somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

Natural Justice.....

০৬ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Natural Justice.....

Natural Justice বা প্রকৃতির বিচার কিম্বা রিভেঞ্জ অব ন্যাচার বলে যে একটা কথা আছে, সেই ব্যাপারটা গভীরভাবে অনুধাবন করার একটা বাস্তব উদাহরণ আশা করি সবার সামনেই এখন ভিজিবল।

আমরা অনেক সময়েই অন্যায়ের 'প্রতিবাদ' আর অন্যায়ের 'প্রতিশোধ' এর মধ্যে গুলিয়ে ফেলি। অন্যায়ের প্রতিবাদ ন্যায়ের পথে হয়, আর অন্যায়ের প্রতিশোধ হয় আরেকটি অন্যায়ের মাধ্যমে। প্রতিশোধে সেইজন্য কোনও আলো থাকে না, প্রতিবাদে আলো থাকে।


রাজনৈতিক হাজারটা ইবলিশি কার্যকলাপের পাশাপাশি হাসিনা ছিলো ব্যক্তিগতজীবনেও প্রচণ্ড পরশ্রীকাতর একজন ব্যক্তি। হাসিনার কথাবার্তা শুনলেই বোঝা যেত, শুধু রাজনৈতিক সমালোচনা নয়, বরং ব্যক্তি খালেদা জিয়াও ছিলো তার বিশাল বড় হিংসার ক্ষেত্র। সারাটাজীবন তার গেছে খালেদা জিয়াকে হিংসা করে। এজন্যই প্রায় প্রতিটা ভাষণেই, প্রতিবারই মুখ খুললেই খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলতো। রাজনৈতিক সমালোচনা এক জিনিস, কিন্তু হাসিনা যেই ভাষায় খালেদা জিয়াকে আক্রমণ করতো সেগুলো ছিলো রীতিমতো কুৎসিত, প্রতিটা মুহূর্তে বানোয়াট কথাবার্তা বলে ক্যারেক্টার অ্যাসাসিনেশন করার চেষ্টা করতো। সেসব বাজে ইঙ্গিত আর ভাষা ভদ্রসমাজে কোনভাবেই প্রকাশযোগ্য ছিলো না, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসেও হাসিনা কী অবলীলায় সেগুলো বলে বেড়াতো পার্লামেন্টে, প্রেস কনফারেন্সে, অফিসিয়াল বক্তৃতায়!

অপরদিকে খালেদা জিয়ার দিকে তাকান। এমনকি এই ০৫ আগস্টের পরও তার কোন পাবলিক স্পিচ (অন্তত দুইবার পাবলিক স্পিচ দিয়েছেন উনি) বা পাবলিকলি কথাবার্তা বলার সময়ও হাসিনাকে নিয়ে ব্যক্তিগত কোন আক্রমণ নাই, নোংরা কোন ইঙ্গিত নাই- নাথিং, সিম্পলি নাথিং!

অনেকে হয়ত এক্সপেক্ট করছিলেন যে খালেদা জিয়া বোধহয় হাসিনাকে তুমুল গালাগালি করবেন।
কিন্তু আমি নিশ্চিত ছিলাম উনি এইটা করবেন না। খালেদা জিয়াকে যারা কাছ থেকে দেখেছেন কখনও অথবা তার সম্পর্কে ভালোমতো ধারণা রাখেন, তারা হয়ত নিশ্চিতভাবেই জানেন তার এইটাইপ পার্সোনালিটি নিয়ে- নাথিং নিউ একচুয়েলি। উনি এমনই।

একটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে আরও একটা অন্যায়ের পথে না গিয়েও প্রতিশোধ নেওয়া যায়। একভাবেই নেওয়া যায়, তবে সে খুব কঠিন পথ। আমি নিজে ওইভাবে প্রতিশোধ নিয়েছি, তাই জানি কতটা কঠিন সেই পথ এবং তা হল 'উপেক্ষা'।
উপক্ষা, আমার কাছে মনে হয় এটাই হল শেখ হাসিনার নিপীড়ন এবং শত শত অশ্রাব্য গালাগালির বিরুদ্ধে প্রকৃত প্রতিশোধ।

খালেদা জিয়ার এই জেশ্চারে বোঝা যায়, উনার কাছে হাসিনার স্রেফ কোনই ভ্যালু নাই। এইযে এইভাবে ইগনোর করতে পারেন, এর ভেতর ব্যতিক্রমী একটা মজা আছে। শিক্ষণীয় ব্যাপার তো আছে বটেই।
হয়তো হাসিনাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন- দেখ, তুই শয়নে-স্বপনে আমার নাম উচ্চারণ করে কটু কথা না বললে তোর পেটের ভাতই হজম হতো না, অথচ আমার কাছে তোর এক পয়সারও দাম নাই! হাসিনার অস্তিত্বই হয়তো খালেদা জিয়ার কাছে ম্যাটার করে না।

আমাদের সমাজে একটা প্রবাদ আছে, "চোরের মার বড়ো গলা"- যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে শেখ হাসিনা, তথা গোটা শেখ পরিবার। যে ব্যাক্তি তসবিহ জপের মতো সারাক্ষণ খালেদা জিয়াকে এতিমের টাকা চুরির অপবাদ দিয়েছে, তারেক রহমানকে চোর বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলেছে- সেই খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সর্বশক্তি নিয়োগ করেও ষোলো বছরে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। অথচ মাত্র কয়েক মাসেই শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট এবং অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি দখলের প্রমাণ প্রকাশিত হয়েছে। প্রমাণিত হয়েছে- শেখ পরিবার মানেই চোর পরিবার। ব্যক্তিগত জীবনেও দেখবেন কারও ওপর পরশ্রীকাতর কেউ যখন সারাক্ষণ কারও পেছনে লেগে কুৎসা রটনাতে থাকে, তার মনের ভেতরও এই সুপ্ত বাসনা থাকে অপরপক্ষ থেকেও তাকে নিয়ে সেইম এনার্জি নিয়ে যাতে চর্চা হয়। মানে একইরকম গুরুত্ব দেওয়া হয় আরকি।


কিন্তু এসব ক্ষেত্রে ইগনোর করাটাই হলো সবচেয়ে বড় প্রতিশোধ। কারণ কোন মানুষটা কেমন, তা অন্যরা ধীরে ধীরে বাই ন্যাচার বুঝতে পারে। নিজেকে প্রমাণ করার কোন দরকারই হয় না। বরং ইগনোর করার মাধ্যমেই তাদের বিরুদ্ধে প্রকৃত জবাব দেওয়া হয়ে যায়!
খালেদা জিয়ার ভেতর এই রেয়ার গুণাবলি আছে। হাসিনার হাজারো ব্যক্তি আক্রমণ এবং কুৎসিত কথাবার্তা রটনার বিপরীতে উনি এভাবেই মুখ না খুলে নিজের ক্লাস বুঝিয়ে দিতে পেরেছেন সবসময়। এটাই উনার ক্লাস, এজন্যই উনি এত গ্রেইসফুল।

খালেদা জিয়ার সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য হলো উনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের বড় একটা অংশে রাজনীতি করতে হয়েছে এমন একজন ব্যক্তির বিপরীতে, যে রীতিমতো একজন আনকালচারড, সাইকোপ্যাথ, ভয়ংকর লেভেলের নার্সিসিস্ট, উন্মাদ এবং মনস্টার। কোন ডিগনিটি সম্পন্ন ব্যক্তির প্রতিপক্ষ হিসাবে রাজনীতি করতে পারলে, সেটাকে আমি বরং সৌভাগ্য হিসাবে বিবেচনা করতে পারতাম। আজ থেকে শতবর্ষ পরেও খালেদা জিয়ার নামটা যখন উচ্চারিত হবে, তখন একই জায়গায় তার নামের বিপরীতে হাসিনার মত একজন মনস্টারের নাম একই টাইমফ্রেমে স্মরণ করা হবে, এটাকে বড় রকমের একটা দুর্ভাগ্যই মনে করি আমি।


যাইহোক, দিল্লির এক বাগান বাড়িতে লুটিয়েন হাউজে বসে বসে পলাতক মনস্টারটা যখন টিভিতে দেখতে পাচ্ছে- নিজেকে যেই দেশ, যেই শহর থেকে গাট্টি-বোচকাসহ পালিয়ে যেতে হয়েছিলো জনতার তাড়ানি খেয়ে, সেই একইদেশে, একইশহরে অন্য একজন এসে নামার পরে পুরো দেশের মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছে, প্রার্থনা পাচ্ছে- নার্সিসিস্ট ও ভীষণ পরশ্রীকাতর ওই মনস্টারটার মনের ভেতর তখন কেমন ঝড় বয়ে যাচ্ছে, ওই দৃশ্যটা মনে মনে চিন্তা করে বেশ আনন্দই পেলাম!

রিভেঞ্জ অব ন্যাচার, অর্থাৎ প্রকৃতির প্রতিশোধ। কেউ যদি আমাদের প্রতি জুলুম বা অন্যায় করে তাহলে আমরা তাকে ক্ষমা করলেও প্রকৃতি তাকে কখনো ক্ষমা করে না। আশা করি আমরা সবাই এই কথাটা মনে রাখবো।
একজন প্লেটে খাবার রেখে চপ্পল পায়ে পালায় চোরের মতো নিজের দেশ থেকে! আরেকজন নিজের দেশে ফিরে সর্বোচ্চ সম্মান নিয়ে!

”আল্লাহ যাকে ইচ্ছা কৱেন সম্মান দেন, যাকে ইচ্ছা কৱেন সম্মান কাড়িয়া লন।” সুরা আল ইমরান, আয়াত ২৫।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০২৫ সকাল ৭:২১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×