ফ্যাসিবাদ ও নাৎসিবাদের পরিনতি......
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন প্রায় শেষ, চারিদিকে জার্মান সৈন্যরা পরাজিত। একমাত্র টিকে রয়েছে বার্লিন শহর, হিটলারের রাজধানী।
দীর্ঘদিন যাবৎ হিটলারের বাস ৫০ ফুট মাটির নিচে অবস্থিত বাংকারে। উপরের কোন খবর তিনি রাখতে পারতেন না, কারণ কেউ তাকে সত্যি কথা বলতে সাহস পায় না। ১৯৪৫ সালের ২০ এপ্রিল বার্লিনে সোভিয়েত গোলন্দাজ বাহিনী বোমা বর্ষণ শুরু করে। ২১ এপ্রিল তারা বার্লিনে প্রবেশ করতে শুরু করে। ২২ এপ্রিল হিটলার মিত্রপক্ষকে আটকানোর আদেশ দেন।
কিন্তু হিটলারের জানা ছিল না, তাদের কাছে আক্রমণ করার মতো সৈন্য বা বোমারু বিমান কিছুই নেই। এই সংবাদ জানার পর রাগে ক্ষোভে চিৎকারে, চিৎকারে গলা ফাটিয়ে হঠাৎ করেই শান্ত হয়ে বসলেন, বুঝলেন যুদ্ধে তাঁর পরাজয় নিশ্চিত।
তখন তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন আত্মহত্যা করবেন। শুধু তিনি একা নন কিছু বিশ্বস্ত সঙ্গী ও তার সাথে আত্মহত্যা করবে ঠিক করলেন।
এরপর হিটলার দুটো উইল প্রস্তুত করলেন। প্রথম উইল খানা রাজনৈতিক, দ্বিতীয় খানা ব্যক্তিগত সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে। তরপর তিনি এস এস বাহিনীর ডাক্তার হাসের কাছে জানতে চাইলেন আত্মহত্যা করার সবচেয়ে সহজ উপায় কি? হাস উপদেশ দিলেন পিস্তলের গুলি ও বিষ একই সাথে প্রয়োগ করা উচিত। এর পরেই তিনি তাঁর ১৫ বছরের সঙ্গী ইভা ব্রাউনকে বিয়ে করেন।
১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল বেলা তিনটের অল্প কিছু সময় আগে হিটলার মাটির ৫০ ফুট নিচে তার বাঙ্কারের করিডোরে বেরিয়ে এলেন সঙ্গে তাঁর নবপরিণীতা বধূ ইভা ব্রাউন। আরও সাথে আছে অতি বিশ্বস্ত কিছু মন্ত্রী, সেক্রেটারি এবং সেনাপতি। হিটলার সবার হাতে বিষের ক্যাপসুল তুলে দিলেন এবং তিনি ইভাকে নিয়ে খাস কামরায় ঢুকে পড়েন। অনুচরেরা বাইরে প্রতীক্ষা করতে লাগল। কিছুক্ষণ পর একটি মাত্র গুলির শব্দ শোনা গেল, অনুচরেরা আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেন, তারা ভেবেছিলেন দুটো শব্দ হবে, কিছু সময় পর তারা ঘরে ঢুকে দেখতে পেলেন, হিটলার সামনের দিকে ঝুঁকে বসে আছেন কিংবা পড়ে আছেন বলা যায়। তার খুলি মুখ এবং যে সোফাটিতে তিনি বসে ছিলেন সব রক্তাক্ত। তার কাঁধে ইভার মাথা হেলে পড়েছে।
হিটলারের ইচ্ছা ছিল তার দেহ যেন পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়, যাতে তার মৃতদেহ মিত্রপক্ষের হাতে না পড়ে। কিন্তু সম্ভবত হিটলারের জানা ছিল না পেট্রোল নিজে জ্বলে কিন্তু মৃতদেহ জ্বালাতে পারে না।
তাই মিত্রপক্ষ তার দেহ খুঁজে পেয়েছিল। এবং সোভিয়েত নথিপত্রের তথ্য অনুসারে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত তার পোড়া দেহাবশেষ জায়গায় জায়গায় পুঁতে দেওয়া হয়। তার পরেও তার দেহকে পুড়িয়ে ছাই ভষ্ম জার্মানির এলবি নদীর উপনদী বিটারিটজ্ নদীর পানিতে ছুড়ে ফেলা হয।
২ রা মে ১৯৪৫। রাশিয়ানরা বাংকারে প্রবেশ করে। জার্মান শ্রেষ্ঠত্বের উগ্রবাদী দর্শনে বিশ্বাসী পৃথিবীর অধিকর্তা হবার দুঃসাহসী স্বপ্নের জন্য কোটি কোটি মানুষকে মৃত্যুর পথে ঠেলে দেওয়ার জন দায়ী, হিটলারের মৃত্যু হল কাপুরুষের মত আত্মহননে। হয়ত তেমন একটা করুণ পরিনতি দেখতে হবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের।
(ঘটনাটা সবার জানা, তারপরও আমি আমার একটু চর্বিত চর্বন করেছি আমার মতো করে)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




