রহিমা খাতুন, বয়স ৩৭ বছর। ইদানীং ঘুম থেকে উঠে মেঝেতে পা রাখতেই পায়ের তলায় তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। আবার অনেকক্ষণ বসে থাকার পর উঠে দাঁড়াতেই পায়ের তলায় তীব্র ব্যথা হয়। একটু হাঁটাহাঁটি করলে ব্যথা কিছুটা কমে আসে।
কিছুক্ষণ বসে থাকলে উঠে প্রথমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হয়। তার পর আস্তে আস্তে ব্যথা কমে আসে। প্রথম দিকে বিষয়টি তিনি এতটা গুরুত্ব না দিলেও পরে ব্যথার মাত্রা খুব বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসকের কাছে যেতে হয় তাঁকে।
চিকিৎসক আশ্বস্ত করে বললেন, এই ব্যথা সাধারণত দুটি কারণে হয়ে থাকে। প্রথমত, প্লান্টার ফ্যাসায়টিস; দ্বিতীয়ত, ক্যালকেনিয়াম স্পার। এটি নির্ণয় করার জন্য একটি এক্স-রে করতে বললেন। এক্স-রে প্রতিবেদনে দেখা গেল, পায়ের গোড়ালির প্রধান হাড়, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ক্যালকেনিয়াম বলে, এর নিচের দিকে ছোট হুকের হাড় বৃদ্ধি পেয়েছে। মেডিকেল পরিভাষায় একে ক্যালকেনিয়াম স্পার বলে।
এ সমস্যা সাধারণত শীতকালে বেশি হয়। ওষুধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিলে এর ভালো ফল পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে। পাশাপাশি কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। যেমন :
১. সব সময় নরম জুতা ব্যবহার করতে হবে।
২. হাঁটাচলার সময় হিল কুশন ব্যবহার করবেন।
৩. শক্ত স্থানে খুব বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না বা শক্ত স্থানে বেশি হাঁটাচলা করাও উচিত নয়।
৪. ভারী কোনো জিনিস বহন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যেমন : বেশি ওজনের বাজারের থলি, পানিভর্তি বালতি ইত্যাদি বহন করা যাবে না।
৫. সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার সময় মেরুদণ্ড সোজা রেখে হাতে ভর দিয়ে ধীরে ধীরে উঠবেন ও নামবেন; যথাসম্ভব গোড়ালির ব্যবহার কম করবেন।
৬. ব্যথা থাকা অবস্থায় কোনো ধরনের ব্যায়াম করা যাবে না।
৭. হাই হিল জুতা পরা সম্পূর্ণ নিষেধ।
৮. মোটা ব্যক্তিদের ওজন কমাতে হবে এবং সব সময় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
(সংগৃহীত