somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নামাজ আমার হইল না আদায়

১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ ভোর ৫:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ফোটো গুগুল থেকে।

(আগেই বলে রাখি, একঘেয়ে বিতর্ক নয়-- সঠিক রেফারেন্স দেবেন।)

নামাজ আমি পড়ি না, কথাটা খুব জোর দিয়েও বলতে পারি না। পারবো না। আমি তো মানুষ। নিজের তৈরি নিগড়ে নিজেকে বাঁধতে না পারলে অনেকটা অনিরাপদ বোধ করি। মানুষ কিছু একটার অধীন থাকতেই পছন্দ করে। তার মাঝে বড় অধীনতা হচ্ছে ধর্ম। হয়তো সে কারণেই ধর্মের অধীন মানুষেরাই দলে ভারি।
পাঠক, হঠাত করেই ধর্ম নিয়ে আমার উতসাহটা বাঁকা দৃষ্টিতে দেখতে পারেন। তা অবশ্য পারেন। কিন্তু আমি ধর্মের বিপক্ষে নই, আবার অন্ধ সমর্থকও নই। প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখা ভাল যে, সৌদি আরবে আমার এক বাঙালি বন্ধু ছিল। যাতে তার মান-ইজ্জতের বেলুন ফুটো হয়ে না যায় সে কারণে তার নাম ধাম কিছুই বলছি না। সে খুবই ধার্মিক। কথায় কথায় হাদিস কোরানের রেফারেন্স হাজির করতো। হালাল হারামের তুলনা দিয়ে আমার বিরাগ ভাজন হয়ে পড়তো। তারপরও তার সঙ্গে আমার বিচ্ছেদ ঘটতো না কেন বুঝতে পারতাম না।

আমি গল্প-উপন্যাস-কবিতা লিখি এটা সে অপছন্দ না করলেও অর্থহীন কাজে সময় নষ্ট করছি, জাহান্নামে যাওয়ার পথটাকে প্রশস্ত করছি কেবল, এমনই ছিল তার বিশ্বাস। ইসলাম নিয়ে দু চার কথা বা ধর্ম নিয়ে আমার দু চারটি ইতিবাচক কথাবার্তা মানুষের কাজে আসতে পারে। মানুষ আমার কথায় প্রভাবিত হতে পারে। ফলে, আমার দো-জাহানের নেকি অর্জনের পথটাও তৈরি হয়ে যায়।
মালয়েশিয়াতে যখন ছিল, প্রতি তিনমাস অন্তর পতিতা পল্লীতে গিয়ে জাগতিক শান্তি আহরণ করে ফিরে আসতো। তো সে মানুষ যখন কোরান হাদিসের কথা বলে, পাপ-পূণ্যের কথা বলে, জাহান্নামের কথা বলে, তখন আমার কেমন কেমন লাগে। এ কারণে তাকে বক ধার্মিক ছাড়া অন্য কিছু মনে হতো না। এখনও তার প্রতিআমার ধারণার পরিবর্তন হয়নি। তারপরও কেমন করে যেন সে আমার কাছ থেকে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত লেখার প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছিল। আজকের লেখাটা আমার সে প্রতিশ্রুতির প্রথম কিস্তি।

বলছিলাম নামাজের কথা। ‘নামাজ আমার হইল না আদায়।‘ নামাজ পড়ি কি না, এমন জিজ্ঞাসার মুখোমুখি হয়েছি কম করে হলেও লক্ষাধিক বার। যে মানুষ ঠিক মতন সুরা-কালামও জানে না, তেমন মানুষও জানতে চেয়েছে নামাজ পড়ি কি না। আমি জানি না যে, আমার নামাজ পড়া না পড়াতে প্রশ্নকর্তার কী এমন লাভ-ক্ষতি? আমি তো মনে করি নামাজের চাইতে আমি খাবার খেতে পাচ্ছি কি না তা জিজ্ঞেস করাটা আরও বেশি জরুরি। নামাজ নিয়ে প্রশ্ন করা, নামাজের দাওয়াত দেওয়ার মাঝে কোনও দায় থাকে না। বরং খাওয়ার কথাটা জিজ্ঞেস করলে দায় বেড়ে যাওয়ার ভয় থাকে বেশি। আর সে কারণেই হয়তো ওয়াজ-মাহফিলে নামাজ আর দোযখের আগুন নিয়ে যত কথা বলা হয়, ঘুষ খাওয়া, পরের সম্পদ আত্মসাতের কথা, নৈতিক চরিত্র সংশোধনের কথা নিয়ে খুব একটা কথা বলা হয় না।

যাই হোক, নামাজ আমি পড়তে চাই। জেনে বুঝেই পড়তে চাই। কিন্তু কীভাবে পড়বো? কোন তরিকায় পড়বো? কোন মাজহাবের নামাজটা পড়বো? কোন দলের নামাজটা শুদ্ধ বেশি? কোন নিয়মে নামাজ পড়লে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি? হানাফি, হাম্বলি, শাফেয়ি, মালিকি এগুলোর বাইরে আরও কোনও মাজহাব আছে কি না জানা নাই। আর এমন মাজহাবের কারণেই নামাজে অনেক ভিন্নতা দেখা যায়। এমন ভিন্নতা কেন? নবি মোহাম্মদ (সঃ) কত রকম ভাবে নামাজ পড়তেন বা সাহাবিদের শিখিয়েছেন? এক নবি, এক কোরান, একই সিয়া-সিত্তাহ। তবু কেন নামাজের ভিন্নতা? এক নবি, এক ইসলাম। দুনিয়ার সব মুসলিমের নামাজও একই হওয়ার কথা। কিন্তু তেমনটি নয় কেন?

কোন মাজহাব জান্নাতে যাবে? যেহেতু নামাজ জান্নাতের চাবি। এখন আমি ভুল নামাজ পড়লাম। তাহলে আমার চাবি ভুল হলে তালা কি খুলবে? কোনও এক পদ্ধতিতে নামাজ পড়লাম। আখেরাতে জানলাম যে, আমি ভুল দলের অনুসারী ছিলাম। ভুল নামাজ পড়ার কারণে আমাকে জাহান্নামে যেতে হবে। তাহলে মাজহাব সংক্রান্ত আমার ভুল সিদ্ধান্তের দায় কি মাজহাবের ঈমাম নেবেন? নেতা ভুল হলে দলও ভুল। দলের অনুসরণও ভুল। তাহলে কেয়ামতের পর আমার উপায় হবে কী? আমার চৌদ্দ-গোষ্ঠি হানাফি, আমার পছন্দ ইমাম মালিক। তখন আমার গোষ্ঠি আমার বিরুদ্ধে চলে যাবে। এ সংকটে সমাধান কী?

(আমার পছন্দের নামাজ হলো রুকুর পর দাঁড়িয়ে দু হাত তুলে মোনাজাত করে সেজদায় যায়। এক সেজদার পর উঠে বসে দুহাত তুলে মোনাজাত করে আবার সেজদায় যায়। এমন নামাজ পড়ুয়াদের মাজহাবের নাম কি?)
আশা করি ব্লগের ফেকাহবিদ, মুফতি, আলেম, ইসলামি স্কলার মিলে আমাকে একটা সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়ে আখেরাতের সংকট উত্তোরণে সমাধান দেবেন- কীভাবে আমার পড়া নামাজটা শুদ্ধ হবে? নাকি চার মাজহাবের নামাজই পড়বো? নাকি মনগড়া মতন নামাজ পড়লেও নামাজ আদায় হয়ে যাবে? যেহেতু নামাজ পড়াটাই গুরুত্বপূর্ণ! আশা করি আমাকে কেউ সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে দো-জাহানের নেকি হাসিল করবেন।

জিজ্ঞাসা: কী ভাবে পড়লে আমার নামাজটা শুদ্ধ হবে? নামাজের নিয়ম এবং আদায় করার পদ্ধতিগুলো কী?
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ ভোর ৫:৩২
৮টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×