somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যেমন ছিলো ২০১৩-আমার গল্প (একম কিস্তি!)

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০১৩ একটা অদ্ভুত বছর গ্যালো লাইফের...
দেখি লেখার চেষ্টা করে কেমন ছিলো! মাস ওয়ারী লিখতে বইসা গেলাম।
জানুয়ারীঃ
বছরটা শুরু হয়েছিলো ৩১ তম বিসিএস এ কোন একটা পোস্টে চাকরীর খবরের রেশ দিয়ে। ১৫ জানুয়ারি ছিলো জয়েনিং। বাবার ত্রৈমাসিক কনফারেন্সের জন্য ঢাকায় আসার কথা। তার সাথে ৯ তারিখ ই চলে এলাম। কিছু কাজ থাকে জয়েনিং সংক্রান্ত চিঠি ফিঠি। স্টাপ পেপারে দাস্খত দাও যৌতুক নিবানা! দিলাম বহু কষ্টে :P
১৫ তারিখ জয়েন করলাম আমাদের মন্ত্রনালয়ে। মন্ত্রী এলেন, যথেষ্ট ইন্সাল্ট করলেন। ক্ষেপে গেলাম ভিতরে। থাক সে সব ক্ষোভ। প্লে কুললি এই চিন্তা মাথায় ছিলো। সরকারী চাকরীতে আসলে কি হয় নিজের চোখে দেখতে চাইতাম। খাইদাই হলো। পরের দিন ডিপার্ট্মেন্ট ওরিয়েন্টেশান। এরমধ্যে পুশটিং এর জন্য পুলাপাইনের দৌড়ঝাঁপ। চুপচাপ আছি। আমি চাইলাম খুলনা। এমনেই পাইতাম। ঐ ধইঞ্চা জাগায় কেউ যাইতেও চাইতো না। তারপরও এক স্যার আমাকে আগেই জানাইলেন অমুক কি হন তোমার? পাইছো পুশটিং ;)

আমি খুশি। বাপ মার কাছে থাকতারমু বইল্যা।
পরেরদিন থেকে হরতাল ছিলো মে বি। হাত পা কাপাকাপি অবস্থা। আমি খুব পুড়ে মরার ভয় পাই। এর চে কষ্ট পেয়ে মরার মত আর কিছু নাই। মরার পড় পুড়া নিয়ে তেমন টেনশন নেই নি জীবনে। কিন্তু মরার আগেই পুড়লে কেম্নে কি???
গেলাম অফিস। পুশটিং হয়া গেলো ১৭ জানুয়ারী। ২১ এর ভিত্রে জয়েন ফরমাইতে হবে। আমি একটা শুক্কুরবার পেয়ে খুব খুশি। বুঝতেসিলাম যা হচ্ছে তা জীবনে একবারের জন্য হচ্ছে। আমি নীরাফুন ইষ্টীফুন ওরুফুন হাসান বাইয়া মিলে কলকাতা কাচ্চি ঘর কাইত কইরা আইলাম। ফিরার পালা। ফিরলাম।
ফেরার আনন্দই আলাদা।

খুলনার লোকাল অফিসে গেলাম। অফিস সহকারী ওরফে ঐ অফিসের ন্যাতার কাছে কাচুমাচু করে পরিচয় দিলাম। বসতে দিলো একটা বিরাট ঘরে। ওই ঘরটা যে তারা গেস করে খুলে দিলেন ক মাস পরে সত্যই ঐ ঘরে আমি বস্তে পেরেছিলাম।
আরেক কলিগ ততক্ষণে এসে জয়েন করে বসেও পড়েছেন। সেখানকার স্টাফ অফিসার আবার ব্যাপক লুইব্দে, এস্টিমেট চালাইতেই তার খাই খাই। আমাকে বসানোয় সবাই বেশ খুশি। আমিও খুশি কাজ কাম নাই, স্যার যতক্ষণ আমিও ততক্ষণ। কোথাও যাওয়া নেই, কাজ শেখাও নেই, একটা কম্পিউটার দিলো আমি তাতে বসে সারাদিন নারী পুরুষ নির্বিশেষে লুলাইতে থাকলাম।
ফেব্রুয়ারীঃ
এক্সেন স্যার যথেষ্ট কড়া, মেজাজ সবসময় চরমে থাকে তার, জান পেহচানে জানতে পেলুম তার বড় পুত্র আমার এন্ডিসি ব্যাচমেট, বিসিএস ব্যাচমেট ও বটান! পরে জানলুম স্যারের ডায়বেটিস চরমে, তার ই গরমে মেজাজ তাপমানে পরমে! ফেব্রুয়ারী! ভালোবাসার মাস, ফেব্রুয়ারী বই মেলার মাস! আবার ডিপার্মেন্টাল নির্বাচনের মাস! মিষ্টি মিষ্টি কথা দিয়ে আহা সে ফোন আর এস এম এস। ভুট দিলাম। ওহ একগুইন কথা এর মধ্যে দেখি চিফ স্যার বদল! ল্যাং খেয়েছেন! আহারে... কি দেশ আমার!
ভাইয়ের বিয়ের দিন ধার্য হলো, ছুটি নিলাম একদিন। ছুটির দরখাস্ত লিখতে ৪/৫ পাতা নষ্ট কইরালাইলাম। সে এক বিগাড় ইতিহাস :P
ভাইয়ের বিয়েতে আত্মীয় রা আসলো। আমি প্রতিদিন সময় করে নিরালার পিছন্টায় চলে যেতাম, খেতের পাশে শাপলা, আহা কতদিন দেখবো আর ব্যাঙ্গাচিগুলো... কবে ওরা ব্যাং সব!
ডিএসএলআর টা সার্থক হলো, ধুমিয়ে আনন্দ করলাম। বাপ্পা ছাড়া স্কুল বন্ধুদের কে পেলাম না, সেই দুঃখ ভুলিয়ে দিলো ঢাকা থেকে রাজীব আর সোহান এসে। ওদিকে ব্লগার রাজীব খুন হলো বিয়ের দিন ই। বিগাড়! বৌভাতে কালো ব্যাজ লাগিয়ে খাইদাই করলাম। ভাবী সিরাম পছন্দ হলু... শি ইজ উইট্টি ইন্ডিড :D
ফেব্রুয়ারী! কাদের মুল্লার ফাঁসির দাবীতে উত্তাল শাবাগের নাস্তিক রা :P
যেতেই হবে এত আবেগ নেই... কিন্তু না গেলে মিস... ঢাকায় ট্রেনিং এ গিয়ে লাফিয়ে গেলাম শাবাগে... তখনো ফুরিয়ে যায় নি সব... ভালো লাগলো খুব।
মার্চঃ
টেরেননিং এর কাজে ঢাকা! শাবাগ যেতেই হবে এত আবেগ নেই... কিন্তু না গেলে মিস... তাই লাফিয়ে গেলাম শাবাগে... তখনো ফুরিয়ে যায় নি সব... ভালো লাগলো খুব। এসে পড়লাম হরতালে, হরতালে রিশকা নিয়ে সংসদ ভবনের ভিতরে ঢুকে পড়লাম ঘুরে ঘুরে দেখলাম আমি সেইরকম সুরঞ্জিতের শুয়োরের খোয়াড় টাকে :P প্রধান্মন্ত্রীর সিট, খালেদার সিট আহাহা! :P
সেইরকম আর্কিটেকচারাল পেলান, ২৩ দীপন তীব্রতার বাতি, সিম্পল জিওমেট্রির খ্যালা দেখে টেখে শেষে উঠলাম ছাদে, তারপর ক্যাফেটেরিয়া তে।
ট্রেনিং এর প্রথম দিন বুফে ছিলো ভালো! নাসির ভাই কে কিভআবে ভুলি ম্যান!!??
কলিগের সাথে এসেছিলাম ট্রেনিং এ। অত্যন্ত ভালো মানুষ। আমার চারপাশে আজীবন ভালো মানুষ দেখেছি আমি, উন্নত মানুষ দেখেছি আমার চে।

ট্রেনিং থেকে অগাধ জ্ঞান লাভ করে সেটা ঝাড়া জরুলি বোধ করলাম। এইটা বিরাট ভুল বের করলাম, স্যার প্রশংসা করলেন, কইলেন এইত টেরেনিং জরুলি এই জন্যেই, পরে আপদ এড়াতে বললেন চেপে যাও :p অডিট খাবে সবাই :/ চেপে গেলাম :P উনি ছিলেন অঃদাঃ খামাখা ঝামেলা কে নেয়?? চাকরীর শেষ বয়সে :p
ফিরে এসে চেগায়া থাকতাম খাটে, একদিন তো আধাঘণ্টার ভাতঘুম ও দিয়ে দিলাম... আহা কি দিন ছিলো!
এপ্রিলঃ
যেহেতু চোর বাটপারদের আয়ের উৎস এই সব সরকারী কাজ, তাই খালি হাতেই আমাদের এদেরকে ট্যাকল করতে হয়।
একদিন লাইফের প্রথম ঝাড়ির আলামত পেয়ে আমার কলিগ সাহেব অস্থির হয়ে গেলেন, থাকবেন না ডিসিশন নিলেন। আমাদের আবার তখন চাকরীর ম্যালা বয়স! সমানে এসডিই হয়ে যাচ্ছে ঢাকার বাইরে যারা আছি, বদলী হচ্ছে অটো, সেই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে কলিগ কেটে পড়লেন মানে মানে। নিজেদের এলাকায়। এর মধ্যে রানাপ্লাজার ঘটনায় প্রশাসনের টনক জিনিস টা শুনতে পেলাম নড়ে উঠেছে, সাবেক মেয়র খালেক সাব মিটিং ডাকলেন, পুরেন বিল্ডিং এর কাগজ জোগাড় করে এক্সেন আর সিনিয়র এসডিই এর সাথে ফুলবাবু সেজে গেলাম। খুব থ্রেট ট্রেট খাইলাম, আর খাইলাম ফাইন শেণ্ডুইচ... আর আর চা!
যতবার মিটীং এটেন্ড করেছি এই বিনুদুন ছিলোই! আমি মোটে বাড়িয়ে ধরে সাড়ে সাব্বিশ। আর উনারা শ্বসুর কিম্বা নানা দাদার বয়সীরা যেভাবে হামলে পড়ে চা সিংগারা খান তা দ্যাখার মত!
ছোট মিটীং এ বেশি বিনুদুন, আমাদের খুব খাতেমদারী করে মিটীং করে বেরোতেই ডিসি সাহেবের পিয়ন আর্দালী এসে নাশ্তার বখশিস দাবি করে বসলো! আমি লাইফে এত চোতনা আর বনিনাই! :D
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×