somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাঙালি মুসলমান-শূন্য করার নীল নকশা

১৯ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



: পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাঙালি মুসলমান-শূন্য করার এক হীন ও জঘন্য ষড়যন্ত্রের নীলনকশা বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলেছে। এহেন ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে তৎপর রয়েছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক একটি সুসংঘবদ্ধ গোষ্ঠী। তাদের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের এক-দশমাংশ অবিচ্ছেদ্য ভূখ- এই পার্বত্য জনপদের সকল অ-উপজাতি তথা ৮ লাখেরও বেশি বাঙালি মুসলমান বাসিন্দাদের সমূলে উচ্ছেদ করা এবং সেখানে বিস্তীর্ণ এক অঞ্চলকে নিয়ে ‘অভিন্ন খ্রিস্টান প্রদেশ’ গড়ে তোলা। সেই নীল নকশার আওতায় তিনটি পার্বত্য জেলা তথা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে বসবাসরত বাঙালিদের ভূমি, ভোট ও ভাতের অধিকার কেড়ে নেয়ার জন্য পুনরায় অপতৎপরতা শুরু হয়েছে নতুন কায়দায়। এর সর্বশেষ সংযোজন হচ্ছে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০১৩’ সংশোধনী প্রস্তাব।
এই আইনটি পাস ও তা যদি কার্যকর করা হয় তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রকৃত আদিবাসী বা ভূমিপুত্র বাঙালি নাগরিকরা ভূমিস্বত্ব, বাসস্থান, জানমালের নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, জীবন-জীবিকাসহ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে অন্যায়ভাবে বঞ্চিত হবে শুধু তাই নয়; সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রাম জুড়ে ফের অশান্তির দাবানল জ্বলে উঠবে। সংবিধানের সাথে বিরোধপূর্ণ বা সাংঘর্ষিক এই ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০১৩ বাঙালি-উপজাতি সম্প্রীতি, নিরাপত্তা এমনকি দেশের সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে তুলবে।
দেশের অখ- পার্বত্য জনপদে বাঙালিরা এমনিতেই দীর্ঘদিন যাবৎ অঘোষিতভাবে ‘দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক’ হিসেবে কোনমতে টিকে আছেন। বর্তমান সময়ে আরও অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছেন তারা কার্যত ‘তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে’ বসবাস করছেন। ভূমিস্বত্ব, খাবারের সংস্থান, জানমালের নিরাপত্তা, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, চাকরি, ব্যবসাসহ কর্মসংস্থানের মতো মৌলিক মানবাধিকার থেকে বাঙালিরা একচেটিয়াভাবেই বঞ্চিত রয়েছেন।
গোটা পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি মুসলমানরা নিজদেশে পরবাসীর মতো এক দুঃসহ জীবনযাপন করছেন। নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত প্রত্যন্ত ও দুর্গম পার্বত্য এলাকায় গুচ্ছগ্রামগুলোর বাসিন্দাসহ ‘অভ্যন্তরীণ শরণার্থী’ বা ‘অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু’ হিসেবে বিবেচিত প্রায় ১ লাখ বাঙালি সপরিবারে দীর্ঘদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের দুঃখ-দুর্দশা দেখারও কেউই নেই। পার্বত্যাঞ্চলের সাধারণ বাসিন্দাদের মাঝেও জীবন-জীবিকার তেমন কোন অবলম্বন নেই অনেকেরই মাঝে।
জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফ ছাড়াও বিভিন্ন অবৈধ সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনীর চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, অত্যাচার-নিপীড়নে প্রতিনিয়তই বাঙালিদের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ অবস্থায় কাটছে।
অপরদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ১১টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপজাতীয় গোষ্ঠী বিশেষ করে সংখ্যাধিক্যে ও অনেকেই অপরিমেয় জৌলুসপূর্ণ জীবনযাত্রায় থাকা চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা উপজাতীয় গোষ্ঠীর যে কেউ চাইলেই রাজধানী ঢাকার গুলশান, বারিধারা, উত্তরা, বনানী, ধানমন্ডি, বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামের খুলশী, নাসিরাবাদ, পাঁচলাইশে জমি, প্লট, ফ্ল্যাট, এপার্টমেন্ট ইত্যাদির মালিক হতে পারছেন অনায়াসেই। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায়ও অনেক উপজাতি নাগরিক স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। অথচ কোন অউপজাতি তথা বাঙালি মুসলমান পার্বত্য চট্টগ্রামের কোথাও জমি কিনতে কিংবা বসতি স্থাপন করতে পারছেন না।
পার্বত্য চট্টগ্রামের যে কোন উপজাতীয় নাগরিকের জন্য নিম্নশিক্ষা থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষার সকল স্তরে বিশেষ উপজাতীয় কোটার মাধ্যমে পর্যাপ্ত আসন বরাদ্দ রয়েছে। সেই সুবাদে বর্তমানে চাকমা উপজাতির মাঝে শিক্ষার হার শতকরা প্রায় ৮৫ ভাগ। অন্যান্য উপজাতির মাঝেও শিক্ষার হার সমতলের বাঙালি জনগোষ্ঠীর তুলনায় অনেক বেশি রয়েছে। অথচ বাঙালি মুসলমানদের জন্য শিক্ষার কোন ধরণের বিশেষ সুযোগই রাখা হয়নি। পার্বত্য জনপদে বাঙালি শিক্ষিতের হার প্রতিনিয়তই কমছে, যা বর্তমানে ২০ শতাংশেরও নিচে।
তাছাড়া সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও বিশেষ উপজাতি কোটায় চাকরি লাভের সুযোগ রাখা হয়েছে অবারিত। এতে করে চাকরিতে যথেষ্ট হারে উপজাতি গোষ্ঠীর লোক সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু বাঙালি মুসলমান নাগরিকরা এক্ষেত্রে সকল সুযোগ থেকে বঞ্চিত। শিক্ষিত এমনকি উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে সাধারণ বাঙালিদের মাঝে।
চাকরি শুধু নয়; পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিরা ক্ষুদ্র ব্যবসা-বাণিজ্য, ঠিকাদারি, কৃষি-খামার, পোলট্রি থেকে শুরু করে কর্ণফুলী হ্রদে মাছ শিকারের মতো যে কোন পেশা নিয়েও জীবনধারণ করতে পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কেননা এ ধরনের যে কোন কাজে নিয়োজিত থাকতে গিয়ে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদেরকে মোটা অংকের চাঁদা বা ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। জনসংহতি সমিতি, ইউপিডিএফ এবং আরও বিভিন্ন সশস্ত্র উপজাতি গোষ্ঠীর লোকজনকে তাদের চাঁদার দাবি মেটাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন বাঙালি নাগরিকরা। পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের জীবনধারণ করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। আবার চাঁদার দাবি না মেটালে যে কোন সময়ই জীবননাশের হুমকি নেমে আসে।
এদিকে বর্তমান মুহূর্তে পার্বত্য জনপদের সার্বিক পরিস্থিতিকে আরও মারাত্মক জটিলতার দিকে ধাবিত করছে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০১৩’ সংশোধনী প্রস্তাবকে ঘিরে। এই আইনের সংশোধনীটি সংসদে পাস ও তা কার্যকর করা হলে এর মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চল থেকে বাঙালি মুসলমানদের বিতাড়নের পথই সুগম হবে বলে মনে করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম সংশ্লিষ্ট ও অভিজ্ঞ মহল।
সুত্র
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×