সৃষ্টির ঋণ....
মধ্য দুপুরে ডেল্টা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সিএনজি, বাইক, উবার কিছুই পাচ্ছিনা। অনেকটা পথ হেটে বাংলা কলেজের সামনে বেশকিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে একটা রিকশা পেয়েছি....ঘর্মাক্ত ষাটোর্ধ কংকালসার রিকশাওয়ালাকে দেখে এড়িয়ে যাওয়ার সময় রিকশাওয়ালা আমার দিকে তাকিয়ে আপসোস করে বলে- "সবাই কলের রিকশয় চড়ে, প্যাডেল রিকশায় কেউ চড়তে চায়না। আমি বুড়ো মানুষ- তাই আমার রিকশায় কেউ ওঠে না। কেউ রিকশায় না উ
ওডলে রিকশার জমা দিমু ক্যামনে, ঘরে পাঁচজন মানুষ খাওয়াইয়া, ক্যামনে ব্যজ্ঞুনের মুখে খাওন যোগামু"!
আমার গন্তব্য পথে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ তাই আগেই বলে নিয়েছি- যেখানেই বেবীট্যাক্সি পাবো সেখানেই আপনাকে ছেড়ে দেবো। কোনো দরদাম না করেই রিকশায় বসে এগুতে বলি....৷ বৃদ্ধ রিকসাওয়ালা সর্বশক্তি দিয়েও প্যাডেল চাপতে পারছেনা... তারপরও জ্যামে আটকে থেকে কখনও দাঁড়িয়ে থাকা বাস-ট্রাকের পাশে দাঁড়িয়ে একটু ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে....খেয়াল করে দেখি- রিকশাওয়ালার একটা হাত পংগু। পাশের রিকশা থেকে কেউ একজন পানি খেয়ে বোতলটা ছুড়ে ফেলেছে। রিকশাওয়ালা ফেলে দেওয়া সেই বোতলের অবশিষ্ট পানিটুকু খাওয়ার জন্য কুড়িয়ে হাতে নিয়েছে......আমার হাতে থাকা পানির বোতলটা দিয়ে তার সাথে কথা বলছি...... "নিজের চলতশক্তি নাই। খাওয়াইয়া ছয় জন মানষের সংসার চালাইতে, জীবন বাঁচাইতে রিকশা চালান ছাড়া কিছু করার নাই! আমার শৈল দুব্বল একটা হাত নাই দেইক্কা- প্যাচেন্দার আমার রিকশায় ওডে না......!"- যে কথা আরও একবার বলেছিল।
অসংখ্য মানুষ অনেক কষ্টে আছে....
আসুন প্রচন্ড তাপদাহে বিধ্বস্ত শ্রমজীবী মানুষের জন্যে কিছুটা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই। যে যার অবস্থান থেকে যতোটুকু পারি; তাদেরকে সাধ্যমতো বাড়তি কিছু সহায়তা দেই। ওদের জীবন বাঁচুক।
দানের ছবি প্রচার না করে হতদরিদ্রের খোঁজ নিই। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে যে যতোটুকু পারি, অন্তত তাদের দিকে হাত বাড়াই। মানবতার সম্ভ্রম বাঁচুক।
আসুন মনে রাখতে শিখি, মৃত্যুর পরে 'আমি' নামক মানুষটির কিচ্ছু থাকেনা।
থাকে কৃতকর্ম।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০২৫ রাত ৮:২৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



