somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২০১২ এর প্রথম ভোর (একটি ফটোব্লগ-মিনি ভ্রমণকাহিনী) ;)

০১ লা জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাইরে যতই ডিজুসগিরি ফলাই না কেন, ভিতরের বাঙ্গাল-ভাবটা মাঝেমাঝেই ব্যপক পেরা দেয়। X(( জিনিসটা আবারো খেয়াল করলাম আজকে। গত রাতে iron maiden, children of bodom আর স্বদেশী অর্থহীনের নিকৃষ্ট-২ এর উদ্দাম তালে নেচে ১২:০১মিনিটে বর্ষবরণ করে নিলেও ভিতরে কেন জানি নতুন বছরের আমেজটা পাচ্ছিলাম না। তারপরও সারারাত zynga poker খেলে একটু আগে যখন দেখলাম জানালা দিয়ে ভোরের আবছা আলো আসছে, বুঝে গেলাম নতুন বছরের প্রথম ভোরটা স্বচক্ষে অবলোকন না করলে বর্ষবরনের পিনিকটা মাথা থেকে যাবেনা। :D কি আর করা, বর্ষবরনের পিনিক নিবারণ করতে ছাদে উঠেই দেখি সূর্য্যটা তখনও দেখার মত অবস্থানে আসেনাই, তার উপর আকাশে মোটামুটি মেঘও আছে। /:)



চিন্তা করলাম এইসময় ছাদে বসে বসে ভেরেণ্ডা ভাজার চেয়ে রাস্তায় একটু হাঁটাহাঁটি করে আসি। যেই ভাবা, সেই কাজ। ২পায়ের উপর ভরসা করে বেরিয়ে গেলাম মেস থেকে। :)



চিপা কানাগলি পার করে বড়গলির মুখে আসতেই থমকে দাঁড়ালাম, আড়চোখে গাছের ফাঁক দিয়ে পূর্নিমার চাঁদ দেখলাম মনেহয়!! কিন্তু এই ভোরবেলা এত উজ্জ্বল চাঁদ দেখব কোত্থেকে? :-/ তাইলে কি মাম্মা সাতসকালে জ্বীনের খপ্পরে পড়লাম নাকি? :| পরে ভয়ে ভয়ে চোখ তুলে ভাল করে তাকিয়ে দেখি শালার সিটি কর্পোরেশনের ল্যাম্পপোস্টের বাত্তি জ্বলে। ধুশ শালা, আমি আস্ত একটা বেকুব... :((


হাঁটতে হাঁটতে বড় রাস্তার মুখে এসেই দেখি গলির সামনের সিকিউরিটি গেটটা খুলে গেছে,কপাল ভাল। নাইলে আবার পুরা রাস্তা ডাবল ঘুরে অন্য রাস্তা দিয়ে বের হওয়া লাগতো। :)


রাস্তায় নেমে আকাশের দিকে তাকিয়েই দেখি সূর্য মেঘের ফাঁক দিয়েই যতটুকু পারে আকাশে আগুন লাগায় দেওয়ার ধান্ধায় আছে। :-* সাথে সাথে আমার মাথায়ও আগুন চইরা গেলো- এই ঐতিহাসিক মূহুর্তে হাতে একখানি স্বর্ণপত্র ধূম্রশলাকা না থাকলে কি চলে? X(( X((


উল্টা ঘুরেই গলির সামনের বিড়ির দোকানটার দিকে তাকিয়ে দেখি ওইটা এখনো খুলেনাই।


মাগার যেমনেই হোক, বিড়ি আমারে খাইতেই হবে। ঠিক করলাম যতক্ষণ না বিড়ি পাবো, ততক্ষণ হাঁটব (ভিতরে ভিতরে অবশ্য খুশিই হলাম, হুদাই হাঁটাহাঁটি করার অন্তত একটা উছিলা তো পাওয়া গেল ;) )। যেই ভাবা সেই কাজ। বিড়ির দোকান খুঁজা শুরু করলাম। রাস্তায় তখনো খুব একটা গাড়িঘোড়া নেই, ২-১টা সিএনজি আর রিকশা ছাড়া। দোকানপাটও মোটামুটি সব বন্ধ (মনে মনে ভাবলাম আমি ছাড়া আর কোন ছাগলের মাথায় ঠাডা পরসে যে এই শীতের সকালের ঘুম বাদ দিয়া সূর্য দেখতে বাইর হইব)। :|



৫কদম এগোতেই দেখি এক চাচা মিয়ার টং খোলা। :) গিয়ে গোল্ডলীফ আছে নাকি জিজ্ঞেস করতেই চাচা বলে লীফ ছাড়া বেনসন, স্টার, ব্রিস্টল, হলিউড-সবই নাকি আছে! মেজাজটা গেল খিচড়ায়। এইডা কিছু হইলো!?! X( বলে রাখা ভাল বছরের শুরুতে পকেটে ১০টাকা ছাড়া আর ১টা কানাকড়িও নাই। এইরকম দারিদ্র্য নিয়ে ভোরে বর্ষবরনের বিলাসীতা করা যায়, কিন্তু বেনসন বাবুর সম্মানী দেয়া কোনভাবেই সম্ভব না। ব্যার্থ মনোরথে আবার হাঁটা ধরলাম।


কপাল ভাল আমার পুরান মেসের গলির মুখে তুহিন মামার দোকান খোলা। মামারে সালাম দিয়াই বাকীতে একটা লীফ ধরায় ফেললাম। B-)



বিড়ি ধরায় শান্তিমত একটা টান দেওয়ার আগেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো। আজাইরা ঘুরাঘুরি করার আর কোন অজুহাত থাকলনা। :| কি আর করা বাসার দিকে রওনা দিলাম আবার। পিছে ঘুইরাই কিন্তু আবার মনটা ঠাণ্ডা হইয়া গেল। গতরাতে নওশীনরে নিয়া একটা পোস্ট পড়ার থেকেই আপামণিরে খুব মিস করতেছিলাম। এখন দেখি উনি আমার পুরান গলির মুখে দাঁড়ায় আমার দিকে তাকায় ফিচকা হাসি দিতেছেন (হাসিটায় এমন একটা ভাব যেন আমি কালকে রাতে মনে মনে ওনারে নিয়া কি মজা লইছি ঐটা আপামনি বুইঝা ফেলছেন)। ***সৌজন্যেঃ বেঙ্গল প্লাস্টিকওয়্যারস :) :D :) B-)



যাই হোক, বাসায় ঢুকার আগমূহুর্তে এলাকার সারমেয় পরিবারের সাথে হালকা সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়ে গেলো। আমাকে দেখে তারা সসম্মানে রাস্তা ছেড়ে সরে দাঁড়ালেন B-)




বাসার ছাদে উঠামাত্র খেয়াল করলাম আমার সাধের বিড়ির আয়ু প্রায় নেই বললেই চলে... :((



তার থেকে মনঃসংযোগ ঘুরিয়ে সূয্যিমামার দিকে ফিরাতেই আরো হতাশ হলাম। মামুজান তখনো মেঘের সাথে যুদ্ধ করছেন।:(( :(( :((



কি আর করা, 'অপারেশন বর্ষবরন' এর ব্যার্থতা চাপার জন্য আমাকে 'মিশন স্বর্ণপত্র-সংগ্রহ' এর সীমিত সাফল্যেই খুশি থাকতে হল। ভগ্নহৃদয়ে ফেরত আসলাম আমার সেই মেস MENTAL ASSYLUM এ। পুরান বছরের পুরান সেই রুমে ঢুকে নিজের জন্য নির্দিষ্ট চিপাটায় গিয়ে ল্যাপটপ অন করেই বর্ষবরন পিনিক নিবারণের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করতে হল। /:)





বিঃদ্রঃ এর আগে কখনো ফটব্লগ লিখিনাই। তাই ছবি কেমনে আপলোড দিব এইটা নিয়া গত ২ঘন্টা নানাভাবে যুদ্ধ চালায় যাচ্ছিলাম। এর মধ্যে আবার জানালার দিকে তাকায় দেখি মেঘের সাথে সংগ্রামে বিপুলবিক্রমে বিজয়ী হয়ে সূর্য পুরা সিলেট রোদে পুড়ায় দিচ্ছে। :)


কে বলবে এখন শীতকাল চলে? :|
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:৫২
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যমদূতের চিঠি তোমার চিঠি!!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:০৮

যমদূতের চিঠি আসে ধাপে ধাপে
চোখের আলো ঝাপসাতে
দাঁতের মাড়ি আলগাতে
মানুষের কী তা বুঝে আসে?
চিরকাল থাকার জায়গা
পৃথিবী নয়,
মৃত্যুর আলামত আসতে থাকে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে
স্বাভাবিক মৃত্যু যদি নসিব... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×