প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসাববিজ্ঞান পড়ানো হয় কমবেশি। সেই বিভাগের জনৈকা শিক্ষিকা যৌবনে পরমাসুন্দরী ছিলেন। আমাদের সিনিয়র এক ভাই, তড়িৎপ্রকৌশলের এক দামড়া তাঁর রূপে মুগ্ধ হয়ে সামনের বেঞ্চে বসে ক্লাস করা শুরু করলো। তার জুলজুলে চোখের চাহনিতে অতিষ্ঠ ম্যাডাম। একদিন ম্যাডাম ক্লাসে এসে দেখলেন, ছোকরা শেরওয়ানি পরে এসেছে ক্লাস করতে। তিনি ধুচমুচিয়ে গিয়ে বিভাগীয় প্রধানের কাছে নালিশ ঠুকে দিলেন। সরজমিন তদন্ত করতে অকুস্থলে পৌঁছাতেই সেই প্রেমার্ত যুবক প্রধানের কদমবুসি করে সলজ্জ গলায় বললো, "স্যার, আমাদের জন্য দোয়া করবেন।"
গল্পটা মনে পড়ে গেলো মাননীয় মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া আর মাননীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিলের জনগণের কাছে দোয়া প্রার্থনার ঘটনায়।
আজকে টিভিতে দেখলাম, আসলেই ব্যাপার গুরুতর। সংসদভবনে পুরো বিয়েবাড়ির আমেজ। টিভিচ্যানেলের সাংবাদিকরা বিয়ের ভিডিওর মতোই রেকর্ড করছেন সব কিছু, যাকে পাচ্ছেন হামলে পড়ে সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন। খাওয়াদাওয়া বোধহয় তেমন একটা হয়নি, আর হলেও উপস্থিত সবাই ভাগ পাননি। তাই বিরিঞ্চিবাবার গল্পে সুতোনুটির পাতে-মন্ডা-কম-পড়া বাবুদের মতোই তাঁদের মুখ গোমড়া।
হায়রে সংলাপ। আমাদের দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল এমনই রেষারেষির পর্যায়ে চলে গেছে যে দু'জনে মিলে দুদন্ড আলাপ হবে, এটাই এখন উৎসব। তা-ও ভালো এ উপলক্ষে আকাশে বাজি ফোটানো হয়নি, গরু জবাই করে কাঙালিভোজ দেয়া হয়নি।
সংলাপ তো মোটে শুরু। কোনদিকে জল গড়াচ্ছে আঁচ করা মুশকিল। আজকে সংলাপে কী হয়েছে বিশদ জানতে পারিনি, হয়তো আজকে তর্কাতর্কি হয়েছে আগামী দিন সংলাপ কোথায় ও কখন অনুষ্ঠিত হবে তা নিয়ে। হোলেও হোতে পারে, অসম্ভব কিছু নয়।
ভালোয় ভালোয় সবকিছু ভালো হয়ে আসুক, জলিল আর মান্নান হাতে হাত ধরে জাতিকে এই তপ্ত কড়াই আর জ্বলন্ত চুলা থেকে টেনে তুলুন, একটু শান্তিমতো খেয়েপরেসঙ্গমকরে বাঁচি সবাই, এ-ই আমাদের কামনা।
আমেন।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



