বইপ্রকাশের ক্ষেত্রে লেখকদেরও একটি সংগঠন থাকা জরুরি
জুলফিকার শাহাদাৎ
প্রতিবছর বইমেলায় হাজার-হাজার বই প্রকাশ হয়।লক্ষ-লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়।মেলা শেষে সবার মুখে হাসি থাকে।কারণ সবার হাতে তখন টাটকা টাকা। মেলাশেষে শুধুমাত্র লেখক খালি হাতে মেলা থেকে ফিরে আসে।এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া জরুরি।
... বইমেলায় হাতেগোনা গুটিকয়েক লেখক তাঁদের লেখার রাজস্ব পায়। সিংহভাগ লেখকই কিছুই পায় না।তাঁদের শ্রম,মেধা থাকে উপেক্ষিত।তাঁরা নানা শর্তে প্রকাশকদের কাছ থেকে বই করে।কেউ নগদ মূল্যে,কেউ নির্দিষ্ট সংখ্যক বইকেনার শর্তে রাজি হয়ে।আর এসকল লেখকই আবার নিজেদের বইয়ের বিজ্ঞাপক,বিপননকারী,প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ বিক্রেতা।
লেখক তাঁর বইটির বিক্রি বাড়াতে,বিজ্ঞাপিত করতে ঘাটের টাকা খরচ করে মেলায় যান।আর মেলাশেষে খালি হাতে ফিরে আসেন।
আরো দুঃখজনক ব্যাপার এই যে, লেখককে প্রতিনিয়ত পোহাতে হয় নানা ভোগান্তি।নির্দিষ্ট সময়ে বই না আসা,প্রতারণার শিকার হওয়া,বই না পাওয়াসহ নানা ধরনের ভোগান্তি তাঁকে মেনে নিতে হয়।যে প্রকাশকের দু'লাইন শুদ্ধ বাংলা লেখার ক্ষমতা নেই তাঁর কাছ থেকে শুনতে হয় নানা হিতোপদেশ।
আর বইমেলা শুরু হলে লেখক তাঁর টিকিও আর খুঁজে পান না।তখন প্রকাশকের মোবাইল বন্ধ থাকবে অথবা অজস্র মিথ্যা কথার খৈ ফোটাবেন তিনি।কারণ আপনার টাকায়,শ্রমে ঘামে বই ছাপিয়ে তিনি তখন বিরাট প্রকাশক।মুনাফা ও মূলধন দুটোই তাঁর হাতে।মিডিয়ায় তাঁর প্রকাশনার কত ফিরিস্তি ।নিজেও মিডিয়ার সা্মনে,পেছনে মুখ দেখিয়ে কত বাহবা নেন।আর লেখকও চেপে যান টাকা দিয়ে বই করার বুকের কষ্টগুলো।কারণ ,নইলে যে তাঁর লেখককৃতির বেলুন ফুটো হয়ে যায়! এই হল নির্মমতা।দু' একজন ব্যতিক্রমধর্মী প্রকাশককে বাদ দিলে সব প্রকাশকের ক্ষেত্রে একই সত্য।
এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য লেখকদের সংঘটিত হওয়া প্রয়োজন।নিজেদের টাকা,শ্রম ও ঘামে এত কষ্ট করে বই করার দরকার কি?নিজেরাই বই প্রকাশ করি।নিজেরাই বিজ্ঞাপন করি।নিজেরাই নিজেদের শ্রমের মূল্য নিই।তাই আগামী মার্চ থেকে আমি একটি সমবায়ভিত্তিক প্রকাশনা করার উদ্যোগ নিচ্ছি।সমবায়ভিত্তিক এ প্রকাশনা গড়ে উঠবে।ইতিমধ্যে নিবন্ধনের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এ প্রকাশনা শুধুমাত্র লেখকদের।মালিকানাও তাঁদের।নিজেদের বইয়ের যাবতীয় হিসাব লেখকেরা এ প্রকাশনা থেকে পাবেন।একটি চুক্তিপত্র সম্পাদনের মাধ্যমে এ প্রকাশনার শেয়ারহোল্ডার হওয়া যাবে।আগ্রহীরা আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।