somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানবালয় চাই, ধর্মালয় নয়

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের জাতি যেমন সত্যকে অবহেলা করে, এমন আর কোনো জাতি করে কি না জানি না। আমরা মিথ্যাকে মিথ্যা বলিয়া অনুভব করি না। মিথ্যা আমাদের পক্ষে অতিশয় সহজ স্বাভাবিক হইয়া গিয়াছে। আমরা অতি গুরুতর এবং অতি সামান্য বিষয়েও অকাতরে মিথ্যা বলি। … আমরা ছেলেদের সযত্নে ক খ শেখাই, কিন্তু সত্যপ্রিয়তা শেখাই না– তাহাদের একটি ইংরাজি শব্দের বানান ভুল দেখিলে আমাদের মাথায় বজ্রাঘাত হয়, কিন্তু তাহাদের প্রতিদিবসের সহস্র ক্ষুদ্র মিথ্যাচরণ দেখিয়া বিশেষ আশ্চর্য বোধ করি না। …তাহাদের সাক্ষাতে মিথ্যাকথা বলি ও স্পষ্টত তাহাদিগকে মিথ্যাকথা বলিতে শিক্ষা দিই। আমরা মিথ্যাবাদী বলিয়াই তো এত ভীরু! এবং ভীরু বলিয়াই এমন মিথ্যাবাদী। …স্পষ্ট করিয়া সত্য বলিতে পারি না বলিয়া আমরা এত হীন। …মিথ্যা আমাদের গলায় বাধে না বলিয়াই আমরা এত হীন। সত্য জানিয়া আমরা সত্যানুষ্ঠান করিতে পারি না বলিয়াই আমরা এত হীন। পাছে সত্যের দ্বারা আমাদের তিলার্ধমাত্র অনিষ্ট হয় এই ভয়েই আমরা মরিয়া আছি।”

যে দেশে সত্যের চর্চা নেই, সেখানে সত্যবাদিতা আশা করা বোকামি। সত্য বন্দি বলেই আমাদের হৃদয় বাড়ে না বরং সংকুচিত হয়। ধর্মশিক্ষার অবস্থাও তাই। কারণ ধর্ম সত্য প্রকাশে বাধা দেয়। কুসংস্কারগুলো ধামাচাপা দেয় বলেই সমাজে এর কোনো সুফল নেই। অর্থাৎ ধর্মের যেটুকু ভালো, সেটুকুর প্রভাবও এখন মানুষের উপর নেই।
লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি যতোটা চলে তারচেয়ে বেশি শব্দ করে। ধর্মও যতোটা না মানুষের উপকারে লাগে, তারচেয়ে বহুগুণ এবং অবিরতভাবে হৈচৈ-চেঁচামেচি করে জানান দেয়! অর্থাৎ উম্মাদনা সৃষ্টি, চেঁচিয়ে, দাপিয়ে, ধমকিয়ে দেখানে ও শেখানো, গোল বাঁধানো, গ্যালন গ্যালন অ্যালকোহল পান করানো…। সবকিছুতেই ঝনঝন, ঠনঠন, ঝরঝর, কড়কড়, ধরমার… শব্দ। কুফলগুলো বোঝাতে চাইলেও গোল বাঁধে। তবে এসব মোটেও অযথা নয়। ফলে ধর্মের ভয়ে সকলেই ভীত। যারা মানে না, তারাও! কারণ প্রাণের চেয়ে বড় কিছুই হতে পারে না।

শতকোটি মুখ থেকে একযোগে সহস্রকোটি প্রশংসা গ্রহণ যার প্রধান লালসা, না পাইলেই অভিশাপ। এক ইঞ্চিও ছাড় নয়, পুরোটাই চাই, না হলে কঠিন শাস্তি। এ ভয়ে মানুষ সৎ হোক বা না হোক, সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই; ওর চাই প্রশংসা, আদার, সম্মান, সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান… কোনো প্রশ্ন তোলা যাবে না। ত্যাগ করাও চলবে না। যদিও পরিসংখ্যান করলে দেখা যাবে- ধর্মের কারণে মানুষ সৎ হওয়ার গতি অত্যন্ত নিম্নমুখী। সততা নিম্নমুখী হলেও, ধর্মের গতিবেগ শুধু উর্দ্ধমুখীই নয়, আলোর গতিকেও হার মানিয়েছে! ধর্মের চলা, বলা, প্রচার-প্রসার, চিৎকার, চেঁচামেচি, শোরগোল… এতোটাই বিকট যে, কে কী প্রচার করছে বা বলছে, কাকে ডাকছে… প্রায়ই বোঝা যায় না। গলার শিরদ্বারা ফুলিয়ে চিৎকারের অর্থ বোঝা প্রায় অসম্ভব হলেও, ধার্মিকরা নাকি বোঝেন! আসলে কাজের কাজ কিছুই না। কী শুনলো, কী বুঝলো এসবের গুরুত্ব নেই, যেন শেখানো মন্ত্র প্রথামত কোটিকণ্ঠে চেঁচিয়ে যাওয়াই পূণ্যি।

অথচ ধর্ম পালন ও শেখাই মানুষের প্রধান কর্তব্য নয়। নিজেকে জানাই প্রধান। নিজেকে জানলে, অদৃশ্য-কাল্পনিক ঈশ্বর নামক কোনো জীবের কাছে মাথা নত করার প্রয়োজন নেই। নিজেই ভালো-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় সবকিছু উপলব্ধি করতে পারেন। ফলে তিনি কারো ক্ষতি করেন না, অসৎ উপায়ে ধন-সম্পদ বা চুরি-ডাকাতি, ঘুষ-দুর্নীতি… করেন না। কোনোকিছুর কাছে আত্মসমর্পণও করেন না। বিপদে দুর্বল হয়ে কাতর কণ্ঠে কাউকে ডাকেন না। হে ঈশ্বর, হে ঈশ্বর, গুণা/পাপ মাফ কর বলে চিৎকার বা কান্নাকাটিও করেন না, পরকালে (থাকলেও) মহাসুখের আশাও করেন না…। অর্থাৎ কথিত ঈশ্বর খুঁজতে হয় না, বরং ঈশ্বরই (যদি থাকে) তাকে খুঁজবে। কারণ এরূপ হৃদয়ে যে প্রীতি, ভক্তি, দয়ামায়া, স্নেহ-ভালোবাসা, সৌন্দর্য… আছে তা অনন্ত। সেই অনন্তকে যে একবার হৃদয়ে ধারণ করতে পারেন, তিনিই সফল এবং প্রকৃত মানুষ। অথচ মানুষ ঈশ্বর খুঁজছে ধর্মালয়ে, গৃহের কোণায়, গয়া-কাশি, বৃন্দাবন, মক্কা-মদিনায়…! বিদ্বানরা বলেন, সত্যই সীমা, সত্যই নিয়ম, সত্যের দ্বারাই সবকিছু প্রকাশিত। সত্যের ব্যতিক্রম হলেই সব উচ্ছৃঙ্খল। সত্যের অভাবেই ধর্ম লোকদেখানো পালনীয় অভ্যাসে পরিণত। অথচ কোনোকিছুই পালন করলেই হবে না, অন্তরে লালন/ধারণ করতে হবে। যদিও পালন করা সহজ কিন্তু লালন করা অত্যন্ত কঠিন। তবে মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি- কঠিনকে নয়, সহজকেই গ্রহণ করা। তাই অধিকাংশই কঠিন মানবিক মূল্যবোধের পরিবর্তে সহজ ধর্মকেই বেছে নিয়েছে। অথচ ঈশ্বরদের প্রয়োজন মানুষের নেই, বরং ঈশ্বরদেরই মানুষের প্রয়োজন! কারণ মানুষ না বাঁচলে, কথিত একটা ঈশ্বরও বাঁচবে না। তাই হয়তো শতকরা ৯৯ ভাগ অসৎ মানুষ (বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের) দেখেও ঈশ্বরেরা কেউই আর (কথিত ওল্ডস্টেটামেন্ট অনুযায়ী) মহাপ্লাবন কিংবা অগ্নিবর্ষণ করে মানুষ ধ্বংস করছে না। বরং আরো অসৎ জন্ম দিচ্ছে। অন্যদিকে দেবতারা স্বর্গে কৃষ্ণলীলায় ব্যস্ত, ব্র‏হ্মাস্ত্র নিয়ে অসুরদের উপর আর ঝাপিয়ে পড়ে না। হয়তো রাজনীতিবিদদের ন্যায় ঈশ্বরেরাও মানুষকে অন্যায় করার সুযোগ দিয়ে দল টিকেয়ে রাখতে এবং অনুসারী বাড়াতে ব্যস্ত! কারণ, অন্যায় করার সুবিধা না দিলে, দল ভেঙ্গে যাবে যে!

প্রতিটি ধর্মই মারাত্মকভাবে শ্রেষ্ঠত্ব ও অহংবোধে আক্রান্ত। অংহকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরার ফলেই মানবতাবোধ থেকে অনেকাংশেই বিচ্যুত। অহংবোধের কারণেই বিধর্মীদের ঈশ্বরের সন্তান ভাবতে পারে না। এমনকি একই ধর্মানুসারী হয়েও নিজেদের মধ্যে ঘৃণা, বিভেদ, বৈষম্য চরমে। অথচ মানুষ এসব বোঝে না; না বোঝাটাও অংহকারের ফল। কারণ প্রচণ্ড অহংকারে আক্রান্ত ও আলো থেকে বিচ্যুত এবং জন্মান্ধ ধর্মের আলোতে আসার ও ভুল-ক্রুটি স্বীকারের সাহস নেই। সুতরাং যা অহংবোধে ভরা, তা সত্য নয় বরং মিথ্যা, নোংরা, কুসংস্কারাচ্ছন্ন। অথচ এটাই পুরো মানবজাতিকে কৌশলে অহংকারের বিষপান করিয়ে মানসিকভাবে পঙ্গু করে রেখেছে।

ধর্মান্ধ বলেই মানুষ মানবতার চেয়ে ধর্মকেই সর্বোচ্চ প্রাধান্য এবং মানবতাকে ধর্মের নিয়মে বেঁধে রেখেছে। কারণ ধর্মকে বড় করে দেখার অর্থই মানবতাকে ছোট করা। মানবতাকে ছোট করা মানেই, মনুষ্যত্বকে বলি দেয়া। মানুষ যেমনিভাবে প্রতিদিন চিরঅভ্যস্ত ও প্রথামত ঈশ্বরকে ডাকে, তেমনি রাগ, হিংসা, লোভ করে; মোহে পড়ে, ঘুষ-দুর্নীতি, মিথ্যাচার করে…। অথচ ধর্মকর্ম তথা বিধিব্যবস্থার তিলমাত্র ত্রুটি করে না এবং যতোই যুক্তিপূর্ণ হোক, ধর্মের বিপক্ষে যায় এমন কিছু সহ্য করে না! এসব কী আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়তই দেখছি না? নাকি মানুষ লাগমহীন দুর্নীতি করুক, মিথ্যা বলুক, ঠকবাজ হোক… ক্ষতি নেই, ধর্ম পালন করলেই হলো, অর্থাৎ এতেই ধর্মের সন্তুষ্টি? সুতরাং একই সাথে ধার্মিকতা ও দুর্নীতির মহামারী দেখে মনে হয়- মানব জীবনে ধর্মের প্রয়োজন শুধু ধার্মিক হবার জন্য; মানুষ হবার জন্য নয়। কেননা, মানুষ হওয়ার জন্য মনের পবিত্রতা ও দৃঢ়তাই যথেষ্ট। না হলে, প্রায় শতভাগ ধার্মিকের এই দেশ হতো- পৃথিবীর স্বর্গ!

সমাজের নৈতিক অবক্ষয়, লোভ ও লাভের মহড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে ধর্মের ঢাক পিটানো দেখে মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক, সৎ হওয়ার জন্য নয়; নিষ্ঠুর ঈশ্বর ভীতির কারণেই মানুষ ধর্মকর্ম করে। ধর্ম যদি গুণা/পাপের তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা রাখতো এবং কার্যকরি ও চাক্ষুস প্রয়োগ থাকতো, তাহলে এর প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করতাম না, বরং খুশি হতাম। কিন্তু এতো নৈতিকহীনতা সত্ত্বেও, ধর্ম স্বমহিমায় টিকেই শুধু নয়, বরং দিনদিনই আরো হৃষ্টপুষ্ট হচ্ছে। তাই মনে হয়, মানবজাতির দুর্ভোগ কোনোদিনও যাবে না বরং বাড়বে।

পূর্বেও বলেছি, ধর্মই একমাত্র বিষয়, যা সঠিকভাবে না পড়ে, না বুঝে… খাঁটি(!) ধার্মিক হওয়া ও থাকা সম্ভব। ফলে ধার্মিকের চিত্ত যে অতিসংকীর্ণ বেড়া দিয়ে ঘেরা থাকে, যা জানতে/বুঝতে পারেন না। সঠিকভাবে না জানাটা অন্যায় নয়, তবে জানার চেষ্টা না করা অবশ্যই অন্যায়। সুতরাং ধর্মকে সঠিকভাবে জানা সমস্ত মানবজাতির জন্য অত্যন্ত জরুরি ও মঙ্গলজনক। অথচ ধর্ম মস্তবড় উপকারী, এ ছাড়া মানবজাতির উপায় নেই… সর্বক্ষণ এবং জোরালোভাবে চারিদিক থেকেই শোনা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে, ধর্মের গুণগান একমুহূর্তের জন্য থামালেই মানবজাতি ধ্বংস হয়ে যাবে! ফলে ধর্মের নেশায় নেশাগ্রস্ত ও বিভোর মানুষগুলো একে অত্যন্ত উদার ও অত্যাবশ্যকীয় বলে প্রচার করছে। এসব মিথ্যা প্রচার একেবারে নির্মূল করতে না পারলে, সত্যের মৃত্যু ঘটতেই থাকবে।

ধর্মই মানবজাতির রক্ষক ও উন্নতির সোপান হলে ধর্মহীন ব্যক্তি ও জাতির কেনো এতো উন্নতি হচ্ছে? ধার্মিক ব্যক্তি ও জাতিগুলোরই বা এতো অবনতি কেনো? সন্দেহ নেই কথিত ধর্মে আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ, মহান… এ অহংবোধর মধ্যে কী হীনতা, শঠতা নেই? কারণ ধর্মের কী ক্ষতি হচ্ছে, কে করেছে, কেনো করেছে… এসব বিষয়ে সদাসতর্ক কিন্তু মনের দুর্দশার প্রতি কোনো খেয়াল নেই। ভেবে দেখি না, বিধর্মী বা ধর্মহীন জাতির মধ্যে এমন কী গুণ আছে, যার ফলে সেখানে প্রায় সব মহান বিজ্ঞানী, মাহান দার্শনিক জন্মাচ্ছে… অথচ ধার্মিক জাতিগুলোর মধ্যে উল্লেখ করার মতো মানুষ জন্মাচ্ছে না কেনো? কী এমন গুরুতর দোষ-ত্রুটির কারণে ধর্মরাষ্ট্রগুলোতে বেশিরভাগই স্বার্থপর, মিথ্যাবাদি, অহংকারী, লোভী, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী, লুটেরা, ধর্মদানব… সৃষ্টি/জন্ম নিচ্ছে? এসব ভেবে দেখলে ও পরিবর্তনের চেষ্টা করলে জাতি উপকৃত হবে। তাছাড়া আমার ধর্মই সর্বশ্রেষ্ঠ, অন্যেরটা মন্দ, বারবার, যখন-তখন এরূপ মিথ্যাচারে কোনো সুফল আনতে পারে না। যা প্রমাণিত সত্য।

সবচেয়ে অবাক ও ভয়ানক, এসব কেউ বোঝাতে চাইলেও ধার্মিকরা বুঝতে চায় না। ভয়ানক এজন্যই, যদি কেউ শিশুকালে ধর্মশিক্ষায় সন্ত্রাসী হওয়ার মন্ত্র পেয়ে থাকে, তাহলে তাকে দিয়ে যেকোনো নৃশংস্য হত্যাকাণ্ড/খারাপ কাজ করিয়ে নেয়া সম্ভব। কেননা ধর্মের বিভ্রান্তিকর শিক্ষার কারণেই- কারো চিত্ত বিকৃত, কারোটা জটিল, কারোটা অত্যন্ত জটিল; অনেকের সহজ-সরল হলেও, যতোটা হওয়ার কথা, ধর্ম কাউকেই ততোটা হতে দেয় না। কারণ হৃদয়কে সংকীর্ণ ও গণ্ডিবদ্ধ রাখাই ধর্মের অন্যতম উদ্দেশ্য। গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে না যাওয়ার জন্য দিবারাত্র সতর্ক ও ভয়ানক ভীতি প্রদর্শন আমৃত্যুই চলতে থাকে। অর্থাৎ ধর্ম মানব চিত্তের স্বাধীনতা দেওয়ার মতো উদার নয়। সেজন্যই ধর্মে-ধর্মে এমনকি একই ধর্মের মধ্যেও এতো মতপার্থক্য এবং বনিবনা হয় না। হতেই পারে না। কেননা যে শিক্ষা/অভ্যাস পড়ে-জেন-বুঝে নয়, বরং পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের চাপিয়ে দেয়া; যার আদর্শ/লক্ষ্য/উদ্দেশ্য মাপার/বোঝার… পূর্বে নিজের অজান্তেই গড়ে ওঠেছে, যে শিক্ষার মধ্যে ভালোর চেয়ে মন্দ মোটেও কম নয় বরং বেশি (কুসংস্কার, কুপ্রথা, ঘৃণা, হিংসা-বিদ্বেষ, পরচর্চা-পরনিন্দা, গরিমা, হুমকি, লোভ, শ্রেষ্ঠত্বের অহংকার, বাড়াবাড়ি… ইত্যাদি)। অর্থাৎ যে অভ্যাস বাইরে থেকে চাপানো, চিত্ত তা গ্রহণ করে কেবল মঙ্গলজনক কাজে ব্যবহার করবে, না চাইলেও ভুল পথে পরিচালিত করবে না, কিংবা পরিচালিত করার মানসিকতায় প্রস্থত রাখবে না, এর গ্যারান্টি কোথায়?
কারণ সংশয়ের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত না হলে সুশিক্ষা সম্ভব না। যে ছাত্রটি বেশি প্রশ্ন করে, তার শিক্ষা আর প্রশ্নহীন ছাত্রটির শিক্ষার মান এক নয়। পৃথিবীর প্রায় সব বিষয়কেই প্রশ্নের সম্মুখীন এবং সত্য-মিথ্যার প্রমাণ দিতে হলেও, ধর্মশিক্ষায় যা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য ও নিষিদ্ধ। একমাত্র ধর্মের ব্যাপারে এহেন একচোখা নিয়ম, আইন, আচরণ তথা প্রশ্নহীন বিশ্বাসই মানবজাতির সবচেয়ে বড় বোকামি। অথচ এরূপ বোকামিকে মহৎ বলতে ও ভাবতে মানুষের দ্বিধা নেই বরং গর্ব আছে। ভাবখানা এমন- ধর্মে স্বোচ্ছাচারিতা বা ভুলভ্রান্তি আছে থাক না। খোঁজ-খবর বা পড়াশেনার দরকার কী? হোক না এ নিয়ে- বিতর্ক, হিংসা-বিদ্বেষ, অংহকার, লুটপাট, ধর্ষণ, পাশবিকতা, বিকৃত রুচির ও ভয়ংকরতম হত্যাযজ্ঞসহ নানা প্রলোভন, ভয়ভীতি, রক্তাক্ত যুদ্ধ-দাঙ্গা… (যেন এসব ধর্মের অঙ্গ)। দুঃখের বিষয়, এরূপ চিরবিবাদের পরেও তা আন্তর্জাকিতভাবে স্বীকৃত এবং কিচ্ছুটি বলা চলবে না; মহাকাশে তুলে রাখতেই হবে। বুঝলাম, কারো বিশ্বাসে হাত দেয়া উচিত নয়, কিন্তু যখন তা অবিরতভাবে মানবতায় আঘাত করে (শুধু শারীরিক নয়, মানসিকও), একটি পবিত্র শিশুকে অপবিত্র তথা অহংকারী করে তোলে, ঘৃণা কিংবা নিজেকে শ্রেষ্ঠ এবং বিধর্মীদের খারাপ বা ছোট ভাবতে শেখায়… তথাপিও চুপ থাকতে হবে! এ কেমন আইন!

ক্ষমা করবেন, নিজে বোকা হলেও, ধর্মের প্রতি এরূপ একপেশে ও অন্ধ সমর্থনের জন্য পুরো মানবজাতিকেই দায়ী করছি! কারণ, সর্ববিষয়েই মানবজাতির অন্ধত্ব এবং বোকামির সীমা আছে; ভুল-ভ্রান্তি স্বীকার ও সংশোধনের চেষ্টাও আছে। একমাত্র ধর্মের ব্যাপারে বোকামির সীমা-পরিসীমা নেই। যদিও প্রচুর মানুষ আছে, যারা ধর্মের ভুল-ভ্রান্তি বুঝলেও স্বীকার করতে নারাজ বরং ভুল স্বীকারকে আজন্ম লালিত অংহবোধে আঘাত এবং ধর্মের হীনতা, অগৌরব, অপমান… বলে মনে করেন। অথচ এরা প্রত্যেকেই অন্য ধর্মের প্রচণ্ড সমালোচক (প্রকাশ্যে কম, গোপনেই বেশি)। এর প্রধান কারণ, সামান্যতম অপমান (যুক্তিপূর্ণ হলেও) সহ্য না করার মন-মানসিকতা সৃষ্টির মধ্যেমেই শিশুর ধর্মশিক্ষা শুরু, যা আমৃত্যু হৃদয়ের গভীরে চির অম্লান থাকে। ফলে দেখা যাচ্ছে, ধর্মের ভাগ্য অতি চমৎকার ও বিষ্ময়করই নয়, অতি নিরাপদও বটে। যদিও মানুষের উচিত ধর্মকে প্রশ্রয় না দিয়ে ক্রুশে দেয়া। অথচ ওটাকে কাঠগড়ায় তোলার বদলে তোলা হয় ব্যক্তি বা গোষ্ঠিকে (তাও নৃশংস্যতম হত্যাকাণ্ডের মতো কিছু ঘটালে)। বলা, ভাবা ও সমর্থন করা হয়- ধর্মের কোনো দোষ নেই, দোষ যা ব্যক্তির বা গোষ্ঠির! অথচ ধর্মই যে আড়ালে থেকে সমস্ত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে, শিক্ষা, আদেশ-নির্দেশ দিচ্ছে… মানুষের এই সামান্য বুদ্ধিটুকুও ধর্ম খেয়ে ফেলেছে! অধম মনে করে, এটাই মানবজাতির চরম ভুল এবং মানবতার চরম আতঙ্ক! যে আতঙ্কে সারাবিশ্ব ত্রাহিত্রাহি। বর্তমান বিশ্বে এতো ভয়ানক অন্য কোনো বিষয় আছে কী? রাজনৈতিক যুদ্ধও বোধকরি এর নৃশংস্যতার কাছে শিশু। প্রশ্ন হলো- ধর্ম কীভাবে বাঁধাহীন, স্বসম্মানে ও নিরাপদে কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে? জানি না, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো কেনো ধর্মের উপকার-অপকার, প্রয়োজনীয়তা, আদর্শ-অনাদর্শ… নিয়ে প্রশ্ন তুলছে না; সমীক্ষা বা পরিসংখ্যান করছে না? যথা, ধর্মের কারণে মানুষ কতোটা সৎ ও আদর্শবান হচ্ছে, পক্ষান্তরে অধার্মিক/নাস্তিকরা কতোটা হচ্ছে? অথবা ধার্মিক জাতির আদর্শ এবং অধার্মিক জাতির আদর্শের তফাৎ কতো? ইত্যাদি। এরূপ পরিসংখ্যান থাকলে, নিশ্চয়ই ধর্মের মুখোশ অনেকটাই উন্মোচিত হতো। এতে ধর্মের/ধার্মিকদের কিছুটা হলেও লজ্জা হতো এবং বাড়াবাড়ি, খুনাখুনি, দরিদ্র-অসহায় জনগণসহ সংখ্যালঘু নির্যাতন ও বিতাড়ন অবশ্যই কমতো।

উদাহরণস্বরূপ, প্রায় সব ধর্মরাষ্ট্রগুলোই প্রচণ্ড ক্ষমতালোভী, অগণতান্ত্রিক, স্বেচ্ছাচারি, একনায়ক কিংবা স্বৈরশাসক দ্বারা শাসিত। স্পষ্টতই এরা আইনের শাসনের চেয়ে ধর্মের শাসন বেশি পছন্দ করে। ফলে ক্ষমতা ধরে রাখতে কিংবা ক্ষমতায় যেতে, দরিদ্রের উন্নয়নের চেয়ে ধর্মের উন্নয়নকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। যদিও তাদের ক্ষমতার লড়াইয়ের জন্যই বিধর্মীই শুধু নয়, স্বধর্মীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে। এরা ধর্ম ব্যবহার করে নানান জঙ্গিগোষ্ঠি সৃষ্টি করা ছাড়াও চিরস্থায়ীভাবে দাঙ্গা লাগিয়ে রাখছে। ফলে (ঘোষিত বা অঘোষিত) প্রায় সব ধর্মরাষ্ট্রগুলোতেই যুদ্ধ-দাঙ্গা, লুটপাট, ধর্ষণসহ বর্বর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে এবং হাজার হাজার শরণার্থী সৃষ্টি করছে। অথচ এসব শরণার্থী নিজ দেশে বা নিজ ধর্মের কাছে আশ্রয় না পেয়ে বিধর্মীদের দেশে ছুটছে (রোহিঙ্গা ব্যতিত)। পালাতে গিয়ে সাগরে ডুবে, মরুভূমিতে শুকিয়ে কিংবা বন্তেজঙ্গলে না খেয়ে মরছে। এতে ধার্মিক রাষ্ট্রগুলোর মহাধার্মিক কর্মকর্তাদের যে তেমন মাথাব্যথা নেই, তা বুঝতে আইনস্টাইন হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ এদের প্রধান উদ্দেশ্য ধর্ম বাঁচানো, মানুষ নয়। এরা বিশ্বাস করে- ধর্ম নিয়ে ভাবলেই চলবে, মানুষ নিয়ে মাথাব্যথার বহু বিধর্মী রাষ্ট্র আছে! এরা মহাখুশি যে, মানুষ গোল্লায় যাক আমরা ধর্ম পালন ও রক্ষা করি, ধর্মালয় গড়ি, নিয়মিত-প্রতিদিন এবং বাৎসরিক সব ধর্মানুষ্ঠান করি… সেহেতু, আল্লা/ঈশ্বরেরা (কথিত প্রতিশ্রুতি মতো) অবশ্যই আশির্বাদ করতে বাধ্য! এসব কারণেই তাদেরকে বোকা বলতে এ মূর্খের দ্বিধা নেই। এসব ধর্ম-মদান্ধরা মানুষ মেরে ও তাড়িয়ে ধর্ম পালন করছে। অথচ বিধর্মী দেশগুলো শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে দিতে ক্লান্ত, এদের স্রোত সামাল দিতে প্রচণ্ড হিমশিম খাচ্ছে। অপারগ ও বাধ্য হয়ে নতুন আইন করে থামাতে চাইলেও মানবতার কারণে পারছে না। অথচ ধর্মরাষ্ট্রগুলোকেই শরণার্থীদের সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব যেচেই নেয়া উচিত ছিলো। কারণ অসহায়দের সহয়াতা পরম পূণ্যের কাজ, যা ধর্মেই নির্দেশ আছে। এরপরও ধর্মের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়েও লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষকে আশ্রয় ও অন্ন, বস্ত্রহীন বানিয়েও ধার্মিক হিসেবে এবং নিশ্চিন্তেই আছে।

যদি এর উল্টাটি ঘটতো, অর্থাৎ বিধর্মীরা অত্যাচারিত হয়ে ওইসব ধার্মিক দেশেগুলোতে ঢোকার চেষ্টা করতো, তাহলে কী হতো? উত্তর পাঠকদের জন্য রইলো। আবার এসব শরণার্থীদের মধ্যেও বহু ধার্মিক আছে যারা বিধর্মীদের খেয়েপরে বেঁচে আছে, অথচ তাদের বিরুদ্ধেই মরণ কামড় দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সময় ও সুযোগ বুঝে সাধারণ মানুষগুলোকে নিত্য নতুন কৌশলে কিংবা গাড়িচাপা দিয়ে মরিচবাটা করে ফেলতেও হৃদয় একটুও কাঁপে না বরং সঙ্গে সঙ্গেই গর্বের সাথে স্বীকার করে। কাঁপবেই বা কেনো, এতো যে-সে শিক্ষা নয়, এক্কেবারে খাঁটি ধর্মীয় শিক্ষা! এরাই ধর্ম-মদান্ধ, নিজেদের ভাষায়- ধর্মবীর! কী হিংস্র এদের ধর্মশিক্ষা! এসব স্বধর্মী দানবদের ভয়েই, বেশিরভাগ স্বধর্মী রাষ্ট্র তাদের দরজা চিরতরে বন্ধ রেখেছে। তাদের বর্ডারে গেলে গলাধাক্কা থেকে গুলি পর্যন্ত খেতে হবে জেনেই স্বধর্মীদের দেশে ঢোকার চিন্তাও করে না, বরং দৌঁড়ায় বিধর্মীদের দেশে। কারণ তারা ভালো করেই জানে, স্বর্ধীদের ন্যায় বিধর্মীরা গুলি কেনো, গলাধাক্কাও দেবে না। বরং অনিচ্ছা ও অতিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও আশ্রয় দেবেই। এর কারণ তারা ধার্মিক নয়, প্রকৃত মানুষ। কোনো কোনো বিধর্মী দেশ যতোই কড়াকাড়ি করুক, চোখের সামনে মানুষ মরতে দেখলে, আশ্রয় না দিয়ে পারে না। না দিলে, মানবতাবাদি এক্টিভিস্টদের কারণে বাধ্য হয়। এটাই মানবতাবাদিদের প্রকৃত ধর্ম; তারা সাধারণত আইন লঙ্ঘন করে না, কিন্তু মানুষ মরতে দেখলে আইনের তোয়াক্কা করে না। হয়তো বলবেন, ধর্মসন্ত্রাসীরা তো মুষ্টিমেয়। অস্বীকার করছি না, তবে সভ্যতা/মানবতা ধ্বংসের জন্য কয়েকটা দানবই তো যথেষ্ট! যদিও দানবের সংখ্যা কম কিন্তু দানব সৃষ্টির পেছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রচুর সমর্থক ছাড়াও লাদেন অথবা জাকির নায়েকদের মতো ছোট-বড় বহু ধার্মিকই তৎপর! এরা বহু সাধারণ ধার্মিকদের কাছেই ঈশ্বরতুল্য।
বলছি- ধর্ম যদি একটা দানবও বানায়, তাহলে এর দায়িত্ব ধর্মের অর্থাৎ ধার্মিকদেরই। এ দায়িত্ব মানবতাবাদি কিংবা ধর্মহীনরা নেবে কোনো? এমন অভদ্র-অসভ্য যুক্তি মানবেই বা কেনো? কারণ ধর্ম যখন কোনো ভালো কাজ করে, তখন ধার্মিকরা গর্বে হিমালয়ের ন্যায় ফুলে ওঠে, খারাপ কাজ করলে দায় এড়িয়ে যায়, এসব কী অসভ্যতা নয়? কারণ এটাই- ধার্মিকরা ধর্ম বোঝে, মানবতা বোঝে না। আর মানবতাবাদি/নাস্তিকরা মানুষ বোঝে, ধর্ম বোঝে না। এতোকিছুর পরেও ধার্মিকরা কেবল ধর্ম রক্ষা ও বিস্তারের জন্যই উম্মাদ হচ্ছে, মানবতা তথা মানবধর্মের নাম মুখে আনছে না। অতএব প্রশ্ন- কাদের ধর্ম মহৎ, ধার্মিকদের নাকি মানবতাবাদি/নাস্তিকদের?

দেখুন, ধর্ম-মদান্ধদের বোকামি কতোটা প্রবল। কখন, কেথায়, কী বলতে হয়, বুঝেও না। সবকিছুতেই যেমন ধর্মের গন্ধ পায়, তেমনি ধর্মের আলতা লাগায়। যার বহু উদাহরণের মধ্যে (একজন উচ্চপদস্থর) একটি বক্তব্য:- দেবতা চটে যাওয়াতেই কেরলে বন্যা! বিতর্কিত মন্তব্য আরবিআই কর্তার যাহোক প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে, যেখানে খুশি, যেমন খুশি ধর্মানুষ্ঠান কিংবা ধর্মালয় তৈরি করতে চাইলে, প্রায় সকলেই খুশি মনে ও বিনা প্রশ্নে জায়গা-জমি, অর্থ-সম্পদ দিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু মানবাধিকার, সত্যানুষ্ঠান, নৈতিক শিক্ষার… জন্য (বিশেষভাবে ধর্মরাষ্ট্রগুলোতে) একটুখানি জায়গা বা অর্থ চেয়ে দেখুন তো, কতোটুকু পান! অর্থাৎ ঈশ্বরদের অভিশাপের ভয়ে কিংবা অন্ধ মোহের বশে হোক, ধর্মশিক্ষা ও ধর্মানুষ্ঠানের মহামারী চলেছেই। কিন্তু মানবধর্ম শিক্ষায় আগ্রহ নেই। ফলে প্রচণ্ড যানজটের ঢাকা শহরে রাজপথ আটকে ধর্মানুষ্ঠান করলে মানুষ বিরক্ত হয় না বরং খুশিই হয়। আবার অনেক ধর্মালয়ই রাজপথ আটকে দাঁড়িয়ে আছে। জনগণের যতো অসুবিধাই হোক, ধর্মালয় ভেঙ্গে রাস্তা প্রশস্ত করা যাবে না; ধর্মানুষ্ঠান চলতে দিতেই হবে, বরং যেখানে খুশি, যেভাবে খুশি নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে ওসব করা/গড়া যাবে! অর্থাৎ মানুষের চলাচলের স্বাধীনতা যতোই বাঁধাগ্রস্ত হোক, ধর্মের স্বেচ্ছাচারিতায় হাত দেয়া চলবে না। অনিয়ন্ত্রিতভাবে ধর্মালয় গড়ে উঠুক প্রতিবাদ করাও যাবে না। প্রতিবাদীদের ধর্মদ্রোহী আখ্যা দিয়ে খুনসহ দেশ ছাড়া ও নাস্তানাবুদ করতেও ধর্মের জুরি নেই (যাতে রাষ্ট্রসহ প্রায় সকলেরই সমর্থন থাকে)।

ধর্মের এরূপ বহু স্বেচ্ছাচারিতার জন্য দায়ী- পরিবার, সমাজ এবং ঘোষিত-অঘোষিত ধর্মরাষ্ট্রগুলো। এসব রাষ্ট্রের প্রায় সব সাধারণ মানুষ এবং কর্ণধারেরা ধার্মিক হলেও, দৈন্যতা এবং পরস্পরের প্রতি বৈরিতায় পৃথিবীর সেরা। ফলে তারা বারবার এবং চিরপ্রথা/অভ্যাসমতে একই ধর্মানুষ্ঠানের আয়োজন এবং ধর্মালয় তৈরির চেয়ে মহৎ ও জনহিতকর কাজ খুঁজে পায় না! ধর্মালয় তৈরি ও ধর্মানুষ্ঠানের জন্য কোটি কোটি টাকা খরচকে হতদরিদ্রদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের… স্থায়ী ব্যবস্থার চেয়েও মহা পূণ্যের কাজ বলে মনে করে (যদিও দান-খয়রাত যৎসামন্য করে)। পাতলা ডাল ও শাক ভাত খাওয়া হাড়জিরজিরে এতিম বাচ্চাদের ধর্মশিক্ষা দেয়াই যেন মহৎ কাজ! অথচ এতিমখানার কর্ণধারদের ভুড়ি দেখলে মনে হবে- হাইব্রিড কোনো দৌত্য! অনেক দেশ (স্বধর্মী) অন্য দেশকেও ধর্মালয় তৈরিতে দান করে, অনুপ্রেরণা যোগায়…। মনে হয় যেন, একমাত্র ধর্ম বিস্তার, রক্ষা, প্রচার… করলেই মানুষ সৎ ও নীতিবান হবে ও থাকবে, অন্যথায় গোল্লায় যাবে। অথচ বাস্তব ফলাফল (ধর্ম পালনে মানুষ কতোটা সৎ হচ্ছে) কখনো পরিসংখ্যান করে না, আমলেই নেয় না। তাছাড়া এসব ধার্মিকদের চরিত্র, আচার-ব্যবহার বিশ্লেষণ করলে, হয়তো যে ফল প্রকাশ পাবে, তাতে বোধকরি কথিত ঈশ্বর/আল্লাও কেঁপে উঠবে! যাহোক, এসবে ধর্মের কী উপকার হয় জানি না, তবে মানবতার যে চরম সর্বনাশ, সেটা স্পষ্ট।

ধর্মকে আঘত দূরে থাক, সামান্য কটুকথা বললেই ধার্মিকদের অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে। এ নষ্টানুভূতি আবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার স্বীকৃত! যা অত্যন্ত দুঃখজনকই নয়, চরম হতাশার এবং ভয়ংকরও বটে। মনে হচ্ছে, ধর্ম ব্যবহার করে মানুষ হত্যায় যে অন্যায় হয়, তারচেয়ে কয়েকগুণ বেশি অন্যায় এর সমালোচনায়। ধার্মিকরা যে ধর্মই বোঝে, মানবতা বোঝে না, এর বহু উদাহরণের দু’টি:- প্রথমত: ১১/০৯/২০০১ থেকে ১১/০৯/২০১৮) পর্যন্ত (১৭ বছরে) ৩৩,৭৮৩টি রক্তাক্ত ধর্ম সন্ত্রাস (যা চলমান ও প্রতিদিনই বাড়ছে)। অর্থাৎ গড়ে প্রতি বছর প্রায় ২,০০০টি, প্রতি মাসে প্রায় ১৬৬টি এবং প্রতিদিন প্রায় ৬টি হামলা। এরপরও ধর্ম কীভাবে এর দায় এড়িয়ে যাচ্ছে বোধগম্য নয়। এমন বেহায়া এ পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি থাকলে দেখান। কারণ ধর্মের আদর্শ, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য কী, কেনো, কারণই বা কী… ইত্যাদি প্রশ্নগুলো যেমন নিজেরা করেন না, তেমনি শিশুর হার্ডডিস্ক থেকে চিরতরে মুছে ফেলা হয়। ফলে অন্য সব বিষয়ে প্রশ্ন ও সন্দেহ থাকলেও, ধর্মবিষয়ে আজীবনের তরে মূক ও বধির। এভাবেই মানুষ চিরজীবনের তরে ধর্মের গোলাম হয়ে যায়। আর এ গোলামি থেকে বের হওয়া যে কতোটা কঠিন, কতোটা বিপজ্জনক, তা ধর্ম পরিত্যাগকারী ছাড়া কেউ বুঝবে না। তবে বের হতে পারলে, আত্মার যে প্রকৃত মুক্তি মেলে, তা কথিত স্বর্গপ্রাপ্তির চেয়েও অনেক বেশি আনন্দদায়ক।

দ্বিতীয়ত: বিধর্মী দূরে থাক, নিজের মিথ্যা অহংকার ও অস্তিত্ব রক্ষায় এরা স্বধর্মীদেরও ছাড়ে না। না হলে, ২৫ বছরে সোয়া কোটি স্বধর্মী খুন! এর কারণ ধর্মের অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো ধর্মযুদ্ধের ইতিহাস। ধর্মের নেশার সাথে যুদ্ধের নেশা ও অহংকারেও মানুষ পূর্ণ হয়ে ওঠে। কারণ ধর্মের ইতিহাসের একটি বড় অংশ জুড়েই রয়েছে যুদ্ধ-দাঙ্গা-দখলবাজির ইতিহাস। ফলে ধর্ম ছাড়াও এরা অতি সামান্য বিষয় নিয়েও যুদ্ধ করতেই যেন ভালোবাসে।

এবার মূল প্রশ্ন- যে দেশে যতোবেশি ধর্মালয় এবং ধর্মকর্ম, সেই দেশের মানুষ কী ততোবেশি সৎ? ধর্মের কারণে কী দেশের মানুষ দ্রুতগতিতে সৎ হচ্ছে? দুর্নীতি, ঘুষ, সংখ্যালঘু নির্যাতন, নাস্তিক হত্যা, ধর্ষণ, ঘৃণা, হিংসা-বিদ্বেষ, রাগ-ক্ষোভ, মিথ্যাচার… এসব কী কমে যাচ্ছে? নাকি এর উল্টাই হচ্ছে? না হলে, জনগণের অর্থে (বিধর্মীদের অর্থসহ) ৫৬০টি ‘মডেল’ মসজিদ তৈরি করা হচ্ছে কেনো? যে দেশের মানুষ ধর্মশিক্ষা করে সৎ হয়, সেদেশে ৫৬০টি নয়, ৫৬০ লক্ষ ধর্মালয় বানালেও খুশি হতাম। প্রয়োজনে ধর্মের গুণগানে রাস্তায় নামতাম। কিন্তু যে দেশে প্রতি পাড়ায় গড়ে ৪/৫টির অধিক ধর্মালয় (সংখ্যালঘু বাদে), সেই দেশে আরো ধর্মালয়ের প্রয়োজনে কোনো? বাস্তবে কী দেখছি! যতো ধর্মালয়, ততো মতভেদ, বিবাদ, ক্ষমতা ও অর্থের লড়াই… নয় কী? কোনো একটি ধর্মালয় আছে কী, যেখানে নোংরা পলিটিক্স নেই? ধর্মালয়, মাজার/দরগা/আশ্রম/দেবালয়… এসব দখলে রাখতে, হাতাহাতি থেকে মামলা-মোকদ্দমাসহ খুনাখুনি কী হচ্ছে না? এছাড়া, ক্ষমতা ও অর্থের লোভে এক ধর্মজীবি অন্য ধর্মজীবিকে হেয় করতে (প্রকাশ্য বা গোপন) যে কুটচাল চালছে, হিংসা-বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, তা কী কারো অজানা? তাহলে কীভাবে ও কেনো আশা করছেন- যতো ধর্মালয়, ততো সৎ মানুষ?

আরো প্রশ্ন- বর্তমানের লক্ষ লক্ষ ধর্মালয়গুলো কী মডেল বা আদর্শের নয়? তাহলে, হাজার হাজার বছর ধরে এগুলো কী- অনাদর্শ, অসততা, প্রলোভন, ঘৃণা, হিংসা, অহংকার, কুশিক্ষা, সন্ত্রাসের… শিক্ষা দিয়ে আসছে? এগুলো সব মানদণ্ডহীন বলেই কী দুর্নীতি কমছে না বরং বাড়ছেই? ‘মডেল মসজিদ’বানালে কী এসব বন্ধ হবে বা কমে যাবে? যদি মডেল মসজিদ বানিয়েও বাঙালিদের সৎ বানাতে ব্যর্থ হন, তাহলে- কী করবেন? আরো নতুন নতুন মহা-মডেল মসজিদ বানাতেই থাকবেন? অধমের মনে হচ্ছে- আপনারা ধর্মকে আদর্শ বানাতে মরিয়া, মানুষকে নয়! মানুষ যেহেতু অভ্যাসের দাস, সেহেতু হাজার হাজার বছরের অভ্যাস ছাড়াতে, হাজার হাজার ‘মডেল মসজিদ’ বানালেও হবে না। কারণ মানুষ যেমন ধর্মে শতভাগ অভ্যস্ত; দুর্নীতিতে তারচেয়ে একটুও কম অভ্যস্ত নয়।

গ্যারান্টি দিয়ে বলছি- ধর্ম পালন করে মানুষ ধার্মিক হতে পারে, সৎ হতে পারে না! যদি হতো, তাহলে ধার্মিকরাষ্ট্রগুলো প্রতিটিই বিশ্বের মডেল হতো! কিন্তু… হায়!!! তাই বলছি- মানুষকে আদর্শবান বানাতে হলে, কোন ধর্মালয়েরই প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষার পরিবর্তন। অর্থাৎ ধর্ম নয়, সর্বপ্রথমেই শিশুকে নৈকিতকতা তথা মানবিক (মানুষের প্রকৃত ধর্ম) শিক্ষা দিতে হবে। জানি, একথা শুনে ধার্মিকদের অন্তরাত্মা কেঁপে উঠছে- ধর্ম গেলো, খেয়ে ফেললো… বলে চিৎকার করছেন! ভাবছেন, গর্দভটা বলে কী? ধর্মের পরিবর্ততে মানবিকতা শিক্ষা! হ্যাঁ, বিস্তারিত ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই, পশ্চিমের দিকে তাকিয়ে দেখুন, ধর্মকে কোথায় নামিয়েছে, আর মানবিকতাকে কোথায় উঠিয়েছে! যে কারণে, মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে গেলেও থানায় কিংবা নির্দিষ্ট স্থান থেকে বেশিরভাগই খুঁজে পাওয়া যায়। আর আমাদের দেশে, হারানো জিনিস ফিরে পাওয়া আর আকাশের চাঁদ পাওয়া একই কথা (ব্যতিক্রম থাকতেই পারে)! এমনকি চোরাকারবারিদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত/জব্দকৃত মালামাল, খাদ্যগুদাম থেকে খাদ্য, কয়লা, ব্যাংক থেকে অর্থ এবং স্বর্ণও গায়েব চলছেই। যদি আরো প্রমাণ চান, তাহলে তাদের দেশের পরিসংখ্যান দেখুন, কতো পার্সেন্ট ধার্মিক এবং কতো পার্সেন্ট সৎ। আর আমরা ধার্মিকতায় প্রায় শতভাগ হলেও কতো পার্সেন্ট সৎ, নির্লোভ ইত্যাদি।

দয়া করে বুঝতে চেষ্টা করুন, নাগরিকদেরকে আদর্শবান বানানোর জন্য ধর্মের উপর এতো অন্ধ এবং অকুণ্ঠ সমর্থন ও নির্ভরতা থাকা সত্ত্বেও দুর্নীতি কোনো আলোর গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে? কেনো শত-সহস্র বছর ধরে, আদর্শ মানুষ সৃষ্টিতে ধর্মের চরম ব্যর্থতা ও কার্যকরহীনতা? অতএব, আদর্শ মানুষ তৈরিতে ধর্ম যে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ, তা স্বীকার করাই অতীব মঙ্গলজনক। যা পশ্চিমারা বহু বছর পূর্বেই বুঝেছিলো কিন্তু ধার্মিক রাষ্ট্রগুলো আজে বুঝছে না, যা আপনাদের প্রচেষ্টায় ও কর্মকাণ্ডেই প্রমাণিত! না হলে- সর্বগ্রাসী দুর্নীতির এই দেশে, বাসগৃহের আশেপাশে, যত্রতত্র, এতো ধর্মালয় ও ধর্মশিক্ষার স্কুল-কলেজ… থাকতে কেউ কী আরো ধর্মালয় গড়ে? দেশের এক ইঞ্চি জায়গাও কী বাকি আছে যেখানে ধর্মের প্রচার/সাইবোর্ড/ব্যনার… বিশেষ করে ধর্মীয় বাণী শোনা যায় না? অতএব আর ধর্মালয় নয়, চাই মানবালয় (মানবিক শিক্ষাকেন্দ্র)। কারণ ধর্মের জাতপাত, বিভেদ, ঘৃণা, হিংসা, বৈষম্য… পূর্বেও ছিলো, আজো আছে, চিরদিনই থাকবে… মানবতায় ওসব নেই। ধর্মে যে নীতি-নৈতিকতা একেবারে নেই, তা বলছি না। কিন্তু ওসব তলানিতে পড়ে থাকে। সমাজে এর তেমন প্রয়োগ নেই। বিশেষ করে ধর্মজীবিদের বিচার-সালিশী করার অধিকার এখন আর তেমন নেই। এর কারণও ধর্মজীবিদের প্রতি সাধারণদের অনাস্থা। কারণ তারা যা করে প্রায়ই তা পক্ষপাতদুষ্ট, নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই করে। এছাড়া, ধর্মজীবিরা কতো পার্সেন্ট সৎ সেটাও দেখার বিষয়। অধমের মনে হয় ধর্ম ব্যবসার সাথে যুক্তদের মধ্যে ১%ও সৎ আছে কিনা সন্দেহ।

যাহোক, প্রবাদ আছে, “যার হয়, তার নয়তেই (৯) হয়, যার হয় না তার নিরাব্বইতেও (৯৯) হয় না।” এ অধম মনে করে, শত-সহস্র বা কোটিতেও হয় না। তাই বলছি, কোটি কোটি ধর্ম প্রতিষ্ঠান তৈরি করলেও মানুষ সৎ হবে না, হতে পারে না, হলে যা আছে তাতেই হতো। এর প্রমাণ কী সর্বত্রই অত্যন্ত স্পষ্টভাবেই দেখা যাচ্ছে না? কোথায় মানুষের সততা! তাছাড়া মানুষকে সৎ বানাতে ধর্মালয় নয়, প্রয়োজন- কঠিন ও কঠোর আইন প্রয়োগ বিশেষ করে স্বচ্ছ বিচার ব্যবস্থা ও কঠিন শাস্তি প্রয়োগ করা। অর্থাৎ ধর্ম বিস্তারে কোনো লাভ নেই, যদি বিচার ব্যবস্থা তথা বিচারক এবং তদন্তকারীরা পাথরের ন্যায় কঠিন সৎ না থাকে। এর প্রমাণ উন্নত বিশ্বের বহু দেশ। যারা কয়েদির অভাবে কারাগার বন্ধ করে দিচ্ছে, আমরা বাড়াচ্ছি। অথচ তাদের সন্তানেরা স্কুলে, কলেজে, পথেঘাটে ধর্ম শিক্ষা পায় না, পায় নৈতিক শিক্ষা আর আমরা পাই ধর্মশিক্ষা! এ দুই শিক্ষার তফাৎ বোধহয় বুদ্ধিমান এ জাতি, আমি মূর্খের চেয়ে কম বোঝেন না। কিন্তু হায়! তবু তালগাছটাই চাই!

কবিগুরুর কথা দিয়েই শেষ করছি:-

“…আমরা যে আগাটায় জল ঢালিতেছি, তাহার গোড়া নাই, নানাবিধ অনুষ্ঠান করিতেছি কিন্তু তাহার মূলে সত্য নাই, এইজন্য ফললাভ হইতেছে না। …আমরা জানি শাস্ত্রেও মিথ্যা আছে, চিরন্তন প্রথার মধ্যেও মিথ্যা আছে, …অনেক সময়ে আমাদের হিতৈষী আত্মীয়েরা মিথ্যাকেই আমাদের যথার্থ হিতজ্ঞান করিয়া জ্ঞানত বা অজ্ঞানত আমাদিগকে মিথ্যা উপদেশ দিয়া থাকেন। ….মন্দ মনে করিয়া ভালোকে দূর করিয়া দিলে দেশের বিশেষ উপকার হয় না, …গোরা ডাকিয়া সিপাই তাড়াইলে, এখন গোরার উৎপাতে দেশছাড়া হইতে হয়! …সত্য সকলের গোড়ায় এবং সত্য সকলের শেষে, আরম্ভে সত্যবীজ রোপণ করিলে শেষে সত্যফল পাওয়া যায়; মিথ্যায় যাহার আরম্ভ মিথ্যায় তাহার শেষ।”

অতএব কবিগুরুর বক্তব্যের মর্মার্থ অনুধাবন করে- ধর্ম নয়, সর্বাগ্রে শিশুর খালি হার্ডডিস্কে সত্যবীজ (মানবধর্ম) রোপণ করাই হোক প্রতিটি মানুষের অঙ্গীকার! নতুবা ধর্মালয় বৃদ্ধিই পেলেও প্রকৃত মানুষ মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজতে হবে!!! কারণ ধর্মের আরম্ভ মিথ্যায়, শেষও মিথ্যায়…! ফলে শিশুকালেই যার হার্ডডিস্ক মিথ্যা দিয়ে ঠাসা হয়, সে আর কোনোদিনও “সত্যের সন্ধান” করে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৪০
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×