়ীরা, আজ নিঃস্ব। এর পেছনে ব্যবসায়ীদের দায়ও কম নয়।

শুরুতে যে কথাটি দিয়ে শুরু করেছি, সেটি বলার কারন হলো একটি দেশ যখন এগিয়ে যায়, তখন জায়গা সম্পত্তি কিংবা বানিজ্যিক/আবাসিক ভবনের ফ্ল্যাট, দোকানের দাম কোটি কোটি টাকা হয়। এটি সম্ভব হয় তখনই যখন, জরাজীর্ণ ভবনগুলো/বস্তিগুলো ভেঙ্গে ফেলার মাধ্যমে সেখানে বানিজ্যিক/আবাসিক ভবন তোলা হয়।

দেখুন, বাংলাদেশের মানুষের কাছে টাকার অভাব নেই। একটি দোকান ১ কোটি টাকা দিয়ে কেনার জন্য বসে আছে অসংখ্য মানুষ। একটি ফ্ল্যাট কিনতে ১/২ কোটি টাকা দিয়ে কেনার মানুষেরও অভাব নেই কিন্তু রাজধানী কিংবা জেলা শহরের ব্যস্ত এলাকাগুলোর জরাজীর্ণ ভবন কিংবা টিনের ঘরগুলোতে গিজিগিজি করে ব্যবসা পরিচালনা করার কারনে জায়গার মালিকরা কিংবা এইসব জায়গাতে উন্নয়ন কাজ চালাতে আগ্রহীরা উৎপেতে বসে থাকে।

বঙ্গবাজারে ২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির কথা বলা হয়েছে। সে জায়গা জুড়ে যদি ১৫/২০ তলা বানিজ্যিক কাম আবাসিক ভবন থাকত। তাহলে এটার মূল্য হতো কম করে হলেও ১০/১৫ হাজার কোটি টাকা।

দেশের মানুষের কাছে টাকা আছে। কত % মানুষের কাছে টাকা আছে, কত % মানুষের কাছে টাকা নেই, সেটা ভিন্ন আলাপ। স্বল্প মানুষের কাছে হলেও টাকা বাড়ছে, এটাই সত্যি। তারা বসে আছে দোকান কিনতে, ফ্ল্যাট কিনতে। ডেভলাপাররা বসে আছে ভূমি উন্নয়ন করতে। জায়গার মালিকরা বসে আছে। এককালীন টাকা পাওয়া সহ ফ্ল্যাট/এপার্টমেন্ট, বানিজ্যিক স্পেসের মালিক হয়ে কোটি কোটি টাকা পকেটে ঢুকাতে। কাজেই যখন একটি মার্কেটকে ঝুকিপূর্ণ উল্লেখ করে ১০ বার নোটিশ দেয়ার পরও ব্যবসায়ীরা/বাসিন্দারা সতর্ক হয় না, তখন উৎপেতে থাকা মানুষেরা সুযোগ নেবেই। সুযোগ যে নিয়েছেই সে বিষয়ে আমি বলছি না, তবে নিতেও তো পারে, অস্বাভাবিক নয় তো। না হয় রমজানে মানুষ যখন সেহেরী খেয়ে নামাজ পড়ে ঘুমোয়, তখনই কেন অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হলো?

সরকারী সংস্থা থেকে ১০ বার নোটিশ দেয়ার পরও তাদের হুশ ফেরেনি। এখন সর্বশান্ত হয়েছে। আমার পর্যবেক্ষণ হলো দেশজুড়ে এমন যত ঝুকিপূর্ণ ভবন, মার্কেট রয়েছে। সেখানকার ব্যবসায়ী কিংবা ভূমির মালিকরা মিলে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিয়ে দূর্ঘটনা ঘটার আগেই সেখান থেকে সরে গিয়ে সেসব ভবন/মার্কেট পুনঃনির্মাণ করতে হবে। একটি উন্নয়নশীল দেশে বস্তি আকারে মার্কেট থাকবে, এটা আমি অন্তত চিন্তা করতে পারছি না। আপনি হিসাব মিলান, তাহলে দেখবেন বস্তি এলাকা/গিজগিজ করা মার্কেট এবং বিশেষ করে বানিজ্যিক ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে যত নিম্নমানের স্থাপনা আছে, সেসবেই কেন বারবার অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে নিম্নমানের স্থাপনা এখন অভিশাপে পরিণত হয়েছে। সময়ের বাস্তবতা বুঝে সাময়িক ক্ষতি মেনে নিয়ে উন্নয়ন কার্যে নিয়োজিত না হলে এরকম ঘটনা দেশব্যাপী আরো ঘটবে।

কোন চক্রান্ত যদি নাও খুঁজি তাহলেও দেখবেন, এসব গণবসতীপূর্ণ জায়গাগুলোতে সত্যিকারের দূর্ঘটনা ঘটাও স্বাভাবিক। মুহুর্তেই ছাই হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়ার বিকল্প নেই।

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:০৬
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এই প্রথম কোন ব্লগারের সাথে আড্ডা :-B

লিখেছেন সোহানী, ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ৭:০১



জীবনের ১৬ বছর ব্লগে কাটিয়েও কারো সাথে কখনই আড্ডা দেয়ার সুযোগ হয়নি। বা বলা যায় দেখা করারই সুযোগ হয়নি। যাহোক, এবার সে সুযোগ করে দিয়েছে আমাদের আবহাওয়াবিদ ব্লগার [link|https://www.somewhereinblog.net/blog/mostofa_kamal|মোস্তফা কামাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ - সারা'কে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:০০


আমার কর্মস্থল আমার বাড়ি থেকে প্রায় ১১৪০ কিলোমিটার দূরে, অন্তত গুগল ম্যাপ সেটাই বলছে। তবে অতটা পথ পাড়ি দিয়ে আমাকে প্রতিদিন যেতে আসতে হয় না। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়েই... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনার কীর্তিকলাপ, কিংবা পাগলামি, কিংবা ভালোবাসা

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৫০

অহনা খুব জ্বালাতন করতো, অর্থাৎ খুব জ্বালাত,
বা বিরক্ত করতো আমাকে, যেমন, হঠাৎ হঠাৎ মাঝরাতে
মোবাইলে কল করে বলতো, ‘তুই যে ঘুমিয়েছিস, ঘুমানোর
আগে কি আমার কথা ভেবেছিস? বল, কতবার ভেবেছিস?
তাহলে একবার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ১৫ বছর

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:১৭

১৫ বছর পূর্তির এই পোস্টটা যখন লিখছি, তখন আমি একটা বড় পারিবারিক দূর্বিপাকের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আমার ছোটভাইয়ের কনিষ্ঠ পুত্র, যার বয়স ১১ মাস, সে দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিব্যক্তি

লিখেছেন আরোগ্য, ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:০০





১. অদ্ভুত মোহ মায়ার জগৎ এটা। সবকিছু ছেড়ে চলে যেতে হবে জেনেও বারবার আঁকড়ে ধরার ব্যর্থ চেষ্টায় রত থাকি। শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে কেউ আর বেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×