ইন্ডিয়া আমাদের দেশ দখল করে নেবে......
এতো সোজা!
চাইলেই কেউ কোনো দেশ দখল করে নিতে পারে না- তা সে যতই শক্তিধর দেশ হোক। বড়ো, শক্তিশালী রাষ্ট্র হলেই যদি ছোট এবং দুর্বল দেশকে দখল করে নিতে পারতো তাহলে কিউবা কবেই আমেরিকার পেটে চলে যেতো। বলতে গেলে গোটা বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর প্রত্যক্ষ সহযোগিতা সহায়তা পেয়েও নিরস্র ফিলিস্তিন দখল করতে পারেনি ইজরায়েল।
যুদ্ধের প্রকারভেদঃ
সামরিক যুদ্ধ, জৈবিক যুদ্ধ বা জীবাণু যুদ্ধ এবং সব চাইতে আধুনিক যুদ্ধের নাম বানিজ্যিক যুদ্ধ। যুদ্ধের ধরন বা নাম যা-ই হোক এর পেছনে রয়েছে বিশাল বানিজ্য।
যুদ্ধ অতীতে ছিলো, আজও আছে এবং অদূর ভবিষ্যতেও যুদ্ধ হবে, এমনকি সুদূর ভবিষ্যতেও না হওয়ার কোনো বস্তুনিষ্ঠ কারণ নাই। প্রথমেই প্রশ্ন আসে, যুদ্ধ কী? অক্সফোর্ড ডিকশনারিতে যুদ্ধ তথা war-এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে: ‘a state of armed conflict between different countries or different groups within a country’ – অর্থাৎ, বিভিন্ন দেশের মধ্যে কিংবা একটি দেশে বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষের অবস্থাই হচ্ছে যুদ্ধ। Conflict বিষয়টি কী? কনফ্লিক্ট হচ্ছে a serious disagreement or argument – অর্থাৎ, সাংঘাতিক মতভিন্নতা বা বিতর্ক।
সহজ-করে বলতে গেলে বলা যায়, a war is a violent armed competition between two or more parties to retain or snatch the right to control anything they think worth staking their lives on- অর্থাৎ, যুদ্ধ হচ্ছে দুই বা ততোধিক পক্ষের মধ্যে কোনো কিছুর ওপর অধিকার ও নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার কিংবা কেড়ে নেওয়ার সহিংস ও সশস্ত্র প্রতিযোগিতা, যার জন্য তারা জীবন নিতে বা দিতেও প্রস্তত।
বর্তমানে হট টপিক হচ্ছে 'বাংলাদেশ ইন্ডিয়া যুদ্ধ' হবে কি হবে না.... সত্যি বলতে গত ৫৩ বছর ধরেই ইন্ডিয়া বাংলাদেশের উপর এককভাবে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। সেই যুদ্ধের নাম- বানিজ্যিক যুদ্ধ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব ভক্সচোদ ভাবে- বাংলাদেশ দখল করতে ইন্ডিয়া সেনাবাহিনী পাঠাবে, তারা জানেইনা- গত পনেরো ষোলো বছর ভারত সেনাবাহিনী ছাড়াই একছত্র অধিপত্যে বাংলাদেশ দখল করে রেখেছিলো! তবে সেই যুদ্ধে এখন ইন্ডিয়া পরাজয়ের মুখে!
উগ্র সাম্প্রদায়িক ইন্ডিয়া সরকার তাদের সহযোগী উগ্র সংগঠন দ্বারা ঘোষণা দিয়েছে- ওরা আমাদের সব দিক থেকে ব্লক করে দিবে! পণ্য পাঠাবে না! ভিসা দেবে না! চিকিৎসায় দেবে না। হোটেলে থাকতে দিবেনা, রেস্তোরাঁয় খেতে দিবে না এবং আমাদের দেশে ওদের লোক আসতে দিবে না! ফলে বাংলাদেশের মানুষ বেঘোরে মারা যাবে।
ওয়েল, বাংলাদেশের প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকদের আন্তরিক চাওয়া উচিৎ, ইন্ডিয়া ঘোষিত প্রতিটা কাজ ওরা করুক এবং করতেই থাকুক।
* বর্তমানে বাংলাদেশ ইন্ডিয়া বাণিজ্য ঘাটতিতে ইন্ডিয়া ৯ বিলিয়ন ডলার সারপ্লাসে আছে। বাংলাদেশে ওদের এক্সপোর্ট ১১.২৫ বিলিয়ন। ইন্ডিয়াতে আমাদের এক্সপার্ট ২ বিলিয়নের কাছাকাছি।
* শুধু মেডিকেল ট্যুরিজমে বাংলাদেশিরা ইন্ডিয়া গিয়ে খরচ করে ৫ বিলিয়ন ডলার। ওদের মেডিক্যাল ট্যুরিজমের ৬৫% ক্লায়েন্ট বাংলাদেশি।
* বৈধ চ্যানেলে বাংলাদেশ থেকে রেমিট্যান্স ২০১৭ সালের ডেটায় ১০ বিলিয়ন ডলার। আমার ধারণা ইন্ডিয়ান মিডিয়া এইটা হাইড করেছে। গুগল সহ সব টেক জায়ান্টদের আঞ্চলিক হেড অফিস ইন্ডিয়াতে হওয়াতে এইসব ডেটা ওরা প্রথম কয়েক পেইজের সার্চ রেজাল্টের বাইতে পাঠিয়ে দিয়েছে। অবৈধ হুন্ডিতে পাঠানো টাকার হিসাব এখানে নাই। ১৭ সালে ১০ বিলিয়ন হলে ২০২৩ সালে এটা অন্তত ১২ বিলিয়ন হবে ধরে নিচ্ছি।
* রেগুলার ট্যুরিজম। তাতেও অন্তত ১০/১৫ বিলিয়ন ডলার হওয়ার কথা। সর্বনিম্ন ১০ বিলিয়নই ধরলাম। ইন্ডিয়ার ফরেইন ট্যুরিস্টের সংখ্যায় বাংলাদেশ সবার উপরে।
* চোরাচালান ধরা হয় নাই। যেই চোরাচালান ব্যাপকভাবে ইন্ডিয়ার ফেভারে। আমরা দেই কাঁচা পাট, কাঁচা চামড়া, ইন্ডিয়া দেয় ফেন্সিডিল। তাতে চোরাচালান বাদ দিয়ে বৈধভাবে দাঁড়ায় (৯+৫+১২+১০) ৩৬ বিলিয়ন ডলার।
বছরে ৩৬ বিলিয়ন ডলার আমাদের দেশ থেকে ইন্ডিয়াতে যাচ্ছে বৈধ উপায়ে!
ভাদা-ভাকুরা না চাইলেও একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে আমি চাই ইন্ডিয়া সর্বক্ষেত্রে ওদের বর্তমান স্ট্রাটেজি জারি রাখুক। যত দিন যাবে, তাতে প্রতিটা সেক্টরে আমাদের স্বাবলম্বী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। এরপরও যদি বাংলাদেশ নিয়ে খেলতে চান তাহলে আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশের সব নাগরিক দেশরক্ষার সৈনিক হয়ে যাবে- শেষে 'সাত বোন’ যে টুট টুট জয়বাংলা হয়ে যাবে- দিল্লিকে একথাতা বুঝতে হবে।
(ডাটা সোর্সঃ গুগল সার্চে বেশিরভাগই সরকারি দপ্তর/ বিশ্বব্যাংকের স্ট্যাটিস্টিক্স)
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৭