somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাধীন রাষ্ট্র থাকার পরও বাঙালি মুসলমান আজও কেন বারোবণিতা ভিত্তিক কলকাতার হিন্দু সংস্কৃতির মুখাপেক্ষী হয়ে রয়েছে?

২৪ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ৮:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হিন্দু সম্প্রদায় নিয়ে একটি মোহ কাজ করে প্রচলিত শিক্ষায় শিক্ষিত মুসলমানদের মধ্যে, হিন্দু সাহিত্যিকদের লেখালেখি পাঠ করার কারণে তারা হিন্দু সংস্কৃতির প্রতি আসক্তি বোধ করে। কলকাতার সংস্কৃতি ধারণের আগে স্বাভাবিকভাবেই তাদের উচিত ছিল সেসব সংস্কৃতির উৎসমূল সম্পর্কে তাহক্বীক করা। কিন্তু হুজুগে আমলোক ভালোমন্দ চিন্তাফিকির না করেই সবকিছুর অনুকরণ করে।
শুনতে খারাপ শোনালেও, বর্তমানে কলকাতা ভিত্তিক যে গান, নাটক, সিনেমা নিয়ে আমাদের কথিত সুশীল সমাজ বড়াই করে, তার প্রাথমিক রূপ দিয়েছিল কলকাতার বারোবণিতারা। তারাই বর্তমানে প্রচলিত বাংলা গান, থিয়েটার ও সিনেমাশিল্পের জন্মদাতা। ব্রাহ্ম পরিবারে বড় হওয়া প্রাবন্ধিক নীরদ সি চৌধুরীর ‘আত্মঘাতী বাঙালী’ নামক গ্রন্থে তার নিজের প্রসঙ্গে রয়েছে, “আমি সারা জীবনেও দেশে কোনো থিয়েটার দেখি নাই। আমার বাল্যকালে অভিনেত্রীরা বেশ্যা বলিয়া থিয়েটারের প্রতি ব্রাহ্মপন্থীদের ঘোর আপত্তি ছিল।” আর চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায় বলেছে, “আগে সিনেমার নায়িকার জন্য বেশ্যাদের নিকট ধর্ণা দিতে হতো, আর এখন ভার্সিটি পড়–য়া ভদ্রঘরের মেয়েরাই নিজে আগ্রহী হয়ে সিনেমায় অভিনয় করতে আসে।”
এছাড়াও তৎকালীন সময়ের কলের গানের গায়িকারা সবাই ছিল গণিকাপাড়া থেকে আগত। সুকুমারী দত্ত, নটী বিনোদিনী, গওহরজান, ইন্দুবালা, আঙ্গুরবালা, কমলা ঝরিয়া বা এদের মতো প্রাথমিক যুগের বাংলা গানের গায়িকারা সবাই ছিল বাস্তবজীবনে পেশাদার গণিকা। এদের পৃষ্ঠপোষকতা করতো কলকাতার হিন্দু সমাজ। উপরোক্ত নীরদ সি চৌধুরী তার আরেকটি গ্রন্থ ‘বাঙালী জীবনে রমণী’-তে বন্যাদুর্গতদের সাহায্য করার নামে কলকাতার গণিকাদের দ্বারা প্রকাশ্য রাস্তায় হারমোনিয়াম নিয়ে গান গেয়ে মিছিল করে চাঁদা তোলার ঘটনা উল্লেখ করেছে। এতেই বোঝা যায় কলকাতায় পতিতাদের সমাজ ও আম হিন্দুসমাজ, দুটোই এক ও অভিন্ন।
তৎকালীন সময়ের ন্যায় বর্তমান সময়েও কলকাতায় বারোবণিতাভিত্তিক সংস্কৃতি বিদ্যমান রয়েছে। বইমেলা, বাণিজ্যমেলার মতো কলকাতায় পতিতাদের মেলাও বসে। (নাউযুবিল্লাহ!) অনলাইন বার্তা সংস্থা বাংলামেইল২৪-এর সংবাদ অনুযায়ী, কলকাতার ট্রায়াঙ্গুলার পার্ক চত্বরে বসে এই মেলা। উক্ত মেলায় আমন্ত্রণ জানানো হয় পতিতাদের এবং তার সাথে তাদের খদ্দেরদেরকেও। এই বছরে ভারতের ১৬টি রাজ্যসহ বিশ্বের ৪৩টি দেশের বারোবণিতারা সেখানে অংশ নিয়েছে।
কলকাতাভিত্তিক সংস্কৃতির প্রতি মুসলমান ঘরের সন্তানদের মোহের সৃষ্টি হয়েছে প্রচলিত বাংলা সাহিত্যের হিন্দুয়ানী বর্ণনার দ্বারা। ব্রিটিশ আমলে সৃষ্ট এসব হিন্দুয়ানী সাহিত্যের গতিধারা পাল্টে তাকে ইসলামী রূপ দেয়ার জন্য যে অর্থ ও পৃষ্ঠপোষকতা দরকার, তা বাঙালি মুসলমান সহজেই নিশ্চিত করতে পারে তাদের স্বাধীন রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে। কিন্তু সেজন্য যে সঠিক নেতৃত্বের প্রয়োজন তা বাঙালি মুসলমান এখনো নিশ্চিত করতে পারছে না। কারণ তারা যামানার ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে এখনো চিনতে পারেনি।
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×