"বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী".....
ভারতীয় উপমহাদেশ প্রায় ২০০ বছর বৃটিশদের অধীনে ছিলো। দীর্ঘ বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে ১৯৪৭ সালে বৃটিশ শাসনের অবসান হলে আমরা পরাধীনতা থেকে মুক্তি পেলাম। আবার দুই যুগ পাকিস্তানী দুঃশাসনের পর এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সনে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। স্বৈরাচার এরশাদের সামরিক সরকার ১৯৮২ সালে দেশের ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল; তারপর ১৯৯০ সালে গণআন্দোলনের মাধ্যমে তার পতন হয়। ২০০৭ সালে শুরু হয় সেনা-তত্বাবধায়ক স্বৈরশাসন। তারপর দীর্ঘ পনেরো বছরে বছরের আওয়ামী দুঃশাসনের গুম খুন, ক্রসফায়ার, গায়েবী মামলা-হামলা, খোদ শেখ হাসিনা পরিবারের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় সম্পদের হরিলুট মচ্ছব। শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় হাজার হাজার বিলিয়ন ডলার পাচার। ৩৬ জুলাই ২০২৪ সালে অজস্র প্রাণের বিনিময়ে ছাত্রজনতার গণ আন্দোলনে দুনিয়ার ইতিহাসের সর্বনিকৃষ্ট, ঘৃন্য ফ্যাসিস্ট সরকার প্রধান শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও রেখে গিয়েছে তার তৈরী ফ্যাসিবাদের দোসরদের। এভাবে আমরা স্বৈরাচার থেকে মুক্তি পেলাম। মুক্তি পাবার এমন হাজারো উদাহরণ দেয়া যায় যা কখনো ব্যক্তিকেন্দ্রিক, কখনো গোষ্ঠীকেন্দ্রিক আবার কখনো জাতিকেন্দ্রিক। বৃহত্তর পরিসরে শোষণ-বঞ্চনা-অবিচার-অসাম্য, অন্যায়-অমানবিক আচরণ, কাঙ্খিত সামাজিক-সাংস্কৃতিক চর্চা সীমাবদ্ধকরণ, নৃতাত্ত্বিক-ধর্মীয়-ভাষা-জাতি-গোষ্ঠীগত বিচারে দলন-নিষ্পেষণ, চিন্তা-ভাষার স্বাধীন বিকাশের ও চর্চার পথরুদ্ধকরণ, সাধারণকে মানবিক-নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিতকরণ ইত্যাদি অন্যায় থেকে মুক্তি লাভের নিমিত্তে স্বতঃস্ফুর্ত, ব্যাপক ও সার্বিক যুদ্ধই মুক্তিযুদ্ধ।
ভারতীয় গোলাম পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি। তার প্রভু নানাবিধ ষড়যন্ত্র করে আমাদের দেশটাকে অশান্তি আর অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ফেলেছে। কাজেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। এবারের যুদ্ধ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধ।
রাতের শেষে ভোর জেনেও কেউই অন্ধকারে বসে সূর্যের অপেক্ষা করে না৷ আলো জ্বালিয়ে অন্ধকার দূর করে। সে আলো সূর্যের মতো না হলেও আমাদের একেবারে অন্ধ করে রাখে না। আমরা ঠিকই পথ চলতে পারি।
তাহলে দুঃখ শেষেই শান্তি এই আশায় সময় নষ্ট করা কেন? দুঃখের সময়টাকেও সহনীয় করে নেয়া উচিত। সুখের সময় আসবার আগ অব্দি আমরা যেন মৃতের মতো পড়ে না থাকি৷আলোর মতো কোন কাজ, কোন মানুষ, কোন ভালো অভ্যাস জীবনে থাকলে কখন ভোর হবে, কখন শান্তি আসবে তবেই বেঁচে উঠবো -এই অসহনীয় অবস্থা থেকে মুক্তি মেলে!
সূর্য তার সময়ে উঠুক, শান্তি নিজের গতিতে আসুক! আমরা জীবনকে থামিয়ে না রেখে এগিয়ে যাই সূর্যের কাছে ,শান্তি'র কাছে! জীবনের সাধ্য মানুষের চেয়ে কখনোই বেশি না! জীবন মানুষকে কতবার ভাঙ্গবে? ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাওয়া একজন মানুষ চাইলেই হাজারবার উঠে দাঁড়াতে পারে! হার না মানা সেই যোদ্ধা'র কাছে আলো নিজেই ছুটে আসবে!
আমি অতি সাধারণ ভীতসন্ত্রস্ত একজন মানুষ!
চৌকিদার-কনস্টবল এমনকি বাসাবাড়ির সিকিউরিটি গার্ডদেরও ভয় পাই, সেখানে রাষ্ট্রীয়/সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নানান বাহিনী এবং রাজনৈতিক দুর্বিত্ত্বদের কথা মনে পরলেই পানিশুণ্যতায়ই শুধু নয়- রক্তশুণ্যতায় ভুগি!
কারোর কোনো অনৈতিকতা প্রতিহত করার শক্তি আমার নাই, ফেসবুকে হুংকার করার মতো ফাটাকেষ্টও আমি নই। আমি শুধু প্রতিবাদ ও ঘৃণা করতে পারি এবং সকল রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সেটাই করেছি গত পনেরো ষোলো বছর। আমি আমার ক্ষুদ্র শক্তি নিয়ে প্রস্তুত দেশমাতৃকার স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শত্রুদের মোকাবেলা করার জন্য....
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২২