somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুদ্ধ আর মানসাঙ্কের গল্প

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




মনিকাদি আমার চেয়ে বছর তিনেকের বড় ছিলেন বলে তাকে তুই বা তুমি করে বলার অধিকার পাইনি। প্রতিদিন দুপুরের খাওয়ার আগে তাদের দোতলা কাঠের বাড়িটির পেছন দিককার লিচু বাগানে আমাদের একটি প্রিয় খেলা ছিল- গাছের উঁচু ডালে মোটা দড়ি বেঁধে তাতে কাঠের পিড়ি দিয়ে দোলনা বানিয়ে দোল খাওয়া। খেলাটা মজার হলেও দড়ি বাঁধা বা পেছন দিক থেকে মনিকাদির পিঠে আলতো করে ঠেলে দিতে হতো আমাকেই। দোলনাটা বেশিরভাগ তার দখলে থাকতো বলে বা এইসব দড়ি বাঁধা, গাছে চড়া আর চরম বিরক্তি নিয়ে তাকে দোলানো আমার জন্য তেমন একটা পছন্দনীয় বা আনন্দদায়ক না হলেও জ্বর মুখে বিস্বাদ ওষুধ গিলবার মতই নীরবে অনেক কিছুই মেনে নিতাম। যেমন, হালকা-পলকা আর দুর্বল দেহের আমাকে কেউ তাদের সঙ্গে খেলতে ডাকতো না বলে নির্বান্ধব দিনগুলোকেই মেনে নিয়েছিলাম। আর এভাবেই আমার দিনগুলো কেটে যাচ্ছিল ঝড়ের তীব্রতায়।

মনিকাদির সঙ্গে মাঝে মধ্যে ঝগড়া হয়ে গেলে তা নিয়ে কিছুদিন বেশ কষ্টে কাটাতে হতো আমাকে। মনে হতো এত বড় একটি গ্রাম, যেখানে আমি ছাড়া যেন কেউ আর নেই। দূর থেকে আমাকে দেখলে মুখ ফিরিয়ে নিতেন তিনি। কিন্তু বেশিদিন পারতেন না চুপ থাকতে। কোনো কোনো বার আমাকে জাপটে ধরে মাটিতে ফেলে দিয়ে বুকের ওপর চেপে বসতেন। গলা টিপে ধরে বলতেন, কথা বলিস না কেন?

বলতাম, তুই তো বলিস না।

-আমি তোর বড়, কেন আগে কথা বলব?

বিপরীত প্রক্রিয়ায় ফের ঝগড়া দিয়ে আমাদের মাঝে ভাব হয়ে যেতো। কিন্তু দিনে দিনে যে মনিকাদি বড় হয়ে যাচ্ছেন, আমার কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন সেটা বুঝতে বেশ কিছুটা সময় লেগেছিল। এর পেছনে তাদের সংস্কার বা তার ঠাকুরদার কোনো প্রভাব থাকতে পারে বলেই আমার মনে হচ্ছিল। একটি ঘটনার ভেতর দিয়ে ব্যাপারটি আমার চোখে ধরা পড়েছিল খুব মোটা দাগে।


সেবার তাদের পুকুরটার সব পানি সেঁচে তুলে ফেলার পর আমরা কাদা পানিতে নেমে বিপুলাকার ভারি বোঝার মতো পা দুটো টেনে টেনে কাদার ভেতর দুহাত ডুবিয়ে দিয়ে মাছ ধরতে চেষ্টা করছিলাম। মনিকাদি এক একটি মাছ ধরেন আর খুশিতে চিৎকার করে ওঠেন। সে তুলনায় আমি কিছুই পাচ্ছিলাম না। মাছ খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ কাদার ভেতর দু’হাত ডুবিয়ে একটি শোল বা বড় আকৃতির টাকি মাছ চেপে ধরে মনে হচ্ছিল একা একা মাছটাকে তুলতে পারবো না। তাই মনিকাদিকে ডেকে বলেছিলাম, মনি, তুইও এসে ধর! বড় মাছ পেয়েছি!

সে সময় মনিকাদির ঠাকুরদা পুকুর পাড়ে বসে বসে কিছু একটা করছিলেন হয়তো। আমার চিৎকার শুনে মনিকাদিকে উদ্দেশ্য করে বলে তিনি উঠেছিলেন, মনি, মুসলমানের বাচ্চাটা তোকে তুই করে বলছে আর হা করে তা শুনছিস?

-ওর মুখ আমি বন্ধ করবো কী দিয়ে?

বুড়োটা হঠাৎ বলে উঠল, আরে, দুটো থাপ্পড় কষিয়ে দে, নয়তো মুখে কাদা গুঁজে দে!

মনিকাদি আমার দিকে এগিয়ে আসতে থাকলে মনে মনে ভীষণ ভয় পাচ্ছিলাম। সত্যি সত্যিই যদি আমাকে থাপ্পড় মারে বা মুখে কাদা গুঁজে দেয়? আমি তো শক্তিতে তার সঙ্গে পেরে উঠবো না। কিন্তু মনিকাদি এসে কাদার ভেতর আমার হাত দুটো চেপে ধরলো। মাছটা ছুটে যায় ভেবে বলে উঠেছিলাম, হাত কেন ধরেছিস? মাছটা ধর!

মনিকাদি হঠাৎ আমার দুহাত ছেড়ে দিয়ে কাদার ভেতর থেকে হাত উঠিয়ে বলেছিল, ঠাকুরদার কথা শুনতে পাসনি?

-শঙ্কর যখন তুই করে বলে, তখন তো তোর ঠাকুরদা অমন চেঁচায় না!

হাত-পা আর শরীর ছাড়াও মুখ আর মাথায় সমানে কাদা লেগে তাকে দেখতে এমন লাগছিল যে, আমার হাসি চেপে রাখা বেশ কঠিন হচ্ছিল। মনে মনে ভাবছিলাম, তোকে পেত্নীর মতো লাগছে কথাটা বলব। কিন্তু আমি কিছু বলে ওঠার আগেই সে তার মুখটাকে কেমন বাঁকিয়ে চুরিয়ে বলে উঠেছিল, শঙ্কর তো আমাদের জাতের। হিন্দু। জাতে সমান হলে বলা যায়। তুই তো মুসলমান। ছোট জাত।


দিনে দিনে আমি অনুভব করতে পারি যে, হিন্দু আর মুসলমান আসলে দুটো ভিন্ন প্রজাতি। একের সঙ্গে অন্যের কোনো মিল নেই। গাছের ডাল-পাতার অংশটিই যেন একটি পরিপূর্ণ গাছের প্রতিভূ। তা ছাড়া সেদিন থেকেই জাতের বড়ত্ব বা ছোটত্বের একটি বিশ্রী পোকা আমার ভাবনায় দিনরাত পিলপিল করে ঘুরে বেড়াতে আরম্ভ করেছিল। সেই বিশ্রী পোকাটার যন্ত্রণায় অস্থির হয়েই হয়তো আবিষ্কার করে ফেললাম যে, হিন্দুদের রান্নাঘরে মুসলমান ঢুকতে পারবে না। হিন্দুরা যে পাত্রে পানি পান করবে তা মুসলমানরা ব্যবহার করতে পারবে না। যে ক’টা হিন্দু পরিবার সম্পর্কে আমি জানি তাদের প্রত্যেকের ঘরেই দুটো করে হুঁকো আছে। পানি ভর্তি দামি হুঁকোটা হিন্দু আর পানি ছাড়া সস্তার হুঁকোটা মুসলমান।

যদিও মনিকাদির ঠাকুরদার সঙ্গে আমার দাদুও প্রায় বিকেলে তাস খেলতে বসতেন সেখানেও হিন্দু মুসলমান ব্যাপারটা প্রধান ছিল। আমার দাদু মারা গেলে ঠাকুরদা দু’গাল ভাসিয়ে কাঁদলেও বন্ধুর কবরের আশপাশে আসতে পারেননি। এ ব্যাপারগুলো এতটাই অশোভন ছিল যে, মনিকাদির সঙ্গে মনের দিক থেকে আমার দূরত্ব দিনদিন বেড়েই যাচ্ছিল। আমার ইচ্ছে হতো না যে, আমি তাদের বাড়ির আশপাশে কোথাও গিয়ে খেলা করি। কিন্তু তিনি প্রায়ই আমাকে জোর করে হাত ধরে টানতে টানতে নয়তো বোঝার মতো তুলে কাঁধে উঠিয়ে নিয়ে যেতেন। আমি গোঁ ধরতাম গাছে উঠবো না। দড়ি বাঁধতে পারবো না। তখনই হাতের দড়িটা দিয়ে তিনি আমাকে পুরো পেঁচিয়ে পিঁপড়ার বাসার কাছে নিয়ে গিয়ে বলতেন, তাহলে পিঁপড়ার কামড় খেতে চাস?

উপায়ন্তর না পেয়ে আমাকে তার কথাগুলো মেনে নিতেই হতো। আদর্শ লিপি, ধারাপাত আর সবুজসাথী শেষ করে বছর বছর আমি যেভাবে উপরের ক্লাসে উঠে যাচ্ছিলাম, মনিকাদিও আমার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তিন ক্লাস উপরে থাকতেন সব সময়। কোনো কোনোদিন অবাক হয়ে দেখতাম আমার ক্লাসের যে পড়াগুলো পারছি না মনিকাদি পটপট করে সেগুলো বলে দিচ্ছেন। বলতাম, অত পড়া তোর মনে থাকে কী করে?

তিনি বলতেন, মুসলমানরা গাইয়ের দুধ বিক্রি করে দেয়। আমরা হিন্দুরা দুধ বিক্রি না করে নিজেরাই খাই!

এমন কথা শুনে মনে মনে খুব ছোট হয়ে যেতাম। বাবা প্রতিদিন সকালের দিকে হাটে দুধ নিয়ে যেতেন বিক্রি করতে। কিন্তু আমার যে দুধ খেতে ভালো লাগতো না সে কথাও মনিকাদিকে বলতে পারতাম না।

যখন খুব জোর হাওয়া বইতো, মনিকাদি বুক থেকে কাপড়ের আঁচল ফেলে দিয়ে সেটির এক প্রান্ত আমাকে ধরতে বলতেন। তারপর বাতাসের দিকে মুখ করে সে আঁচল পালের মত করে উঁচিয়ে ধরতাম দুজনে মিলে। তখনও দেখেছি তার বুক আমার বুকের মতই সমান। কিন্তু পরিবর্তনটা হঠাৎ করেই যেন আমার চোখে লাগতে আরম্ভ করছিল। কিন্তু আরো বেশি অবাক হয়ে লক্ষ্য করতাম তিনি কেমন যেন হয়ে যাচ্ছেন দিনদিন। তার দুরন্তপনাও বেশ কমে আসছিল। যখন তখন আমার সঙ্গে ছুটাছুটি করা, গাছে চড়া বা পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ার মতো ব্যাপারগুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। আমাকে কাঁধে তুলে নিতেও আগের মতো তেমন জোর করেন না। তার বদলে জড়সড় হয়ে আমার সঙ্গে খানিকটা দূরত্বও বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকতেন। ভাবতাম, এটাও বুঝি হিন্দুদের কোনো একটি নিজস্ব ব্যাপার।


মনিকাদির কী সমস্যা হয়েছে বা তার ঠাকুরদা নতুন কিছু বলেছেন কিনা বেশ কিছু দিন তার দেখা না পেয়ে তা জানার জন্যে ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু তার সঙ্গে আগের দিনগুলোর মতো দেখা হয় না। তেমন একটি পরিস্থিতিতেই একদিন শুনতে পাই মনিকাদির বিয়ের কথাবার্তা চলছে কোনো এক উকিলের সঙ্গে। উকিলও তেমন নাম করা। জজ কোর্টে যার বিপক্ষে কেস জেতার মতো তেমন কোনো উকিল নাকি নেই। বিয়ের কথা শুনে আমি ছুটে যাই। কিন্তু মনিকাদির ঘরে ঢুকতে পারি না। তার বড় পিসি আমাকে ঠেলে বের করে দিয়েছিলেন। মন খারাপ করে ফিরে আসতে গেলে পেছন থেকে তার কণ্ঠস্বর শুনতে পাই, টুনু শুনে যা!

পেছন ফিরে দেখি, জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে তিনি আমাকে যেতে বলছেন।

আবার কে কী বলে বসে, সেই আশঙ্কার খড়ম পায়ে এগিয়ে তার জানালার সামনে যেতেই আমার মনে হলো মনিকাদির হাত-মুখ তো আগে এতটা হলুদ ছিল না! বলেছিলাম, তুই কি হলুদ মেখেছিস?

সেই সঙ্গে মনে পড়ছিল, কালামের বোন আম্বিয়ার বিয়ের একদিন আগেও হলুদ হলুদ হাত-পা আর মুখ দেখেছি। পেট আর পিঠের যে খোলা অংশ দেখা যাচ্ছিল সে জায়গাগুলোও হলুদ মনে হচ্ছিল।

আমার কথা শুনে মনিকাদির মুখটা কেমন খুশি হয়ে উঠেছিল। হাসিতে সারা মুখ উজ্জ্বল করে বলে উঠেছিলেন, শুনিসনি? সাতদিন পর আমার বিয়ে। রেলগাড়িতে চড়ে শ্বশুর বাড়ি চলে যাবো। তুই আমাকে দেখতে যাবি কিন্তু!

-রেল গাড়ি কেমন আমি জানিই না! চড়ার কথা তো আরো পরের ব্যাপার!

-মনিকাদি মুখ লাল করে বলেছিলেন, উকিল বাবুকে বলব তোকেও যেন সঙ্গে নেয়।

-আচ্ছা, বিয়ে তো বড়দের হয়। তুইও কি বড় হয়ে গেলি?

আমার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে হঠাৎ ফিক করে হেসে উঠে বলেছিলেন তিনি, তুইও তো বড় হয়ে যাচ্ছিস। নাকের নিচে কেমন গোঁফের ছায়া ফুটে উঠছে। কদিন পর কাকা-জ্যাঠাদের মতো তুইও নাপিতের দোকানে গিয়ে লাইন দিয়ে বসে থাকবি!

আমার আর কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল, মনিকাদির বিয়েটা কোনো ভাবে যদি বন্ধ করা যেতো, তাহলে তাই করে ফেলতাম।

সাতদিন পেরিয়ে যায় টের পাই না। টের পাই না উকিল বাবু এসেছিলেন কিনা। শুনতে পাই লগ্ন ভেঙে যাওয়াতে মনিকাদির বিয়ে হবে না। আমার ভাবনায় আসে না লগ্নের সঙ্গে বিয়ের কী এমন সম্পর্ক? যারা এসব নিয়ম-কানুন বানিয়েছিল তাদের একবার দেখতে খুব ইচ্ছে হয়।

বিয়ে ভেঙে যাওয়াতে মনিকাদি বাইরে তেমন একটা বের হতেন না। আমার দিকেও আর ফিরে তাকাতেন না। কিন্তু ছোট চাচার সঙ্গে কিছু একটা বিষয় নিয়ে প্রায়ই তাকে কথা বলতে দেখতাম। মাঝে মাঝে মায়ের দু একটা কথায় মনে হতো তিনি মনিকাদি আর ছোট চাচার ব্যাপারটা পছন্দ করছেন না।


দেখতে দেখতে আরেকটি শীত এসে চলেও যায়। গাছেরা তাদের পুরোনো পাতা ফেলে দিয়ে নতুন পাতা গায়ে চড়ালে এক সময় গ্রামের চৈত্র-সংক্রান্তি মেলার ঘ্রাণ পেতে আরম্ভ করি। কিন্তু তারও কিছুদিন পর একদিন হঠাৎ স্কুলে যাবার পথে দূর থেকে দেখতে পাই অদ্ভুত পোশাক পরা কিছু লোক স্কুলের আশপাশে হাঁটাহাঁটি করছে। যাদের অনেকের মাথায় আধখানা তরমুজের খোসার মতো টুপি লাগানো। হাতে কালো মতো আরো অদ্ভুত কিছু একটা। যেটার মাথায় ছুরির মতোই দেখতে চকচকে আরেকটি ফলা সূর্যের আলোতে ঝিকিয়ে উঠছে বার বার।

কদিন পর রাতের বেলা অকস্মাৎ দেখতে পাই মনিকাদির বাড়ির দিকে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। সেই সঙ্গে আরো অনেক মানুষের চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ আমাদের দিকেই ধেয়ে আসছে শুনতে পাচ্ছিলাম। আগুন এতটাই উপরে উঠেছিল যে সে আলোতে দেখতে পেয়েছিলাম গ্রামের একমাত্র কাঠের দোতলা বাড়িটি পুড়ে যাচ্ছে। একবার মনে হয়েছিল যে, সেই আগুনের আলোতেই কিনা আমাদের ঘরের বেড়ায় আমার নিজের ছায়া নড়াচড়া করছে।

অবাক হয়ে আগুনের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ভাবছিলাম, মনিকাদির কিছু হয়নি তো? তার ঠাকুরদা? বেশ কিছুদিন ধরে বুড়ো তেমন হাঁটা-চলা করতে পারছিলেন না। পেছন দিক থেকে হঠাৎ করেই কেউ যেন আমার বাহু ধরে টেনে প্রায় ছেঁচড়ে আরো অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল আমাকে। আমি চিৎকার করতে যাবো তখনই ছোট চাচার কণ্ঠ শুনতে পাই, একদম চুপ! সামনের দিকে দৌড়ুতে থাক। কারো দিকে ফিরে তাকাবি না।

দৌড়ুতে দৌড়ুতে টের পাই কিছুক্ষণ আগেকার চিৎকার করতে করতে আসা দলটির সঙ্গে সঙ্গে আমিও ছুটছি। অন্ধকারে পায়ে বাধা পেয়ে পড়ে গিয়ে কেউ কেঁদে উঠছে। বাঁশের কঞ্চি বা বেড়ার সঙ্গে লেগে ফড়ফড় শব্দে কাপড় ছিঁড়ছে। সম্মিলিত পায়ের শব্দের সঙ্গে সঙ্গে কারো উহ-আহ শব্দ ভেসে আসে অন্ধকার থেকে। পুরো রাত এক নাগাড়ে দৌড়ে আর দ্রুত হেঁটে আমরা কোথায় পৌঁছেছিলাম জানি না। ভোরের আলো ফুটতেই ছোট চাচার পাশে মনিকাদিকেও দেখতে পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম বাবা মা, বড় চাচাকেও দেখতে পাবো। কিন্তু ও দুজন ছাড়া আর কাউকে আমি চিনতে পারি না।


একটি অচেনা বাড়িতে আমাদের রেখে ছোট চাচা কোথায় যেন চলে গেলেন। কিন্তু কোথায় গেলেন আমাদের একা ফেলে? এ কথা মনিকাদির কাছে জানতে চাইলে তিনি চাপা কণ্ঠে বলে উঠেছিলেন, চুপ চুপ! ভুলেও এ কথা আর জানতে চাইবি না!

আমি আর কোনো প্রশ্ন করিনি। এমনকি বাবা মা বড় চাচার কথাও জানতে চাইনি কখনো।

কোনো কোনো সন্ধ্যায় ছোট চাচাকে এক আধ বার দেখতে পেলেই বুঝে নিতাম মনিকাদিকেও রাতভর দেখা যাবে না। যে কারণে আমার কোনো কোনো রাতে আমার খাওয়া হতো না। হয়তো তারা দুজনেও খেতেন না। মাঝে মধ্যে আধো ঘুমে কি আধো জাগরণে তাদের কথাবার্তা শুনতে পেতাম। অন্ধকারে দুটো মানুষের নড়াচড়ার বিচিত্র শব্দ শুনতে পেতাম। কখনো বা ভোরের আলো আঁধারিতে খোলা দরজার কাছাকাছি দেখতে পেতাম তারা পরস্পর পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে স্থির দাঁড়িয়ে আছে।

যে সন্ধ্যায় ছোট চাচাকে দেখতে পেতাম তার পরদিন মনিকাদিকে দেখতাম সেই আগেকার মতো দুরন্তপনা আর চঞ্চলতায় আচ্ছন্ন। তারপর তিনি সে বাড়ির রান্না ঘরে ঢুকে গেলে মূলত আমি একা হয়ে পড়তাম। নিঃসঙ্গতা কাটাতে গ্রামের এদিক ওদিক আর ঝোপ-ঝাড়ে ঘুরে বেড়াতাম। সে গ্রামটিতে যতদিন ছিলাম কারো সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হয়নি। শুনতে পেতাম দূর থেকে কেউ কেউ বলছে, ছেলেটির মাথার ছিট খারাপ।

আমি হাসতে অথবা কাঁদতেও ভুলে গিয়েছিলাম যেন। বাবা-মাকে কতদিন দেখি না। তাদের ব্যাপারে মনিকাদিও কিছু জানেন বলে মনে হয় না। আমরা কবে আমাদের বাড়ি ফিরে যাবো? বাবা-মা কি আসবে না? কিন্তু এ কথার জবাব না দিয়ে মনিকাদি বলতেন, যা তো সামনে থেকে!


গ্রামে ঘুরে বেড়ানোর সময় বড়দের আলাপ থেকে জানতে পাই দেশের অবস্থা ভালো না। পাকিরা মানুষ মেরে, ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে দেশটাকে ছারখার করে দিচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। কোনো কোনো জায়গায় পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে।

গ্রামের পরিস্থিতিও দিন দিন কেমন যেন হয়ে উঠতে লাগলো। কারি আমিরুদ্দিন রোস্তম মেম্বারকে পাকি দালাল বলে গাল দেওয়াতে সেই কথা নিয়ে বাদানুবাদ করে গ্রামের মানুষ দুটো দলে ভাগ হয়ে গেল। কেউ কেউ বলল, পাকিরা এ গ্রামে এলে ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেবে। সামনে যাকে পাবে তাকেই গুলি করে মারবে। কেউ বা বলছিল, মুক্তি বাহিনীর লোকদের কানে এ খবরটা আগেই চলে গেছে।

সে গ্রামে কতদিন ছিলাম বলতে পারি না। একমাস, দু মাস বা তারও বেশি হয়তো। একদিন মাঝ রাতে মনিকাদি আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দিয়ে বললেন, চল, এক্ষুনি বের হতে হবে।

ঘুম ঘুম চোখে কিছু বুঝে উঠতে না পারলেও চোখ কচলে উঠে পড়ে আমি বলি, কী হয়েছে? আমার ঘুম ভাঙালি কেন?

-এক্ষুনি আমাদের এ গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হবে।

-না গেলে কী হবে?

-আমাদের মেরে ফেলবে! রোস্তমের লোকেরা তোর কাকাবাবুর কথা জেনে গেছে।

মনে হচ্ছিল মনিকাদি কাঁদছেন। আমার ভীষণ ইচ্ছে করছিল, তার চোখে হাত দিয়ে দেখি। পানিগুলো মুছিয়ে দেই। কিন্তু তিনি কী মনে করেন তাই আর আগ বাড়িয়ে কিছু করতে সাহস পাই না। আর কোনো কথা না বলে আমরা যতটা নিঃশব্দে পারা যায় ঘর থেকে বেরিয়ে গ্রামের অন্ধকারাচ্ছন্ন রাস্তায় নেমে পড়ি। কিন্তু কোথায় বা কোনদিকে যাবো সে কথা আমার জানা ছিল না। কিন্তু উদ্দেশ্য জানা থাকলে চলতে সুবিধা হয়। বলি, কোথায় যাচ্ছি আমরা?

যেভাবে পারিস এ গ্রাম থেকে আগে বের হতে হবে।

তাহলে চলো, খালটা আগে পেরিয়ে যাই।


গ্রামের পথ-ঘাট আমার সবই চেনা। তবু মনে হলো খাল পেরিয়ে ওপাড় চলে গেলেই বিস্তীর্ণ এলাকা। জমির পর জমি। তারও অনেক পর আরেকটি গ্রাম। আমরা মোটামুটি নিরাপদ। আমি তাই খালের দিকে হেঁটে চলি। মনিকাদির একটি হাত মুঠো করে আমি এগিয়ে চলি। তিনি আসতে থাকেন আমার পেছন পেছন।

খালে পানির গভীরতা কতটুকু তা আমাদের জানা নেই। তবু সাবধানে আমরা পানিতে নামি। পানির পরিমাণ বেশি ছিল না। হাঁটু ছাড়িয়ে উরু অবধি কাপড় তুলে এগোচ্ছিলেন মনিকাদি। কিন্তু হঠাৎ করেই কেমন করে হয়তো বা পা পিছলে নয়তো গর্তে পড়ে তিনি পড়ে গিয়ে পানিতে ভিজে গেলেন পুরোপুরি। খাল পেরিয়ে শুকনো জমিতে উঠে পড়লে মনিকাদি বললেন, কত্তো বাতাস বইছে রে। ঠাণ্ডায় আমার হাত-পা জমে যাবে মনে হচ্ছে।

বললাম, জোরে জোরে হাঁটলে ঠাণ্ডা কম লাগবে!

কিন্তু ভেজা কাপড়ে পা জড়িয়ে যাচ্ছিল বলে তিনি বারবার পেছনে পড়ে যাচ্ছিলেন। হোঁচটও খেয়েছেন কয়েকবার। পেছন থেকে বললেন, টুনু দাঁড়া তো! কোথাও কি আড়াল পাওয়া যাবে না?

চারদিকে কেবল অন্ধকার আর অন্ধকার। তবু কেমন করে যেন বোঝা যাচ্ছিল গ্রাম এখান থেকে আরো অনেক দূরে। কেমন কালচে আর ঘন থকথকে অন্ধকার সেদিকে। বলি, খুব কাছাকাছি আড়াল পাওয়া যাবে না।

তাহলে কাপড়টা নিংড়ে নেই। বলে, তিনি আঁচল খুলে আমার হাতে দিয়ে বললেন, ধর। তারপর তিনি ঘুরে ঘুরে কাপড়টার পুরোটাই আমার হাতে দিয়ে বললেন, শক্ত করে ধরিস।

কাপড়ের প্রান্ত ধরে আমি কেমন বিমূঢ়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকি মনিকাদির সামনে। অন্ধকারে দেখা যায় না, কথাটা যে বলেছে, বুঝতে হবে তার চোখ থেকেও নেই। দৃষ্টি শক্তি থেকেও সে যার পর নাই অন্ধ। মনিকাদি কাপড়ের অপর প্রান্ত ধরে মোচড় দিয়ে দিয়ে সেটাকে প্যাঁচাতে লাগলেন। আরো খানিকটা প্যাঁচ খেলে কাপড়ের গা থেকে পানি ঝরে পড়ার শব্দ শুনতে পাই। পতিত পানির ধারাকে কেমন চকচকে দেখায় অন্ধকারের ভেতর।

তিনি আবার বললেন, শক্ত করে ধরিস!

তখনই বুঝতে পারি উলটো দিকে আমার দু হাত মুচড়ে যাওয়ার মত অবস্থা হয়ে গেছে। বললাম, আমি আর ধরে রাখতে পারছি না।

কেমন পুরুষ তুই, যার গায়ে মেয়েদের চেয়েও শক্তি কম?

তারপর কাপড়টা টেনে নিয়ে বুকের ওপর আড়াআড়ি রেখে পুনরায় শরীরে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে পরতে লাগলেন। অন্ধকার বলেই হয়তো আমার দৃষ্টির অপার মুগ্ধতা তাকে বিব্রত করে না। কিংবা এমনও হতে পারে আমার দৃষ্টির তীব্রতা তাকে কোনোভাবেই স্পর্শ করছিল না।

মনিকাদির কাপড় পরা সম্পন্ন হয় কি হয় না, খুব কাছাকাছি কোথাও কিছু শেয়াল অকস্মাৎ হুয়া হুয়া করে ডেকে উঠলে নিদারুণ ভয়ে হয়তো মাগো! বলে ছুটে এসে আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লেন তিনি। যে গতিতে তিনি আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তাকে শক্ত হাতে আগলে রাখার মতো যথেষ্ট শক্তিশালী আমি ছিলাম না। ফলে আমি তাকে বুকে জড়িয়ে ধরতে পারলেও চিত হয়ে পড়ে যাই মাটিতে।

মনিকাদির গরম নিঃশ্বাস আমার মুখের ওপর টের পাচ্ছিলাম। কেমন ফিস ফিস স্বরে বললেন, ব্যথা পেয়েছিস?

আমি কিছু বলে উঠার আগেই আরো বেশ কয়েকটি কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দে মনিকাদি আঁতকে উঠে আরো নিরাপদ জায়গার খোঁজে হয়তো আমার কাঁধ আর গলার মাঝে মুখটা গুঁজে দিলেন। আমার কাঁধে তার ঠোঁটের উষ্ণতা আর নিঃশ্বাসের উত্তাপ, বুকের উপর তার দেহের ভার, সব মিলিয়ে কেমন যেন একটি অদ্ভুত অনুভূতি আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলছিল। কী করবো বুঝতে পারছিলাম না। মৃদু স্বরে জানতে চাই, তোমার কি জ্বর এলো?

-বেশ শীত শীত করছে। আমাকে আরো জোরে চেপে ধর!

আমি তাকে আরো জোরে চেপে ধরি ঠিকই। কিন্তু আমার পুরো শরীর কেমন একটা অস্বস্তি বোধের সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয়।


দুর্ভাগ্য হোক আর সৌভাগ্যই হোক তারা কখনো বলে কয়ে আসে না। এমনকি তারা আসার সময় পরিবেশ বা পরিস্থিতির কোনটাই বিবেচনা করে না। তারা আসে অকস্মাৎ দুর্নিবার গতিতে। ভালো অথবা মন্দ যে কোনো একটি ছাপ রেখে যায়। বাকি জীবন সেই ছাপের কোনো একটির বোঝা বা অলঙ্কার বয়ে বেড়ায় মানুষ।

বিভ্রান্ত নিজকে যখন মনিকাদির উন্মুক্ত বুকের ওপর আবিষ্কার করি তখন আমার মনে হচ্ছিল তিনি না ছিলেন ছোট চাচার বা যেমন করে হতে পারেননি উকিল বাবুর কেউ। আসলে তিনি আমারই ছিলেন। মনে মনে কামনা করছিলাম বাকি জীবন আমারই যেন থেকে যান তিনি। একান্ত নিজস্ব হয়ে। তাই আমার যাবতীয় আন্তরিকতা কণ্ঠে ঢেলে দিয়ে বলি, দিদি, চলো গ্রামে ফিরে যাই। তুমি আমি বাকিটা জীবন একসাথেই থাকি, আগে যেমন ছিলাম।

যেন হাজার বছরের ঘুম থেকে জেগে উঠে, ক্লান্তির যোজন যোজন দূরত্বের পথ মাড়িয়ে আমাকে আরো নিবিড় আলিঙ্গনে বেঁধে তিনি বললেন, সেখানে তো আমার কিছু নেই। যেখানে আমার লগ্ন হারিয়েছি সেখানে ফিরে যাওয়ার পথ নেই। তোর ছোট কাকাও আর ফিরে আসবে না। তুই কি বাকি জীবন আমাকে মন্দভাগ্যের কাছ থেকে আড়াল করে রাখতে পারবি না?

-বেশ পারবো! তুমি আমাদের বাড়ি থাকবে। মা, বাবা, বড় চাচা তোমাকে অনেক আদর করবে! চল, আমরা সেখানেই ফিরে যাই। যুদ্ধ তো সারা জীবন থাকবে না।

-যা হারিয়েছি তা ফিরে না পেলেও তোকে আর হারাতে চাই না। গ্রামে ফিরে গেলে আমাকে ওরা তোর সঙ্গে থাকতে দেবে না। তোর ছোট কাকা আমার মাঝে রেখে গেছে তার নিজের অস্তিত্ব। সেই অস্তিত্বের নিরাপত্তা কে দেবে আমাকে? তুই কি একা পারবি পুরো একটি গ্রামের মানুষের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমাকে রক্ষা করতে?

-খুব পারবো!

-না। পারবি না। স্বাধীনতাকে অর্জন করে নিতে হয়। আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে নতুন কোনো ভূমিতে আবাস গড়তে হবে। আমরা আরো দূরে কোথাও চলে যাবো। যেখানে আমাদের প্রতিদিনকার দেখা হায়েনা আর শেয়াল-শকুনগুলো থাকবে না। আমাদের নিবিড় সময়গুলোকে কেউ কাঁটা দিয়ে খোঁচাখুঁচি করবে না।

১০
রাতে রাতে আমরা পথ চলি। দিনের বেলা কোনো গৃহস্থের দাওয়ায় আশ্রয় নেই বিপন্ন মানুষ হয়ে। এভাবেই আমরা এক ঊষালগ্নে একটি গ্রামে আশ্রয় পাই। যেখানে যুদ্ধের কোনো চিহ্ন ছিল না। সেখানকার মানুষ যুদ্ধের কথা জানতো না হয়তো। প্রতিদিনকার মতোই স্বাভাবিক এক সকাল বিরাজিত। ক্ষেতের কাজে ব্যস্ত লোকজন কেউ কেউ ঘাড় ঘুরিয়ে আমাকে দেখতে পেয়ে বলে উঠেছিল, পচা নাকি রে? কত কাল পর ফিরে এলি!

সে কথা শুনে আরেকজন বলে উঠল, আট বছর তো হবেই! সঙ্গে কি তোর বউ?

আমার নিজ থেকে কিছু বলতে হয় না। সব কিছু যেন আগে থেকেই সাজানো ছিল আমাদের অপেক্ষায়। কিন্তু মনে কখনো কখনো হালকা একটি দুর্ভাবনার মেঘ উড়ে আসে- সত্যিকারের পচা যদি ফিরে আসে? কিন্তু এও ভাবি, পাঁচ বছর বয়সের কোনো নিখোঁজ বালকের স্মৃতি কি আট বছর পর ততটা উজ্জ্বল থাকে? নাকি তা সম্ভব? কাজেই এক সময় আমি নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই পিতৃ-মাতৃহীন পচার পরিচয়ের আড়ালে। পচার পিতামহ হাতাব আলি আমাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে ঘুরে জমিগুলো চিনিয়ে দেন। আমি ধীরে ধীরে পুরোদস্তুর গৃহস্থ হয়ে যাই।

আমার কখনোই মনে হয় না যে, বৃদ্ধ হাতাব আলি আমার কেউ নন। আমি বা আমরা এ গ্রামের কেউ নই। মনিকাদি সকাল থেকে রাত অবধি বিপুল শ্রমে আগলে রাখেন সংসারটি। চাষ-বাসের সময়গুলো আমি পার করে দেই বিভিন্ন জমিতে। এভাবেই একটি নতুন লগ্নে মনিকাদি বেঁচে ওঠেন আরেকজন পচার স্ত্রী হয়ে। তার গর্ভজাত ছেলে সূর্য ছোট চাচার সন্তান হলেও বড় হতে থাকে পচার পুত্র পরিচয়ে। সে সময়গুলোতে হাতাব আলি তাকে চোখের আড়াল করতে চান নি। যদিও এতকাল কেউ কোনো প্রশ্ন বানে বিদ্ধ করেনি আমাদের, তবু আমার মনে আজকাল প্রায়ই একটি জিজ্ঞাসার উদয় হয় যে, পিতার বয়স যখন চুয়ান্ন, পুত্রের বয়স তখন একচল্লিশ। সেই মানসাঙ্কের ফলাফল কী হবে?

(সমাপ্ত)
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৩৪
৪৬টি মন্তব্য ৪৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×